অনলাইন ডেস্ক
ভাড়াটে যোদ্ধা ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন হঠাৎ করেই রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। এরই মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রোস্তভ-অন-দন শহরের নিয়ন্ত্রণ দখলের দাবি করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব যুদ্ধক্ষেত্রে যথেষ্ট আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাঁরা তাঁর বাহিনীর সদস্যদের মরতে বাধ্য করছেন। সামরিক নেতৃত্বের সাক্ষাৎ চেয়ে মস্কো অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রিগোশিনের এমন কর্মকাণ্ডকে হঠকারিতা ও রাষ্ট্রদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। ওয়াগনারের বিদ্রোহ নস্যাৎ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তিনি। পুতিন বলেছেন, ওয়াগনারের প্রিগোশিন দেশ ও জনগণের পিঠে ছুরি মেরেছেন।
কে এই ইয়েভজেনি প্রিগোশিন?
ওয়াগনার গ্রুপ সারা বিশ্বে ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবেই পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আফ্রিকা সবখানেই এই গ্রুপের তৎপরতা রয়েছে। পুতিনের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় এই গ্রুপের উত্থান ঘটেছে বলে মনে করা হয়।
এই ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোশিন। তিনি সাবেক দাগি আসামি। এক সময় হটডগ বিক্রি করতেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রুপটি নির্মমতা, সহিংসতা এবং নিষ্ঠুরতার জন্য কুখ্যাত।
প্রিগোশিনের জন্ম ১৯৬১ সালে, সেন্ট পিটার্সবার্গে। একটি স্পোর্টিং একাডেমিতে গিয়ে ছিঁচকে অপরাধীদের পাল্লায় পড়েন। ১৯৮০ সালে বেশ কয়েকটি সহিংস ডাকাতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। তরুণ বয়সের বেশির ভাগ সময়ই জেলে কাটিয়েছেন।
১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন পতনের মুখে তখন মুক্তি পান প্রিগোশিন। একটি ফাস্ট ফুডের দোকান দিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে শুরু করেন। শিগগিরই একটি সুপারমার্কেট চেইনের অংশীদারত্ব অর্জন করেন। সেটি ছিল শহরের সেরা রেস্টুরেন্টগুলোর একটি। এরপর ক্রমেই ভ্লাদিমির পুতিনের আস্থাভাজন ক্ষমতাবান ব্যক্তিতে পরিণত হন।
প্রিগোশিন এক দশকেরও বেশি সময় পুতিন সরকারের হাই-প্রোফাইল অনুষ্ঠানগুলোতে ক্যাটারিং সার্ভিস দিয়ে এসেছেন। সেই সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়—বিদেশি অতিথিদের মধ্যে প্রিন্স চার্লস (বর্তমানে ব্রিটেনের রাজা) এবং জর্জ বুশের জন্য খাবার পরিবেশন করছেন। সরকারি ক্যাটারিং সার্ভিসের চুক্তি এবং অন্য অনেক চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার অলিগার্ক পর্যায়ের ধনীদের সমান সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন প্রিগোশিন।
বর্তমান বিদ্রোহের বীজ বোপিত হয়েছে বলতে গেলে প্রায় এক দশক আগে। যখন রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে জবরদখল করে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং পূর্ব ইউক্রেনে প্রক্সি বাহিনী পাঠায়। প্রিগোশিন এরপরে ভাড়াটে যোদ্ধা গোষ্ঠী ওয়াগনার প্রতিষ্ঠা করেন। এই গ্রুপ পুতিনের হাতকে আরও শক্তিশালী করে। পুতিন আরও সক্রিয় সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন এবং সরাসরি রাষ্ট্রীয় সম্পৃক্ততা এড়িয়ে অনেক বেআইনি হস্তক্ষেপ অস্বীকার করার একটি হাতিয়ার পেয়ে যান।
প্রিগোশিন একটি সাইবার বাহিনীও গঠন করেছিলেন। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতায় আনতে তাঁর ডিজিটাল যোদ্ধাদের মাঠে নামিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে এভাবেই।
গত বছর অবধি প্রিগোশিন সেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করেছেন, যারা তাঁর কার্যকলাপের বিষয়ে কথা বলেছেন এবং কেবল ক্যাটারিং সার্ভিস এবং অতিথি সেবার কাজ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হওয়ার বিষয়ে বারবার ইঙ্গিত করেছেন।
কীভাবে ব্যক্তিগত বাহিনী বানালেন প্রিগোশিন?
