অনলাইন ডেস্ক
উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যয় কম হওয়ায় করোনার প্রতিষেধক হিসেবে নিম্নআয়ের দেশগুলোর ভরসা অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। কিন্তু গত ছয় মাসে বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে এই ভ্যাকসিনটিকে। শুরু থেকেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, কার্যকারিতা এবং সরবরাহ নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রশ্নের মুখে পড়েছে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড নামে এই কভিড ভ্যাকসিন। পাশাপাশি এই বৈশ্বিক মহাসঙ্কটকালে পরিণত হয়েছে রাজনীতির ফুটবলে। মার্কিন কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্রেক্সিট পরবর্তী ব্রিটেনকে চাপের ফেলার ইউরোপীয় ইউনিয়নীয় নীতি।
চলতি সপ্তাহে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অভূতপূর্ব সমালোচনা করা হয়েছে। মার্কিন শীর্ষ বিজ্ঞানীদের দাবি, ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের ট্রায়ালের ফল নিয়ে কারসাজি করেছে।
এদিকে ইতালিতে ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে পুলিশের চালানো অভিযানে ২ কোটি ৯০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উদ্ধার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের জন্য এগুলো লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। ইউরোপীয় কমিশন অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ইউরোপে বেশি টিকা সরবরাহের দাবি জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যে যাতে এই ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধ করা যায় তা নিয়ে একটি নীতিও গ্রহণ করা হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের রাজনীতিকরণের বিষয়টি এখন স্পষ্ট । ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভ্যাকসিনের সরবরাহ কম হলেও যুক্তরাজ্যে ব্যাপকভাবে এর প্রয়োগ হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতালির ফ্যাক্টরিতে যে অভিযান চালানো হয়েছে সেখানে পাওয়া ভ্যাকসিনগুলো উন্নয়নশীল বিশ্ব এবং বেলজিয়ামে রফতানির আগে গুণগত মান পরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছিল।
আশা করা হচ্ছিল ব্রেক্সিট পরবর্তী বিরোধ ভ্যাকসিন সরবরাহে প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু গত ২৫ জানুয়ারি জার্মানির সংবাদমাধ্যম হ্যান্ডেলস্লাটের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন বয়োবৃদ্ধদের দেহে ৮ শতাংশ কার্যকর। এছাড়া গত ২৯ জানুয়ারি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের দেহে পুরোপুরি কার্যকর নয়।
এসব অভিযোগ তুলে বয়স্কদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দিতে অস্বীকৃতি জানায় জার্মানি এবং ফ্রান্স। শেষ পর্যন্ত এমন সংশয় পরে উঠে গেলেও অনেক দেশ এখনো এ ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করেছে।
ইউরোপে এখন করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা নিয়ে এরই মধ্যে সুর পাল্টেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকের ভ্যাকসিন নিতে পারলে তিনি খুশি হবেন। এছাড়া ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ কাস্তেক্সের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার দৃশ্য টেলিভিশনে সরাসরি দেখানো হয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বেলজিয়ান সদস্য ফিলিপ ল্যাম্বার্ট এই সপ্তাহে অভিযোগ করেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অসৎ এবং উদ্ধত একটি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরবরাহ করছে না। এছাড়া এই ভ্যাকসিনের নিরাপদ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ল্যাম্বার্ট।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই কোম্পানির ক্ষতি করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের টার্গেট করা হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উদ্ভাবক দলের সদস্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর স্যার জন বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কোনো মুনাফা করতে চাইছে না বলেই এটির বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। অন্য কোম্পানিগুলো ভ্যাকসিনকে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে দেখছে। এর মধ্যে মডার্না চলতি বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় আশা করছে । ফাইজার/বায়োএনটেকও ১৫ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে বলে জানিয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁর অভিযোগ নিয়ে বেল বলেন, আমরা সবার চেয়ে বেশি ভ্যাকসিন তৈরি করছি। এটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন। কিন্তু এই বিষয়টিকে কেউ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় বলে মনে হচ্ছে না।