তুষার পাল
আজ থেকে কম করে হলেও ৫০ বছর আগের কথা। তখন পাড়ার মোড়ে দোকানে দোকানে রেফ্রিজারেটরে কোকা-কোলা ও পেপসি সাজানোর দৃশ্য ছিল অকল্পনীয়। ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকে ভারতে কোমল পানীয়ের একটি দেশি ব্র্যান্ড ছিল খুব জনপ্রিয়, যার নাম ছিল ক্যাম্পা কোলা।
বিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ক্যাম্পা কোলার নাম ছিল ঘরে ঘরে সবার মুখে। পশ্চিমা বহুজাতিক কোম্পানির বদলে দেশে তৈরি কোমল পানীয় ঘিরে ভারতীয় দেশাত্মবোধের একটা আবহ তৈরি করা হয়। ক্যাম্পা কোলার বিজ্ঞাপনী ট্যাগলাইন ছিল, ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান টেস্ট’ বা মহান ভারতীয় স্বাদ।
ওই সময় ক্যাম্পার জয়জয়াকারের কারণও ছিল। তখন আজকের মতো এতো প্রতিযোগিতাও ছিল না। সোভিয়েত আদলে পরিকল্পিত অর্থনীতি ছিল ভারতের এবং পশ্চিমা জিনিস ব্যবহারের একটা বিরুদ্ধ মনোভাব ছিল সাধারণ। ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পানীয়ের গোপন ফর্মুলা দিতে রাজি না হওয়ায় ১৯৭৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানি কোকা-কোলাকে ভারত ছাড়তে বাধ্য করা হয়। পেপসি তখনো আসেনি।
লম্বা গ্রীষ্মের অতি গরম দেশে কোকা-কোলার প্রস্থান বিশাল শূন্যতা তৈরি করেছিল। আর সেটাই তখন পূরণ করেছিল ক্যাম্পা কোলা। ভারতীয়েরা জানত, এটা আসল জিনিস নয়, তবু জন্মদিনের অনুষ্ঠান বা যে কোনো পার্টির অভ্যর্থনায় এর বড় কদর ছিল।
দিল্লির পিয়োর ড্রিঙ্কস গ্রুপ সত্তরের দশকে ভারতে ক্যাম্পা কোলার উৎপাদন ও বিপণণ হতো। তখন বাজারে ছিল পার্লের থাম্পস আপ, গোল্ড স্পট এবং লিমকারের মতো কোমল পানীয়ও। নব্বইয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত ক্যাম্পা কোলা ভারতের বাজারে বেশ জনপ্রিয় ছিল।
১৯৯৩ সালে সরকার সোভিয়েত নীতি পরিহার করে বিদেশি বিনিয়োগের দরজা খুলে দিলে এবার কোকা-কোলার সঙ্গে নতুন করে ভারতে বাজারে ঢুকে পেপসি। প্রথমেই পার্লের ব্র্যান্ডগুলি কিনে নেয় কোকা-কোলা। সরকারের উদারনীতি আর বহুজাতিক আগ্রাসী প্রতিযোগিতায় পিয়োর ড্রিঙ্কস টিকতে পারেনি, ক্যাম্পা কোলার উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
পরেও কয়েক বারবাজারে ফেরা চেষ্টা করে কোম্পানিটি; সর্বশেষ ২০১৯ সালেও শেষ বারের মতো চেষ্টা হয়। কিন্তু পুঁজির অভাবে ব্যবসা গুটাতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠানটি। ২০২২ সালে ২২ কোটি টাকা খরচ করে পিয়োর ড্রিঙ্কসের কাছ থেকে ক্যাম্পা ব্র্যান্ডটি কিনে নেয় ভারতের সবচেয়ে ধনী মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপ। আর তাই নতুন মালিকানায় পুনরুজ্জীবিত রূপে সুপারমার্কেটে, দোকানের তাকে আবার ঠাঁই পেল ক্যাম্পা কোলা।