বেশ কয়েক বছর ধরে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং অতি সম্প্রতি ইউক্রেনে হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে প্রিগোশিন ওয়াগনার গ্রুপকে একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত করেছেন। সিরিয়া ছিল প্রথম কোনো যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে প্রিগোশিনের বাহিনী নিজেকে শক্তিশালী যোদ্ধা বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি মস্কোর সমর্থন এখানে বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে মনে করা হয়।
এই ওয়াগনার গ্রুপ তাদের কাজের একটি ধরন অনুসরণ করে। তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে যে কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এটিই ওয়াগনারের কাজের শর্ত। ইউক্রেনেও সেটি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। অসংখ্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য এই গ্রুপটি অভিযুক্ত হয়েছে। ওয়াগনার গ্রুপ তাদের কমান্ডারদের অধীনে বাহিনীর সদস্যদের বলি দিতেও কোনো কসুর করে না।
ওয়াগনারের সেনারা আফ্রিকাজুড়ে যুদ্ধ করেছে এবং করছে। রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে প্রায় সব মিশনেই অগ্রভাগে ছিল ওয়াগনার। এর মধ্যে মালি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং সর্বশেষ সুদান অন্যতম। পশ্চিমা গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের মতে, গত বছর কয়েদিদের বাহিনীতে নিতে প্রিগোশিনকে অনুমতি দেওয়া হয়। এতে তাঁর সৈন্য সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারে পৌঁছেছে।
এ ছাড়া অর্থ সংস্থান হয় নানাভাবে। ইয়েভজেনি প্রিগোশিন নিশ্চিত করেছেন, রাশিয়ার এফএসবি সিকিউরিটি সার্ভিস তাঁর অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ জব্দ করেছে। তাঁর টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি অডিও বার্তায় তিনি টাকা বোঝাই একটি ভ্যান এবং দুটি বাসের কথা উল্লেখ করেছেন। এই তহবিলগুলো নিহত ওয়াগনার যোদ্ধাদের ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য ব্যয় বহনের জন্য রাখা হয়েছিল বলে তাঁর দাবি।
প্রিগোশিন বলেন, ওয়াগনার ১০ বছর ধরে শুধু নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজ করছে। এই পদ্ধতি তিনি সব সময় মেনে চলেন।
তবে উদ্ধারকৃত অর্থের সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে কোনো বিশদ বিবরণ দেননি প্রিগোশিন। যদিও রাশিয়ার মিডিয়া আউটলেটগুলো বলেছে, সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে প্রিগোশিনের অফিসে এফএসবি অভিযান চালিয়ে ৪০০ কোটি রুবল বা ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার উদ্ধার করেছে।
এখন কোন ধরনের রসদ এবং সমর্থন পাচ্ছেন প্রিগোশিন?
প্রিগোশিনের আচার আচরণ এবং বাহিনী পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। চাপা উত্তেজনা বহুদিন ধরেই ছিল। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিরোধ আরও গভীর হয়েছে।
কয়েক মাস আগে থেকে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন বারবার বলে আসছেন, তাঁর সৈন্যরা গোলাবারুদ এবং অন্যান্য রসদ সরবরাহের সংকটে ভুগছে। অস্ত্র–শস্ত্রের অভাবে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে মারা পড়ছে। ওয়াগনার যোদ্ধাদের কয়েক ডজন মৃতদেহের একটি ভিডিও রেকর্ডও পাওয়া যাচ্ছে। এর জন্য রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের দায়ী করে আসছেন প্রিগোশিন।
ইউক্রেনে ওয়াগনারের যোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, বিশেষ করে বাখমুতের ভয়াবহ যুদ্ধ প্রমাণ করে এই গ্রুপের কাছে ভারী অস্ত্র এবং সাঁজোয়া যান রয়েছে।
গ্রুপের কেউ কেউ ছোট ছোট গ্রুপে মস্কোর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। যদিও তারা বিমান হামলায় বিধ্বস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ত। অবশ্য ভূমি থেকে ধারণ করা একাধিক ভিডিওতে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করতে দেখা গেছে।
তা ছাড়া ওয়াগনারের যোদ্ধাদের যে অভিজ্ঞতা এবং শৃঙ্খলা, তাতে তারা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর পূর্ণ শক্তির সামনে বেশি সময় টিকে থাকতে পারার কথা না। এরই মধ্যে অবশ্য মস্কো অভিযানের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াগনার।
জানা যাচ্ছে, সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পুতিনের মিত্র ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোশিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সৈন্যদের থামিয়ে দিতে প্রিগোশিনকে রাজি করান লুকাশেঙ্কো।
বিদ্রোহের শুরুর দিকে প্রিগোশিন রুশ সামরিক বাহিনীর কিছু জেনারেল বিদ্রোহী হয়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দেবে এমনটি আশা করেছিলেন হয়তো। যাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অন্যান্য ব্যর্থতার কারণে কোণঠাসা হয়ে আছেন তাঁদের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার অপেক্ষায় হয়তো ছিলেন তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধে এর প্রভাব কী?
ওয়াগনারের এই আকস্মিক শোডাউন কীভাবে শেষ হবে তা হয়তো জানা সম্ভব হবে না। তবে প্রিগোশিন জয়ী হোন বা ব্যর্থ হোন—বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ব্যর্থতার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এই ঘটনায় লড়াইয়ের ময়দানে উপকৃত হবে ইউক্রেন।
রাশিয়ার দৃষ্টি, অস্ত্র এবং সৈন্য সবই ফ্রন্টলাইন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কিয়েভ পাল্টা আক্রমণ জোরদার করছে। প্রিগোশিন বলেছেন, তিনি যুদ্ধে এগিয়ে থাকার প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চান না। তবে ওয়াগনারের বিদ্রোহ আপাতত ইউক্রেন অভিযান সীমিত করে রাশিয়ার জেনারেলদের ঘরের সমস্যা মেটাতে বেশি মনোযোগী হওয়ার জন্য বাধ্য করবে তাতে সন্দেহ নেই।
এদিকে অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে, চেচেন যোদ্ধারা এরই মধ্যে রোস্তভ শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এখানেই ওয়াগনারের লোকেরা সামরিক সদর দপ্তর দখল করেছে। এই অঞ্চলে যুদ্ধ লেগে গেলে জীবন, অস্ত্র এবং সময়ের অপচয় হবে।
বিদ্রোহের শেষটা যা–ই হোক না কেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি মস্কোকে নিজের ঘরে কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতেই হবে।
ইউক্রেনের জন্য বার্তা
ওয়াগনার প্রধান অবশ্যই ইউক্রেনের যুদ্ধে রুশ জেনারেলদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট। তাঁদের অবস্থানকে তাঁর প্রতি ‘অসম্মান’ বলে অভিহিত করেছেন প্রিগোশিন। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের শহরগুলোকে নিশ্চিহ্ন করছে বা যুদ্ধাপরাধ করছে বলে প্রিগোশিন তাঁদের সমালোচনা করছেন এমনটা নয়।
প্রিগোশিন সেনাবাহিনী এবং নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন এই কারণে যে, তাঁরা যথেষ্ট ‘ভালোভাবে’ যুদ্ধ করছেন না!
