গোলাম ওয়াদুদ, ঢাকা
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিএনপির বিভাগীয় পর্যায়ের গণসমাবেশ। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে গণসমাবেশ করছে দলটি। এর আগে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন শুরু করে বিএনপি। এরপর ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লায় গণসমাবেশ করেছে দলটি। ঢাকার সমাবেশের আগে বাকি শুধু রাজশাহী, যেটা হবে আগামী ৩ ডিসেম্বর।
ঢাকার সমাবেশ নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) তথা সরকারের সঙ্গে বিএনপির টানাপোড়েন কিছুতেই কমছে না। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে ডিএমপির কমিশনারকে চিঠিও দিলেও তাতে সায় দিচ্ছে না প্রশাসন। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উভয় পক্ষের কথা চালাচালি শেষে গতকাল মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শর্ত সাপেক্ষে বিএনপিকে গণসমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। গতকাল বিকেলে ডিএমপির উপকমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) আব্দুল মোমেনের সই করা এক চিঠিতে সমাবেশের অনুমতির কথা বিএনপিকে জানানো হয়েছে। তবে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতির চিঠি পাওয়ার পর বলেছেন, ‘আমি ডিএমপির চিঠি পেয়েছি। কিন্তু আমরা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করব।’
বিএনপির নেতারা বলছেন, নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ১৫ নভেম্বর ডিএমপিকে চিঠি দিয়েছিল তারা। সেই চাওয়ায় সাড়া না দিয়ে বিকল্প হিসেবে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান অথবা পূর্বাচলে সমাবেশ করতে বিএনপিকে প্রস্তাব দেয় পুলিশ। তাতে রাজি না হলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
যেখানে সমাবেশ করার অনুমতি চায়নি, সেখানেই অনুমতি দিল পুলিশ। কেন সেখানে সমাবেশ করতে বলা হচ্ছে তা নিয়েই ভাবছেন বিএনপি নেতারা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘নয়াপল্টনে সমাবেশ হবে, দলের পক্ষ থেকে এখনো সিদ্ধান্ত এটাই। দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করব।’
তবে ডিএমপির চিঠি নিয়ে বিএনপি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে বলেও দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বিএনপিকে মানতে হবে ২৬টি শর্ত। সমাবেশ করা যাবে না—এই শব্দগুলো কোথাও লেখা না থাকলেও শর্তগুলো যোগ করলে তার অর্থ সেটাই দাঁড়ায়। ভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই শর্তগুলো আওয়ামী লীগকে দেওয়া হলে রাজনৈতিক দল হিসেবে তাতে তারা সম্মত হতো কি না, সেই প্রশ্ন তোলা যৌক্তিক। এত শর্ত মেনে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে কি করবে না, তা দু-এক দিনের মধ্যেই জানা যাবে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রলীগের ৮ তারিখ হলে এক দিন পর বিএনপির সম্মেলন আয়োজন অনেক কঠিন হবে। সেই চিন্তা করে নিজেদের সম্মেলন এগিয়ে আনার কথা জানিয়েছে ছাত্রলীগ। এমন চিন্তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল। সে কারণেই প্রশসাংযোগ্য হলেও ছাত্রলীগ কেন এমন বিবেচনা করল, তা ভেবে অনেকের ভ্রু কুঁচকে উঠতে পারে। কারণ, বিগত গণসমাবেশগুলোতে ক্ষমতাসীন দল ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন কী আচরণ করেছে, তা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে মানুষ জানে।
১০ ডিসেম্বর বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করলে নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। কী কী সুবিধা দেবে ডিএমপি তা দেখা যাক। শর্ত অনুযায়ী, বিএনপিকে সমাবেশস্থলের ভেতরে-বাইরে উন্নত রেজল্যুশনের সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। এখানেই ‘সব ধরনের নির্দেশনা দিয়ে’ ডিএমপি সহায়তা করবে। মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসা ঠেকাতেও ‘সহযোগিতার হাত বাড়াবে’ ডিএমপি।
এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লায় সমাবেশ করতে গেলেও বিএনপিকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে। বিএনপির প্রতিটি সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে। যদিও সরকার বলেছে, ধর্মঘটের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, ‘পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা নিজেদের স্বার্থে’ এটা করছে। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে সবগুলো ধর্মঘট সমাবেশের আগেই হয়েছে; শেষ হয়েছে সমাবেশের দিন সন্ধায়। ব্যতিক্রম শুধু চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার সমাবেশে। অনেকেই বলছেন, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে সরকার সেটা করেনি।
তবে বিএনপি বরাবর অভিযোগ করে আসছে, গণসমাবেশগুলো ঘিরে এই সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ মানুষের গণজোয়ার ঠেকাতে পরিবহন ধর্মঘটের আয়োজনটা শাসক দলই করেছে। এ বিষয়ে বিএনপির নেতা এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলনেই বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে অতি উৎসাহী পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন আর ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে পরিবহন বন্ধ রাখছে। পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে শ্রমিক-মালিকদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর সমাবেশের আগেও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা। সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন ও থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের কথা বলে ১ ডিসেম্বর থেকে পুরো বিভাগে এই ধর্মঘটের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিএনপির ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নিরাপত্তা জোরদার করতে ডিসেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সব বিভাগের সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সমাবেশ ঘিরে কোনো হুমকি না থাকলেও রাজধানীতে জনসমুদ্রের ভিড়ে ‘অপরাধীরা সুযোগ নিতে পারে’ বলে মনে করছে পুলিশ। তবে রাজনৈতিক সমাবেশ ঘিরে এভাবে দুই সপ্তাহ ডিএমপিতে ছুটি দেওয়ার নজির বোধ হয় নেই। আওয়ামী লীগও অনেক অনেক বড় সমাবেশ করেছে ঢাকায়।
বিএনপি সভা-সমাবেশ করে না বলে বিগত বছরগুলোতে অসংখ্যবার প্রকাশ্যে বিএনপিকে ‘রাজনৈতিক সবক’ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা ও সরকারের মন্ত্রীরা। ‘গণতন্ত্র মজবুত করতে’ তারা যেখানে খুশি সভা-সমাবেশ করুক, তাদের বাধা দেওয়া হবে না—এমন আশ্বাসবাণীও তাঁরা শুনিয়েছেন। কিন্তু সমাবেশ যখন শুরু হলো, তখন ‘গণতন্ত্র মজবুত করার’ স্লোগান আওয়ামী লীগ নেতারা আর দিচ্ছেন না; মিছিল-মিটিং-সমাবেশে লাগাতার বাধা পাওয়ার অভিযোগ করছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় নির্দিধায় মিছিল-মিটিং-সমাবেশ করলেও সরকারের সমালোচনা করতেও নিতে হয়েছে অনুমতি। যত আপত্তি বিএনপির কর্মসূচিতে।
লেখক: সহ-সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
আরও পড়ুন:
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিএনপির বিভাগীয় পর্যায়ের গণসমাবেশ। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে গণসমাবেশ করছে দলটি। এর আগে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন শুরু করে বিএনপি। এরপর ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লায় গণসমাবেশ করেছে দলটি। ঢাকার সমাবেশের আগে বাকি শুধু রাজশাহী, যেটা হবে আগামী ৩ ডিসেম্বর।
ঢাকার সমাবেশ নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) তথা সরকারের সঙ্গে বিএনপির টানাপোড়েন কিছুতেই কমছে না। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে ডিএমপির কমিশনারকে চিঠিও দিলেও তাতে সায় দিচ্ছে না প্রশাসন। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উভয় পক্ষের কথা চালাচালি শেষে গতকাল মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শর্ত সাপেক্ষে বিএনপিকে গণসমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। গতকাল বিকেলে ডিএমপির উপকমিশনার (সদর দপ্তর ও প্রশাসন) আব্দুল মোমেনের সই করা এক চিঠিতে সমাবেশের অনুমতির কথা বিএনপিকে জানানো হয়েছে। তবে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতির চিঠি পাওয়ার পর বলেছেন, ‘আমি ডিএমপির চিঠি পেয়েছি। কিন্তু আমরা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করব।’
বিএনপির নেতারা বলছেন, নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ১৫ নভেম্বর ডিএমপিকে চিঠি দিয়েছিল তারা। সেই চাওয়ায় সাড়া না দিয়ে বিকল্প হিসেবে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান অথবা পূর্বাচলে সমাবেশ করতে বিএনপিকে প্রস্তাব দেয় পুলিশ। তাতে রাজি না হলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
যেখানে সমাবেশ করার অনুমতি চায়নি, সেখানেই অনুমতি দিল পুলিশ। কেন সেখানে সমাবেশ করতে বলা হচ্ছে তা নিয়েই ভাবছেন বিএনপি নেতারা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘নয়াপল্টনে সমাবেশ হবে, দলের পক্ষ থেকে এখনো সিদ্ধান্ত এটাই। দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করব।’
তবে ডিএমপির চিঠি নিয়ে বিএনপি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে বলেও দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বিএনপিকে মানতে হবে ২৬টি শর্ত। সমাবেশ করা যাবে না—এই শব্দগুলো কোথাও লেখা না থাকলেও শর্তগুলো যোগ করলে তার অর্থ সেটাই দাঁড়ায়। ভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই শর্তগুলো আওয়ামী লীগকে দেওয়া হলে রাজনৈতিক দল হিসেবে তাতে তারা সম্মত হতো কি না, সেই প্রশ্ন তোলা যৌক্তিক। এত শর্ত মেনে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে কি করবে না, তা দু-এক দিনের মধ্যেই জানা যাবে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ছাত্রলীগের ৮ তারিখ হলে এক দিন পর বিএনপির সম্মেলন আয়োজন অনেক কঠিন হবে। সেই চিন্তা করে নিজেদের সম্মেলন এগিয়ে আনার কথা জানিয়েছে ছাত্রলীগ। এমন চিন্তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল। সে কারণেই প্রশসাংযোগ্য হলেও ছাত্রলীগ কেন এমন বিবেচনা করল, তা ভেবে অনেকের ভ্রু কুঁচকে উঠতে পারে। কারণ, বিগত গণসমাবেশগুলোতে ক্ষমতাসীন দল ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন কী আচরণ করেছে, তা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে মানুষ জানে।