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কেন পিছিয়ে আছে তার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ধারণ করা মুশকিল। তবে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরেই অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করতে থাকেন। তখন একজন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্রায়াল স্থগিত করা হয়। পরে ট্রায়াল শুরু হলেও যুক্তরাষ্ট্র অ্যাস্ট্রাজেনেকার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হওয়ায় ট্রায়াল ছয় সপ্তাহ স্থগিত রাখে।
অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকাও ব্যাপারটি সরল রাখতে পারেনি। ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো অনুমোদন দেওয়ার আগে একটি বড় ট্রায়ালের তথ্য নেয়। এসব ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীরা বয়স, জাতি, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং অন্যান্য উপাদানে টিক দেন, যেগুলো ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।
ফাইজার/বায়োএনটেক এবং মডার্না ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে এটি করেছে। অক্সফোর্ড সেটি এড়িয়ে গেছে। কারণ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের প্রাথমিক ট্রায়াল চালিয়েছিলেন একাডেমিকরা। কীভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায় সেটিতে দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল তাদের।
বিনিয়োগ সংস্থা শোর ক্যাপিটেলের শিল্প বিশেষজ্ঞ ড. আডাম বার্কের বলেন, বয়স্কদেরকে গ্রীষ্মের শেষ দিকে অক্সফোর্ডের ট্রায়ালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু তখন যুক্তরাজ্যে করোনার প্রকোপ কমে গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছিল না যে ৬৫ বছর বয়স্কদের দেহে এটি কেমন কাজ করে।
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে বিজ্ঞানীদের একটি স্বাধীন সংস্থা ডাটা সেফটি অ্যান্ড মনিটরিং বোর্ড । এই সংস্থাটি দাবি করে, সুইডিশ কোম্পানিটি (অ্যাস্ট্রাজেনেকা) ভুল তথ্য দিচ্ছে। এ নিয়ে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের ফার্মাকোপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক স্টেফেন এভান্স বলছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের ট্রায়ালের ফল প্রকাশের পর ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে টিকাটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডাটা সেফটি অ্যান্ড মনিটরিং বোর্ড। এটি অস্বাভাবিক। তাদের এই অস্বাভাবিক পর্যেবক্ষণটিই বিশ্বকে বিভ্রান্ত করেছে।
এছাড়া অ্যাস্ট্রাজেনেকা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জানায়, টিকার কার্যকারিতা সামগ্রিকভাবে ৭৯ শতাংশ। এর ৪৮ ঘণ্টার পরই বলা হয় কার্যকারিতা ৭৬ শতাংশ। দুই ধরনের ফলাফলও অনেককে বিভ্রান্ত করেছে।
কোনো কভিড ভ্যাকসিনই এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকারটির মতো এতো বাজে প্রচারণার কবলে পড়েনি। সম্প্রতি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা কথা বলে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন স্থগিত করে।
অবশ্য মডার্নার ভ্যাকসিন নিয়েও এমন অভিযোগ শোনা গেছে । যুক্তরাষ্ট্রে একটি মৃত্যু নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়ে মডার্না।
এদিকে অন্য ভ্যাকসিন কোম্পানিগুলো সরবরাহ নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে পারছেন। ফাইজারের উৎপাদন কমে গেছে এবং জনসন অ্যান্ড জনসন ও নোভ্যাক্স সতর্ক করে দিয়েছে যে তারা আশানুরূপ উৎপাদন করতে পারবে না।
এটা সত্য যে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা সবসময় বাড়াবাড়ি রকমের নজরদারির মধ্যে থাকছে। এর কারণ হতে পারে, এই ভ্যাকসিনের স্বল্পমূল্য ও সহজলভ্যতা। ব্রেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাজ্যেকে রাজনৈতিক ঝাঁকুনি দেওয়ার অংশ হিসেবেও এই নেতিবাচক প্রচারণা চলে থাকতে পারে।
তবে সে যাই হোক, এই পরস্থিতিতে অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা নিশ্চিতভাবে নিজেদের প্রমাণ করার জন্য সব উদ্যোগ নেবে। সব অভিযোগ, সংশয়ের জবাব দেবে। অবশ্য উৎপাদন নিয়ে সমস্যার সমাধানটিই সবার আগে করতে হবে।
দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে ইয়াসিন আরাফাত
উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যয় কম হওয়ায় করোনার প্রতিষেধক হিসেবে নিম্নআয়ের দেশগুলোর ভরসা অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। কিন্তু গত ছয় মাসে বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে এই ভ্যাকসিনটিকে। শুরু থেকেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, কার্যকারিতা এবং সরবরাহ নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রশ্নের মুখে পড়েছে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড নামে এই কভিড ভ্যাকসিন। পাশাপাশি এই বৈশ্বিক মহাসঙ্কটকালে পরিণত হয়েছে রাজনীতির ফুটবলে। মার্কিন কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্রেক্সিট পরবর্তী ব্রিটেনকে চাপের ফেলার ইউরোপীয় ইউনিয়নীয় নীতি।
চলতি সপ্তাহে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অভূতপূর্ব সমালোচনা করা হয়েছে। মার্কিন শীর্ষ বিজ্ঞানীদের দাবি, ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের ট্রায়ালের ফল নিয়ে কারসাজি করেছে।
এদিকে ইতালিতে ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে পুলিশের চালানো অভিযানে ২ কোটি ৯০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উদ্ধার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের জন্য এগুলো লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। ইউরোপীয় কমিশন অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ইউরোপে বেশি টিকা সরবরাহের দাবি জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যে যাতে এই ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধ করা যায় তা নিয়ে একটি নীতিও গ্রহণ করা হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের রাজনীতিকরণের বিষয়টি এখন স্পষ্ট । ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভ্যাকসিনের সরবরাহ কম হলেও যুক্তরাজ্যে ব্যাপকভাবে এর প্রয়োগ হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতালির ফ্যাক্টরিতে যে অভিযান চালানো হয়েছে সেখানে পাওয়া ভ্যাকসিনগুলো উন্নয়নশীল বিশ্ব এবং বেলজিয়ামে রফতানির আগে গুণগত মান পরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছিল।
আশা করা হচ্ছিল ব্রেক্সিট পরবর্তী বিরোধ ভ্যাকসিন সরবরাহে প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু গত ২৫ জানুয়ারি জার্মানির সংবাদমাধ্যম হ্যান্ডেলস্লাটের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন বয়োবৃদ্ধদের দেহে ৮ শতাংশ কার্যকর। এছাড়া গত ২৯ জানুয়ারি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের দেহে পুরোপুরি কার্যকর নয়।
এসব অভিযোগ তুলে বয়স্কদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দিতে অস্বীকৃতি জানায় জার্মানি এবং ফ্রান্স। শেষ পর্যন্ত এমন সংশয় পরে উঠে গেলেও অনেক দেশ এখনো এ ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করেছে।
ইউরোপে এখন করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা নিয়ে এরই মধ্যে সুর পাল্টেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকের ভ্যাকসিন নিতে পারলে তিনি খুশি হবেন। এছাড়া ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ কাস্তেক্সের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার দৃশ্য টেলিভিশনে সরাসরি দেখানো হয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বেলজিয়ান সদস্য ফিলিপ ল্যাম্বার্ট এই সপ্তাহে অভিযোগ করেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অসৎ এবং উদ্ধত একটি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরবরাহ করছে না। এছাড়া এই ভ্যাকসিনের নিরাপদ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ল্যাম্বার্ট।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই কোম্পানির ক্ষতি করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের টার্গেট করা হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উদ্ভাবক দলের সদস্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর স্যার জন বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কোনো মুনাফা করতে চাইছে না বলেই এটির বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে। অন্য কোম্পানিগুলো ভ্যাকসিনকে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে দেখছে। এর মধ্যে মডার্না চলতি বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় আশা করছে । ফাইজার/বায়োএনটেকও ১৫ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে বলে জানিয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁর অভিযোগ নিয়ে বেল বলেন, আমরা সবার চেয়ে বেশি ভ্যাকসিন তৈরি করছি। এটি একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন। কিন্তু এই বিষয়টিকে কেউ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় বলে মনে হচ্ছে না।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কেন পিছিয়ে আছে তার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ধারণ করা মুশকিল। তবে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরেই অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করতে থাকেন। তখন একজন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্রায়াল স্থগিত করা হয়। পরে ট্রায়াল শুরু হলেও যুক্তরাষ্ট্র অ্যাস্ট্রাজেনেকার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হওয়ায় ট্রায়াল ছয় সপ্তাহ স্থগিত রাখে।
অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকাও ব্যাপারটি সরল রাখতে পারেনি। ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো অনুমোদন দেওয়ার আগে একটি বড় ট্রায়ালের তথ্য নেয়। এসব ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীরা বয়স, জাতি, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং অন্যান্য উপাদানে টিক দেন, যেগুলো ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।
ফাইজার/বায়োএনটেক এবং মডার্না ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে এটি করেছে। অক্সফোর্ড সেটি এড়িয়ে গেছে। কারণ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের প্রাথমিক ট্রায়াল চালিয়েছিলেন একাডেমিকরা। কীভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায় সেটিতে দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল তাদের।
বিনিয়োগ সংস্থা শোর ক্যাপিটেলের শিল্প বিশেষজ্ঞ ড. আডাম বার্কের বলেন, বয়স্কদেরকে গ্রীষ্মের শেষ দিকে অক্সফোর্ডের ট্রায়ালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু তখন যুক্তরাজ্যে করোনার প্রকোপ কমে গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছিল না যে ৬৫ বছর বয়স্কদের দেহে এটি কেমন কাজ করে।
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে বিজ্ঞানীদের একটি স্বাধীন সংস্থা ডাটা সেফটি অ্যান্ড মনিটরিং বোর্ড । এই সংস্থাটি দাবি করে, সুইডিশ কোম্পানিটি (অ্যাস্ট্রাজেনেকা) ভুল তথ্য দিচ্ছে। এ নিয়ে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের ফার্মাকোপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক স্টেফেন এভান্স বলছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের ট্রায়ালের ফল প্রকাশের পর ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে টিকাটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডাটা সেফটি অ্যান্ড মনিটরিং বোর্ড। এটি অস্বাভাবিক। তাদের এই অস্বাভাবিক পর্যেবক্ষণটিই বিশ্বকে বিভ্রান্ত করেছে।
এছাড়া অ্যাস্ট্রাজেনেকা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জানায়, টিকার কার্যকারিতা সামগ্রিকভাবে ৭৯ শতাংশ। এর ৪৮ ঘণ্টার পরই বলা হয় কার্যকারিতা ৭৬ শতাংশ। দুই ধরনের ফলাফলও অনেককে বিভ্রান্ত করেছে।
কোনো কভিড ভ্যাকসিনই এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকারটির মতো এতো বাজে প্রচারণার কবলে পড়েনি। সম্প্রতি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা কথা বলে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন স্থগিত করে।
অবশ্য মডার্নার ভ্যাকসিন নিয়েও এমন অভিযোগ শোনা গেছে । যুক্তরাষ্ট্রে একটি মৃত্যু নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়ে মডার্না।
এদিকে অন্য ভ্যাকসিন কোম্পানিগুলো সরবরাহ নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে পারছেন। ফাইজারের উৎপাদন কমে গেছে এবং জনসন অ্যান্ড জনসন ও নোভ্যাক্স সতর্ক করে দিয়েছে যে তারা আশানুরূপ উৎপাদন করতে পারবে না।
এটা সত্য যে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা সবসময় বাড়াবাড়ি রকমের নজরদারির মধ্যে থাকছে। এর কারণ হতে পারে, এই ভ্যাকসিনের স্বল্পমূল্য ও সহজলভ্যতা। ব্রেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাজ্যেকে রাজনৈতিক ঝাঁকুনি দেওয়ার অংশ হিসেবেও এই নেতিবাচক প্রচারণা চলে থাকতে পারে।
তবে সে যাই হোক, এই পরস্থিতিতে অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা নিশ্চিতভাবে নিজেদের প্রমাণ করার জন্য সব উদ্যোগ নেবে। সব অভিযোগ, সংশয়ের জবাব দেবে। অবশ্য উৎপাদন নিয়ে সমস্যার সমাধানটিই সবার আগে করতে হবে।
দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে ইয়াসিন আরাফাত
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগে