অনলাইন ডেস্ক
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গঠনের কাজের জন্য তিনি মাস্ক ও সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামাস্বামীকে নিয়োগ দিয়েছেন।
এ দায়িত্বের জন্য ইলন মাস্ক কয়েক মাস ধরে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। নতুন এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম তাঁর বিভিন্ন ব্যবসায়িক পরিচালনার অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দায়িত্ব তাঁকে সরকারি নীতিমালা ও তাঁর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ন্ত্রণের সুযোগ এনে দিতে পারে।
অক্টোবরের এক সমাবেশে মাস্ক বলেছিলেন, তিনি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট প্রায় দুই ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত কমানো সম্ভব। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মীসংখ্যা হ্রাসের কথাও বলেছেন। অন্যদিকে, রামাস্বামী শিক্ষা বিভাগ, পরমাণু নিয়ন্ত্রণ কমিশন, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ ও এফবিআইয়ের মতো বিভাগ বন্ধ করার প্রস্তাব রেখেছেন।
ইলন মাস্ক দীর্ঘদিন ধরে সরকারি নিয়ন্ত্রণবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মহাকাশ অভিযানের স্বপ্ন ও মানব বসতির ব্যাপকতা বাড়ানোর পরিকল্পনা সফল করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস করা অপরিহার্য।
এদিকে, মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আট বিলিয়ন ডলারেরও বড় চুক্তিতে আবদ্ধ। তদ্ব্যতীত, টেসলার স্বয়ংক্রিয় গাড়ির নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি তদন্তের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁকে। মাস্ক নিয়মিত সরকারি তদন্তগুলোকে তুচ্ছ আখ্যা দিয়ে আসছেন এবং এগুলো তাঁর কোম্পানির জন্য বাধা বলে উল্লেখ করেছেন।
সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) স্পেসএক্সকে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালে রকেট উৎক্ষেপণে লাইসেন্স লঙ্ঘনের অভিযোগে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ডলার জরিমানা করতে চেয়েছিল। এ সময় ইলন মাস্ক সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, এফএএ সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
মডার্ন ইউএস পলিটিক্যাল হিস্টোরির অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ফেল্পস বলেন, মাস্ক অনেক নিয়ন্ত্রণ হ্রাসের কথা বলেন, যেসব তাঁর নিজের জন্যও লাভজনক। এমন এক বিশাল প্রতিষ্ঠানের মালিককে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।
মাস্ক দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বাধীন ও নামসর্বস্ব সরকারের কথা বলে আসছেন। তিনি সত্যিকারেই ছোট সরকারে বিশ্বাস করেন। ইউএস পলিটিকসের অধ্যাপক টমাস গিফটের মতে, মাস্কের অনেক ব্যবসায়িক উদ্যোগ রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার ওপর তাঁর ব্যাপক স্বার্থ রয়েছে, তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়।
মাস্ক ট্রাম্পের পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলে বড় ধরনের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েছেন। গিফটের মতে, এতে তাঁর স্বার্থের একটা অংশ আছে। একই সঙ্গে তিনি সত্যিই সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্য কমাতে আগ্রহী।
আস্থার পুরস্কার
মাস্ক বহুদিন ধরেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। ফোর্বসের মতে, তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। কিন্তু ২০২০ সালে কোভিড লকডাউনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন এবং ২০২১ সালে টেসলাকে হোয়াইট হাউসে বৈদ্যুতিক গাড়িবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়ার পর থেকে তিনি বাইডেন প্রশাসনের কড়া সমালোচক হয়ে ওঠেন। এ বছর ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার পর তিনি প্রকাশ্যে তাঁকে সমর্থন দেন এবং ট্রাম্পের প্রচারণায় ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেন।
অধ্যাপক ফেল্পস বলেন, মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক ‘লেনদেনভিত্তিক’। যেখানে নতুন দায়িত্ব মাস্ককে প্রয়োজনীয় কাজগুলোর জন্য প্রতীকী ক্ষমতা দিতে পারে।