হোলির পরপরই নতুন রঙে ফিরেই আলোড়ন তুলেছে ক্যাম্পা-কোলার ৩ ফ্লেভারের পানীয়। রিলায়েন্সের ই-গ্রোসারি থেকে ব্যাপক কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে ক্যাম্পা কোলা। প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে ক্যাম্পা কোলার ২ লিটারের বোতলের দাম রাখা হচ্ছে ৪৯ রুপি। অথচ কোকা-কোলার পৌনে দুই লিটারের বোতলের দাম ৭০ রুপি। আর সোয়া ২ লিটারের পেপসি বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকায়।
বাজারে আসতে না আসতেই কোকা-কোলার সঙ্গে লড়াই শুরু হয়ে গেছে। ক্যাম্পা কোলার প্রথম ধাক্কাতেই তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে দাম কমে দিয়েছে কোকা-কোলা; ২০০ মিলিলিটারের বোতল ৫ রুপি কমে বিক্রি হচ্ছে ১০ রুপিতে। দুটির দামই এখন ১০ রুপি। তবে পেপসির সবচেয়ে ছোট বোতলের দাম ১২ রুপি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বিশাল বিপণন নেটওয়ার্ক ও জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগ ব্যবহারের পাশাপাশি দাম কমিয়ে ধরে করে দেশি ব্র্যান্ডকে পুনরুজ্জীবনের কৌশল নিয়েছে রিলায়েন্স। এভাবেই কোকা-কোলা ও পেপসিকোর একচেটিয়া বাজারের দখল নিতে চায় ক্যাম্পা কোলা।
বাজার গবেষণা সংস্থা ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের কনসালট্যান্ট অমূল্য পণ্ডিত বলেন, ‘দেশজুড়ে প্রতিযোগিতায় অভ্যস্ত নয় কোকা-কোলা ও পেপসি। এখানেই রিলায়েন্সের ক্ষমতা। দেশি ব্র্যান্ড ও উচ্চ নস্টালজিক মূল্যবোধকে পুঁজি করে দুই মার্কিন কোম্পানিকে টক্কর দিতে পারে এই শিল্পগ্রুপ।
ইউরোমনিটর বলছে, ভারতের প্রায় ৪৬০ কোটি ডলারের কোমল পানীয়ের বাজারের এখন জোরালো দখল আছে পেপসি ও কোকা-কোলার। বাজারের এই আকার ২০২৭ সালের মধ্যে আরও ৫ শতাংশ বাড়বে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে ভারতে কোমল পানীয়র চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এবার ক্যাম্পা কোলার সঙ্গে এখন কোকা-কোলা ও পেপসির জোর লড়াই হবে। সেই প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই বাজারে শক্ত ভিত গড়তে স্বল্প দামের সঙ্গে নস্টালজিয়ার মিশেলে এই কৌশল।
সম্প্রতি আরো কয়েকটি ড্রিঙ্কস জায়ান্ট পেপসি ও কোকা-কোলার সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন কোলার কথা।
এসব দেখে মনে হতে পারে পেপসি ও কোকা-কোলার সঙ্গে পেরে উঠবেন না আম্বানির রিলায়েন্স। কিন্তু এশিয়ার সবচেয়ে ধনী মুকেশের আছে ‘কাট-থ্রোট প্রাইসিংয়ের’ মতো কৌশল ব্যবহার করে ভারতের টেলিকম বাজারে বাদশা হয়ে উঠার ইতিহাস। এটি এমন কৌশল, যেখানে কোনো কোম্পানি প্রতিযোগীদের বাজার থেকে বের করে দিতে বা নতুন প্রতিযোগীদের বাজারে প্রবেশে বাধা দিতে খুব কম দামে পণ্য বাজারে ছাড়ে।
মাত্র সাত বছর আগে এই কৌশল ব্যবহার করে টেলিকম ব্র্যান্ড জিও চালু করে ভারতের শীর্ষে তুলেছিলেন রিলায়েন্সকে। একই কৌশল তিনি প্রয়োগ করছেন ক্যাম্পা কোলার ক্ষেত্রে। অনেকেই বলছেন, কাম্পা কোলা হতে চলেছে আম্বানির ‘জিও ২ ’। প্রতিযোগীদের ঠেকাতে টেলিকম খাতে ঢুকেই ধামাকা অফার দিয়েছিল জিও।
এমনকি ইন্টারনেট পরিষেবাও দিয়েছিল বিনামূল্যে। এবার সেই একই ধাঁচ ফলোও করা হচ্ছে। একেবারে ফ্রি না হলেও কার্যত পেপসি, কোকের তুলনায় প্রায় অর্ধেক দামে ক্যাম্পা কোলা বিক্রি করছে রিলায়েন্স।
নিজের বা যৌথ উদ্যোগে কারখানা চালু করে তাতে ক্যাম্পা কোলা উৎপাদন করে হোটেল, রেস্তরাঁ ও ফ্লাইটে সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে বলে রিলায়েন্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে। গত বছর ২৭ লাখ ডলারে এই ব্র্যান্ড অধিগ্রহণের পর ক্যাম্পার উৎপাদন আউটসোর্সিং করছে রিলায়েন্স।
এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ক্যাম্পা-কোলার দাম সর্বত্রই কমবে। আইপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ঘিরে বিজ্ঞাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ক্যাম্পাকে ‘রিফ্রেশমেন্ট পার্টনার’ করার জন্য আইপিএলের কমপক্ষে তিনটি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে ৷
কোমল পানীয়ের বাজারে রিলায়েন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতা নিয়ে পেপসি কিছু না বললেও কথা বলেছে কোকা-কোলা। রয়টার্সকে এই বহুজাতিক বলেছে, তারা বছরখানিক ধরে ছোট বোতলের দাম অপরিবর্তিত রেখেছে। এখন তারা সরবরাহ সম্প্রসারণের দিকেই মনোনিবেশ করেছে।
তা ছাড়া ক্যাম্পা কোলার আগমনকে বাজারের বিকাশের জন্য বিনিয়োগের ‘দুর্দান্ত সুযোগ’ বলেই দেখছে এই কোম্পানি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স
আজ থেকে কম করে হলেও ৫০ বছর আগের কথা। তখন পাড়ার মোড়ে দোকানে দোকানে রেফ্রিজারেটরে কোকা-কোলা ও পেপসি সাজানোর দৃশ্য ছিল অকল্পনীয়। ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকে ভারতে কোমল পানীয়ের একটি দেশি ব্র্যান্ড ছিল খুব জনপ্রিয়, যার নাম ছিল ক্যাম্পা কোলা।
বিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ক্যাম্পা কোলার নাম ছিল ঘরে ঘরে সবার মুখে। পশ্চিমা বহুজাতিক কোম্পানির বদলে দেশে তৈরি কোমল পানীয় ঘিরে ভারতীয় দেশাত্মবোধের একটা আবহ তৈরি করা হয়। ক্যাম্পা কোলার বিজ্ঞাপনী ট্যাগলাইন ছিল, ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান টেস্ট’ বা মহান ভারতীয় স্বাদ।
ওই সময় ক্যাম্পার জয়জয়াকারের কারণও ছিল। তখন আজকের মতো এতো প্রতিযোগিতাও ছিল না। সোভিয়েত আদলে পরিকল্পিত অর্থনীতি ছিল ভারতের এবং পশ্চিমা জিনিস ব্যবহারের একটা বিরুদ্ধ মনোভাব ছিল সাধারণ। ভারতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পানীয়ের গোপন ফর্মুলা দিতে রাজি না হওয়ায় ১৯৭৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানি কোকা-কোলাকে ভারত ছাড়তে বাধ্য করা হয়। পেপসি তখনো আসেনি।
লম্বা গ্রীষ্মের অতি গরম দেশে কোকা-কোলার প্রস্থান বিশাল শূন্যতা তৈরি করেছিল। আর সেটাই তখন পূরণ করেছিল ক্যাম্পা কোলা। ভারতীয়েরা জানত, এটা আসল জিনিস নয়, তবু জন্মদিনের অনুষ্ঠান বা যে কোনো পার্টির অভ্যর্থনায় এর বড় কদর ছিল।
