অনলাইন ডেস্ক
রাশিয়ায় ১৫ থেকে ১৭ মার্চ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ভ্লাদিমির পুতিন পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ঘরে-বাইরে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। রুশরা একে নিয়মরক্ষার নির্বাচন বলে মনে করেন। তাই ‘রেকর্ডসংখ্যক’ ভোটে পুতিনের জয়ে খুব কম মানুষই অবাক হয়েছেন। কিন্তু যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে তা হলো, পুতিনের নতুন মেয়াদের শাসনে রাশিয়ার ভাগ্যে কী আছে? কোন পথে এগোবে পশ্চিমাবৈরী এই দেশ।
পুতিনের নয়া মেয়াদে রাশিয়ার শাসনব্যবস্থা কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে একটি ইঙ্গিত দিয়েছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব হামবুর্গের ইনস্টিটিউট ফর পিস রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসির গবেষক রেজিনা হেলার। তিনি বলেন, ‘৮৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার বিষয়টি ইঙ্গিত করে যে পুতিনের শাসন ক্রমেই স্বৈরশাসনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।’
হেলার আরও বলেন, ‘এই ফলাফলে ভোটারের নয়, রাশিয়ার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর ইচ্ছাই প্রতিফলিত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এই ফলাফল রাশিয়ার বর্তমান সরকার ও পুতিনকে ইউক্রেন ও অন্যান্য নীতিমালা বাস্তবায়নে স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ দেবে।
জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের রাশিয়া বিষয়ক বিভাগের প্রধান হানস-হেনিং শ্রোয়েডার বলেন, ২০২৩ সালের মতো উত্থান-পতনময় বছর পেরিয়ে পুতিনের শাসন অনেকটাই স্থিতিশীল এখন।
শ্রোয়েডারের মতে, পুতিনঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের নেতৃত্বে ভাগনার গোষ্ঠীর বিদ্রোহ, প্রিগোজিনের মৃত্যু, জনমনে পুতিনবিরোধী মনোভাব গত বছর তাঁকে অনেকটাই অস্বস্তিতে ভুগিয়েছে। তাই, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকার প্রমাণ দেওয়ার জন্য প্রায়ই তাঁকে বিভিন্ন জনসম্পৃক্ত কার্যকলাপে যুক্ত হতে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মত হলে, রাশিয়ায় পুতিনের শাসন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের বিরোধীদের দমনেও পুতিনের বিরুদ্ধে খুব একটা আওয়াজ ওঠেনি। সব মিলিয়ে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে পুতিন প্রশাসন।
আগামী দিনে রুশ সরকার ইউক্রেন বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে রেজিনা হেলার বলেছেন, ‘আমরা আসলে যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো, পুতিন আগামী দিনে প্রবল পরাক্রমে (ইউক্রেনের বিরুদ্ধে) যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং সম্ভবত লড়াই আরও তীব্র হবে।’
পুতিনের নতুন শাসনামলে জনগণের করভার বাড়তে পারে। কিছুদিন আগেই পুতিন রুশ পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে রাশিয়ার কর আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধব্যয় মেটানোর জন্য রাশিয়ার রাজস্ব আয় বাড়াতে পুতিন কর আইন সংশোধন করেছেন বলে শ্রোয়েডার মনে করেন।
এ বিষয়ে অস্ট্রিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ইনসব্রুকের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ গেরহার্ড ম্যানগট বলেন, ‘সরকারের অর্থের প্রয়োজন। আর তা আসতে পারে কেবল রাজস্ব বাড়ানোর মাধ্যমে এবং এই অতিরিক্ত রাজস্ব অবশ্যই যুদ্ধের ব্যয় মেটাতে ব্যবহৃত হবে।’
পুতিনের নতুন মেয়াদে রুশ সেনাবাহিনীতে নতুন সেনা ভর্তির বিষয়টি ত্বরান্বিত হতে পারে। এ বিষয়ে হেলারের মত, যেহেতু পুতিন এখনো তাঁর সামরিক মতবাদ ত্যাগ করেননি; তাই সেনা বাড়ানোর বিষয়টি আগামী দিনে একটি বাস্তব চিত্র হতে যাচ্ছে।
হেলার আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি যে ইউক্রেনে পশ্চিমাদের সহায়তা যতটা বেশি হওয়া প্রয়োজন, ঠিক ততটা হচ্ছে না। ফলে, ক্রেমলিন বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবে ধরে ইউক্রেনে নতুন করে বিপুল সেনা মোতায়েন করে যুদ্ধের ভারসাম্য নিজেদের দিকে আনার চেষ্টা করতে পারে।’
তবে নতুন করে গণহারে ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি হিতে বিপরীতও হতে পারে। কারণ, এরই মধ্যে রুশদের মধ্যে সেনাদের মধ্যে ওয়ার ফ্যাটিগ বা যুদ্ধের কারণে স্থবিরতা বা ক্লান্তি দেখা দিয়েছে। রেজিনা হেলার ও গেরহার্ড ম্যানগট উভয়ই এ বিষয়ে একমত। তাঁদের মতে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আরও সেনা মোতায়েনের বিষয়টি সম্ভবত ঘটবে না।
সামনের মাসগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনে কী অর্জন করতে চায়, তার ওপর ভিত্তি করেই মূলত সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বিবেচিত হবে। এ বিষয়ে শ্রোয়েডারের বক্তব্য, ‘যদি তারা ইউক্রেনকে পুরোপুরি হারাতে চায়, তবে অবশ্যই সশস্ত্র বাহিনীর আকারে বাড়াতে হবে এবং তারপরই কেবল দেশটির দখল নেওয়া সম্ভব।’
তবে লক্ষ্য স্পষ্ট জানা না গেলেও বিশ্লেষকদের অনুমান, রাশিয়া এমন একটি ভাবমূর্তি বজায় রাখতে চায়, যেখানে তাদের জয়ের পথে আছে বলে বিবেচনা করা হবে। এ বিষয়ে শ্রোয়েডার বলছেন, ‘আমরা অনুমান, অন্তত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত রাশিয়া রণক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে চায় এবং ঘরে-বাইরে সবাইকে এই বার্তা দিতে চায় যে, তারা জয়ের পথেই আছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার কারণ হলো, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে যান, তবে এটি অনেকটাই নিশ্চিত যে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পর্যাপ্ত সামরিক সহায়তা পাবে না। এ বিষয়ে শ্রোয়েডার বলছেন, ‘এমনটা হলে ইউক্রেন নতুন করে আর বাড়তি সেনা মোতায়েন করতে হবে না রাশিয়াকে।’
পুতিনের নতুন মেয়াদে রুশ সরকারের বিভিন্ন অংশে নেতৃত্বের পরিবর্তন আসতে পারে এমন জল্পনাও ছিল। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, আপাতত শিগগির বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে, এমন সম্ভাবনা নেই। শ্রোয়েডার বলছেন, ‘এই মুহূর্তে (রুশ নেতৃত্বে) বড় ধরনের কোনো দুর্বলতা দেখছি না।’ তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় ক্রেমলিন মিখাইল মিশুস্তিনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রুশ অর্থনীতিতে অপ্রত্যাশিত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক নীতিনির্ধারকেরা স্থিতিশীলতা ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন, মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে। রাশিয়ার অর্থনীতি ইউরোপ থেকে এখন এশিয়ামুখী। ফলে এসব জায়গায় পুতিন হস্তক্ষেপ করার কোনো কারণ নেই আসলে।
সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন রাশিয়ায় ‘নতুন যুদ্ধবাজ অভিজাত শ্রেণি’র পক্ষে জোর দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পুতিনের ঘনিষ্ঠদের সন্তানদের নিয়ে এ অভিজাত শ্রেণি তৈরি হবে। তবে এখানে কেবল তাঁরাই ঠাঁই পাবেন, যাঁদের পুতিন দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, বিশ্বাস করেন ও যারা তাঁর অনুগত।
রেজিনা হেলার নতুন এই অভিজাত শ্রেণি গড়ে তোলার পেছনের মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করছেন, পুতিন-পরবর্তী রাশিয়ার ক্ষমতার পালাবদলকে। তিনি বলছেন, পুতিনের পর ক্ষমতার মসৃণ ও সুশৃঙ্খল পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে এই অভিজাত শ্রেণিকে গড়ে তোলা হবে।
ডয়চে ভেলে থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
