রহস্যে দস্তয়ভস্কিকেও হার মানাচ্ছেন পুতিন ও প্রিগোঝিন

পরাগ মাঝি
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩, ২৩: ০০
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৩, ২৩: ০৮

রুশ লেখক দস্তয়ভস্কির উপন্যাস মানেই টান টান উত্তেজনা আর রহস্যে ঘেরা। তবে এই রহস্যকেও পুতিন আর প্রিগোঝিন ছাড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করেন বিবিসির রাশিয়া বিষয়ক সম্পাদক স্টিভ রোজেনবার্গ। মস্কোতে অবস্থান করে ভাগনার বিদ্রোহ ও এর পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন তিনি। 

সোমবার বিবিসিতে প্রকাশিত এক লেখায় পুতিন ও প্রিগোঝিনের সাক্ষাতের বিষয়ে রহস্যের প্রসঙ্গটি তুলেছেন রোজেনবার্গ। বিদ্রোহের মাত্র পাঁচ দিন পরেই নাকি স্বয়ং পুতিনের সঙ্গে ক্রেমলিনে গিয়ে দেখা করেছিলেন ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন। 

মস্কোতে বসে এবং তীক্ষ্ণ নজর সত্ত্বেও এই সাক্ষাতের বিষয়ে কিছুই আঁচ করতে পারেননি রোজেনবার্গ। সাক্ষাতের ১০ দিন পর এক বিবৃতির মাধ্যমে ক্রেমলিন থেকেই ফাঁস করা হয়েছে বিষয়টি। 

সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহে চোখ রাখলে দেখা যায়, গত ২৪ জুলাই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের হুমকি দিয়ে ভাগনার যোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে মস্কো অভিমুখে যাত্রা করেছিলেন প্রিগোঝিন। পুতিন এই ঘটনাকে বিশ্বাসঘাতকতার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। যাত্রার পরদিন ভাগনার যোদ্ধারা একজন রুশ পাইলটকেও গুলি করে হত্যা করেন। পরে ক্রেমলিন থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায়ই বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ক্রেমলিনের সঙ্গে প্রিগোঝিনের একটি সমঝোতা করে দেন। বিদ্রোহের অপরাধে কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা অভিযুক্ত করা হবে না এই শর্তে উল্টো পথ ধরেন প্রিগোঝিন। পরে তিনি বেলারুশে আশ্রয় নেন বলেও জানায় বিভিন্ন গণমাধ্যম। 

এ অবস্থায় প্রিগোঝিনের ভবিষ্যৎ পরিণতি নিয়ে জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই জানা গেল--ক্রেমলিনে গিয়ে সঙ্গী-সাথি নিয়ে ইতিমধ্যে পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি! 

বিবিসির রাশিয়া সম্পাদক রোজেনবার্গ মনে করেন, এক টেবিলে বসে নিশ্চয়ই কোলাকুলি কিংবা হাসি-ঠাট্টায় মেতে ওঠেননি পুতিন আর প্রিগোঝিন। তবে কী আলোচনা হয়েছে তাঁদের মধ্যে? নতুন কোনো বোঝাপড়া হয়েছে কি? 
এদিকে ঘটনার পরম্পরা বলছে, সাক্ষাতের পরও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো প্রিগোঝিনকে বিতর্কিত প্রমাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রিগোঝিনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা বিপুল অর্থ, সোনার বার, ছদ্মবেশের সরঞ্জামসহ বিভিন্ন মারণাস্ত্রের ছবি প্রকাশ করে গণমাধ্যমগুলো এটাই প্রমাণ করছে। 

এ ছাড়া রোববার রাতে রাশিয়া-ওয়ান টিভি চ্যানেলের প্রধান অনুষ্ঠান ‘নিউজ অব দ্য উইক’ শোতে রীতিমতো প্রিগোঝিনের চরিত্র হনন করা হয়েছে। 

এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তিনি রবিন হুডের মতো কেউ নন। তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং অপরাধী হিসেবে তাঁর অতীত রেকর্ড রয়েছে। তাঁর বেশির ভাগ প্রকল্পই প্রতারণাপূর্ণ এবং বেআইনি।’ 

এ অবস্থায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রিগোঝিন এবং তাঁর সঙ্গীরা এখন কোথায়? তাদের পরিকল্পনাই বা কী? 

এসব প্রশ্নের উত্তর না জানায় রোজেনবার্গেরই আফসোসের সীমা নেই। রহস্যোপন্যাস পড়ার মতো বিষয়গুলো জানতে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত