অনলাইন ডেস্ক
নাফিস আনসারি-মধ্যপ্রদেশের এই স্কুলশিক্ষকের একটি নতুন পরিচয় রয়েছে। তিনি হলেন, ‘মোদিমিত্র’ বা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধু। এই পরিচয় দেওয়া হচ্ছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তরফ থেকে।
কেবল নাফিস আনসারি নন, নিজ সম্প্রদায়ের কাছে বেশ সম্মানীয় অনেক মুসলিমকেই এই পরিচয়ে ভূষিত করেছে বিজেপি। আনসারিসহ সব মোদি মিত্রের কাজ হলো—প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিজেপির প্রচার। বিশেষ করে স্থানীয় সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানে মোদি সরকারের সাফল্য, কীভাবে তাঁরা দেশ ও জনকল্যাণে কাজ করেছে এবং করছে তা তুলে ধরা। ভারতের সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য মোদি সরকার কী কী করেছে এবং বিশ্ব দরবারে মোদি সরকার ভারতকে কতটা উঁচুতে পৌঁছে দিয়েছে তা প্রচার করা।
আনসারির মতো প্রায় ২৫ হাজার মুসলিম বিজেপির কাছে মোদিমিত্র হিসেবে পরিচিত। এই ২৫ হাজার মিত্রের কাঁধে ভর করে ২০২৪ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট টানতে চান মোদি ও তাঁর দল বিজেপি। খোদ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
বিজেপির সংখ্যালঘু বিভাগের প্রধান জামাল সিদ্দিকি বলেছেন, ‘আমাদের দল মূলত মুসলিম শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তা, ধর্মীয় নেতা এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে টানছে, বিশেষ করে মোদিকে নৈর্ব্যক্তিকভাবে মূল্যায়ন করতে আগ্রহীদের।’
বেশ কয়েকজন মোদিমিত্র ও বিজেপি কর্মকর্তা জানান, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের বিগত ১০ বছরের অর্থনৈতিক সাফল্যকে প্রচারের মন্ত্র নিয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি ধর্মকেন্দ্রিক উত্তরাধিকার আইন প্রণয়ন, লিঙ্গ অধিকার ইত্যাদি প্রণয়ন করে অনগ্রসর মুসলিম সম্প্রদায়ের ৬৫টি গুরুত্বপূর্ণ আসন কবজা করতে চায়।
বিজেপি নেতারা বলেছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে আকৃষ্ট করতে বিজেপি সরাসরি বার্তা পাঠানোর কৌশল নিয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিজেপি এই প্রথম ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে কাছে টানতে এমন উদ্যোগ নিল। এই উদ্যোগের কারণও রয়েছে-সুদূর ও অদূর অতীতে কখনোই ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদির সুসম্পর্ক ছিল না।
ভারতের মুসলিমদের একটি অংশ ও একাধিক মানবাধিকার গোষ্ঠীর অভিযোগ, বিজেপি ও সহযোগী সংগঠনের অনেকেই ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্য করছে ও সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এছাড়া অন্য ধর্মের লোকজনের পরিচালিত বিভিন্ন অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে আইনের ফাঁদে ফেলেছে এবং মুসলিমদের সম্পত্তি বিনষ্ট করেছে।
বিষয়টির প্রতিবাদে বিজেপির নেতা সৈয়দ জাফর ইসলাম বলেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদি এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, ভারতে কোনো ধর্মীয় বৈষম্য নেই। ভারতে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতার কারণ গভীরে নিহিত। কিন্তু এসব ঘটনা তখনই ঘটে, যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এসব ঘটায়।’