মার্কিন নাগরিক না হওয়ায় মাস্ক প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না, তবে তিনি নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির অধ্যাপক টমাস গিফটের মতে, নতুন প্রশাসনে ট্রাম্প অনুগত ব্যক্তিদের আশপাশে রাখতে চান, এখানে মাস্কের চেয়ে বিশ্বস্ত সমর্থক আর কেউ নেই। প্রযুক্তি নীতি থেকে ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিষয়গুলোতে মাস্ক ট্রাম্পের একজন বিশ্বস্ত পরামর্শকও হয়ে উঠেছেন।
নির্বাচনের পর ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে ফোনালাপে মাস্কের উপস্থিতি তাঁর প্রভাবের প্রমাণ। এটি অসাধারণ ঘটনা বলে মনে করেন অধ্যাপক অ্যালেক্স ওয়াডান। তিনি বলেন, ‘সাধারণত, এমনকি সবচেয়ে বড় দাতারা এ ধরনের প্রভাব বা জায়গা পান না।’
চলতি বছরের গ্রীষ্মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণের সময় ইলন মাস্ক প্রথমবার খরচ কমানোর পরিকল্পনার কথা জানান। তখন শিবা ইনু কুকুরের মিম থেকেই ডজকয়েন নামে ক্রিপ্টোকারেন্সির নামকরণ করা হয়। মাস্কের প্রিয় এই ক্রিপ্টো মুদ্রার দাম নির্বাচনের পর ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অধ্যাপক ফেল্পসের মতে, এটি ক্রিপ্টোকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার দিকে যাচ্ছে।
তবে মাস্কের খরচ কমানোর কথা কতটা বাস্তব হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। নতুন এই বিভাগটির কোনো আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা থাকবে না, বরং সরকারের বাইরে থেকে ‘পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা’ দেবে বলে জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই বিশাল কাটছাঁট দ্রুত কার্যকর করলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে এবং কংগ্রেসের বিরোধিতার মুখে পড়তে পারে। মাস্ক নিজেও ঝুঁকির কথা স্বীকার করে বলেছেন, আমেরিকানদের দীর্ঘমেয়াদি লাভের জন্য সাময়িক কষ্ট সহ্য করতে হবে।
মাস্কের কোম্পানিগুলোর পরিচালনার ধরন থেকে বোঝা যায় আমেরিকানরা কী আশা করতে পারেন। ২০২২ সালে টুইটার (এখন এক্স) কেনার পর মাস্ক প্লাটফর্মটিতে দ্রুত পরিবর্তন আনেন। কয়েক সপ্তাহে তিনি প্ল্যাটফর্মের কর্মীসংখ্যা প্রায় ৮ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০-তে নামিয়ে আনেন।
ইউনিভার্সিটি অব লেস্টারের অধ্যাপক অ্যালেক্স ওয়াডান বলেন, প্লাটফর্মকে কার্যকারী করা বলতে তিনি কর্মী ছাঁটাইকে বুঝেছিলেন।
মাস্ক একই সঙ্গে কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ শিথিল, অ্যাকাউন্ট যাচাই বন্ধ এবং পূর্বে নিষিদ্ধদের প্ল্যাটফর্মে ফিরে আসার সুযোগ দেন। এদের মধ্যে ট্রাম্পও ছিলেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর তাঁকে টুইটারে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সমালোচকেরা বলেন, মাস্কের নতুন নীতির কারণে এক্সে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও গুজব বেড়েছে। যদিও মাস্ক দাবি করেন, প্ল্যাটফর্মটি রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ।
এসব পরিবর্তনের ফলে বিজ্ঞাপনদাতারা প্ল্যাটফর্মটি ত্যাগ করতে শুরু করেন, যা এক্সের আয়ের প্রধান উৎস ছিল। এরপর মাস্ক সাবস্ক্রিপশন ফির মতো নতুন অর্থ আয়ের উপায় বের করেছেন। তবুও কোম্পানির বর্তমান মূল্য দুই বছর আগে ইলন মাস্কের ক্রয়মূল্য ৪৪ বিলিয়ন ডলার থেকে অনেক কম।
তবে তাঁর অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠান টেসলা ও স্পেসএক্স তুলনামূলকভাবে ভালো করছে। টেসলা ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরিতে লাভ করছে। স্পেসএক্স কম খরচে রকেট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক টমাস গিফট বলেন, মাস্ক নিজের প্রতিষ্ঠানে কার্যোরিতা বাড়াতে নিরলস চেষ্টা করেছেন। তবে এখন তাঁর প্রধান কাজ হবে মার্কিন সরকারের জটিলতা কমানো। এই পদটি তাকে নতুন প্রশাসনে প্রভাব বিস্তারের সুযোগও দেবে। কেননা, ট্রাম্পের কাছে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি এখন মাস্ক।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গঠনের কাজের জন্য তিনি মাস্ক ও সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামাস্বামীকে নিয়োগ দিয়েছেন।
এ দায়িত্বের জন্য ইলন মাস্ক কয়েক মাস ধরে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। নতুন এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম তাঁর বিভিন্ন ব্যবসায়িক পরিচালনার অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দায়িত্ব তাঁকে সরকারি নীতিমালা ও তাঁর বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ন্ত্রণের সুযোগ এনে দিতে পারে।
