জাহাঙ্গীর আলম
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত যেকোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অন্য অনেকের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারের সমর্থক এবং বিরোধীদলীয় সদস্যরা এর অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের ব্যক্তিদের নিকটতম পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা দেশে এখন ব্যাপক আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি—সব পক্ষই এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলবে বলে মনে করছে তারা।
এই ভিসা নীতি এর আগে আরও কয়েকটি দেশেরও ওপর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যে লিবিয়া, সিরিয়াসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ রয়েছে। ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে’ যারা বাধা দেবে বা বাধা দিয়েছেন বলে প্রমাণিত হবে তাঁদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে অন্যতম নাইজেরিয়া, উগান্ডা ও সোমালিয়া। এসব দেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে নির্বাচনের পরে। আর বাংলাদেশে এই ভিসা নীতি ঘোষণা করা হলো নির্বাচনের অন্তত সাত মাস আগে।
তবে আফ্রিকার দেশগুলোতে নির্বাচনের পরে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলেও ‘গোপনীয়তা নীতির’ আওতায় নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির নাম জানানো হয়নি। এরই মধ্যে কেউ এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছেন—এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া এর সময়সীমা সম্পর্কেও কোনো কথা বলছে না যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। আফ্রিকার দেশগুলোতে এই নীতির প্রভাব সত্যিই পড়ছে কি না—সেটি দেখা যাক।
নাইজেরিয়া
নাইজেরিয়াতে ভিসা নিষেধাজ্ঞা একাধিকবারই দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ বাংলাদেশে ভিসা নীতি ঘোষণার ৯ দিন আগে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা পায় নাইজেরিয়া। সেখানে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের ভয় দেখানো, ভোটের ফলাফল কারচুপি ও গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৯ সালের নির্বাচনের এক মাস আগেও নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে বছর সাধারণ ও স্থানীয় দুই নির্বাচনের পর দুই দফায় কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল ‘গোপনীয়তার অধিকারের’ কথা বলে তাঁদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ওই ব্যক্তিদের কথা কেউ জানেন না। অনেকে মনে করেন, নাম প্রকাশ করলে হয়তো নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ত।
২০২৩ সালের নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে, ভোটারদের ভয় দেখানো হয়েছে, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেও হুমকি, সহিংসতার উসকানি দেওয়া হয়েছে। নাইজেরিয়ার প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বাস করেন। সেখান থেকেই অনেকে ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট দিয়েছে।
২০১৫ সালের অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল মুহাম্মদু বুহারি ছিলেন প্রধান দুই প্রার্থী। নির্বাচনকালে সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ভিসা দেওয়া বন্ধের হুমকি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। অনেকে মনে করেন এর প্রভাব নির্বাচনে পড়েছিল। কারণ, ২০১১ নির্বাচনে যেখানে দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতায় ৮০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল; সে তুলনায় ২০১৫-এর নির্বাচন শান্তিপূর্ণই হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগেই প্রেসিডেন্ট জনাথন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বুহারিকে বিজয়ী ঘোষণা করার সিদ্ধান্তও দেশব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।
তবে ২০১৯ সাল নাগাদ পশ্চিমের এই ভিসা নীতির ধার কমে আসে। নাইজেরিয়ার রাজনীতিকেরা পশ্চিমাদের বুড়ো আঙুল দেখাতে শুরু করেন। অবশ্য এর পেছনে রয়েছে ভূরাজনীতি। প্রথমত, তেল ও অন্যান্য খনিজ সমৃদ্ধ নাইজেরিয়া হলো আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতি। আফ্রিকায় সম্পদ এবং সামরিক শক্তির দিক থেকে সবচেয়ে বড় নিয়ামক। ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করলেও পশ্চিমের সঙ্গে নাইজেরিয়ার সম্পর্ক অম্ল-মধুর। বিপরীতে সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছে নাইজেরিয়া। নাইজেরিয়ার জ্বালানি তেলের বড় বাজার চীন। সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্কও দিন দিন বাড়ছে। ফলে আবুজায় পশ্চিমের প্রভাব যে ক্রমেই কমছে, তা স্পষ্ট। বলতে গেলে এ কারণেই, ২০২৩ সালের নির্বাচনে সহিংসতা প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভিসা নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজেই আসেনি।
সোমালিয়া
দারিদ্র্য, জঙ্গিবাদ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। এ দেশে রাজনৈতিক বিরোধ, অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা—এমন নানা কারণে নির্বাচন বারবার পিছিয়ে যায়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন হওয়ার কথা তা এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। দ্রুত ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য চাপ দিতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ার জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রে। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়াকে নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি বলে আখ্যায়িত করে বেশ কিছু সোমালি কর্মকর্তা ও ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু একই যুক্তিতে এবারও কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সোমালিয়ার নির্বাচনে নাগরিকদের সবার ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচন করেন। এর পরের ধাপে সেই সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। ২০২২ সালের মে মাসে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহামুদ ৩২৮ জন এমপির মধ্যে ২১৪ ভোট পেয়ে জিতেছেন। তবে প্রেসিডেন্ট এখন স্থানীয় নির্বাচনে জনগণের ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
সোমালিয়ায় আমেরিকার যথেষ্ট প্রভাব আছে। সোমালি ন্যাশনাল আর্মির (এসএনএ) প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৯ সালে পুনর্গঠিত এসএনএ দক্ষিণ সোমালিয়ায় ইসলামপন্থী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহায়তা পেয়েছে।
এ ছাড়া, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কও রয়েছে। সোমালিয়ায় খাদ্যপণ্য ও যন্ত্রপাতি রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্র। বিপরীতে সোমালিয়া মূল্যবান পাথর এবং সস্তায় কিছু পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে।
এসব কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা সোমালি রাজনীতিকদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। অনেক ক্ষেত্রে পশ্চিমা সাহায্যের জন্য নির্ভরশীল তো বটেই, রাজনীতিকদের অনেকের মার্কিন পাসপোর্ট আছে, তাঁদের পরিবার সেখানে থাকে। সোমালিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে।
কিন্তু ভোটাধিকার না থাকা ও রাজনীতিকদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সোমালিয়ার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের রাজনীতিকদের নিয়ন্ত্রণ করার মতো সামর্থ্য নেই। ক্ষমতাহীন অসহায় সাধারণ নাগরিকেরা রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছে। সেটি সোমালিয়ার রাজনীতিকেরাও যে বুঝতে পারছেন তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বর্তমানে সোমালিয়ার নির্বাচন ‘এক ব্যক্তি, এক ভোট’ নীতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
২০২৪ সাল থেকে সরাসরি সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রবর্তন এবং প্রেসিডেন্ট পদ্ধতিতে রূপান্তরের জন্য সরকার এবং ফেডারেটেড রাজ্যগুলোর মধ্যে গত রোববার (২৮ মে) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সোমালিয়ায় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় একটি সংশোধন এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
চুক্তিটি অবশ্য পার্লামেন্ট অনুমোদিত হতে হবে। চূড়ান্ত হলে ২০২৪ সালের ৩০ জুন স্থানীয় নির্বাচন এবং ৩০ নভেম্বর আঞ্চলিক পার্লামেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে।
১৯৬৯ সালে স্বৈরশাসক সিয়াদ ব্যারে ক্ষমতা দখল করার পর সরাসরি সর্বজনীন ভোটাধিকারের নীতিটি হর্ন অব আফ্রিকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। তাঁর পতনের পর সর্বজনীন ভোটাধিকার দিতে বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। হাসান শেখ মোহামুদ রোববার ফেডারেটেড রাজ্যের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ভীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, যেখানে আমরা ২০ বা ৩০ বছর ধরে আটকা পড়ে আছি। এই দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য এগিয়ে যেতে হবে। এক ব্যক্তি, এক ভোট নীতিতে ফেডারেল এবং রাজ্য উভয় পর্যায়েই নির্বাচন হবে।’
উগান্ডা
আফ্রিকার আরেক দেশ উগান্ডায় ১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনি। তরুণ মুসেভেনি একসময় পশ্চিমের সাহায্য সমর্থন পেয়েছেন। দেশের উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু পরে ক্রমেই কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছেন বলে মনে করেন অনেকে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে উগান্ডায় সাধারণ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থীদের ধারাবাহিকভাবে হয়রানি করা হয়েছে এবং কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করা হয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। কয়েক ডজন বিরোধী দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীগুলো দায়ী।