রাশিয়ার বাহিনীকে দখলিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে পিছু হটতে হয়েছে। প্রিগোশিন বলেছেন, রুশ সেনা কর্মকর্তারা দুর্বল। কারণ তাঁরা কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে ইচ্ছুক নন।
তবে ইউক্রেন আক্রমণের ন্যায্যতা প্রমাণের জন্য মস্কোর প্রচারণার সঙ্গে সব সময়ই সুর মিলিয়েছেন প্রিগোশিন। তিনি বলেছেন, পূর্ব ইউক্রেনের অধিবাসীরা ‘জিনগতভাবে রুশ’। সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাশিয়ার জনগণকে যারা বিরক্ত করে এটি তাদের বিরুদ্ধে পবিত্র যুদ্ধ।’
সুতরাং প্রিগোশিনকে অবশ্যই যুদ্ধবাজ হিসেবে দেখতে হবে। তিনি ইউক্রেনকে পরাজিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁর দৃষ্টিতে বর্তমান নেতৃত্ব সেটি করতে পারছেন না।
ইউক্রেনের বাইরে এর প্রভাব কী?
ওয়াগনার গ্রুপ রাশিয়ার বৈদেশিক নীতি এবং শক্তি প্রদর্শন ও প্রয়োগের একটি দরকারি হাতিয়ার। এর সৈন্যরা মিত্রদের সমর্থন করে এবং যারা মস্কোর বার্তায় কান দেয় না তাদের সতর্ক বার্তা দেয়।
এটি প্রায় অসম্ভব যে, পুতিন দ্রুতই এই ভাড়াটে বাহিনীকে প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। এমনকি এই বিদ্রোহের বার্তাগুলোকেও তিনি উপেক্ষা করতে পারবেন না। তবে যে নেতারা ওয়াগনারের সমর্থনের ওপর নির্ভর করেছিলেন তাঁরা সম্ভবত তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবিত থাকবেন।
দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি অবলম্বনে জাহাঙ্গীর আলম
ভাড়াটে যোদ্ধা ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন হঠাৎ করেই রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। এরই মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রোস্তভ-অন-দন শহরের নিয়ন্ত্রণ দখলের দাবি করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব যুদ্ধক্ষেত্রে যথেষ্ট আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাঁরা তাঁর বাহিনীর সদস্যদের মরতে বাধ্য করছেন। সামরিক নেতৃত্বের সাক্ষাৎ চেয়ে মস্কো অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রিগোশিনের এমন কর্মকাণ্ডকে হঠকারিতা ও রাষ্ট্রদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন। ওয়াগনারের বিদ্রোহ নস্যাৎ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তিনি। পুতিন বলেছেন, ওয়াগনারের প্রিগোশিন দেশ ও জনগণের পিঠে ছুরি মেরেছেন।
কে এই ইয়েভজেনি প্রিগোশিন?
ওয়াগনার গ্রুপ সারা বিশ্বে ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবেই পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আফ্রিকা সবখানেই এই গ্রুপের তৎপরতা রয়েছে। পুতিনের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় এই গ্রুপের উত্থান ঘটেছে বলে মনে করা হয়।
এই ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোশিন। তিনি সাবেক দাগি আসামি। এক সময় হটডগ বিক্রি করতেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রুপটি নির্মমতা, সহিংসতা এবং নিষ্ঠুরতার জন্য কুখ্যাত।
প্রিগোশিনের জন্ম ১৯৬১ সালে, সেন্ট পিটার্সবার্গে। একটি স্পোর্টিং একাডেমিতে গিয়ে ছিঁচকে অপরাধীদের পাল্লায় পড়েন। ১৯৮০ সালে বেশ কয়েকটি সহিংস ডাকাতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। তরুণ বয়সের বেশির ভাগ সময়ই জেলে কাটিয়েছেন।
১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন পতনের মুখে তখন মুক্তি পান প্রিগোশিন। একটি ফাস্ট ফুডের দোকান দিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে শুরু করেন। শিগগিরই একটি সুপারমার্কেট চেইনের অংশীদারত্ব অর্জন করেন। সেটি ছিল শহরের সেরা রেস্টুরেন্টগুলোর একটি। এরপর ক্রমেই ভ্লাদিমির পুতিনের আস্থাভাজন ক্ষমতাবান ব্যক্তিতে পরিণত হন।
প্রিগোশিন এক দশকেরও বেশি সময় পুতিন সরকারের হাই-প্রোফাইল অনুষ্ঠানগুলোতে ক্যাটারিং সার্ভিস দিয়ে এসেছেন। সেই সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়—বিদেশি অতিথিদের মধ্যে প্রিন্স চার্লস (বর্তমানে ব্রিটেনের রাজা) এবং জর্জ বুশের জন্য খাবার পরিবেশন করছেন। সরকারি ক্যাটারিং সার্ভিসের চুক্তি এবং অন্য অনেক চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার অলিগার্ক পর্যায়ের ধনীদের সমান সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন প্রিগোশিন।
বর্তমান বিদ্রোহের বীজ বোপিত হয়েছে বলতে গেলে প্রায় এক দশক আগে। যখন রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে জবরদখল করে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং পূর্ব ইউক্রেনে প্রক্সি বাহিনী পাঠায়। প্রিগোশিন এরপরে ভাড়াটে যোদ্ধা গোষ্ঠী ওয়াগনার প্রতিষ্ঠা করেন। এই গ্রুপ পুতিনের হাতকে আরও শক্তিশালী করে। পুতিন আরও সক্রিয় সামরিক হস্তক্ষেপে উৎসাহিত হয়ে ওঠেন এবং সরাসরি রাষ্ট্রীয় সম্পৃক্ততা এড়িয়ে অনেক বেআইনি হস্তক্ষেপ অস্বীকার করার একটি হাতিয়ার পেয়ে যান।
প্রিগোশিন একটি সাইবার বাহিনীও গঠন করেছিলেন। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতায় আনতে তাঁর ডিজিটাল যোদ্ধাদের মাঠে নামিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে এভাবেই।
গত বছর অবধি প্রিগোশিন সেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করেছেন, যারা তাঁর কার্যকলাপের বিষয়ে কথা বলেছেন এবং কেবল ক্যাটারিং সার্ভিস এবং অতিথি সেবার কাজ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হওয়ার বিষয়ে বারবার ইঙ্গিত করেছেন।
কীভাবে ব্যক্তিগত বাহিনী বানালেন প্রিগোশিন?
বেশ কয়েক বছর ধরে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং অতি সম্প্রতি ইউক্রেনে হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে প্রিগোশিন ওয়াগনার গ্রুপকে একটি শক্তিশালী বাহিনীতে পরিণত করেছেন। সিরিয়া ছিল প্রথম কোনো যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে প্রিগোশিনের বাহিনী নিজেকে শক্তিশালী যোদ্ধা বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি মস্কোর সমর্থন এখানে বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে মনে করা হয়।
এই ওয়াগনার গ্রুপ তাদের কাজের একটি ধরন অনুসরণ করে। তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে যে কোনো কর্মকাণ্ডের জন্য দায়মুক্তি দেওয়া হয়। এটিই ওয়াগনারের কাজের শর্ত। ইউক্রেনেও সেটি হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। অসংখ্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য এই গ্রুপটি অভিযুক্ত হয়েছে। ওয়াগনার গ্রুপ তাদের কমান্ডারদের অধীনে বাহিনীর সদস্যদের বলি দিতেও কোনো কসুর করে না।
ওয়াগনারের সেনারা আফ্রিকাজুড়ে যুদ্ধ করেছে এবং করছে। রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে প্রায় সব মিশনেই অগ্রভাগে ছিল ওয়াগনার। এর মধ্যে মালি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং সর্বশেষ সুদান অন্যতম। পশ্চিমা গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের মতে, গত বছর কয়েদিদের বাহিনীতে নিতে প্রিগোশিনকে অনুমতি দেওয়া হয়। এতে তাঁর সৈন্য সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারে পৌঁছেছে।