অক্টোবরের এক সমাবেশে মাস্ক বলেছিলেন, তিনি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট প্রায় দুই ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত কমানো সম্ভব। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মীসংখ্যা হ্রাসের কথাও বলেছেন। অন্যদিকে, রামাস্বামী শিক্ষা বিভাগ, পরমাণু নিয়ন্ত্রণ কমিশন, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ ও এফবিআইয়ের মতো বিভাগ বন্ধ করার প্রস্তাব রেখেছেন।
ইলন মাস্ক দীর্ঘদিন ধরে সরকারি নিয়ন্ত্রণবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মহাকাশ অভিযানের স্বপ্ন ও মানব বসতির ব্যাপকতা বাড়ানোর পরিকল্পনা সফল করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস করা অপরিহার্য।
এদিকে, মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আট বিলিয়ন ডলারেরও বড় চুক্তিতে আবদ্ধ। তদ্ব্যতীত, টেসলার স্বয়ংক্রিয় গাড়ির নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি তদন্তের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁকে। মাস্ক নিয়মিত সরকারি তদন্তগুলোকে তুচ্ছ আখ্যা দিয়ে আসছেন এবং এগুলো তাঁর কোম্পানির জন্য বাধা বলে উল্লেখ করেছেন।
সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) স্পেসএক্সকে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালে রকেট উৎক্ষেপণে লাইসেন্স লঙ্ঘনের অভিযোগে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ডলার জরিমানা করতে চেয়েছিল। এ সময় ইলন মাস্ক সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, এফএএ সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
মডার্ন ইউএস পলিটিক্যাল হিস্টোরির অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ফেল্পস বলেন, মাস্ক অনেক নিয়ন্ত্রণ হ্রাসের কথা বলেন, যেসব তাঁর নিজের জন্যও লাভজনক। এমন এক বিশাল প্রতিষ্ঠানের মালিককে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।
মাস্ক দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বাধীন ও নামসর্বস্ব সরকারের কথা বলে আসছেন। তিনি সত্যিকারেই ছোট সরকারে বিশ্বাস করেন। ইউএস পলিটিকসের অধ্যাপক টমাস গিফটের মতে, মাস্কের অনেক ব্যবসায়িক উদ্যোগ রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার ওপর তাঁর ব্যাপক স্বার্থ রয়েছে, তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়।
মাস্ক ট্রাম্পের পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলে বড় ধরনের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েছেন। গিফটের মতে, এতে তাঁর স্বার্থের একটা অংশ আছে। একই সঙ্গে তিনি সত্যিই সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও আমলাতন্ত্রের দৌরাত্ম্য কমাতে আগ্রহী।
আস্থার পুরস্কার
মাস্ক বহুদিন ধরেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। ফোর্বসের মতে, তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। কিন্তু ২০২০ সালে কোভিড লকডাউনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন এবং ২০২১ সালে টেসলাকে হোয়াইট হাউসে বৈদ্যুতিক গাড়িবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়ার পর থেকে তিনি বাইডেন প্রশাসনের কড়া সমালোচক হয়ে ওঠেন। এ বছর ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার পর তিনি প্রকাশ্যে তাঁকে সমর্থন দেন এবং ট্রাম্পের প্রচারণায় ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেন।
অধ্যাপক ফেল্পস বলেন, মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক ‘লেনদেনভিত্তিক’। যেখানে নতুন দায়িত্ব মাস্ককে প্রয়োজনীয় কাজগুলোর জন্য প্রতীকী ক্ষমতা দিতে পারে।
মার্কিন নাগরিক না হওয়ায় মাস্ক প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না, তবে তিনি নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির অধ্যাপক টমাস গিফটের মতে, নতুন প্রশাসনে ট্রাম্প অনুগত ব্যক্তিদের আশপাশে রাখতে চান, এখানে মাস্কের চেয়ে বিশ্বস্ত সমর্থক আর কেউ নেই। প্রযুক্তি নীতি থেকে ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিষয়গুলোতে মাস্ক ট্রাম্পের একজন বিশ্বস্ত পরামর্শকও হয়ে উঠেছেন।
নির্বাচনের পর ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে ফোনালাপে মাস্কের উপস্থিতি তাঁর প্রভাবের প্রমাণ। এটি অসাধারণ ঘটনা বলে মনে করেন অধ্যাপক অ্যালেক্স ওয়াডান। তিনি বলেন, ‘সাধারণত, এমনকি সবচেয়ে বড় দাতারা এ ধরনের প্রভাব বা জায়গা পান না।’