বিগত দুই জাতীয় নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি এক প্রকার একাই বিজেপিকে টেনেছেন। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপিবিরোধী নতুন জোট গঠন ও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় দলটিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিজেপির বড় ভয় হলো—দলটি হিন্দু জাতীয়তাবাদকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অন্যান্য সম্প্রদায়কে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। ফলে এবার বিজেপি সরকারের জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় নাও থাকতে পারে। তাই বিজেপি চায় মুসলিম সম্প্রদায়কেও কাছে টানতে।
এবিষয়ে জামাল সিদ্দিকির মত, ‘যতক্ষণ না আপনি আমাদের চিনতে পারবেন, ততক্ষণ তো আপনি আমাদের স্বীকৃতি দেবেন না। আর স্বীকৃতি না দিলে তো বন্ধু হওয়া সম্ভব না।’
মুখে যাই বলুক, বিজেপি সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতায় আস্থা রাখে কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ। দলটির ওয়েবসাইটেই লেখা আছে, ‘ভারতে সেক্যুলারিজম হলো-সংখ্যাগুরুর ত্যাগের বিনিময়ে সংখ্যালঘু তোষণ।’ বিজেপির রাজনৈতিক মতাদর্শও প্রায় কাছাকাছি। মুসলিমদের কাছে টানতে চাইলেও এখন পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কোনো মুসলিম মন্ত্রী নেই। বিশ্লেষকদের মত, বিজেপি হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব থেকে সব সময়ই রাজনৈতিক ফায়দা তুলেছে।
অতীতে বিজেপি বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন আঞ্চলিক নির্বাচনে মুসলিম ভোট টানার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জাতীয় পরিসরে নির্বাচনকে সামনে রেখে মুসলিমদের কাছে টানার চেষ্টা দলটির পক্ষ থেকে এই প্রথম বলে মত ব্যক্ত করেছেন জামাল সিদ্দিকি ও দিল্লিভিত্তিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটিসের গবেষক হিলাল আহমেদ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজেপি মুসলিম ভোট অন্তত দ্বিগুণ করতে চায়।
বিজেপির সংখ্যালঘু ইউনিটের মুখপাত্র ইয়াসার জিলানি বলেন, বিজেপি বিগত দুই জাতীয় নির্বাচনে ৯ শতাংশের মতো মুসলিম ভোট পেয়েছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনে অন্তত ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ ভোট অর্জন করতে চায় বিজেপি।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে বিজেপির দুই নেতা জানান, লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩ আসনের মধ্যে বিশেষ করে ৬৫টি আসনের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে বিজেপি। যেখানে মোট ভোটারের ৩০ শতাংশেরও বেশি মুসলিম। বর্তমানে মাত্র দুই ডজন মুসলিমপ্রধান আসন নিজেদের করায়ত্তে রাখতে পেরেছে বিজেপি।
মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপির সবচেয়ে বড় টার্গেট হলো পসমন্দা মুসলিম। উর্দু এই শব্দটির অর্থ অনগ্রসর বা পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়। নাফিস আনসারি নিজেও পসমান্দা সম্প্রদায়ের লোক।
আনসারির মতে, ‘বিজেপির সমাজকল্যাণ প্রকল্পের কারণে মুসলিমসহ সবারই উপকার করছে।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি অনগ্রসর নারীদের সরকারের তরফ থেকে প্রতি মাসে সাড়ে ১২শ রুপি ভাতা এবং রাজ্য কর্তৃপক্ষ পরিচালিত সংস্থা থেকে গৃহ নির্মাণের জন্য দেড় লাখ রুপি ঋণ সুবিধার কথা উল্লেখ করেন।
নাফিসের মতো আরেক মোদিমিত্র পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ী উজির হোসেন। তিনিও তাঁর আশপাশের মুসলিমদের মধ্যে মোদি সরকারে উন্নয়ন ও কল্যাণ প্রকল্পের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, তিনি বিজেপির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন একাধিক কারণে। তার মধ্যে একটি হলো—আগের মধ্য বামপন্থী সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার সঙ্গে মোদি সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ফারাক আকাশ-পাতাল।
