অনলাইন ডেস্ক
রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনী ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। ওই ফ্লাইটের ১০ আরোহীর তালিকায় তার নাম ছিল এবং তাঁদের কেউ যে এখন বেঁচে নেই-এটুকু এখন পর্যন্ত নিশ্চিত। প্রিগোঝিন নিহত হয়েছেন কিনা জানতে অপেক্ষা করতে হবে। তবে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকলে ভাগনারের কি হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রিগোঝিন না থাকলে ভাগনার বর্তমান রূপে টিকে না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। ভাগনারের প্রতিনিধি হিসেবে একমাত্র প্রিগোঝিনই সৈনিকের পোশাক পরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘনঘন ভাগনারের টেলিগ্রাম চ্যানেলে হাজির হতেন। প্রিগোঝিনের ভাগনারপ্রধান হয়ে উঠার ঘটনাক্রম এবং ক্যামেরায় নিজের উপস্থিতির ধরন তাঁর সর্বেসর্বা হওয়ার পাশাপাশি পর্দার আড়ালে তাঁর গড়ে তোলা ‘জটিল নেটওয়ার্কের’ ইঙ্গিত দেয়। প্রিগোঝিনের মৃত্যু হলে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়তে পারে ভাগনার।
মালি থেকে মধ্যপ্রাচ্য এমন কোনো অঞ্চল বাদ নেই যেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক পাচকের ব্যক্তিগত যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। তাঁর এই কৃতিত্বের কারণেই ভাগনার পশ্চিম আফ্রিকার অন্তত সাতটি দেশে সফলভাবে তাবু গাঁড়তে পেরেছে।
বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদক ফ্রাংক গার্ডনারের মতে, হাজার হাজার ভাড়াটে সৈন্যের এই বাহিনী প্রিগোঝিনকে যেমন বিশ্বাস করেন, তেমনি তাকে ভক্তিও করেন। তাঁর ব্যক্তিগত ক্যারিশমা শুধু যে রাশিয়ার সেনা অধিনায়কদের ভিন্ন তা নয়, প্রচলিত সামরিক বাহিনীর মধ্যে কাঠামোর মধ্যেই এমন ভক্তির ব্যাপার নেই। এই পরিস্থিতিই প্রমাণ করে, ভাগনারপ্রধান হিসেবে তাঁর বিকল্প মেলা বেশ কঠিন হবে।
একজন ধনী ব্যবসায়ী ও অপরাধী হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে প্রিগোঝিন ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল পাচক হিসেবে। তিনি ‘হট ডগ’সহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করে বিক্রি করতেন। তার সুনামের জন্য ক্রেমলিন তাকে পুতিনের খাবার সরবরাহের কাজ দেয়। এরপর তাকে ‘পুতিনের পাচক’ বলে ডাকা হতো। তবে পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খাবার থেকে ক্ষমতার সম্পর্কে উন্নীত হয়, তিনি পুতিনের বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। এভাবেই তার ভাড়াটে বাহিনী গঠন শুরু হয়। পুতিন বিশ্ব মঞ্চে নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রিগোঝিনকে কাজে লাগান।
২০১৪ সালে ভাগনার প্রতিষ্ঠা হয়। তবে ২০২২ সালে ভাগনারকে বেসরকারি সেনা সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত করা হয়। প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার অভিজাত সৈন্য ও বিশেষ বাহিনী থেকে ভাগনারের ভাড়াটে সেনা নিয়োগ দেওয়া হতো। ধারণা করা হতো সে দলে প্রায় ৫ হাজার সদস্য আছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার কারাগারে বন্দীদের ক্ষমা করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নিয়োগ দেয়। জুনে এই বাহিনীর যোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ হাজারে।
ভাগনার বাহিনী চুক্তিতে সিরিয়া ও মালি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও লিবিয়ার মতো দেশগুলোতেও অভিযান চালাচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুলাইয়ে বেলারুশে থাকা কালীন ভাগনারের ভাড়াটে সেনাদলের উদ্দেশ্যে বলেছিল, ‘আমরা তৈরি হব, নিজেদের আরও উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাব ও নতুন এক পথ আফ্রিকার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ব।’
২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে পশ্চিম আফ্রিকার মালিতে প্রায় এক হাজার ভাগনার যোদ্ধা নিয়োজিত আছে। বিভিন্ন অস্ত্রধারী ইসলামি দলগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য জাতি সংঘ ও ফঁরাসি শান্তিরক্ষী বাহিনীর পরিবর্তে তাঁদের আনা হয়েছিল।
সম্প্রতি এক ভিডিও রেকর্ডিংয়ে প্রিগোঝিন বলেন, ‘আমরা আইএসআইএস, আল–কায়দা ও অন্যান্য দস্যু বাহিনীর জীবন দুঃস্বপ্নে পরিণত করে দিচ্ছি।’
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে আনুমানিক এক হাজার ভাগনার যোদ্ধা আছে। যুক্তরাজ্য সরকার বলেন, তাঁরা অফিসার্স ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি নামক এক সংস্থার আড়ালে কাজ করে।