এ ছাড়া অর্থ সংস্থান হয় নানাভাবে। ইয়েভজেনি প্রিগোশিন নিশ্চিত করেছেন, রাশিয়ার এফএসবি সিকিউরিটি সার্ভিস তাঁর অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ জব্দ করেছে। তাঁর টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি অডিও বার্তায় তিনি টাকা বোঝাই একটি ভ্যান এবং দুটি বাসের কথা উল্লেখ করেছেন। এই তহবিলগুলো নিহত ওয়াগনার যোদ্ধাদের ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য ব্যয় বহনের জন্য রাখা হয়েছিল বলে তাঁর দাবি।
প্রিগোশিন বলেন, ওয়াগনার ১০ বছর ধরে শুধু নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজ করছে। এই পদ্ধতি তিনি সব সময় মেনে চলেন।
তবে উদ্ধারকৃত অর্থের সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে কোনো বিশদ বিবরণ দেননি প্রিগোশিন। যদিও রাশিয়ার মিডিয়া আউটলেটগুলো বলেছে, সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে প্রিগোশিনের অফিসে এফএসবি অভিযান চালিয়ে ৪০০ কোটি রুবল বা ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার উদ্ধার করেছে।
এখন কোন ধরনের রসদ এবং সমর্থন পাচ্ছেন প্রিগোশিন?
প্রিগোশিনের আচার আচরণ এবং বাহিনী পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। চাপা উত্তেজনা বহুদিন ধরেই ছিল। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিরোধ আরও গভীর হয়েছে।
কয়েক মাস আগে থেকে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিন বারবার বলে আসছেন, তাঁর সৈন্যরা গোলাবারুদ এবং অন্যান্য রসদ সরবরাহের সংকটে ভুগছে। অস্ত্র–শস্ত্রের অভাবে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে মারা পড়ছে। ওয়াগনার যোদ্ধাদের কয়েক ডজন মৃতদেহের একটি ভিডিও রেকর্ডও পাওয়া যাচ্ছে। এর জন্য রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের দায়ী করে আসছেন প্রিগোশিন।
ইউক্রেনে ওয়াগনারের যোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, বিশেষ করে বাখমুতের ভয়াবহ যুদ্ধ প্রমাণ করে এই গ্রুপের কাছে ভারী অস্ত্র এবং সাঁজোয়া যান রয়েছে।
গ্রুপের কেউ কেউ ছোট ছোট গ্রুপে মস্কোর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। যদিও তারা বিমান হামলায় বিধ্বস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ত। অবশ্য ভূমি থেকে ধারণ করা একাধিক ভিডিওতে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করতে দেখা গেছে।
তা ছাড়া ওয়াগনারের যোদ্ধাদের যে অভিজ্ঞতা এবং শৃঙ্খলা, তাতে তারা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর পূর্ণ শক্তির সামনে বেশি সময় টিকে থাকতে পারার কথা না। এরই মধ্যে অবশ্য মস্কো অভিযানের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াগনার।
জানা যাচ্ছে, সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পুতিনের মিত্র ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোশিনের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সৈন্যদের থামিয়ে দিতে প্রিগোশিনকে রাজি করান লুকাশেঙ্কো।
বিদ্রোহের শুরুর দিকে প্রিগোশিন রুশ সামরিক বাহিনীর কিছু জেনারেল বিদ্রোহী হয়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দেবে এমনটি আশা করেছিলেন হয়তো। যাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অন্যান্য ব্যর্থতার কারণে কোণঠাসা হয়ে আছেন তাঁদের কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার অপেক্ষায় হয়তো ছিলেন তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধে এর প্রভাব কী?
