মারুফ ইসলাম
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ঘিরে ভারতের রাজনীতি এখন উত্তাল। সম্প্রতি এক মানহানির মামলায় রাহুলকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন গুজরাটের আদালত। তবে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য তাঁকে ৩০ দিনের জামিন দেওয়া হয়েছে।
কারাদণ্ডের রায়ের পর আইন অনুযায়ী রাহুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়েছে। এ বিষয়ে গত শুক্রবার লোকসভা সচিবালয় থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় সংবিধানের ১০২ (১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হলো। মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দিন, অর্থাৎ ২৩ মার্চ, ২০২৩ থেকে তিনি আর এমপি নন।
এরপর গত সোমবার রাহুলকে তাঁর সরকারি বাংলো ছাড়ারও নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রাহুলও জানিয়েছেন, তিনি দ্রুতই বাংলো ছেড়ে দেবেন।
এ ছাড়া রাহুল গান্ধী তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টের বায়োতে (নিজের পরিচয়-সম্পর্কিত কিছু বর্ণনা) দেওয়া পরিচয়ে পরিবর্তন এনেছেন। তিনি বায়োতে লিখেছেন, এটি রাহুল গান্ধীর অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট। তিনি ন্যাশনাল কংগ্রেসের সদস্য, ‘ডিস’ কোয়ালিফায়েড’ এমপি।
তবে রাহুল ‘ডিসকোয়ালিফায়েড’ বানানে একটু পরিবর্তন এনে ‘ডিস’ কোয়ালিফায়েড করেছেন। যদিও এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি এই কংগ্রেস নেতা। এমনকি গুগল সার্চেও এমন বানানের অস্তিত্ব নেই।
কয়েক দিনে এসব ঘটনার পাশাপাশি যে বিষয়টি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে, সেটি হচ্ছে, বিজেপি বিরোধীদের ঐক্যের সম্ভাবনা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি একটি টার্নিং পয়েন্ট। এই সুযোগে বিরোধী দলগুলো এক জোট হয়ে যেতে পারে।
ইতিমধ্যে সে ধরনের লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলো রাহুলের কারাদণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। রাহুলের সবচেয়ে বড় সমালোচক হিসেবে পরিচিত আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাহুলের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন।
এসব বিবৃতির বাইরে এসে বিরোধীরা যদি এক জোট হয়ে রাজপথে নামেন, তবে বলতে হবে, রাহুলের বিরুদ্ধে এ কারাদণ্ড, লোকসভার সদস্যপদ বাতিল, সরকারি বাংলো কেড়ে নেওয়াসহ যাবতীয় ঘটনা তাঁর জন্য শাপে বরই হবে। রাহুলকে থামাতে বিজেপি যে কৌশল হাতে নিয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত বুমেরাং হয়ে বিজেপির বুকেই বিদ্ধ হবে।
গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করেছিলেন রাহুল গান্ধী। টানা প্রায় ছয় মাস তিনি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হেঁটে বেড়িয়েছেন। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, শীতে জর্জরিত হয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের দুঃখ-দুর্দশা শুনেছেন। এতে তাঁর জনপ্রিয়তা অভাবনীয়ভাবে বেড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনীতিতে নবজন্ম লাভ করেছেন রাহুল গান্ধী। নতুন করে উত্থান ঘটেছে তাঁর।
রাহুলের এই উত্থান মোদি সরকারের জন্য শিরে সংক্রান্তি হয়ে দেখা দিয়েছে। বিজেপি যে তাদের ক্ষমতার আসন নিরঙ্কুশ করতে চায় এবং ভারতকে একটি সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, সেই পথে এখন একমাত্র বাধা রাহুল গান্ধী। কারণ, ইতিমধ্যে মোদি সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম, বিচারব্যবস্থা—সবকিছুই নিজের কবজায় নিয়ে নিয়েছে। মোদির পথে কাঁটা বিছানোর আর কেউ নেই, একমাত্র রাহুল ছাড়া।
সুতরাং, রাহুলকে বাইরে রাখা বিজেপির জন্য এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক। আগামী নির্বাচনে বিজেপির জন্য বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারেন রাহুল গান্ধী।
ইতিমধ্যে রাহুল গান্ধী ভারতের অন্য রাজ্যেও পদযাত্রা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এভাবে তিনি যদি সমগ্র ভারত পায়ে হেঁটে চষে বেড়ান, তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হবে, তাতে সন্দেহ নেই। সংগত কারণেই বিজেপি আর রাহুলকে বাইরে রাখতে চায় না। তাঁকে রাজপথে নামতে দিতে চায় না। সারা ভারত হাঁটতে দিতে চায় না। জনগণের কাছে যেতে দিতে চায় না। সভা-সমাবেশ করতে দিতে চায় না। যেকোনো মূল্যে রাহুলকে থামাতে চায়।
রাহুলকে থামাতে হলে জেলে পুরতে হবে। তাই খুঁজে খুঁজে ২০১৯ সালের পুরোনো একটি মামলা বের করেছে বিজেপি। মামলাটি করেছিলেন বিজেপির বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলারে একটি সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার করার সময় রাহুল গান্ধী অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘সব চোরের ডাকনাম কীভাবে মোদি হয়!’ তাঁর এ মন্তব্যের পর পূর্ণেশ মোদি মামলাটি করেছিলেন।
সেই মামলায় গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট আদালত রাহুলের দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। এখন এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন রাহুল। উচ্চ আদালতেও যদি এ রায় বহাল থাকে, তাহলে তিনি কারাগারে যাবেন। সন্দেহ নেই, কারান্তরীণ রাহুল আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে জনগণের বেশি সহানুভূতি কুড়াতে পারবেন।
এর বিপরীত ঘটনা ঘটবে নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে। তিনি নিপীড়ক শাসক হিসেবে জনমনে স্থায়ী জায়গা করে নেবেন। এত দিন মোদি নিজেকে নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতা হিসেবে প্রচার করে এবং চা বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে তাঁকে যে অসংখ্য হৃদয়বিদারক সংগ্রাম করতে হয়েছে, সেই গল্প বলে বলে মানুষের সহানুভূতি কুড়িয়েছেন। সেই সহানুভূতির জায়গা এখন নষ্ট হবে মোদির।
অন্যদিকে বিরোধীরাও রাহুলের কারাদণ্ডকে ইস্যু করে এক জোট হওয়ার উপলক্ষ খুঁজে পাবে। ইতিমধ্যে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘আমরা রাহুল গান্ধীর ইস্যুতে রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামী দিনে সারা দেশে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছি। এ ছাড়া রাহুল গান্ধী ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিরোধীদের প্রতি “সিস্টেম্যাটিক” ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে। আমাদের এখন বিরোধী ঐক্যের বিষয়টিকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে এগিয়ে নেওয়া উচিত।’
কংগ্রেসের সভাপতি প্রতিদিন পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করছেন বলেও জানান তিনি। রমেশ বলেন, ‘এখন এই সমন্বয়ের কাজ পার্লামেন্টের বাইরেও করতে হবে।’
এর আগে কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা এবং আঞ্চলিক বিরোধী দলগুলোর নেতা যেমন—মমতা বন্দোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এম কে স্ট্যালিন, উদ্ধব ঠাকরে, কেসিআর, অখিলেশ যাদব রাহুল গান্ধীকে সমর্থন করেছেন এবং ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের ‘স্বৈরাচারী’ আচরণের সমালোচনা করেছেন।
রাহুলকে কারাগারে রাখলে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হবে এবং রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলবে। অন্যদিকে রাহুলকে বাইরে রাখলে তিনি সারা ভারত চষে বেড়িয়ে গণসংযোগ করবেন।
কী করবেন মোদি এখন? উভয় সংকট!
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ওয়্যার ও টাইম ম্যাগাজিন
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ঘিরে ভারতের রাজনীতি এখন উত্তাল। সম্প্রতি এক মানহানির মামলায় রাহুলকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন গুজরাটের আদালত। তবে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য তাঁকে ৩০ দিনের জামিন দেওয়া হয়েছে।
কারাদণ্ডের রায়ের পর আইন অনুযায়ী রাহুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়েছে। এ বিষয়ে গত শুক্রবার লোকসভা সচিবালয় থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় সংবিধানের ১০২ (১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হলো। মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দিন, অর্থাৎ ২৩ মার্চ, ২০২৩ থেকে তিনি আর এমপি নন।
এরপর গত সোমবার রাহুলকে তাঁর সরকারি বাংলো ছাড়ারও নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রাহুলও জানিয়েছেন, তিনি দ্রুতই বাংলো ছেড়ে দেবেন।
এ ছাড়া রাহুল গান্ধী তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টের বায়োতে (নিজের পরিচয়-সম্পর্কিত কিছু বর্ণনা) দেওয়া পরিচয়ে পরিবর্তন এনেছেন। তিনি বায়োতে লিখেছেন, এটি রাহুল গান্ধীর অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট। তিনি ন্যাশনাল কংগ্রেসের সদস্য, ‘ডিস’ কোয়ালিফায়েড’ এমপি।
তবে রাহুল ‘ডিসকোয়ালিফায়েড’ বানানে একটু পরিবর্তন এনে ‘ডিস’ কোয়ালিফায়েড করেছেন। যদিও এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি এই কংগ্রেস নেতা। এমনকি গুগল সার্চেও এমন বানানের অস্তিত্ব নেই।
কয়েক দিনে এসব ঘটনার পাশাপাশি যে বিষয়টি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে, সেটি হচ্ছে, বিজেপি বিরোধীদের ঐক্যের সম্ভাবনা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি একটি টার্নিং পয়েন্ট। এই সুযোগে বিরোধী দলগুলো এক জোট হয়ে যেতে পারে।
ইতিমধ্যে সে ধরনের লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। বিরোধী দলগুলো রাহুলের কারাদণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। রাহুলের সবচেয়ে বড় সমালোচক হিসেবে পরিচিত আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাহুলের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন।
এসব বিবৃতির বাইরে এসে বিরোধীরা যদি এক জোট হয়ে রাজপথে নামেন, তবে বলতে হবে, রাহুলের বিরুদ্ধে এ কারাদণ্ড, লোকসভার সদস্যপদ বাতিল, সরকারি বাংলো কেড়ে নেওয়াসহ যাবতীয় ঘটনা তাঁর জন্য শাপে বরই হবে। রাহুলকে থামাতে বিজেপি যে কৌশল হাতে নিয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত বুমেরাং হয়ে বিজেপির বুকেই বিদ্ধ হবে।
গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করেছিলেন রাহুল গান্ধী। টানা প্রায় ছয় মাস তিনি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হেঁটে বেড়িয়েছেন। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, শীতে জর্জরিত হয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের দুঃখ-দুর্দশা শুনেছেন। এতে তাঁর জনপ্রিয়তা অভাবনীয়ভাবে বেড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনীতিতে নবজন্ম লাভ করেছেন রাহুল গান্ধী। নতুন করে উত্থান ঘটেছে তাঁর।
রাহুলের এই উত্থান মোদি সরকারের জন্য শিরে সংক্রান্তি হয়ে দেখা দিয়েছে। বিজেপি যে তাদের ক্ষমতার আসন নিরঙ্কুশ করতে চায় এবং ভারতকে একটি সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, সেই পথে এখন একমাত্র বাধা রাহুল গান্ধী। কারণ, ইতিমধ্যে মোদি সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম, বিচারব্যবস্থা—সবকিছুই নিজের কবজায় নিয়ে নিয়েছে। মোদির পথে কাঁটা বিছানোর আর কেউ নেই, একমাত্র রাহুল ছাড়া।
সুতরাং, রাহুলকে বাইরে রাখা বিজেপির জন্য এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক। আগামী নির্বাচনে বিজেপির জন্য বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারেন রাহুল গান্ধী।
ইতিমধ্যে রাহুল গান্ধী ভারতের অন্য রাজ্যেও পদযাত্রা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এভাবে তিনি যদি সমগ্র ভারত পায়ে হেঁটে চষে বেড়ান, তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হবে, তাতে সন্দেহ নেই। সংগত কারণেই বিজেপি আর রাহুলকে বাইরে রাখতে চায় না। তাঁকে রাজপথে নামতে দিতে চায় না। সারা ভারত হাঁটতে দিতে চায় না। জনগণের কাছে যেতে দিতে চায় না। সভা-সমাবেশ করতে দিতে চায় না। যেকোনো মূল্যে রাহুলকে থামাতে চায়।
রাহুলকে থামাতে হলে জেলে পুরতে হবে। তাই খুঁজে খুঁজে ২০১৯ সালের পুরোনো একটি মামলা বের করেছে বিজেপি। মামলাটি করেছিলেন বিজেপির বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলারে একটি সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার করার সময় রাহুল গান্ধী অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘সব চোরের ডাকনাম কীভাবে মোদি হয়!’ তাঁর এ মন্তব্যের পর পূর্ণেশ মোদি মামলাটি করেছিলেন।
সেই মামলায় গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট আদালত রাহুলের দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। এখন এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন রাহুল। উচ্চ আদালতেও যদি এ রায় বহাল থাকে, তাহলে তিনি কারাগারে যাবেন। সন্দেহ নেই, কারান্তরীণ রাহুল আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে জনগণের বেশি সহানুভূতি কুড়াতে পারবেন।
এর বিপরীত ঘটনা ঘটবে নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রে। তিনি নিপীড়ক শাসক হিসেবে জনমনে স্থায়ী জায়গা করে নেবেন। এত দিন মোদি নিজেকে নির্যাতিত-নিপীড়িত নেতা হিসেবে প্রচার করে এবং চা বিক্রেতা থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে তাঁকে যে অসংখ্য হৃদয়বিদারক সংগ্রাম করতে হয়েছে, সেই গল্প বলে বলে মানুষের সহানুভূতি কুড়িয়েছেন। সেই সহানুভূতির জায়গা এখন নষ্ট হবে মোদির।
অন্যদিকে বিরোধীরাও রাহুলের কারাদণ্ডকে ইস্যু করে এক জোট হওয়ার উপলক্ষ খুঁজে পাবে। ইতিমধ্যে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘আমরা রাহুল গান্ধীর ইস্যুতে রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামী দিনে সারা দেশে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছি। এ ছাড়া রাহুল গান্ধী ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিরোধীদের প্রতি “সিস্টেম্যাটিক” ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে। আমাদের এখন বিরোধী ঐক্যের বিষয়টিকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে এগিয়ে নেওয়া উচিত।’
কংগ্রেসের সভাপতি প্রতিদিন পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করছেন বলেও জানান তিনি। রমেশ বলেন, ‘এখন এই সমন্বয়ের কাজ পার্লামেন্টের বাইরেও করতে হবে।’
এর আগে কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা এবং আঞ্চলিক বিরোধী দলগুলোর নেতা যেমন—মমতা বন্দোপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এম কে স্ট্যালিন, উদ্ধব ঠাকরে, কেসিআর, অখিলেশ যাদব রাহুল গান্ধীকে সমর্থন করেছেন এবং ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের ‘স্বৈরাচারী’ আচরণের সমালোচনা করেছেন।
রাহুলকে কারাগারে রাখলে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হবে এবং রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলবে। অন্যদিকে রাহুলকে বাইরে রাখলে তিনি সারা ভারত চষে বেড়িয়ে গণসংযোগ করবেন।
কী করবেন মোদি এখন? উভয় সংকট!
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ওয়্যার ও টাইম ম্যাগাজিন
সম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৩ ঘণ্টা আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১১ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৫ দিন আগে