২০১৭ সাল থেকে ভাগনারের সুদানে অভিযান চালানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেখানে তাঁরা সেনা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ও বিক্ষোভকারীদের দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করেছিল। তখন সুদানের সরকার প্রিগোঝিনকে এম–ইনভেস্ট নামের এক সংস্থার মাধ্যমে সুদানের স্বর্ণ খনি খাতে বিশেষ সুবিধা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
লিবিয়াতে ভাগনার বাহিনী জেনারেল খলিফা হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে। এমনকি ২০১৫ সাল থেকে তাঁরা সিরিয়াতেও সরকারপন্থীদের সহায়তা করছে ও তেলক্ষেত্র পাহারা দিচ্ছে।
ইউক্রেনে আগ্রাসন দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে রূপ নেওয়ায় মস্কো যুদ্ধে অভিজ্ঞ ভাগনারকে মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ভাগনারের ভাড়াটে সেনাদল গত মে মাসে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের এক শহর বাখমুত দখলে বেশ সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। ইউক্রেনের বাহিনী বলছে, খোলা ময়দানে ভাগনার সেনারা সংঘবদ্ধভাবে ঘনঘন আক্রমণ করছিল। এতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ যুদ্ধের সময় কম অস্ত্র সরবরাহের জন্য প্রিগোঝিন বারবার রুশ সেনাপ্রধান ভ্যালারি গ্যারাসিমভ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্গেই শইগুর সমালোচনা করেছিলেন। এক পর্যায়ে গত জুনে প্রায় ৫ হাজার ভাগনার সেনা নিয়ে প্রিগোঝিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিদ্রোহ করেন।
২৪ জুন প্রিগোঝিন দাবি করেন, রোস্তভ শহরের দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাঁর বাহিনী মস্কোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। পরে মধ্যরাতে তার টেলিগ্রাম চ্যানেলের বার্তা থেকে জানা গেল, রক্তপাত এড়াতে বিদ্রোহের অবসান হয়েছে। পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থেকে সরে দাঁড়ায় ভাগনার। সেই সঙ্গে গ্রুপটির প্রধান প্রিগোঝিন বেলারুশে চলে যাবেন বলেও জানান।
তবে দুই দশকের শাসনামলে এমন বিদ্রোহের মুখোমুখি হননি সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও ভাগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিনের ৩৬ ঘণ্টার এই বিদ্রোহ জ্বলে ওঠার আগেই নিভে গিয়েছিল।
এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পরই ব্রিটিশ এমপি এবং যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স ডিফেন্স সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান টবিয়াস এলউড প্রিগোঝিনের জীবনের শঙ্কার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘যদি আমি তাঁর জায়গায় থাকতাম, তবে আমি কী খাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি—সেসব বিষয়ে অনেক সতর্ক থাকতাম।’
যেকোনো বিরোধী কণ্ঠকে পুতিন নিজেই চেপে ধরেন মন্তব্য করে টবিয়াস বলেছিলেন, ‘তিনি (পুতিন) নিশ্চিতভাবে নীলনকশা করবেন।’
বিদ্রোহের পরও ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৯ জুন প্রিগোঝিনকে নিজ দপ্তরে ডেকে নিয়ে সাক্ষাৎ করেছিলেন বলে খবর বের হয়। অনেক কানাঘুষা শোনা গেলেও দুই পক্ষের কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলেনি। সমঝোতা অনুযায়ী, প্রিগোঝিন ও ভাগনারের যোদ্ধাদের একাংশের বেলারুশে থাকার কথা হলেও প্রিগোঝিন মস্কোতেই ছিলেন বলে অনেকে আশংকা প্রকাশ করছিলেন।
তবে এরপর প্রিগোঝিনকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এর মধ্য গতকাল এক বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভাগনার সংশ্লিষ্টরা। সেখানে যাত্রীর তালিকায় প্রিগোঝিনও ছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ভাগনারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোনের বরাত দিয়ে তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাশিয়ার সৈন্যরা প্রিগোঝিনকে বহনকারী এমব্রেয়ার লিগ্যাসি ৬০০ মডেলের বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
বিবিসি ও রয়টার্স অবলম্বনে সানজিদা কাওছার ঋতু
রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনী ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। ওই ফ্লাইটের ১০ আরোহীর তালিকায় তার নাম ছিল এবং তাঁদের কেউ যে এখন বেঁচে নেই-এটুকু এখন পর্যন্ত নিশ্চিত। প্রিগোঝিন নিহত হয়েছেন কিনা জানতে অপেক্ষা করতে হবে। তবে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকলে ভাগনারের কি হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রিগোঝিন না থাকলে ভাগনার বর্তমান রূপে টিকে না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। ভাগনারের প্রতিনিধি হিসেবে একমাত্র প্রিগোঝিনই সৈনিকের পোশাক পরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘনঘন ভাগনারের টেলিগ্রাম চ্যানেলে হাজির হতেন। প্রিগোঝিনের ভাগনারপ্রধান হয়ে উঠার ঘটনাক্রম এবং ক্যামেরায় নিজের উপস্থিতির ধরন তাঁর সর্বেসর্বা হওয়ার পাশাপাশি পর্দার আড়ালে তাঁর গড়ে তোলা ‘জটিল নেটওয়ার্কের’ ইঙ্গিত দেয়। প্রিগোঝিনের মৃত্যু হলে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়তে পারে ভাগনার।
মালি থেকে মধ্যপ্রাচ্য এমন কোনো অঞ্চল বাদ নেই যেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক পাচকের ব্যক্তিগত যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। তাঁর এই কৃতিত্বের কারণেই ভাগনার পশ্চিম আফ্রিকার অন্তত সাতটি দেশে সফলভাবে তাবু গাঁড়তে পেরেছে।
বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদক ফ্রাংক গার্ডনারের মতে, হাজার হাজার ভাড়াটে সৈন্যের এই বাহিনী প্রিগোঝিনকে যেমন বিশ্বাস করেন, তেমনি তাকে ভক্তিও করেন। তাঁর ব্যক্তিগত ক্যারিশমা শুধু যে রাশিয়ার সেনা অধিনায়কদের ভিন্ন তা নয়, প্রচলিত সামরিক বাহিনীর মধ্যে কাঠামোর মধ্যেই এমন ভক্তির ব্যাপার নেই। এই পরিস্থিতিই প্রমাণ করে, ভাগনারপ্রধান হিসেবে তাঁর বিকল্প মেলা বেশ কঠিন হবে।
একজন ধনী ব্যবসায়ী ও অপরাধী হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে প্রিগোঝিন ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল পাচক হিসেবে। তিনি ‘হট ডগ’সহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করে বিক্রি করতেন। তার সুনামের জন্য ক্রেমলিন তাকে পুতিনের খাবার সরবরাহের কাজ দেয়। এরপর তাকে ‘পুতিনের পাচক’ বলে ডাকা হতো। তবে পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খাবার থেকে ক্ষমতার সম্পর্কে উন্নীত হয়, তিনি পুতিনের বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। এভাবেই তার ভাড়াটে বাহিনী গঠন শুরু হয়। পুতিন বিশ্ব মঞ্চে নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রিগোঝিনকে কাজে লাগান।
২০১৪ সালে ভাগনার প্রতিষ্ঠা হয়। তবে ২০২২ সালে ভাগনারকে বেসরকারি সেনা সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত করা হয়। প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার অভিজাত সৈন্য ও বিশেষ বাহিনী থেকে ভাগনারের ভাড়াটে সেনা নিয়োগ দেওয়া হতো। ধারণা করা হতো সে দলে প্রায় ৫ হাজার সদস্য আছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার কারাগারে বন্দীদের ক্ষমা করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নিয়োগ দেয়। জুনে এই বাহিনীর যোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫ হাজারে।
ভাগনার বাহিনী চুক্তিতে সিরিয়া ও মালি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও লিবিয়ার মতো দেশগুলোতেও অভিযান চালাচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুলাইয়ে বেলারুশে থাকা কালীন ভাগনারের ভাড়াটে সেনাদলের উদ্দেশ্যে বলেছিল, ‘আমরা তৈরি হব, নিজেদের আরও উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাব ও নতুন এক পথ আফ্রিকার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ব।’
২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে পশ্চিম আফ্রিকার মালিতে প্রায় এক হাজার ভাগনার যোদ্ধা নিয়োজিত আছে। বিভিন্ন অস্ত্রধারী ইসলামি দলগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য জাতি সংঘ ও ফঁরাসি শান্তিরক্ষী বাহিনীর পরিবর্তে তাঁদের আনা হয়েছিল।
সম্প্রতি এক ভিডিও রেকর্ডিংয়ে প্রিগোঝিন বলেন, ‘আমরা আইএসআইএস, আল–কায়দা ও অন্যান্য দস্যু বাহিনীর জীবন দুঃস্বপ্নে পরিণত করে দিচ্ছি।’
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে আনুমানিক এক হাজার ভাগনার যোদ্ধা আছে। যুক্তরাজ্য সরকার বলেন, তাঁরা অফিসার্স ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি নামক এক সংস্থার আড়ালে কাজ করে।
২০১৭ সাল থেকে ভাগনারের সুদানে অভিযান চালানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেখানে তাঁরা সেনা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ও বিক্ষোভকারীদের দমনে নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করেছিল। তখন সুদানের সরকার প্রিগোঝিনকে এম–ইনভেস্ট নামের এক সংস্থার মাধ্যমে সুদানের স্বর্ণ খনি খাতে বিশেষ সুবিধা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
লিবিয়াতে ভাগনার বাহিনী জেনারেল খলিফা হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে। এমনকি ২০১৫ সাল থেকে তাঁরা সিরিয়াতেও সরকারপন্থীদের সহায়তা করছে ও তেলক্ষেত্র পাহারা দিচ্ছে।
ইউক্রেনে আগ্রাসন দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে রূপ নেওয়ায় মস্কো যুদ্ধে অভিজ্ঞ ভাগনারকে মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ভাগনারের ভাড়াটে সেনাদল গত মে মাসে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের এক শহর বাখমুত দখলে বেশ সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। ইউক্রেনের বাহিনী বলছে, খোলা ময়দানে ভাগনার সেনারা সংঘবদ্ধভাবে ঘনঘন আক্রমণ করছিল। এতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ যুদ্ধের সময় কম অস্ত্র সরবরাহের জন্য প্রিগোঝিন বারবার রুশ সেনাপ্রধান ভ্যালারি গ্যারাসিমভ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্গেই শইগুর সমালোচনা করেছিলেন। এক পর্যায়ে গত জুনে প্রায় ৫ হাজার ভাগনার সেনা নিয়ে প্রিগোঝিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিদ্রোহ করেন।
২৪ জুন প্রিগোঝিন দাবি করেন, রোস্তভ শহরের দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাঁর বাহিনী মস্কোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। পরে মধ্যরাতে তার টেলিগ্রাম চ্যানেলের বার্তা থেকে জানা গেল, রক্তপাত এড়াতে বিদ্রোহের অবসান হয়েছে। পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থেকে সরে দাঁড়ায় ভাগনার। সেই সঙ্গে গ্রুপটির প্রধান প্রিগোঝিন বেলারুশে চলে যাবেন বলেও জানান।
তবে দুই দশকের শাসনামলে এমন বিদ্রোহের মুখোমুখি হননি সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও ভাগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিনের ৩৬ ঘণ্টার এই বিদ্রোহ জ্বলে ওঠার আগেই নিভে গিয়েছিল।
এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পরই ব্রিটিশ এমপি এবং যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স ডিফেন্স সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান টবিয়াস এলউড প্রিগোঝিনের জীবনের শঙ্কার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘যদি আমি তাঁর জায়গায় থাকতাম, তবে আমি কী খাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি—সেসব বিষয়ে অনেক সতর্ক থাকতাম।’
যেকোনো বিরোধী কণ্ঠকে পুতিন নিজেই চেপে ধরেন মন্তব্য করে টবিয়াস বলেছিলেন, ‘তিনি (পুতিন) নিশ্চিতভাবে নীলনকশা করবেন।’
বিদ্রোহের পরও ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৯ জুন প্রিগোঝিনকে নিজ দপ্তরে ডেকে নিয়ে সাক্ষাৎ করেছিলেন বলে খবর বের হয়। অনেক কানাঘুষা শোনা গেলেও দুই পক্ষের কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলেনি। সমঝোতা অনুযায়ী, প্রিগোঝিন ও ভাগনারের যোদ্ধাদের একাংশের বেলারুশে থাকার কথা হলেও প্রিগোঝিন মস্কোতেই ছিলেন বলে অনেকে আশংকা প্রকাশ করছিলেন।
তবে এরপর প্রিগোঝিনকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এর মধ্য গতকাল এক বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ভাগনার সংশ্লিষ্টরা। সেখানে যাত্রীর তালিকায় প্রিগোঝিনও ছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ভাগনারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোনের বরাত দিয়ে তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, রাশিয়ার সৈন্যরা প্রিগোঝিনকে বহনকারী এমব্রেয়ার লিগ্যাসি ৬০০ মডেলের বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
বিবিসি ও রয়টার্স অবলম্বনে সানজিদা কাওছার ঋতু
ইউক্রেনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, রাশিয়ার এ ধরনের আক্রমণকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে—যেমনটি ইসরায়েল উত্তর গাজাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে হয়েছে।
১ দিন আগেট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
১ দিন আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
২ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৩ দিন আগে