রাশিয়ায় ১৫ থেকে ১৭ মার্চ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ভ্লাদিমির পুতিন পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ঘরে-বাইরে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। রুশরা একে নিয়মরক্ষার নির্বাচন বলে মনে করেন। তাই ‘রেকর্ডসংখ্যক’ ভোটে পুতিনের জয়ে খুব কম মানুষই অবাক হয়েছেন। কিন্তু যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে তা হলো, পুতিনের নতুন মেয়াদের শাসনে রাশিয়ার ভাগ্যে কী আছে? কোন পথে এগোবে পশ্চিমাবৈরী এই দেশ।
পুতিনের নয়া মেয়াদে রাশিয়ার শাসনব্যবস্থা কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে একটি ইঙ্গিত দিয়েছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব হামবুর্গের ইনস্টিটিউট ফর পিস রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসির গবেষক রেজিনা হেলার। তিনি বলেন, ‘৮৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার বিষয়টি ইঙ্গিত করে যে পুতিনের শাসন ক্রমেই স্বৈরশাসনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।’
হেলার আরও বলেন, ‘এই ফলাফলে ভোটারের নয়, রাশিয়ার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর ইচ্ছাই প্রতিফলিত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, এই ফলাফল রাশিয়ার বর্তমান সরকার ও পুতিনকে ইউক্রেন ও অন্যান্য নীতিমালা বাস্তবায়নে স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ দেবে।
জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের রাশিয়া বিষয়ক বিভাগের প্রধান হানস-হেনিং শ্রোয়েডার বলেন, ২০২৩ সালের মতো উত্থান-পতনময় বছর পেরিয়ে পুতিনের শাসন অনেকটাই স্থিতিশীল এখন।
শ্রোয়েডারের মতে, পুতিনঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের নেতৃত্বে ভাগনার গোষ্ঠীর বিদ্রোহ, প্রিগোজিনের মৃত্যু, জনমনে পুতিনবিরোধী মনোভাব গত বছর তাঁকে অনেকটাই অস্বস্তিতে ভুগিয়েছে। তাই, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকার প্রমাণ দেওয়ার জন্য প্রায়ই তাঁকে বিভিন্ন জনসম্পৃক্ত কার্যকলাপে যুক্ত হতে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মত হলে, রাশিয়ায় পুতিনের শাসন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের বিরোধীদের দমনেও পুতিনের বিরুদ্ধে খুব একটা আওয়াজ ওঠেনি। সব মিলিয়ে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে পুতিন প্রশাসন।
আগামী দিনে রুশ সরকার ইউক্রেন বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে রেজিনা হেলার বলেছেন, ‘আমরা আসলে যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো, পুতিন আগামী দিনে প্রবল পরাক্রমে (ইউক্রেনের বিরুদ্ধে) যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং সম্ভবত লড়াই আরও তীব্র হবে।’
পুতিনের নতুন শাসনামলে জনগণের করভার বাড়তে পারে। কিছুদিন আগেই পুতিন রুশ পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে রাশিয়ার কর আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধব্যয় মেটানোর জন্য রাশিয়ার রাজস্ব আয় বাড়াতে পুতিন কর আইন সংশোধন করেছেন বলে শ্রোয়েডার মনে করেন।
এ বিষয়ে অস্ট্রিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ইনসব্রুকের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ গেরহার্ড ম্যানগট বলেন, ‘সরকারের অর্থের প্রয়োজন। আর তা আসতে পারে কেবল রাজস্ব বাড়ানোর মাধ্যমে এবং এই অতিরিক্ত রাজস্ব অবশ্যই যুদ্ধের ব্যয় মেটাতে ব্যবহৃত হবে।’
পুতিনের নতুন মেয়াদে রুশ সেনাবাহিনীতে নতুন সেনা ভর্তির বিষয়টি ত্বরান্বিত হতে পারে। এ বিষয়ে হেলারের মত, যেহেতু পুতিন এখনো তাঁর সামরিক মতবাদ ত্যাগ করেননি; তাই সেনা বাড়ানোর বিষয়টি আগামী দিনে একটি বাস্তব চিত্র হতে যাচ্ছে।
হেলার আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি যে ইউক্রেনে পশ্চিমাদের সহায়তা যতটা বেশি হওয়া প্রয়োজন, ঠিক ততটা হচ্ছে না। ফলে, ক্রেমলিন বিষয়টিকে সুযোগ হিসেবে ধরে ইউক্রেনে নতুন করে বিপুল সেনা মোতায়েন করে যুদ্ধের ভারসাম্য নিজেদের দিকে আনার চেষ্টা করতে পারে।’
তবে নতুন করে গণহারে ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি হিতে বিপরীতও হতে পারে। কারণ, এরই মধ্যে রুশদের মধ্যে সেনাদের মধ্যে ওয়ার ফ্যাটিগ বা যুদ্ধের কারণে স্থবিরতা বা ক্লান্তি দেখা দিয়েছে। রেজিনা হেলার ও গেরহার্ড ম্যানগট উভয়ই এ বিষয়ে একমত। তাঁদের মতে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আরও সেনা মোতায়েনের বিষয়টি সম্ভবত ঘটবে না।
সামনের মাসগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনে কী অর্জন করতে চায়, তার ওপর ভিত্তি করেই মূলত সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বিবেচিত হবে। এ বিষয়ে শ্রোয়েডারের বক্তব্য, ‘যদি তারা ইউক্রেনকে পুরোপুরি হারাতে চায়, তবে অবশ্যই সশস্ত্র বাহিনীর আকারে বাড়াতে হবে এবং তারপরই কেবল দেশটির দখল নেওয়া সম্ভব।’
তবে লক্ষ্য স্পষ্ট জানা না গেলেও বিশ্লেষকদের অনুমান, রাশিয়া এমন একটি ভাবমূর্তি বজায় রাখতে চায়, যেখানে তাদের জয়ের পথে আছে বলে বিবেচনা করা হবে। এ বিষয়ে শ্রোয়েডার বলছেন, ‘আমরা অনুমান, অন্তত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত রাশিয়া রণক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে চায় এবং ঘরে-বাইরে সবাইকে এই বার্তা দিতে চায় যে, তারা জয়ের পথেই আছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার কারণ হলো, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে যান, তবে এটি অনেকটাই নিশ্চিত যে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পর্যাপ্ত সামরিক সহায়তা পাবে না। এ বিষয়ে শ্রোয়েডার বলছেন, ‘এমনটা হলে ইউক্রেন নতুন করে আর বাড়তি সেনা মোতায়েন করতে হবে না রাশিয়াকে।’
পুতিনের নতুন মেয়াদে রুশ সরকারের বিভিন্ন অংশে নেতৃত্বের পরিবর্তন আসতে পারে এমন জল্পনাও ছিল। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, আপাতত শিগগির বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে, এমন সম্ভাবনা নেই। শ্রোয়েডার বলছেন, ‘এই মুহূর্তে (রুশ নেতৃত্বে) বড় ধরনের কোনো দুর্বলতা দেখছি না।’ তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় ক্রেমলিন মিখাইল মিশুস্তিনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রুশ অর্থনীতিতে অপ্রত্যাশিত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক নীতিনির্ধারকেরা স্থিতিশীলতা ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন, মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে। রাশিয়ার অর্থনীতি ইউরোপ থেকে এখন এশিয়ামুখী। ফলে এসব জায়গায় পুতিন হস্তক্ষেপ করার কোনো কারণ নেই আসলে।
সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন রাশিয়ায় ‘নতুন যুদ্ধবাজ অভিজাত শ্রেণি’র পক্ষে জোর দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পুতিনের ঘনিষ্ঠদের সন্তানদের নিয়ে এ অভিজাত শ্রেণি তৈরি হবে। তবে এখানে কেবল তাঁরাই ঠাঁই পাবেন, যাঁদের পুতিন দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, বিশ্বাস করেন ও যারা তাঁর অনুগত।
রেজিনা হেলার নতুন এই অভিজাত শ্রেণি গড়ে তোলার পেছনের মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করছেন, পুতিন-পরবর্তী রাশিয়ার ক্ষমতার পালাবদলকে। তিনি বলছেন, পুতিনের পর ক্ষমতার মসৃণ ও সুশৃঙ্খল পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে এই অভিজাত শ্রেণিকে গড়ে তোলা হবে।
ডয়চে ভেলে থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান
সম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৬ ঘণ্টা আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১৪ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৫ দিন আগে