মইনুল হাসান, ফ্রান্স
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে একটি কাউন্টিং ঘড়ি এত দিন টিক টিক করে সেকেন্ড পেরিয়ে মিনিট আর ঘণ্টার হিসাব করছিল। আজ ১৫ নভেম্বর সব কাঁটা থেমে গেছে! জাতিসংঘ আগেই জানিয়েছিল যে আজ অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ৮০০ কোটির ঘরে পৌঁছাবে!
নিঃসন্দেহে আমাদের ইতিহাসে উল্লেখ করার মতো একটি তারিখ, একটি মাইলফলক এটি।
অনুমান করা হয় যে, ১৮০৪ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রথমবারের মতো ১০০ কোটিতে পৌঁছেছিল। এরপর ১২৩ বছর অর্থাৎ ১৯২৭ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০০ কোটির ঘরে পৌঁছাতে। তারপর মাত্র ৩৩ বছরের মাথায় ১৯৬০ সালে মানুষের সংখ্যা হয় ৩০০ কোটি! সেই থেকে খুব দ্রুত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
কারণ, এ সময় মারাত্মক সব মহামারির প্রতিষেধক টিকা মানুষের হাতে এসে যায়। মানুষ খোঁজ পায় পেনিসিলিনসহ আরও অনেক জীবনরক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিকের। যোগাযোগব্যবস্থা এবং কৃষিতে বিপ্লব ঘটে। ফলে যেমন অকালমৃত্যুর হার কমে যায়, তেমনি বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার, উদ্ভাবনের ফলে মানুষের জীবনমান উন্নত হয়। সময়ের সঙ্গে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ২০১১ সালে ৭০০ কোটি থেকে মাত্র ১১ বছরের মাথায় পৃথিবীকে বহন করতে হচ্ছে আরও ১০০ কোটি বেশি মানুষের ভার! আর ২১০০ সালের আগেই মানুষের সংখ্যা ১ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে!
এ খবরে অনেকেই বেশ উদ্বিগ্ন হচ্ছেন। তাঁদের প্রশ্ন, বাড়তি মানুষের চাপ সামলাতে পারবে কি আমাদের এই পৃথিবী? প্রথমেই তাঁরা যে বিষয়টি তুলে ধরেন তা হলো মানুষের ‘স্বার্থপরতা’। চীনের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হংক ডায়ংয়ের পরিবেশগত বৈষম্য-সম্পর্কিত গবেষণাপত্র অনুসারে, উন্নত দেশগুলোর জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ। অথচ তাঁরা প্রাকৃতিক সম্পদের ৭৫ শতাংশ ভোগ করে। জ্ঞান-বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে প্রভূত উন্নতি সাধনে সক্ষম হলেও সকলে সমানভাবে এর সুফল ভোগ করতে পারছে না।
ন্যাচার ক্লাইমেট চেঞ্জ পত্রিকা জানিয়েছে, উন্নত প্রযুক্তির কারণে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও মাত্রাতিরিক্ত দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকেরা ২১ শতাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। ইতিমধ্যেই দেশে দেশে জীবন ধারণের প্রধান উপাদান বিশুদ্ধ পানির অভাব প্রকট হতে শুরু করেছে।
গবেষক ও বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন। বলছেন, মানুষের ব্যবহারের জন্য এক বছরে আমাদের এই পৃথিবী যেটুকু নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপন্ন করে, এ বছর আমরা তা ২৮ জুলাই শেষ করে ফেলেছি। ফলে বছরের বাকি পাঁচ মাস আমাদের ধারের ওপর চলতে হচ্ছে। এমন বেহিসাবি খরচের যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ১৯৭০ সাল থেকে। মানুষেরা সে বছর পৃথিবীর এক বছরে সকল প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ করেছিল ২৯ ডিসেম্বর। পৃথিবী আর কুলাতে পারছে না। এমনটিই জানিয়েছে গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট নেটওয়ার্ক।