ওয়াগনারের এই আকস্মিক শোডাউন কীভাবে শেষ হবে তা হয়তো জানা সম্ভব হবে না। তবে প্রিগোশিন জয়ী হোন বা ব্যর্থ হোন—বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ব্যর্থতার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এই ঘটনায় লড়াইয়ের ময়দানে উপকৃত হবে ইউক্রেন।
রাশিয়ার দৃষ্টি, অস্ত্র এবং সৈন্য সবই ফ্রন্টলাইন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কিয়েভ পাল্টা আক্রমণ জোরদার করছে। প্রিগোশিন বলেছেন, তিনি যুদ্ধে এগিয়ে থাকার প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চান না। তবে ওয়াগনারের বিদ্রোহ আপাতত ইউক্রেন অভিযান সীমিত করে রাশিয়ার জেনারেলদের ঘরের সমস্যা মেটাতে বেশি মনোযোগী হওয়ার জন্য বাধ্য করবে তাতে সন্দেহ নেই।
এদিকে অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে, চেচেন যোদ্ধারা এরই মধ্যে রোস্তভ শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এখানেই ওয়াগনারের লোকেরা সামরিক সদর দপ্তর দখল করেছে। এই অঞ্চলে যুদ্ধ লেগে গেলে জীবন, অস্ত্র এবং সময়ের অপচয় হবে।
বিদ্রোহের শেষটা যা–ই হোক না কেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি মস্কোকে নিজের ঘরে কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতেই হবে।
ইউক্রেনের জন্য বার্তা
ওয়াগনার প্রধান অবশ্যই ইউক্রেনের যুদ্ধে রুশ জেনারেলদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট। তাঁদের অবস্থানকে তাঁর প্রতি ‘অসম্মান’ বলে অভিহিত করেছেন প্রিগোশিন। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের শহরগুলোকে নিশ্চিহ্ন করছে বা যুদ্ধাপরাধ করছে বলে প্রিগোশিন তাঁদের সমালোচনা করছেন এমনটা নয়।
প্রিগোশিন সেনাবাহিনী এবং নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন এই কারণে যে, তাঁরা যথেষ্ট ‘ভালোভাবে’ যুদ্ধ করছেন না!
রাশিয়ার বাহিনীকে দখলিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে পিছু হটতে হয়েছে। প্রিগোশিন বলেছেন, রুশ সেনা কর্মকর্তারা দুর্বল। কারণ তাঁরা কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে ইচ্ছুক নন।
তবে ইউক্রেন আক্রমণের ন্যায্যতা প্রমাণের জন্য মস্কোর প্রচারণার সঙ্গে সব সময়ই সুর মিলিয়েছেন প্রিগোশিন। তিনি বলেছেন, পূর্ব ইউক্রেনের অধিবাসীরা ‘জিনগতভাবে রুশ’। সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাশিয়ার জনগণকে যারা বিরক্ত করে এটি তাদের বিরুদ্ধে পবিত্র যুদ্ধ।’
সুতরাং প্রিগোশিনকে অবশ্যই যুদ্ধবাজ হিসেবে দেখতে হবে। তিনি ইউক্রেনকে পরাজিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁর দৃষ্টিতে বর্তমান নেতৃত্ব সেটি করতে পারছেন না।
ইউক্রেনের বাইরে এর প্রভাব কী?
ওয়াগনার গ্রুপ রাশিয়ার বৈদেশিক নীতি এবং শক্তি প্রদর্শন ও প্রয়োগের একটি দরকারি হাতিয়ার। এর সৈন্যরা মিত্রদের সমর্থন করে এবং যারা মস্কোর বার্তায় কান দেয় না তাদের সতর্ক বার্তা দেয়।
এটি প্রায় অসম্ভব যে, পুতিন দ্রুতই এই ভাড়াটে বাহিনীকে প্রতিস্থাপন করতে পারবেন। এমনকি এই বিদ্রোহের বার্তাগুলোকেও তিনি উপেক্ষা করতে পারবেন না। তবে যে নেতারা ওয়াগনারের সমর্থনের ওপর নির্ভর করেছিলেন তাঁরা সম্ভবত তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবিত থাকবেন।
দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি অবলম্বনে জাহাঙ্গীর আলম
ইউক্রেনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, রাশিয়ার এ ধরনের আক্রমণকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে—যেমনটি ইসরায়েল উত্তর গাজাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে হয়েছে।
১ দিন আগেট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
২ দিন আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
২ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৩ দিন আগে