চলতি বছরের গ্রীষ্মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণের সময় ইলন মাস্ক প্রথমবার খরচ কমানোর পরিকল্পনার কথা জানান। তখন শিবা ইনু কুকুরের মিম থেকেই ডজকয়েন নামে ক্রিপ্টোকারেন্সির নামকরণ করা হয়। মাস্কের প্রিয় এই ক্রিপ্টো মুদ্রার দাম নির্বাচনের পর ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অধ্যাপক ফেল্পসের মতে, এটি ক্রিপ্টোকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার দিকে যাচ্ছে।
তবে মাস্কের খরচ কমানোর কথা কতটা বাস্তব হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। নতুন এই বিভাগটির কোনো আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা থাকবে না, বরং সরকারের বাইরে থেকে ‘পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা’ দেবে বলে জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই বিশাল কাটছাঁট দ্রুত কার্যকর করলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে এবং কংগ্রেসের বিরোধিতার মুখে পড়তে পারে। মাস্ক নিজেও ঝুঁকির কথা স্বীকার করে বলেছেন, আমেরিকানদের দীর্ঘমেয়াদি লাভের জন্য সাময়িক কষ্ট সহ্য করতে হবে।
মাস্কের কোম্পানিগুলোর পরিচালনার ধরন থেকে বোঝা যায় আমেরিকানরা কী আশা করতে পারেন। ২০২২ সালে টুইটার (এখন এক্স) কেনার পর মাস্ক প্লাটফর্মটিতে দ্রুত পরিবর্তন আনেন। কয়েক সপ্তাহে তিনি প্ল্যাটফর্মের কর্মীসংখ্যা প্রায় ৮ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০-তে নামিয়ে আনেন।
ইউনিভার্সিটি অব লেস্টারের অধ্যাপক অ্যালেক্স ওয়াডান বলেন, প্লাটফর্মকে কার্যকারী করা বলতে তিনি কর্মী ছাঁটাইকে বুঝেছিলেন।
মাস্ক একই সঙ্গে কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ শিথিল, অ্যাকাউন্ট যাচাই বন্ধ এবং পূর্বে নিষিদ্ধদের প্ল্যাটফর্মে ফিরে আসার সুযোগ দেন। এদের মধ্যে ট্রাম্পও ছিলেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর তাঁকে টুইটারে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সমালোচকেরা বলেন, মাস্কের নতুন নীতির কারণে এক্সে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও গুজব বেড়েছে। যদিও মাস্ক দাবি করেন, প্ল্যাটফর্মটি রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ।
এসব পরিবর্তনের ফলে বিজ্ঞাপনদাতারা প্ল্যাটফর্মটি ত্যাগ করতে শুরু করেন, যা এক্সের আয়ের প্রধান উৎস ছিল। এরপর মাস্ক সাবস্ক্রিপশন ফির মতো নতুন অর্থ আয়ের উপায় বের করেছেন। তবুও কোম্পানির বর্তমান মূল্য দুই বছর আগে ইলন মাস্কের ক্রয়মূল্য ৪৪ বিলিয়ন ডলার থেকে অনেক কম।
তবে তাঁর অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠান টেসলা ও স্পেসএক্স তুলনামূলকভাবে ভালো করছে। টেসলা ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরিতে লাভ করছে। স্পেসএক্স কম খরচে রকেট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক টমাস গিফট বলেন, মাস্ক নিজের প্রতিষ্ঠানে কার্যোরিতা বাড়াতে নিরলস চেষ্টা করেছেন। তবে এখন তাঁর প্রধান কাজ হবে মার্কিন সরকারের জটিলতা কমানো। এই পদটি তাকে নতুন প্রশাসনে প্রভাব বিস্তারের সুযোগও দেবে। কেননা, ট্রাম্পের কাছে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি এখন মাস্ক।
বিবিসি থেকে অনুবাদ করেছেন আবদুল বাছেদ
পরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
৬ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় মোটামুটি সারা বিশ্বকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাদ যায়নি তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই জয়ের বড় প্রভাব পড়বে প্রতিবেশী দেশগুলোয়।
৮ দিন আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর বিশ্বের অনেক অঞ্চলে নতুন উদ্বেগ ও প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, ইউক্রেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, আর ইসরায়েল অনেকটা খুশিতে উদ্বেলিত। তবে বিশেষ নজরে আছে পারস্য উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো।
৯ দিন আগেবিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি একটি বৃহত্তর সুরক্ষাবাদী নীতির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তবে ছোট দেশগুলোকে এর বিরোধিতা করার জন্য উৎসাহিত করা কঠিন হবে। তবে সবকিছু এখনো সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। ট্রাম্পের সতর্কতাগুলো হয়তো তাঁর কথার প্রতিফলন হতে পারে। তবে, বাস্তবতা হলো—এভাবেই একটি গুরুতর বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা হতে পারে
৯ দিন আগে