আজও এই গ্রহের এক বিশালসংখ্যক মানুষের নিত্যসঙ্গী দারিদ্র্য ও ক্ষুধা। পুষ্টিকর খাবার, সুপেয় পানি, সুচিকিৎসা, সুশিক্ষা, বাসস্থান আজও অনেক মানুষের জন্য এক অলীক স্বপ্ন। প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ক্ষুধা মেটাতে পারে না। জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রতি বছর প্রায় ৯০ লাখ মানুষ ক্ষুধা ও ক্ষুধাজনিত রোগে প্রাণ হারায়। প্রতি ১০ সেকেন্ডে একটি শিশু ক্ষুধায় মারা যায়। মানুষের অসহায় মৃত্যুর এমন বিষণ্ন সংখ্যাটি এইডস, ম্যালেরিয়া এবং যক্ষ্মায় যত মানুষ প্রাণ হারায়, তার থেকেও বেশি। মানুষ আজ মঙ্গলগ্রহে স্থায়ী বসতি স্থাপনের অতি উচ্চাশা করছে। অথচ ক্ষুধা এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা। আজও মানুষ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য নিশ্চিত কোনো উপায় খুঁজে বের করতে পারেনি। অনেকটা অনিশ্চিত যাত্রার মতোই মানুষ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
অথচ অপর দিকে একদল বিশেষজ্ঞ মানবজাতি বিলুপ্ত হতে চলেছে বলে ক্ষান্ত হচ্ছেন না। তাঁরা ‘লাল কার্ড’ বের করে মহাবিপদ সংকেত দিতেও দ্বিধা করছেন না। তাঁদের কথা হলো, ২০৫০ সাল থেকে ১৯৫টি দেশের মধ্যে ১৫১টি দেশের জন্মহার হ্রাস পেতে শুরু করবে। ইতিমধ্যে চীন, তাইওয়ান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার, রাশিয়া, ইউরোপ, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, আজ যেখানে চীনের জনসংখ্যা ১৪১ কোটি, সেখানে আগামী ২১০০ সালে জনসংখ্যা ৭৩ কোটিতে নেমে আসবে। অর্থাৎ আজকের হিসাব থেকে চীনে ৬৮ কোটি মানুষ কম হবে। জাপানসহ মোট ২৩টি দেশের জনসংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমে আসবে। জন্মহার বৃদ্ধি না হলে ২০৩০ সালে জাতি হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিলুপ্তি ঘটবে।
এ ছাড়াও সেসব দেশে বয়োবৃদ্ধ নাগরিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ বাড়বে। কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যাপক জনসংখ্যা হ্রাসের এমন কালো অধ্যায়ের মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব মানবতা। জন্মহার হ্রাসের কারণে ইতিমধ্যে বহু দেশে সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক সাধ্য-সাধনা করে, অর্থ ঢেলেও জনগণকে সন্তান ধারণে উদ্বুদ্ধ করা যাচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আরেকটি বিশেষ উপসর্গ—পৃথিবীর দেশে দেশে নীরব মহামারি, নারী-পুরুষের ‘বন্ধ্যত্ব’ বেশ ঘটা করেই ঘাঁটি গেড়ে বসেছে।
ইতিবাচক পক্ষের গবেষকেরা জোর দিয়ে যা বলতে চান তা তা হলো, মানুষই একমাত্র প্রাণী যে কিনা নিজেদের জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। উদ্ভাবনী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে জীবনমান তথা গড় আয়ু বৃদ্ধি করতে কৌশলগত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে মানুষেরাই। তাই মানুষই পারবে প্রকৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে। সে কারণে মানুষের সংখ্যা কখনো ‘অতিরিক্ত’ বলে গণ্য করা উচিত হবে না। তাঁদের মতে, মানুষ পৃথিবীর জন্য অভিশাপ নয় বরং আশীর্বাদ।
প্রায় তিন লাখ বছর পূর্বে আফ্রিকায় আধুনিক মানুষ হোমো সেপিয়েন্সের নিদর্শন পাওয়া যায়। ধাপে ধাপে শত প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে সুনিপুণ দক্ষতায় অতিক্রম করে মানুষ নামক উন্নত প্রজাতির প্রাণীটি এ পৃথিবীতে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। বুদ্ধি, মেধা, প্রজ্ঞার জোরে আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রবেশ করেছে। আজকের দিনে যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো, মানুষ পারবে কি নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে এবং একটি মানবিক পৃথিবী গড়ে তুলতে?
পৃথিবী একটাই। চমৎকার এ নীল গ্রহটি কোনো একক জাতির বা গোষ্ঠীর নয়, ৮০০ কোটি মানুষের।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে একটি কাউন্টিং ঘড়ি এত দিন টিক টিক করে সেকেন্ড পেরিয়ে মিনিট আর ঘণ্টার হিসাব করছিল। আজ ১৫ নভেম্বর সব কাঁটা থেমে গেছে! জাতিসংঘ আগেই জানিয়েছিল যে আজ অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ৮০০ কোটির ঘরে পৌঁছাবে!
নিঃসন্দেহে আমাদের ইতিহাসে উল্লেখ করার মতো একটি তারিখ, একটি মাইলফলক এটি।
অনুমান করা হয় যে, ১৮০৪ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রথমবারের মতো ১০০ কোটিতে পৌঁছেছিল। এরপর ১২৩ বছর অর্থাৎ ১৯২৭ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০০ কোটির ঘরে পৌঁছাতে। তারপর মাত্র ৩৩ বছরের মাথায় ১৯৬০ সালে মানুষের সংখ্যা হয় ৩০০ কোটি! সেই থেকে খুব দ্রুত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
কারণ, এ সময় মারাত্মক সব মহামারির প্রতিষেধক টিকা মানুষের হাতে এসে যায়। মানুষ খোঁজ পায় পেনিসিলিনসহ আরও অনেক জীবনরক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিকের। যোগাযোগব্যবস্থা এবং কৃষিতে বিপ্লব ঘটে। ফলে যেমন অকালমৃত্যুর হার কমে যায়, তেমনি বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার, উদ্ভাবনের ফলে মানুষের জীবনমান উন্নত হয়। সময়ের সঙ্গে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ২০১১ সালে ৭০০ কোটি থেকে মাত্র ১১ বছরের মাথায় পৃথিবীকে বহন করতে হচ্ছে আরও ১০০ কোটি বেশি মানুষের ভার! আর ২১০০ সালের আগেই মানুষের সংখ্যা ১ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে!
এ খবরে অনেকেই বেশ উদ্বিগ্ন হচ্ছেন। তাঁদের প্রশ্ন, বাড়তি মানুষের চাপ সামলাতে পারবে কি আমাদের এই পৃথিবী? প্রথমেই তাঁরা যে বিষয়টি তুলে ধরেন তা হলো মানুষের ‘স্বার্থপরতা’। চীনের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হংক ডায়ংয়ের পরিবেশগত বৈষম্য-সম্পর্কিত গবেষণাপত্র অনুসারে, উন্নত দেশগুলোর জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ। অথচ তাঁরা প্রাকৃতিক সম্পদের ৭৫ শতাংশ ভোগ করে। জ্ঞান-বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে প্রভূত উন্নতি সাধনে সক্ষম হলেও সকলে সমানভাবে এর সুফল ভোগ করতে পারছে না।
ন্যাচার ক্লাইমেট চেঞ্জ পত্রিকা জানিয়েছে, উন্নত প্রযুক্তির কারণে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও মাত্রাতিরিক্ত দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকেরা ২১ শতাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। ইতিমধ্যেই দেশে দেশে জীবন ধারণের প্রধান উপাদান বিশুদ্ধ পানির অভাব প্রকট হতে শুরু করেছে।
গবেষক ও বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন। বলছেন, মানুষের ব্যবহারের জন্য এক বছরে আমাদের এই পৃথিবী যেটুকু নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপন্ন করে, এ বছর আমরা তা ২৮ জুলাই শেষ করে ফেলেছি। ফলে বছরের বাকি পাঁচ মাস আমাদের ধারের ওপর চলতে হচ্ছে। এমন বেহিসাবি খরচের যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ১৯৭০ সাল থেকে। মানুষেরা সে বছর পৃথিবীর এক বছরে সকল প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ করেছিল ২৯ ডিসেম্বর। পৃথিবী আর কুলাতে পারছে না। এমনটিই জানিয়েছে গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট নেটওয়ার্ক।