দিল্লির পিয়োর ড্রিঙ্কস গ্রুপ সত্তরের দশকে ভারতে ক্যাম্পা কোলার উৎপাদন ও বিপণণ হতো। তখন বাজারে ছিল পার্লের থাম্পস আপ, গোল্ড স্পট এবং লিমকারের মতো কোমল পানীয়ও। নব্বইয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত ক্যাম্পা কোলা ভারতের বাজারে বেশ জনপ্রিয় ছিল।
১৯৯৩ সালে সরকার সোভিয়েত নীতি পরিহার করে বিদেশি বিনিয়োগের দরজা খুলে দিলে এবার কোকা-কোলার সঙ্গে নতুন করে ভারতে বাজারে ঢুকে পেপসি। প্রথমেই পার্লের ব্র্যান্ডগুলি কিনে নেয় কোকা-কোলা। সরকারের উদারনীতি আর বহুজাতিক আগ্রাসী প্রতিযোগিতায় পিয়োর ড্রিঙ্কস টিকতে পারেনি, ক্যাম্পা কোলার উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
পরেও কয়েক বারবাজারে ফেরা চেষ্টা করে কোম্পানিটি; সর্বশেষ ২০১৯ সালেও শেষ বারের মতো চেষ্টা হয়। কিন্তু পুঁজির অভাবে ব্যবসা গুটাতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠানটি। ২০২২ সালে ২২ কোটি টাকা খরচ করে পিয়োর ড্রিঙ্কসের কাছ থেকে ক্যাম্পা ব্র্যান্ডটি কিনে নেয় ভারতের সবচেয়ে ধনী মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপ। আর তাই নতুন মালিকানায় পুনরুজ্জীবিত রূপে সুপারমার্কেটে, দোকানের তাকে আবার ঠাঁই পেল ক্যাম্পা কোলা।
হোলির পরপরই নতুন রঙে ফিরেই আলোড়ন তুলেছে ক্যাম্পা-কোলার ৩ ফ্লেভারের পানীয়। রিলায়েন্সের ই-গ্রোসারি থেকে ব্যাপক কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে ক্যাম্পা কোলা। প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে ক্যাম্পা কোলার ২ লিটারের বোতলের দাম রাখা হচ্ছে ৪৯ রুপি। অথচ কোকা-কোলার পৌনে দুই লিটারের বোতলের দাম ৭০ রুপি। আর সোয়া ২ লিটারের পেপসি বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকায়।
বাজারে আসতে না আসতেই কোকা-কোলার সঙ্গে লড়াই শুরু হয়ে গেছে। ক্যাম্পা কোলার প্রথম ধাক্কাতেই তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে দাম কমে দিয়েছে কোকা-কোলা; ২০০ মিলিলিটারের বোতল ৫ রুপি কমে বিক্রি হচ্ছে ১০ রুপিতে। দুটির দামই এখন ১০ রুপি। তবে পেপসির সবচেয়ে ছোট বোতলের দাম ১২ রুপি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বিশাল বিপণন নেটওয়ার্ক ও জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগ ব্যবহারের পাশাপাশি দাম কমিয়ে ধরে করে দেশি ব্র্যান্ডকে পুনরুজ্জীবনের কৌশল নিয়েছে রিলায়েন্স। এভাবেই কোকা-কোলা ও পেপসিকোর একচেটিয়া বাজারের দখল নিতে চায় ক্যাম্পা কোলা।
বাজার গবেষণা সংস্থা ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের কনসালট্যান্ট অমূল্য পণ্ডিত বলেন, ‘দেশজুড়ে প্রতিযোগিতায় অভ্যস্ত নয় কোকা-কোলা ও পেপসি। এখানেই রিলায়েন্সের ক্ষমতা। দেশি ব্র্যান্ড ও উচ্চ নস্টালজিক মূল্যবোধকে পুঁজি করে দুই মার্কিন কোম্পানিকে টক্কর দিতে পারে এই শিল্পগ্রুপ।