১০ ডিসেম্বর বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করলে নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। কী কী সুবিধা দেবে ডিএমপি তা দেখা যাক। শর্ত অনুযায়ী, বিএনপিকে সমাবেশস্থলের ভেতরে-বাইরে উন্নত রেজল্যুশনের সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। এখানেই ‘সব ধরনের নির্দেশনা দিয়ে’ ডিএমপি সহায়তা করবে। মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসা ঠেকাতেও ‘সহযোগিতার হাত বাড়াবে’ ডিএমপি।
এর আগে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লায় সমাবেশ করতে গেলেও বিএনপিকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে বলে গণমাধ্যমের খবরে এসেছে। বিএনপির প্রতিটি সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে। যদিও সরকার বলেছে, ধর্মঘটের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, ‘পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা নিজেদের স্বার্থে’ এটা করছে। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে সবগুলো ধর্মঘট সমাবেশের আগেই হয়েছে; শেষ হয়েছে সমাবেশের দিন সন্ধায়। ব্যতিক্রম শুধু চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার সমাবেশে। অনেকেই বলছেন, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে সরকার সেটা করেনি।
তবে বিএনপি বরাবর অভিযোগ করে আসছে, গণসমাবেশগুলো ঘিরে এই সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ মানুষের গণজোয়ার ঠেকাতে পরিবহন ধর্মঘটের আয়োজনটা শাসক দলই করেছে। এ বিষয়ে বিএনপির নেতা এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলনেই বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে অতি উৎসাহী পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন আর ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে পরিবহন বন্ধ রাখছে। পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে শ্রমিক-মালিকদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর সমাবেশের আগেও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা। সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন ও থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের কথা বলে ১ ডিসেম্বর থেকে পুরো বিভাগে এই ধর্মঘটের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিএনপির ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নিরাপত্তা জোরদার করতে ডিসেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সব বিভাগের সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সমাবেশ ঘিরে কোনো হুমকি না থাকলেও রাজধানীতে জনসমুদ্রের ভিড়ে ‘অপরাধীরা সুযোগ নিতে পারে’ বলে মনে করছে পুলিশ। তবে রাজনৈতিক সমাবেশ ঘিরে এভাবে দুই সপ্তাহ ডিএমপিতে ছুটি দেওয়ার নজির বোধ হয় নেই। আওয়ামী লীগও অনেক অনেক বড় সমাবেশ করেছে ঢাকায়।
বিএনপি সভা-সমাবেশ করে না বলে বিগত বছরগুলোতে অসংখ্যবার প্রকাশ্যে বিএনপিকে ‘রাজনৈতিক সবক’ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা ও সরকারের মন্ত্রীরা। ‘গণতন্ত্র মজবুত করতে’ তারা যেখানে খুশি সভা-সমাবেশ করুক, তাদের বাধা দেওয়া হবে না—এমন আশ্বাসবাণীও তাঁরা শুনিয়েছেন। কিন্তু সমাবেশ যখন শুরু হলো, তখন ‘গণতন্ত্র মজবুত করার’ স্লোগান আওয়ামী লীগ নেতারা আর দিচ্ছেন না; মিছিল-মিটিং-সমাবেশে লাগাতার বাধা পাওয়ার অভিযোগ করছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় নির্দিধায় মিছিল-মিটিং-সমাবেশ করলেও সরকারের সমালোচনা করতেও নিতে হয়েছে অনুমতি। যত আপত্তি বিএনপির কর্মসূচিতে।
লেখক: সহ-সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
আরও পড়ুন:
গত সেপ্টেম্বরে ভ্লাদিভস্টকের একটি অর্থনৈতিক ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এ বিষয়ে পরে তিনি একটি উপহাসমূলক হাসি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।
১৫ ঘণ্টা আগেআব্রাহাম অ্যাকর্ডস মূলত একটি চটকদার বিষয়। এতে বাস্তব, স্থায়ী আঞ্চলিক শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছুই এতে ছিল না। যেসব রাষ্ট্র এতে স্বাক্ষর করেছে তারা তা করেছে—কারণ, তারা ইসরায়েলকে ওয়াশিংটনে প্রভাব বিস্তারের পথ হিসেবে দেখে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ইসরায়েলের ওপর মার
৯ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেখেয়ালি, সেটা আগা থেকেই সবার জানা। তবে দেশটির নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এসেও তিনি অসংলগ্ন, অশ্লীল, স্বৈরতান্ত্রিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ থেকে অন্তত একটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে একটি ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ সরকারের নেতৃত্ব দেবেন।
৯ দিন আগেএবারের আইএমইএক্স মহড়ায়ও কিছু দেশ আছে যারা আগেরবারও অংশগ্রহণ করেছিল। এসব দেশের নাম আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই মহড়ার একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—ইরান ক্রমবর্ধমানভাবে নিজেকে এমন দেশগুলোর কক্ষপথে নিয়ে যাচ্ছে যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত
১০ দিন আগে