উগান্ডার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা যে একেবারে কাজ করেনি, এমন কিন্তু না। ২০২১ সালের জুনের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা তিবুহাব্রোয়া মুসেভেনি যে মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন সেখানে অনেকেই বাদ পড়েন। এমন অনেক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি আর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাননি, যাদের বিরুদ্ধে আগে থেকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
২০২১-২৬ মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা তিবুহাব্রোয়া মুসেভেনি যে মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছেন তাতে বাদ পড়েছেন ১১ জন প্রভাবশালী মন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিওয়ানুকা সেকান্দি, প্রধানমন্ত্রী রুহাকানা রুগুন্ডা, দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যাম কুটেসা প্রমুখ। যেখানে সেকান্দি টানা ১০ বছর ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর রুগুন্ডা ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরিবর্তন এসেছে অ্যাটর্নি জেনারেল পদেও। যিনি প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন।
যদিও মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর থেকে মন্ত্রী ও সরকারের প্রভাবশালীরা বলে আসছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি অত্যন্ত অস্পষ্ট।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, দ্য আফ্রিকা রিপোর্ট, উগান্ডার দ্য ইনডিপেনডেন্ট, আফ্রিকা নিউজ
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত যেকোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অন্য অনেকের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারের সমর্থক এবং বিরোধীদলীয় সদস্যরা এর অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের ব্যক্তিদের নিকটতম পরিবারের সদস্যরাও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতি নিয়ে আলোচনা দেশে এখন ব্যাপক আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি—সব পক্ষই এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলবে বলে মনে করছে তারা।
এই ভিসা নীতি এর আগে আরও কয়েকটি দেশেরও ওপর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যে লিবিয়া, সিরিয়াসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ রয়েছে। ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে’ যারা বাধা দেবে বা বাধা দিয়েছেন বলে প্রমাণিত হবে তাঁদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে অন্যতম নাইজেরিয়া, উগান্ডা ও সোমালিয়া। এসব দেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে নির্বাচনের পরে। আর বাংলাদেশে এই ভিসা নীতি ঘোষণা করা হলো নির্বাচনের অন্তত সাত মাস আগে।
তবে আফ্রিকার দেশগুলোতে নির্বাচনের পরে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলেও ‘গোপনীয়তা নীতির’ আওতায় নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির নাম জানানো হয়নি। এরই মধ্যে কেউ এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছেন—এমন তথ্যও পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া এর সময়সীমা সম্পর্কেও কোনো কথা বলছে না যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। আফ্রিকার দেশগুলোতে এই নীতির প্রভাব সত্যিই পড়ছে কি না—সেটি দেখা যাক।
নাইজেরিয়া
নাইজেরিয়াতে ভিসা নিষেধাজ্ঞা একাধিকবারই দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ বাংলাদেশে ভিসা নীতি ঘোষণার ৯ দিন আগে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা পায় নাইজেরিয়া। সেখানে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের ভয় দেখানো, ভোটের ফলাফল কারচুপি ও গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৯ সালের নির্বাচনের এক মাস আগেও নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে বছর সাধারণ ও স্থানীয় দুই নির্বাচনের পর দুই দফায় কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল ‘গোপনীয়তার অধিকারের’ কথা বলে তাঁদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ওই ব্যক্তিদের কথা কেউ জানেন না। অনেকে মনে করেন, নাম প্রকাশ করলে হয়তো নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ত।
২০২৩ সালের নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে, ভোটারদের ভয় দেখানো হয়েছে, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেও হুমকি, সহিংসতার উসকানি দেওয়া হয়েছে। নাইজেরিয়ার প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বাস করেন। সেখান থেকেই অনেকে ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট দিয়েছে।
২০১৫ সালের অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল মুহাম্মদু বুহারি ছিলেন প্রধান দুই প্রার্থী। নির্বাচনকালে সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ভিসা দেওয়া বন্ধের হুমকি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। অনেকে মনে করেন এর প্রভাব নির্বাচনে পড়েছিল। কারণ, ২০১১ নির্বাচনে যেখানে দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতায় ৮০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল; সে তুলনায় ২০১৫-এর নির্বাচন শান্তিপূর্ণই হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগেই প্রেসিডেন্ট জনাথন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বুহারিকে বিজয়ী ঘোষণা করার সিদ্ধান্তও দেশব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।
তবে ২০১৯ সাল নাগাদ পশ্চিমের এই ভিসা নীতির ধার কমে আসে। নাইজেরিয়ার রাজনীতিকেরা পশ্চিমাদের বুড়ো আঙুল দেখাতে শুরু করেন। অবশ্য এর পেছনে রয়েছে ভূরাজনীতি। প্রথমত, তেল ও অন্যান্য খনিজ সমৃদ্ধ নাইজেরিয়া হলো আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতি। আফ্রিকায় সম্পদ এবং সামরিক শক্তির দিক থেকে সবচেয়ে বড় নিয়ামক। ২০০১ সালের নাইন-ইলেভেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করলেও পশ্চিমের সঙ্গে নাইজেরিয়ার সম্পর্ক অম্ল-মধুর। বিপরীতে সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছে নাইজেরিয়া। নাইজেরিয়ার জ্বালানি তেলের বড় বাজার চীন। সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্কও দিন দিন বাড়ছে। ফলে আবুজায় পশ্চিমের প্রভাব যে ক্রমেই কমছে, তা স্পষ্ট। বলতে গেলে এ কারণেই, ২০২৩ সালের নির্বাচনে সহিংসতা প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভিসা নিষেধাজ্ঞা কোনো কাজেই আসেনি।
সোমালিয়া
দারিদ্র্য, জঙ্গিবাদ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। এ দেশে রাজনৈতিক বিরোধ, অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা—এমন নানা কারণে নির্বাচন বারবার পিছিয়ে যায়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন হওয়ার কথা তা এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। দ্রুত ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য চাপ দিতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ার জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রে। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়াকে নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি বলে আখ্যায়িত করে বেশ কিছু সোমালি কর্মকর্তা ও ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু একই যুক্তিতে এবারও কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সোমালিয়ার নির্বাচনে নাগরিকদের সবার ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচন করেন। এর পরের ধাপে সেই সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। ২০২২ সালের মে মাসে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহামুদ ৩২৮ জন এমপির মধ্যে ২১৪ ভোট পেয়ে জিতেছেন। তবে প্রেসিডেন্ট এখন স্থানীয় নির্বাচনে জনগণের ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
সোমালিয়ায় আমেরিকার যথেষ্ট প্রভাব আছে। সোমালি ন্যাশনাল আর্মির (এসএনএ) প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৯ সালে পুনর্গঠিত এসএনএ দক্ষিণ সোমালিয়ায় ইসলামপন্থী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহায়তা পেয়েছে।
এ ছাড়া, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কও রয়েছে। সোমালিয়ায় খাদ্যপণ্য ও যন্ত্রপাতি রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্র। বিপরীতে সোমালিয়া মূল্যবান পাথর এবং সস্তায় কিছু পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে।
এসব কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা সোমালি রাজনীতিকদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। অনেক ক্ষেত্রে পশ্চিমা সাহায্যের জন্য নির্ভরশীল তো বটেই, রাজনীতিকদের অনেকের মার্কিন পাসপোর্ট আছে, তাঁদের পরিবার সেখানে থাকে। সোমালিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে।
কিন্তু ভোটাধিকার না থাকা ও রাজনীতিকদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সোমালিয়ার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের রাজনীতিকদের নিয়ন্ত্রণ করার মতো সামর্থ্য নেই। ক্ষমতাহীন অসহায় সাধারণ নাগরিকেরা রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছে। সেটি সোমালিয়ার রাজনীতিকেরাও যে বুঝতে পারছেন তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বর্তমানে সোমালিয়ার নির্বাচন ‘এক ব্যক্তি, এক ভোট’ নীতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
২০২৪ সাল থেকে সরাসরি সর্বজনীন ভোটাধিকার প্রবর্তন এবং প্রেসিডেন্ট পদ্ধতিতে রূপান্তরের জন্য সরকার এবং ফেডারেটেড রাজ্যগুলোর মধ্যে গত রোববার (২৮ মে) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সোমালিয়ায় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় একটি সংশোধন এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
চুক্তিটি অবশ্য পার্লামেন্ট অনুমোদিত হতে হবে। চূড়ান্ত হলে ২০২৪ সালের ৩০ জুন স্থানীয় নির্বাচন এবং ৩০ নভেম্বর আঞ্চলিক পার্লামেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে।
১৯৬৯ সালে স্বৈরশাসক সিয়াদ ব্যারে ক্ষমতা দখল করার পর সরাসরি সর্বজনীন ভোটাধিকারের নীতিটি হর্ন অব আফ্রিকা থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। তাঁর পতনের পর সর্বজনীন ভোটাধিকার দিতে বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। হাসান শেখ মোহামুদ রোববার ফেডারেটেড রাজ্যের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ভীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, যেখানে আমরা ২০ বা ৩০ বছর ধরে আটকা পড়ে আছি। এই দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য এগিয়ে যেতে হবে। এক ব্যক্তি, এক ভোট নীতিতে ফেডারেল এবং রাজ্য উভয় পর্যায়েই নির্বাচন হবে।’
উগান্ডা
আফ্রিকার আরেক দেশ উগান্ডায় ১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনি। তরুণ মুসেভেনি একসময় পশ্চিমের সাহায্য সমর্থন পেয়েছেন। দেশের উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু পরে ক্রমেই কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছেন বলে মনে করেন অনেকে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে উগান্ডায় সাধারণ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থীদের ধারাবাহিকভাবে হয়রানি করা হয়েছে এবং কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করা হয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। কয়েক ডজন বিরোধী দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীগুলো দায়ী।
উগান্ডার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা যে একেবারে কাজ করেনি, এমন কিন্তু না। ২০২১ সালের জুনের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা তিবুহাব্রোয়া মুসেভেনি যে মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন সেখানে অনেকেই বাদ পড়েন। এমন অনেক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি আর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাননি, যাদের বিরুদ্ধে আগে থেকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
২০২১-২৬ মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা তিবুহাব্রোয়া মুসেভেনি যে মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছেন তাতে বাদ পড়েছেন ১১ জন প্রভাবশালী মন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিওয়ানুকা সেকান্দি, প্রধানমন্ত্রী রুহাকানা রুগুন্ডা, দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যাম কুটেসা প্রমুখ। যেখানে সেকান্দি টানা ১০ বছর ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর রুগুন্ডা ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরিবর্তন এসেছে অ্যাটর্নি জেনারেল পদেও। যিনি প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন।
যদিও মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর থেকে মন্ত্রী ও সরকারের প্রভাবশালীরা বলে আসছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি অত্যন্ত অস্পষ্ট।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, দ্য আফ্রিকা রিপোর্ট, উগান্ডার দ্য ইনডিপেনডেন্ট, আফ্রিকা নিউজ
গত সেপ্টেম্বরে ভ্লাদিভস্টকের একটি অর্থনৈতিক ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। এ বিষয়ে পরে তিনি একটি উপহাসমূলক হাসি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।
১৫ ঘণ্টা আগেআব্রাহাম অ্যাকর্ডস মূলত একটি চটকদার বিষয়। এতে বাস্তব, স্থায়ী আঞ্চলিক শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছুই এতে ছিল না। যেসব রাষ্ট্র এতে স্বাক্ষর করেছে তারা তা করেছে—কারণ, তারা ইসরায়েলকে ওয়াশিংটনে প্রভাব বিস্তারের পথ হিসেবে দেখে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ইসরায়েলের ওপর মার
৯ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেখেয়ালি, সেটা আগা থেকেই সবার জানা। তবে দেশটির নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এসেও তিনি অসংলগ্ন, অশ্লীল, স্বৈরতান্ত্রিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ থেকে অন্তত একটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে একটি ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ সরকারের নেতৃত্ব দেবেন।
৯ দিন আগেএবারের আইএমইএক্স মহড়ায়ও কিছু দেশ আছে যারা আগেরবারও অংশগ্রহণ করেছিল। এসব দেশের নাম আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই মহড়ার একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—ইরান ক্রমবর্ধমানভাবে নিজেকে এমন দেশগুলোর কক্ষপথে নিয়ে যাচ্ছে যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত
১০ দিন আগে