ইউরোমনিটর বলছে, ভারতের প্রায় ৪৬০ কোটি ডলারের কোমল পানীয়ের বাজারের এখন জোরালো দখল আছে পেপসি ও কোকা-কোলার। বাজারের এই আকার ২০২৭ সালের মধ্যে আরও ৫ শতাংশ বাড়বে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে ভারতে কোমল পানীয়র চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এবার ক্যাম্পা কোলার সঙ্গে এখন কোকা-কোলা ও পেপসির জোর লড়াই হবে। সেই প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই বাজারে শক্ত ভিত গড়তে স্বল্প দামের সঙ্গে নস্টালজিয়ার মিশেলে এই কৌশল।
সম্প্রতি আরো কয়েকটি ড্রিঙ্কস জায়ান্ট পেপসি ও কোকা-কোলার সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন কোলার কথা।
এসব দেখে মনে হতে পারে পেপসি ও কোকা-কোলার সঙ্গে পেরে উঠবেন না আম্বানির রিলায়েন্স। কিন্তু এশিয়ার সবচেয়ে ধনী মুকেশের আছে ‘কাট-থ্রোট প্রাইসিংয়ের’ মতো কৌশল ব্যবহার করে ভারতের টেলিকম বাজারে বাদশা হয়ে উঠার ইতিহাস। এটি এমন কৌশল, যেখানে কোনো কোম্পানি প্রতিযোগীদের বাজার থেকে বের করে দিতে বা নতুন প্রতিযোগীদের বাজারে প্রবেশে বাধা দিতে খুব কম দামে পণ্য বাজারে ছাড়ে।
মাত্র সাত বছর আগে এই কৌশল ব্যবহার করে টেলিকম ব্র্যান্ড জিও চালু করে ভারতের শীর্ষে তুলেছিলেন রিলায়েন্সকে। একই কৌশল তিনি প্রয়োগ করছেন ক্যাম্পা কোলার ক্ষেত্রে। অনেকেই বলছেন, কাম্পা কোলা হতে চলেছে আম্বানির ‘জিও ২ ’। প্রতিযোগীদের ঠেকাতে টেলিকম খাতে ঢুকেই ধামাকা অফার দিয়েছিল জিও।
এমনকি ইন্টারনেট পরিষেবাও দিয়েছিল বিনামূল্যে। এবার সেই একই ধাঁচ ফলোও করা হচ্ছে। একেবারে ফ্রি না হলেও কার্যত পেপসি, কোকের তুলনায় প্রায় অর্ধেক দামে ক্যাম্পা কোলা বিক্রি করছে রিলায়েন্স।
নিজের বা যৌথ উদ্যোগে কারখানা চালু করে তাতে ক্যাম্পা কোলা উৎপাদন করে হোটেল, রেস্তরাঁ ও ফ্লাইটে সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে বলে রিলায়েন্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে। গত বছর ২৭ লাখ ডলারে এই ব্র্যান্ড অধিগ্রহণের পর ক্যাম্পার উৎপাদন আউটসোর্সিং করছে রিলায়েন্স।
এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ক্যাম্পা-কোলার দাম সর্বত্রই কমবে। আইপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ঘিরে বিজ্ঞাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ক্যাম্পাকে ‘রিফ্রেশমেন্ট পার্টনার’ করার জন্য আইপিএলের কমপক্ষে তিনটি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে ৷
কোমল পানীয়ের বাজারে রিলায়েন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতা নিয়ে পেপসি কিছু না বললেও কথা বলেছে কোকা-কোলা। রয়টার্সকে এই বহুজাতিক বলেছে, তারা বছরখানিক ধরে ছোট বোতলের দাম অপরিবর্তিত রেখেছে। এখন তারা সরবরাহ সম্প্রসারণের দিকেই মনোনিবেশ করেছে।
তা ছাড়া ক্যাম্পা কোলার আগমনকে বাজারের বিকাশের জন্য বিনিয়োগের ‘দুর্দান্ত সুযোগ’ বলেই দেখছে এই কোম্পানি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স
একটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
৩ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৮ দিন আগে