তাহমিদ লাবিব
দেউলিয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কা। মুদ্রাস্ফীতি, বাজারে পণ্য-জ্বালানির সংকট, বিদ্যুৎবিহীন শহর সব মিলিয়ে চরম সংকটে রয়েছে এই দেশ। শ্রীলঙ্কার এই বিপর্যয় এক দিনে হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে বোনা হয়েছে এই সংকটের বীজ। এর মাঝে রয়েছে অদূরদর্শী ঋণ, অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রজেক্ট, কোনো রকম যাচাই-বাছাই, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়াই নীতিনির্ধারণ।
সময় ধরে এগোতে শুরু করলে এ সংকটের শুরুটা হয় ২০০৬ সাল থেকে। ২০০৬ সাল থেকে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণ ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০০০-২০০৫ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ২২ শতাংশ। ২০০৬-২০১২ পর্যন্ত সময়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয় ২০১ শতাংশ। অর্থনীতি চালানোর জন্য শ্রীলঙ্কার সার্বভৌম বন্ডের ওপর নির্ভরশীলতার প্রবণতা শুরু হয় ২০০৭ সাল থেকে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, ২০০৮ ও ২০১৩ সাল ব্যতীত ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরই শ্রীলঙ্কা সার্বভৌম বন্ড বিক্রি করেছে। শ্রীলঙ্কার বর্তমান অবস্থার জন্য প্রায়ই চীনের দায় শোনা গেলেও শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের মাত্র ১০ শতাংশ চীনের কাছে। কিন্তু ঋণের ৪৭ শতাংশ এই সার্বভৌম বন্ডের জন্য। এমনকি এই বন্ডের ঋণ শোধ করার জন্যও বন্ড বিক্রির মতো ঘটনা ঘটছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে। ২০০৯ সালে বন্ড বিক্রি করে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ করে শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ২০০৭ সালে সার্বভৌম বন্ডের ঋণ শোধ করতে ৩০০ মিলিয়ন ডলারই ব্যয় করা হয় বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বৈদেশিক ঋণ মানেই বোঝা নয়। উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ঋণ হতে হবে সুচিন্তিত, সুদের হার ও ঋণের শর্তগুলো পর্যালোচনা করে ঋণ নিলে এবং তার সঠিক প্রয়োগ করলে গ্রহীতা দেশই লাভবান হয়। বাংলাদেশেই বৈদেশিক ঋণ সহায়তায় গোমতী সেতু, মেঘনা সেতুর মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।
শ্রীলঙ্কার সংকট তৈরিতে অন্যতম ভূমিকা পালন করছে অপ্রয়োজনীয় ও অদূরদর্শী মেগা প্রকল্প। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর এবং কলম্বো বন্দরনগরী। ২০০২ সালে একটি কানাডীয় কোম্পানিকে দিয়ে হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্রবন্দরের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ২০০৩ সালে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন জমা দিলে শ্রীলঙ্কার বন্দর কর্তৃপক্ষ মতামত দেয়, এই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পুরোনো উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তারা নতুন বন্দর না করে কলম্বো বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করে। ২০০৫ সালে মাহেন্দা রাজাপক্ষে ক্ষমতার এলে পুনরায় প্রকল্প চালু করেন। ২০০৭ সালে চীনের কাছ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ সুদে ৩০৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে এ প্রকল্প শুরু করা হয়। চুক্তি মোতাবেক কাজ দেওয়া হয় চীনা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ২০১০ সালে বন্দরের কাজ শেষ হয়। কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল না পাওয়ায় ২০১২ সালে দ্বিতীয় ধাপে এ বন্দরের সম্প্রসারণ করা হয়। এ কাজের জন্য চীনের কাছ থেকে পুনরায় ২ শতাংশ হার সুদে ৭৫৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় শ্রীলঙ্কা। শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় দুটি চীনা কোম্পানি ৩৫ বছরের জন্য এ বন্দরের ৬৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক হবে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, দ্বিতীয় ধাপের সম্প্রসারণ শেষেও বন্দরটি লাভের মুখ দেখেনি। কোনো বাণিজ্যিক জাহাজ এই বন্দরে ভিড়তে চায় না। ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই বন্দরে জাহাজ এসেছে মাত্র ১৫৯৩টি। অন্যদিকে কলম্বো বন্দরে এই সময়ে জাহাজ এসেছে ৩৬ হাজার ৮৬৩টি। ব্যয়বহুল এই মেগা প্রকল্প থেকে কোনো রকমের লাভ না হওয়ায় ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভায় বন্দরটিকে চীনের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) চুক্তির আওতায় বন্দরের ৭০ শতাংশ চীনের কাছে ইজারা দেওয়া হয় এবং ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক হিসেবে থাকে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে ১২০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর ৯৯ বছরের জন্য ইজারা নেয় চীন।
আকারে ছোট দেশগুলোকে অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। আমদানি ব্যয় মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নির্ভর করতে হয়। এই রিজার্ভের উৎস দেশভেদে ভিন্ন হয়। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস যদি সীমিত হয় বা কোনো নির্দিষ্ট একটি উৎসের ওপর অতি নির্ভরশীলতা গড়ে ওঠে, তবে যেকোনো সময় সংকটে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। শ্রীলঙ্কার এই নির্ভরশীলতা গড়ে ওঠে তার পর্যটন খাত ও রেমিট্যান্সের ওপর ভিত্তি করে। ২০১৯ সালে সিরিজ বোমা হামলা ও ২০২০ সালে করোনা মহামারির ফলে পর্যটন খাতের আয় সংকুচিত হয় ৮৬ শতাংশ। কোভিড মহামারিতে ২০২০ সালে রেমিট্যান্স বাড়লেও সেটি ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। ২০২১ সালে এটি আবার প্রায় ২২ দশমিক ৬ শতাংশ কমে। বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমার ঋণের ভার ও আমদানি ব্যয়ের চাপে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকুচিত হতে থাকে।
ভুল সময়ে ভুল নীতিনির্ধারণ, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া খামখেয়ালি নীতিনির্ধারণ ভঙ্গুর অর্থনীতিকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। বৈদেশিক আয় কমে যাওয়ায়, আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাওয়া শ্রীলঙ্কা আমদানি ব্যয় সংকোচের জন্য কোনো ধরনের পর্যালোচনা ছাড়াই রাসায়নিক সারের আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। সুস্বাস্থ্যের জন্য ‘অরগানিক ফার্মিং’ স্লোগান তোলে। কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই সার আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কার কৃষি খাত ও খাদ্যনিরাপত্তা। চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ শ্রীলঙ্কাকে চাল আমদানি শুরু করতে হয়, দাম বেড়ে যায় কৃষিজাত পণ্যের। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে খাদ্য আমদানি বাড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ কি উদ্বিগ্ন হবে?
বর্তমানে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণ তার জিডিপির ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণ তার জিডিপির ৬০ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের মতে, কোনো দেশের মোট বৈদেশিক ঋণ তার জিডিপির ৪০ শতাংশ বা তার বেশি হলে তা উদ্বেগজনক। এ হিসাবে বাংলাদেশের এ নিয়ে এখনই উদ্বেগে ভোগার কারণ নেই। তবে সতর্ক হওয়া যেতে পারে। শ্রীলঙ্কার সংকট থেকে শুধু বাংলাদেশ কেন, সবারই সতর্ক হওয়া উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশে একাধিক মেগা প্রকল্প চলমান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঢাকার মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারাবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেল, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল। এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে একমাত্র পদ্মা সেতু ছাড়া বাকি প্রকল্পগুলো চলছে বৈদেশিক সহায়তায়। এর মধ্যে মেট্রোরেলে ৭১, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৮০ ও মাতারাবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৮৫ শতাংশ ঋণ সহায়তায় হচ্ছে। এ প্রকল্পগুলো থেকে আয় প্রাক্কলনের চেয়ে কম হয়। প্রকল্পগুলো যদি লাভজনক না হয়, তবে এই প্রকল্পগুলো দেশের অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাজেট ঘাটতির অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের মধ্যে অন্যতম হলো অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এক্সটার্নাল ডেবট (বিডব্লিউজিইডি) গত মার্চে সরকারি উপাত্ত ব্যবহার করে দেখিয়েছে, বাংলাদেশে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এসবের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে গিয়ে প্রতিবছর লোকসান হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিপিডিবি ৩৭টি কোম্পানিকে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করেছে। বর্তমান মূল্যে বিদ্যুৎ বিক্রি করার পরও এই ব্যয়ের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিপিডিবির বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা, যা বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) একটি গবেষণার তথ্যমতে, গত এক দশকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদই খরচ হয়েছে প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা। এই অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো গেলে তা ঋণের পরিমাণ কমাতে ও অন্য খাতে ব্যয় বাড়াতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে খাদ্যাভাব না থাকলেও মুদ্রাস্ফীতি, দারিদ্র্য, বেকারত্ব বৃদ্ধিসহ নানা কারণে মানুষ ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে। বর্তমানে রেকর্ড পরিমাণ চাল মজুত থাকলেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সরকারি তথ্যমতে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে আমদানি করা খাদ্যশস্যের পরিমাণ ছিল ৩৪ লাখ ৫৪ হাজার টন। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৬ লাখ ৫৬ হাজার টনে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে আমদানি নির্ভরশীলতা ছিল মাত্র ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ হার বেড়ে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ থেকে দৃশ্যমান হয়, খাদ্যশস্যের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরশীলতা বাড়ছে।
বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য মাত্র দুটি খাতের ওপর অতিনির্ভরশীল। এগুলো হলো গার্মেন্টস শিল্প ও রেমিট্যান্স। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ আসে গার্মেন্টস শিল্প থেকে। একটি খাতের ওপর এই অতিনির্ভরশীলতাকে বিপজ্জনক বলছেন অর্থনীতিবিদেরা। কোনো কারণে এই খাত সংকুচিত হলে তা পুরো অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি করবে। এ কারণে অর্থনীতিবিদেরা বারবার রপ্তানি আয়ের উৎসকে বহুমুখী করার তাগিদ দিয়ে আসছেন।
বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার মতো সংকট হওয়ার আপাতত আশঙ্কা না থাকলেও অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাড়তে থাকলে তা উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে। একই সঙ্গে মনে রাখা জরুরি যে, সব দেশের অর্থনৈতিক সংকট একই রকম হয় না। শ্রীলঙ্কার মতো সংকট হওয়ার আশঙ্কা না থাকলেও অর্থনীতিতে অন্য কোনো সংকট রয়েছে কি না, তার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
লেখক: শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস
ঋণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
দেউলিয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কা। মুদ্রাস্ফীতি, বাজারে পণ্য-জ্বালানির সংকট, বিদ্যুৎবিহীন শহর সব মিলিয়ে চরম সংকটে রয়েছে এই দেশ। শ্রীলঙ্কার এই বিপর্যয় এক দিনে হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে বোনা হয়েছে এই সংকটের বীজ। এর মাঝে রয়েছে অদূরদর্শী ঋণ, অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রজেক্ট, কোনো রকম যাচাই-বাছাই, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়াই নীতিনির্ধারণ।
সময় ধরে এগোতে শুরু করলে এ সংকটের শুরুটা হয় ২০০৬ সাল থেকে। ২০০৬ সাল থেকে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণ ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০০০-২০০৫ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ২২ শতাংশ। ২০০৬-২০১২ পর্যন্ত সময়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয় ২০১ শতাংশ। অর্থনীতি চালানোর জন্য শ্রীলঙ্কার সার্বভৌম বন্ডের ওপর নির্ভরশীলতার প্রবণতা শুরু হয় ২০০৭ সাল থেকে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, ২০০৮ ও ২০১৩ সাল ব্যতীত ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরই শ্রীলঙ্কা সার্বভৌম বন্ড বিক্রি করেছে। শ্রীলঙ্কার বর্তমান অবস্থার জন্য প্রায়ই চীনের দায় শোনা গেলেও শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের মাত্র ১০ শতাংশ চীনের কাছে। কিন্তু ঋণের ৪৭ শতাংশ এই সার্বভৌম বন্ডের জন্য। এমনকি এই বন্ডের ঋণ শোধ করার জন্যও বন্ড বিক্রির মতো ঘটনা ঘটছে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে। ২০০৯ সালে বন্ড বিক্রি করে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ করে শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ২০০৭ সালে সার্বভৌম বন্ডের ঋণ শোধ করতে ৩০০ মিলিয়ন ডলারই ব্যয় করা হয় বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বৈদেশিক ঋণ মানেই বোঝা নয়। উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ঋণ হতে হবে সুচিন্তিত, সুদের হার ও ঋণের শর্তগুলো পর্যালোচনা করে ঋণ নিলে এবং তার সঠিক প্রয়োগ করলে গ্রহীতা দেশই লাভবান হয়। বাংলাদেশেই বৈদেশিক ঋণ সহায়তায় গোমতী সেতু, মেঘনা সেতুর মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।
শ্রীলঙ্কার সংকট তৈরিতে অন্যতম ভূমিকা পালন করছে অপ্রয়োজনীয় ও অদূরদর্শী মেগা প্রকল্প। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর এবং কলম্বো বন্দরনগরী। ২০০২ সালে একটি কানাডীয় কোম্পানিকে দিয়ে হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্রবন্দরের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ২০০৩ সালে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন জমা দিলে শ্রীলঙ্কার বন্দর কর্তৃপক্ষ মতামত দেয়, এই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পুরোনো উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তারা নতুন বন্দর না করে কলম্বো বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করে। ২০০৫ সালে মাহেন্দা রাজাপক্ষে ক্ষমতার এলে পুনরায় প্রকল্প চালু করেন। ২০০৭ সালে চীনের কাছ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ সুদে ৩০৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে এ প্রকল্প শুরু করা হয়। চুক্তি মোতাবেক কাজ দেওয়া হয় চীনা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ২০১০ সালে বন্দরের কাজ শেষ হয়। কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল না পাওয়ায় ২০১২ সালে দ্বিতীয় ধাপে এ বন্দরের সম্প্রসারণ করা হয়। এ কাজের জন্য চীনের কাছ থেকে পুনরায় ২ শতাংশ হার সুদে ৭৫৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় শ্রীলঙ্কা। শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় দুটি চীনা কোম্পানি ৩৫ বছরের জন্য এ বন্দরের ৬৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক হবে।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, দ্বিতীয় ধাপের সম্প্রসারণ শেষেও বন্দরটি লাভের মুখ দেখেনি। কোনো বাণিজ্যিক জাহাজ এই বন্দরে ভিড়তে চায় না। ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই বন্দরে জাহাজ এসেছে মাত্র ১৫৯৩টি। অন্যদিকে কলম্বো বন্দরে এই সময়ে জাহাজ এসেছে ৩৬ হাজার ৮৬৩টি। ব্যয়বহুল এই মেগা প্রকল্প থেকে কোনো রকমের লাভ না হওয়ায় ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভায় বন্দরটিকে চীনের কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) চুক্তির আওতায় বন্দরের ৭০ শতাংশ চীনের কাছে ইজারা দেওয়া হয় এবং ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক হিসেবে থাকে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে ১২০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর ৯৯ বছরের জন্য ইজারা নেয় চীন।
আকারে ছোট দেশগুলোকে অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। আমদানি ব্যয় মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নির্ভর করতে হয়। এই রিজার্ভের উৎস দেশভেদে ভিন্ন হয়। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস যদি সীমিত হয় বা কোনো নির্দিষ্ট একটি উৎসের ওপর অতি নির্ভরশীলতা গড়ে ওঠে, তবে যেকোনো সময় সংকটে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। শ্রীলঙ্কার এই নির্ভরশীলতা গড়ে ওঠে তার পর্যটন খাত ও রেমিট্যান্সের ওপর ভিত্তি করে। ২০১৯ সালে সিরিজ বোমা হামলা ও ২০২০ সালে করোনা মহামারির ফলে পর্যটন খাতের আয় সংকুচিত হয় ৮৬ শতাংশ। কোভিড মহামারিতে ২০২০ সালে রেমিট্যান্স বাড়লেও সেটি ছিল মাত্র ৫ শতাংশ। ২০২১ সালে এটি আবার প্রায় ২২ দশমিক ৬ শতাংশ কমে। বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমার ঋণের ভার ও আমদানি ব্যয়ের চাপে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকুচিত হতে থাকে।
ভুল সময়ে ভুল নীতিনির্ধারণ, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া খামখেয়ালি নীতিনির্ধারণ ভঙ্গুর অর্থনীতিকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে। বৈদেশিক আয় কমে যাওয়ায়, আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাওয়া শ্রীলঙ্কা আমদানি ব্যয় সংকোচের জন্য কোনো ধরনের পর্যালোচনা ছাড়াই রাসায়নিক সারের আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। সুস্বাস্থ্যের জন্য ‘অরগানিক ফার্মিং’ স্লোগান তোলে। কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই সার আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কার কৃষি খাত ও খাদ্যনিরাপত্তা। চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ শ্রীলঙ্কাকে চাল আমদানি শুরু করতে হয়, দাম বেড়ে যায় কৃষিজাত পণ্যের। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে খাদ্য আমদানি বাড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ কি উদ্বিগ্ন হবে?
বর্তমানে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণ তার জিডিপির ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণ তার জিডিপির ৬০ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের মতে, কোনো দেশের মোট বৈদেশিক ঋণ তার জিডিপির ৪০ শতাংশ বা তার বেশি হলে তা উদ্বেগজনক। এ হিসাবে বাংলাদেশের এ নিয়ে এখনই উদ্বেগে ভোগার কারণ নেই। তবে সতর্ক হওয়া যেতে পারে। শ্রীলঙ্কার সংকট থেকে শুধু বাংলাদেশ কেন, সবারই সতর্ক হওয়া উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশে একাধিক মেগা প্রকল্প চলমান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঢাকার মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারাবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেল, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল। এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে একমাত্র পদ্মা সেতু ছাড়া বাকি প্রকল্পগুলো চলছে বৈদেশিক সহায়তায়। এর মধ্যে মেট্রোরেলে ৭১, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৮০ ও মাতারাবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৮৫ শতাংশ ঋণ সহায়তায় হচ্ছে। এ প্রকল্পগুলো থেকে আয় প্রাক্কলনের চেয়ে কম হয়। প্রকল্পগুলো যদি লাভজনক না হয়, তবে এই প্রকল্পগুলো দেশের অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাজেট ঘাটতির অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের মধ্যে অন্যতম হলো অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এক্সটার্নাল ডেবট (বিডব্লিউজিইডি) গত মার্চে সরকারি উপাত্ত ব্যবহার করে দেখিয়েছে, বাংলাদেশে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এসবের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে গিয়ে প্রতিবছর লোকসান হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিপিডিবি ৩৭টি কোম্পানিকে ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করেছে। বর্তমান মূল্যে বিদ্যুৎ বিক্রি করার পরও এই ব্যয়ের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিপিডিবির বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা, যা বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) একটি গবেষণার তথ্যমতে, গত এক দশকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদই খরচ হয়েছে প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা। এই অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো গেলে তা ঋণের পরিমাণ কমাতে ও অন্য খাতে ব্যয় বাড়াতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে খাদ্যাভাব না থাকলেও মুদ্রাস্ফীতি, দারিদ্র্য, বেকারত্ব বৃদ্ধিসহ নানা কারণে মানুষ ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে। বর্তমানে রেকর্ড পরিমাণ চাল মজুত থাকলেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সরকারি তথ্যমতে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে আমদানি করা খাদ্যশস্যের পরিমাণ ছিল ৩৪ লাখ ৫৪ হাজার টন। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৬ লাখ ৫৬ হাজার টনে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে আমদানি নির্ভরশীলতা ছিল মাত্র ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ হার বেড়ে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ থেকে দৃশ্যমান হয়, খাদ্যশস্যের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরশীলতা বাড়ছে।
বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের জন্য মাত্র দুটি খাতের ওপর অতিনির্ভরশীল। এগুলো হলো গার্মেন্টস শিল্প ও রেমিট্যান্স। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ আসে গার্মেন্টস শিল্প থেকে। একটি খাতের ওপর এই অতিনির্ভরশীলতাকে বিপজ্জনক বলছেন অর্থনীতিবিদেরা। কোনো কারণে এই খাত সংকুচিত হলে তা পুরো অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি করবে। এ কারণে অর্থনীতিবিদেরা বারবার রপ্তানি আয়ের উৎসকে বহুমুখী করার তাগিদ দিয়ে আসছেন।
বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার মতো সংকট হওয়ার আপাতত আশঙ্কা না থাকলেও অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাড়তে থাকলে তা উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে। একই সঙ্গে মনে রাখা জরুরি যে, সব দেশের অর্থনৈতিক সংকট একই রকম হয় না। শ্রীলঙ্কার মতো সংকট হওয়ার আশঙ্কা না থাকলেও অর্থনীতিতে অন্য কোনো সংকট রয়েছে কি না, তার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
লেখক: শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস
ঋণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
১২ দিন আগে