আজও এই গ্রহের এক বিশালসংখ্যক মানুষের নিত্যসঙ্গী দারিদ্র্য ও ক্ষুধা। পুষ্টিকর খাবার, সুপেয় পানি, সুচিকিৎসা, সুশিক্ষা, বাসস্থান আজও অনেক মানুষের জন্য এক অলীক স্বপ্ন। প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ক্ষুধা মেটাতে পারে না। জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রতি বছর প্রায় ৯০ লাখ মানুষ ক্ষুধা ও ক্ষুধাজনিত রোগে প্রাণ হারায়। প্রতি ১০ সেকেন্ডে একটি শিশু ক্ষুধায় মারা যায়। মানুষের অসহায় মৃত্যুর এমন বিষণ্ন সংখ্যাটি এইডস, ম্যালেরিয়া এবং যক্ষ্মায় যত মানুষ প্রাণ হারায়, তার থেকেও বেশি। মানুষ আজ মঙ্গলগ্রহে স্থায়ী বসতি স্থাপনের অতি উচ্চাশা করছে। অথচ ক্ষুধা এখনো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা। আজও মানুষ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য নিশ্চিত কোনো উপায় খুঁজে বের করতে পারেনি। অনেকটা অনিশ্চিত যাত্রার মতোই মানুষ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
অথচ অপর দিকে একদল বিশেষজ্ঞ মানবজাতি বিলুপ্ত হতে চলেছে বলে ক্ষান্ত হচ্ছেন না। তাঁরা ‘লাল কার্ড’ বের করে মহাবিপদ সংকেত দিতেও দ্বিধা করছেন না। তাঁদের কথা হলো, ২০৫০ সাল থেকে ১৯৫টি দেশের মধ্যে ১৫১টি দেশের জন্মহার হ্রাস পেতে শুরু করবে। ইতিমধ্যে চীন, তাইওয়ান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার, রাশিয়া, ইউরোপ, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, আজ যেখানে চীনের জনসংখ্যা ১৪১ কোটি, সেখানে আগামী ২১০০ সালে জনসংখ্যা ৭৩ কোটিতে নেমে আসবে। অর্থাৎ আজকের হিসাব থেকে চীনে ৬৮ কোটি মানুষ কম হবে। জাপানসহ মোট ২৩টি দেশের জনসংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমে আসবে। জন্মহার বৃদ্ধি না হলে ২০৩০ সালে জাতি হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়ার বিলুপ্তি ঘটবে।
এ ছাড়াও সেসব দেশে বয়োবৃদ্ধ নাগরিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ বাড়বে। কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যাপক জনসংখ্যা হ্রাসের এমন কালো অধ্যায়ের মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব মানবতা। জন্মহার হ্রাসের কারণে ইতিমধ্যে বহু দেশে সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক সাধ্য-সাধনা করে, অর্থ ঢেলেও জনগণকে সন্তান ধারণে উদ্বুদ্ধ করা যাচ্ছে না। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আরেকটি বিশেষ উপসর্গ—পৃথিবীর দেশে দেশে নীরব মহামারি, নারী-পুরুষের ‘বন্ধ্যত্ব’ বেশ ঘটা করেই ঘাঁটি গেড়ে বসেছে।
ইতিবাচক পক্ষের গবেষকেরা জোর দিয়ে যা বলতে চান তা তা হলো, মানুষই একমাত্র প্রাণী যে কিনা নিজেদের জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। উদ্ভাবনী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে জীবনমান তথা গড় আয়ু বৃদ্ধি করতে কৌশলগত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে মানুষেরাই। তাই মানুষই পারবে প্রকৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে। সে কারণে মানুষের সংখ্যা কখনো ‘অতিরিক্ত’ বলে গণ্য করা উচিত হবে না। তাঁদের মতে, মানুষ পৃথিবীর জন্য অভিশাপ নয় বরং আশীর্বাদ।
প্রায় তিন লাখ বছর পূর্বে আফ্রিকায় আধুনিক মানুষ হোমো সেপিয়েন্সের নিদর্শন পাওয়া যায়। ধাপে ধাপে শত প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে সুনিপুণ দক্ষতায় অতিক্রম করে মানুষ নামক উন্নত প্রজাতির প্রাণীটি এ পৃথিবীতে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। বুদ্ধি, মেধা, প্রজ্ঞার জোরে আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রবেশ করেছে। আজকের দিনে যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো, মানুষ পারবে কি নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে এবং একটি মানবিক পৃথিবী গড়ে তুলতে?
পৃথিবী একটাই। চমৎকার এ নীল গ্রহটি কোনো একক জাতির বা গোষ্ঠীর নয়, ৮০০ কোটি মানুষের।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৩ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৭ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৯ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
১০ দিন আগে