মোদিমিত্ররা বেশ ভালোভাবেই ওপিনিয়ন লিডার অর্থাৎ জনমতে প্রভাববিস্তারকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। তাঁরা সরাসরি ভোটারদের প্রভাবিত না করে বরং তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে ভোটারদের ভাবনার সুযোগ দিচ্ছেন। যেমন, উজির হোসেনের প্রতিবেশী মোহাম্মদ কাসিম বলেন, ‘অবশ্যই মুসলমানেরা মোদির দলকে পছন্দ করে না। কিন্তু হোসেন দাদা আমাদের বলেছেন বিজেপি আমাদের কি দিতে চায় তা অন্তত আমাদের একবার শোনা উচিত।’
বিজেপির বিরুদ্ধে মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ পুরোনো। সেই অভিযোগই যেন নতুন করে তুললেন রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা ও ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য কেসি ভেনুগোপাল। তিনি বলেন, ‘বিজেপি কখনোই সমাজের এই অংশকে (মুসলিম সম্প্রদায়সহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) শ্রদ্ধা করেনি এবং তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেনি বরং তাদের পদ্ধতিগতভাবে প্রান্তের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগের বিষয়ে ভেনুগোপাল বলেন, ‘কংগ্রেস কখনোই ডিভাইড অ্যান্ড রুল নীতি অবলম্বন করে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের লড়াই হওয়া উচিত অর্থনীতি ও উন্নয়ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে, ধর্ম বা বিশেষ কোনো পরিচয়কে কেন্দ্র করে নয়।’
কংগ্রেস সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিরোধী শিবিরের কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা ও ডয়চে ব্যাংকের ভারতীয় শাখাপ্রধান সৈয়দ জাফর ইসলাম। তিনি বলেন, বিরোধীরা সব সময়ই মুসলিমদের ভোটকে নিজেদের নিশ্চিত ভোটব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করেছে। কিন্তু তাদের কল্যাণের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক দূর যেতে হবে।’ বিজেপির সঙ্গে মুসলমান সম্প্রদায়ের দূরত্বকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যদিও দূরত্বটা অনেক বেশি তবে ব্যবধান ক্রমেই কমছে।’
কেবল পুরুষদেরই নয়, বিজেপি মুসলিম নারীদেরও টার্গেট করেছে। এরই মধ্যে দলটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাঁরা বেশ কিছু ব্যক্তিগত আইন সংস্কার করবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো-প্রতিবাদের মুখেও ‘বহুবিবাহ, উত্তরাধিকার, বিয়ের বয়স সংক্রান্ত’ বিধানকে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক বর্ণনা করে মুসলিম পারিবারিক আইন পরিবর্তনের কথা বলছে বিজেপি।
তবে বেশ কিছু মুসলিম নারী অধিকার গোষ্ঠী বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পসমান্দা নারী লেখিকা ও রাজনৈতিক গবেষক আমেনা বেগম আনসারি বলেন, ‘আপনি বিজেপির অনেক কিছুরই সমালোচনা করতে পারেন। কিন্তু এই সরকার ছাড়া অন্য কোনো সরকার ব্যক্তিগত আইন সংস্কারের সামান্য আগ্রহও দেখায়নি।’
ভারতের সরকারি তথ্য বলছে, বিজেপি ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে ধর্মীয় সহিংসতা বিশেষ করে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়। কিন্তু একটা চাপা উত্তেজনা রয়েই গেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও চাপের কারণে এবং আইনশৃঙ্খলার রক্ষার স্বার্থে বিজেপি সরকার আন্তঃসম্প্রদায় দাঙ্গা রোধে প্রায়ই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু চাপা উত্তেজনা কখনোই কমেনি।
মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা ও বিদেশি গবেষকদের মতে, বিজেপির সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ হিন্দু কর্মীদের নিয়ে ভীতির কথা অনেক মুসলিম জানিয়েছেন। তাঁরা ভয়ে ভয়ে জীবনযাপন করেন। তবে সমালোচকেরা এই সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদকে হিন্দু আধিপত্যবাদের কোমল রূপ বলেই মনে করেন।
হিলাল আহমেদের মতে, বিরোধীরা যদি মুসলিমদের জন্য আস্থার কোনো জায়গা তৈরি করতে না পারে তবে আগামী নির্বাচনে মুসলিম ভোট হয়তো বিজেপির পক্ষেই যাবে। তাঁর মতে, বিজেপি মুসলিমদের ক্ষেত্রে দ্বৈত নীতি অনুসরণ করে।
দলটির গোঁড়া সমর্থকদের জন্য ‘মুসলিমদের হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করা হয় আবার প্রয়োজনের সময় মুসলিমদের কাছে গিয়ে বিনয়ী সাজা হয়। তিনি বলেন, ‘বিজেপি মুসলিম পুরুষদের হুমকি হিসেবেই চিহ্নিত করতে থাকবে তবে ভোট টানার জন্য নারীদের প্রতি সহানুভূতি দেখাবে। এবং একইভাবে পসমান্দা সম্প্রদায়ের জন্যও কিছু ছাড় দেওয়া হবে।’
মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল সমাজবাদী পার্টির ঘনশ্যাম তিওয়ারি বলেছেন, ‘সরকারি দলে থাকার কারণে বিজেপিকে এমন কিছু নীতিগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে, যা কিছু মুসলমানকে তাদের কাছে টানবে। কিন্তু বিজেপি যাই করুক না কেন তাঁরা নিজের রং বদলাতে পারবে না, নিজের মনোভাব বদলাতে পারবে না এবং দলটি মুসলিমবিরোধী ও সংখ্যালঘুবিরোধী হিসেবে থেকে যাবে।’
যাই হোক, কিছু মুসলমান মোদিমিত্র হলেও এখনো তাদের ভয় হিন্দু জাতীয়তাবাদ নিয়ে। সেই কথাটি অব্যক্ত থাকেনি নাফিস আনসারির মুখে। তিনি বলেই ফেলেছেন, বিজেপির উচিত নিজের ইমেজ ধ্বংসকারী উগ্রবাদকে নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু চাইলেই কি তা পারা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর ভারতের আগামী বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
রয়টার্স থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
নাফিস আনসারি-মধ্যপ্রদেশের এই স্কুলশিক্ষকের একটি নতুন পরিচয় রয়েছে। তিনি হলেন, ‘মোদিমিত্র’ বা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধু। এই পরিচয় দেওয়া হচ্ছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তরফ থেকে।
কেবল নাফিস আনসারি নন, নিজ সম্প্রদায়ের কাছে বেশ সম্মানীয় অনেক মুসলিমকেই এই পরিচয়ে ভূষিত করেছে বিজেপি। আনসারিসহ সব মোদি মিত্রের কাজ হলো—প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিজেপির প্রচার। বিশেষ করে স্থানীয় সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানে মোদি সরকারের সাফল্য, কীভাবে তাঁরা দেশ ও জনকল্যাণে কাজ করেছে এবং করছে তা তুলে ধরা। ভারতের সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য মোদি সরকার কী কী করেছে এবং বিশ্ব দরবারে মোদি সরকার ভারতকে কতটা উঁচুতে পৌঁছে দিয়েছে তা প্রচার করা।
আনসারির মতো প্রায় ২৫ হাজার মুসলিম বিজেপির কাছে মোদিমিত্র হিসেবে পরিচিত। এই ২৫ হাজার মিত্রের কাঁধে ভর করে ২০২৪ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট টানতে চান মোদি ও তাঁর দল বিজেপি। খোদ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারাই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
বিজেপির সংখ্যালঘু বিভাগের প্রধান জামাল সিদ্দিকি বলেছেন, ‘আমাদের দল মূলত মুসলিম শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তা, ধর্মীয় নেতা এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে টানছে, বিশেষ করে মোদিকে নৈর্ব্যক্তিকভাবে মূল্যায়ন করতে আগ্রহীদের।’
বেশ কয়েকজন মোদিমিত্র ও বিজেপি কর্মকর্তা জানান, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের বিগত ১০ বছরের অর্থনৈতিক সাফল্যকে প্রচারের মন্ত্র নিয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি ধর্মকেন্দ্রিক উত্তরাধিকার আইন প্রণয়ন, লিঙ্গ অধিকার ইত্যাদি প্রণয়ন করে অনগ্রসর মুসলিম সম্প্রদায়ের ৬৫টি গুরুত্বপূর্ণ আসন কবজা করতে চায়।
বিজেপি নেতারা বলেছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে আকৃষ্ট করতে বিজেপি সরাসরি বার্তা পাঠানোর কৌশল নিয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিজেপি এই প্রথম ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে কাছে টানতে এমন উদ্যোগ নিল। এই উদ্যোগের কারণও রয়েছে-সুদূর ও অদূর অতীতে কখনোই ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদির সুসম্পর্ক ছিল না।
ভারতের মুসলিমদের একটি অংশ ও একাধিক মানবাধিকার গোষ্ঠীর অভিযোগ, বিজেপি ও সহযোগী সংগঠনের অনেকেই ইসলামবিদ্বেষী মন্তব্য করছে ও সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এছাড়া অন্য ধর্মের লোকজনের পরিচালিত বিভিন্ন অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে আইনের ফাঁদে ফেলেছে এবং মুসলিমদের সম্পত্তি বিনষ্ট করেছে।
বিষয়টির প্রতিবাদে বিজেপির নেতা সৈয়দ জাফর ইসলাম বলেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদি এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, ভারতে কোনো ধর্মীয় বৈষম্য নেই। ভারতে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতার কারণ গভীরে নিহিত। কিন্তু এসব ঘটনা তখনই ঘটে, যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে এসব ঘটায়।’
বিগত দুই জাতীয় নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি এক প্রকার একাই বিজেপিকে টেনেছেন। কিন্তু সম্প্রতি বিজেপিবিরোধী নতুন জোট গঠন ও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় দলটিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিজেপির বড় ভয় হলো—দলটি হিন্দু জাতীয়তাবাদকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অন্যান্য সম্প্রদায়কে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। ফলে এবার বিজেপি সরকারের জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় নাও থাকতে পারে। তাই বিজেপি চায় মুসলিম সম্প্রদায়কেও কাছে টানতে।
এবিষয়ে জামাল সিদ্দিকির মত, ‘যতক্ষণ না আপনি আমাদের চিনতে পারবেন, ততক্ষণ তো আপনি আমাদের স্বীকৃতি দেবেন না। আর স্বীকৃতি না দিলে তো বন্ধু হওয়া সম্ভব না।’
মুখে যাই বলুক, বিজেপি সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতায় আস্থা রাখে কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ। দলটির ওয়েবসাইটেই লেখা আছে, ‘ভারতে সেক্যুলারিজম হলো-সংখ্যাগুরুর ত্যাগের বিনিময়ে সংখ্যালঘু তোষণ।’ বিজেপির রাজনৈতিক মতাদর্শও প্রায় কাছাকাছি। মুসলিমদের কাছে টানতে চাইলেও এখন পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কোনো মুসলিম মন্ত্রী নেই। বিশ্লেষকদের মত, বিজেপি হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্ব থেকে সব সময়ই রাজনৈতিক ফায়দা তুলেছে।
অতীতে বিজেপি বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন আঞ্চলিক নির্বাচনে মুসলিম ভোট টানার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জাতীয় পরিসরে নির্বাচনকে সামনে রেখে মুসলিমদের কাছে টানার চেষ্টা দলটির পক্ষ থেকে এই প্রথম বলে মত ব্যক্ত করেছেন জামাল সিদ্দিকি ও দিল্লিভিত্তিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটিসের গবেষক হিলাল আহমেদ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজেপি মুসলিম ভোট অন্তত দ্বিগুণ করতে চায়।
বিজেপির সংখ্যালঘু ইউনিটের মুখপাত্র ইয়াসার জিলানি বলেন, বিজেপি বিগত দুই জাতীয় নির্বাচনে ৯ শতাংশের মতো মুসলিম ভোট পেয়েছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনে অন্তত ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ ভোট অর্জন করতে চায় বিজেপি।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে বিজেপির দুই নেতা জানান, লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩ আসনের মধ্যে বিশেষ করে ৬৫টি আসনের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে বিজেপি। যেখানে মোট ভোটারের ৩০ শতাংশেরও বেশি মুসলিম। বর্তমানে মাত্র দুই ডজন মুসলিমপ্রধান আসন নিজেদের করায়ত্তে রাখতে পেরেছে বিজেপি।
মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপির সবচেয়ে বড় টার্গেট হলো পসমন্দা মুসলিম। উর্দু এই শব্দটির অর্থ অনগ্রসর বা পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়। নাফিস আনসারি নিজেও পসমান্দা সম্প্রদায়ের লোক।
আনসারির মতে, ‘বিজেপির সমাজকল্যাণ প্রকল্পের কারণে মুসলিমসহ সবারই উপকার করছে।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি অনগ্রসর নারীদের সরকারের তরফ থেকে প্রতি মাসে সাড়ে ১২শ রুপি ভাতা এবং রাজ্য কর্তৃপক্ষ পরিচালিত সংস্থা থেকে গৃহ নির্মাণের জন্য দেড় লাখ রুপি ঋণ সুবিধার কথা উল্লেখ করেন।
নাফিসের মতো আরেক মোদিমিত্র পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ী উজির হোসেন। তিনিও তাঁর আশপাশের মুসলিমদের মধ্যে মোদি সরকারে উন্নয়ন ও কল্যাণ প্রকল্পের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, তিনি বিজেপির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন একাধিক কারণে। তার মধ্যে একটি হলো—আগের মধ্য বামপন্থী সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার সঙ্গে মোদি সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ফারাক আকাশ-পাতাল।
মোদিমিত্ররা বেশ ভালোভাবেই ওপিনিয়ন লিডার অর্থাৎ জনমতে প্রভাববিস্তারকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। তাঁরা সরাসরি ভোটারদের প্রভাবিত না করে বরং তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে ভোটারদের ভাবনার সুযোগ দিচ্ছেন। যেমন, উজির হোসেনের প্রতিবেশী মোহাম্মদ কাসিম বলেন, ‘অবশ্যই মুসলমানেরা মোদির দলকে পছন্দ করে না। কিন্তু হোসেন দাদা আমাদের বলেছেন বিজেপি আমাদের কি দিতে চায় তা অন্তত আমাদের একবার শোনা উচিত।’
বিজেপির বিরুদ্ধে মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ পুরোনো। সেই অভিযোগই যেন নতুন করে তুললেন রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা ও ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য কেসি ভেনুগোপাল। তিনি বলেন, ‘বিজেপি কখনোই সমাজের এই অংশকে (মুসলিম সম্প্রদায়সহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) শ্রদ্ধা করেনি এবং তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেনি বরং তাদের পদ্ধতিগতভাবে প্রান্তের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগের বিষয়ে ভেনুগোপাল বলেন, ‘কংগ্রেস কখনোই ডিভাইড অ্যান্ড রুল নীতি অবলম্বন করে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের লড়াই হওয়া উচিত অর্থনীতি ও উন্নয়ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে, ধর্ম বা বিশেষ কোনো পরিচয়কে কেন্দ্র করে নয়।’
কংগ্রেস সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিরোধী শিবিরের কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা ও ডয়চে ব্যাংকের ভারতীয় শাখাপ্রধান সৈয়দ জাফর ইসলাম। তিনি বলেন, বিরোধীরা সব সময়ই মুসলিমদের ভোটকে নিজেদের নিশ্চিত ভোটব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করেছে। কিন্তু তাদের কল্যাণের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক দূর যেতে হবে।’ বিজেপির সঙ্গে মুসলমান সম্প্রদায়ের দূরত্বকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যদিও দূরত্বটা অনেক বেশি তবে ব্যবধান ক্রমেই কমছে।’
কেবল পুরুষদেরই নয়, বিজেপি মুসলিম নারীদেরও টার্গেট করেছে। এরই মধ্যে দলটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাঁরা বেশ কিছু ব্যক্তিগত আইন সংস্কার করবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো-প্রতিবাদের মুখেও ‘বহুবিবাহ, উত্তরাধিকার, বিয়ের বয়স সংক্রান্ত’ বিধানকে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক বর্ণনা করে মুসলিম পারিবারিক আইন পরিবর্তনের কথা বলছে বিজেপি।
তবে বেশ কিছু মুসলিম নারী অধিকার গোষ্ঠী বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পসমান্দা নারী লেখিকা ও রাজনৈতিক গবেষক আমেনা বেগম আনসারি বলেন, ‘আপনি বিজেপির অনেক কিছুরই সমালোচনা করতে পারেন। কিন্তু এই সরকার ছাড়া অন্য কোনো সরকার ব্যক্তিগত আইন সংস্কারের সামান্য আগ্রহও দেখায়নি।’
ভারতের সরকারি তথ্য বলছে, বিজেপি ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে ধর্মীয় সহিংসতা বিশেষ করে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়। কিন্তু একটা চাপা উত্তেজনা রয়েই গেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও চাপের কারণে এবং আইনশৃঙ্খলার রক্ষার স্বার্থে বিজেপি সরকার আন্তঃসম্প্রদায় দাঙ্গা রোধে প্রায়ই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু চাপা উত্তেজনা কখনোই কমেনি।
মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা ও বিদেশি গবেষকদের মতে, বিজেপির সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ হিন্দু কর্মীদের নিয়ে ভীতির কথা অনেক মুসলিম জানিয়েছেন। তাঁরা ভয়ে ভয়ে জীবনযাপন করেন। তবে সমালোচকেরা এই সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদকে হিন্দু আধিপত্যবাদের কোমল রূপ বলেই মনে করেন।
হিলাল আহমেদের মতে, বিরোধীরা যদি মুসলিমদের জন্য আস্থার কোনো জায়গা তৈরি করতে না পারে তবে আগামী নির্বাচনে মুসলিম ভোট হয়তো বিজেপির পক্ষেই যাবে। তাঁর মতে, বিজেপি মুসলিমদের ক্ষেত্রে দ্বৈত নীতি অনুসরণ করে।
দলটির গোঁড়া সমর্থকদের জন্য ‘মুসলিমদের হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করা হয় আবার প্রয়োজনের সময় মুসলিমদের কাছে গিয়ে বিনয়ী সাজা হয়। তিনি বলেন, ‘বিজেপি মুসলিম পুরুষদের হুমকি হিসেবেই চিহ্নিত করতে থাকবে তবে ভোট টানার জন্য নারীদের প্রতি সহানুভূতি দেখাবে। এবং একইভাবে পসমান্দা সম্প্রদায়ের জন্যও কিছু ছাড় দেওয়া হবে।’
মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল সমাজবাদী পার্টির ঘনশ্যাম তিওয়ারি বলেছেন, ‘সরকারি দলে থাকার কারণে বিজেপিকে এমন কিছু নীতিগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে, যা কিছু মুসলমানকে তাদের কাছে টানবে। কিন্তু বিজেপি যাই করুক না কেন তাঁরা নিজের রং বদলাতে পারবে না, নিজের মনোভাব বদলাতে পারবে না এবং দলটি মুসলিমবিরোধী ও সংখ্যালঘুবিরোধী হিসেবে থেকে যাবে।’
যাই হোক, কিছু মুসলমান মোদিমিত্র হলেও এখনো তাদের ভয় হিন্দু জাতীয়তাবাদ নিয়ে। সেই কথাটি অব্যক্ত থাকেনি নাফিস আনসারির মুখে। তিনি বলেই ফেলেছেন, বিজেপির উচিত নিজের ইমেজ ধ্বংসকারী উগ্রবাদকে নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু চাইলেই কি তা পারা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর ভারতের আগামী বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
রয়টার্স থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগে