গ্লোবাল টাইমস
চীন-যুক্তরাষ্ট্র কণ্টকাকীর্ণ সম্পর্ক মসৃণ করতে বিদায়ী বছরের শেষ দিকে বেশ চেষ্টা হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালেও বৈরী দুই দেশের সম্পর্ক মধুর হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হিসেবেই দেখছেন চীনা বিশ্লেষকেরা। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা ধরে রাখার চেষ্টা থেকে ওয়াশিংটন আগামী বছর পিছু হটবে তেমনটা ভাবার কারণ নেই।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিজেদের শক্তিমত্তা আমলে রেখেই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব আগে কখনোই এতটা শক্তিশালী ছিল না।
এই অঞ্চলে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সম্পর্কের কাঠামো বা রূপরেখা এগিয়ে নেওয়া, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অকাস চুক্তি, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে তুলনামূলক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি, ফিলিপাইনের সঙ্গে নতুন সামরিক চুক্তি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও টোঙ্গায় নতুন মার্কিন দূতাবাস খোলা এবং কোয়াড জোটে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণের উদাহরণ দেন ব্লিঙ্কেন ।
চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন সংঘাতে রূপ না নেয় সেই ঝুঁকি কমাতে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গত নভেম্বরে সান ফ্রান্সিসকোয় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ এবং দুই দেশের সশস্ত্রবাহিনীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে ব্লিঙ্কেনের প্রশমনমূলক বক্তব্যেও প্রথাগত মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখার ইঙ্গিত খুঁজে পেয়েছেন চীনা বিশ্লেষকেরা। চায়না ফরেন অ্যাফেয়ার্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লি হাইদং বলেন, ‘ব্লিঙ্কেনের এই মন্তব্য প্রথাগত যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিকতা ও বিভাজিত বিশ্ব ব্যবস্থারই প্রতিফলন ঘটিয়েছে। চীনসহ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক নীতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে কেবল নিজের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়, তা ব্লিঙ্কেনের মন্তব্যে সুস্পষ্ট।’
লি হাইদং আরও বলেন, ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও বিশ্বজুড়ে প্রাধান্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মিত্র দেশগুলোর সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিযোগীদের (যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার) বাইরে রাখার চেষ্টা করছে।’
লি হাইদংয়ের মতে, বিশ্বব্যবস্থা বজায় রাখতে এ ধরনের সেকেলে স্নায়ুযুদ্ধকালীন প্রেক্ষাপট বিশ্বে কেবল বিভাজন ও অস্থিরতাই ডেকে আনবে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র তার কিছু সমর্থকও পেয়ে গেছে। তবে বিশ্লেষকেরা বিষয়টিকে বিশ্বাসযোগ্য সমর্থক পাওয়ার পরিবর্তে মার্কিন চাপের বিপরীতে নতি স্বীকার করার ঘটনা হিসেবেই বিবেচনা করছেন।
লি হাইদংয়ের মতে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ঘিরে যে সফল পরিকল্পনা করেছে বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্র, তাতে গলদ রয়েছে এবং এই অঞ্চলকে ঘিরে সমর্থক দেশগুলো কি চায় তাও সঠিকভাবে ধরতে পারছে বলে মনে হয় না।
তিনি আরও বলেন, ‘এই পথটি মার্কিন জনগণ যা চায় তার বিপরীত। কারণ চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন জোটের সংঘর্ষ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আরও একটি সংকট সৃষ্টি করবে, যা দেশটির অভ্যন্তরীণ সমস্যা মোকাবিলার ক্ষমতা কমিয়ে দেবে।’
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বের যোগাযোগের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক স্থিতিশীল হওয়ার বেশ কিছু লক্ষণ দেখাচ্ছে। এর ফলে, বিশ্বও যেন অনেকটা হাফ ছেড়ে বাঁচার সুযোগ পেয়েছে। কারণ, বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির সংঘাত থেমে যাওয়া যেকোনো অর্থেই বিশ্বের জন্য স্বস্তিদায়ক।
তারপরও ২০২৪ সালে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বন্ধুর থাকবে। এর মূল কারণ হবে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ও প্ররোচনায় চীনকে উসকে দেওয়া অব্যাহত থাকবে। লি হাইদংয়ের মতে, আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এই বিষয়টিতে আরও অনিশ্চয়তা যোগ করবে।
দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা তার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট ও শক্তিশালী ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করে চীনারা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক রিপাবলিকান নেতা চীনকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানকে একীভূত করার চেষ্টা করে তাহলে চীনের ওপর নরক নামিয়ে আনে এমন কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করবেন।
মার্কিন রাজনীতিবিদের একটি প্রবণতা হলো- নির্বাচন সামনে এলেই দেশে চীনবিরোধী মনোভাব উসকে দেয়। লি হাইদংয়ের মতে, মার্কিন রাজনীতিবিদদের কাছে বর্তমানে চীন হলো এমন এক বলির পাঠা যা দিয়ে তাঁরা দেশের অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যাকেই ঢেকে ফেলতে পারেন।
চীনের সিংকুয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির গবেষণা সহযোগী সান চেংহাউ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে মাথাব্যথা খুবই সামান্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতি দেশটির পররাষ্ট্রনীতিকে জিম্মি করে ফেলেছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় এই প্রবণতা বেড়ে যায়।
সান চেংহাউয়ের মতে, নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা ভোট ব্যাংক নিজেদের দিকে টানতে পররাষ্ট্রনীতিকে ব্যবহার করে এবং এটা করতে গিয়ে তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যৌক্তিকতার ধার ধারে না। তাঁর মতে, বর্তমান বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি মনে করে—বাইডেন প্রশাসন চীনের প্রতি যথেষ্ট কঠোর নয়।
রিপাবলিকানদের আশঙ্কা, ডেমোক্র্যাটরা সম্ভবত চীন সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে বেশি বেশি প্রচার করতে পারে এবং বিষয়গুলোকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য বাস্তবিক কিছু সমস্যা জেনেবুঝেই সৃষ্টি করতে পারে বাইডেন প্রশাসন এবং পরে তা লোক দেখানোর জন্য মেরামতে মনোযোগী হতে পারে। রিপাবলিকানদের মতে, চীন-যুক্তরাষ্ট্র স্থিতিশীল সম্পর্ক বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণাকে উপকৃত করবে, তাদের নয়।
চীনা বিশ্লেষকদের আশা, যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংসাত্মক অবস্থানের পরও চীন দুই দেশের সম্পর্ককে গঠনমূলকভাবে স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করবে। একই সঙ্গে চীন, যুক্তরাষ্ট্রকে স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার ভূরাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে। নইলে যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি দুই দেশের সম্পর্ককে ঝুঁকিপূর্ণ তো করবেই একই সঙ্গে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর এমনকি পুরো বিশ্বকেই ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান
চীন-যুক্তরাষ্ট্র কণ্টকাকীর্ণ সম্পর্ক মসৃণ করতে বিদায়ী বছরের শেষ দিকে বেশ চেষ্টা হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালেও বৈরী দুই দেশের সম্পর্ক মধুর হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হিসেবেই দেখছেন চীনা বিশ্লেষকেরা। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা ধরে রাখার চেষ্টা থেকে ওয়াশিংটন আগামী বছর পিছু হটবে তেমনটা ভাবার কারণ নেই।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিজেদের শক্তিমত্তা আমলে রেখেই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব আগে কখনোই এতটা শক্তিশালী ছিল না।
এই অঞ্চলে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সম্পর্কের কাঠামো বা রূপরেখা এগিয়ে নেওয়া, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অকাস চুক্তি, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে তুলনামূলক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি, ফিলিপাইনের সঙ্গে নতুন সামরিক চুক্তি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও টোঙ্গায় নতুন মার্কিন দূতাবাস খোলা এবং কোয়াড জোটে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণের উদাহরণ দেন ব্লিঙ্কেন ।
চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন সংঘাতে রূপ না নেয় সেই ঝুঁকি কমাতে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গত নভেম্বরে সান ফ্রান্সিসকোয় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ এবং দুই দেশের সশস্ত্রবাহিনীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে ব্লিঙ্কেনের প্রশমনমূলক বক্তব্যেও প্রথাগত মার্কিন আধিপত্য বজায় রাখার ইঙ্গিত খুঁজে পেয়েছেন চীনা বিশ্লেষকেরা। চায়না ফরেন অ্যাফেয়ার্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লি হাইদং বলেন, ‘ব্লিঙ্কেনের এই মন্তব্য প্রথাগত যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিকতা ও বিভাজিত বিশ্ব ব্যবস্থারই প্রতিফলন ঘটিয়েছে। চীনসহ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক নীতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে কেবল নিজের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়, তা ব্লিঙ্কেনের মন্তব্যে সুস্পষ্ট।’
লি হাইদং আরও বলেন, ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও বিশ্বজুড়ে প্রাধান্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মিত্র দেশগুলোর সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিযোগীদের (যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার) বাইরে রাখার চেষ্টা করছে।’
লি হাইদংয়ের মতে, বিশ্বব্যবস্থা বজায় রাখতে এ ধরনের সেকেলে স্নায়ুযুদ্ধকালীন প্রেক্ষাপট বিশ্বে কেবল বিভাজন ও অস্থিরতাই ডেকে আনবে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র তার কিছু সমর্থকও পেয়ে গেছে। তবে বিশ্লেষকেরা বিষয়টিকে বিশ্বাসযোগ্য সমর্থক পাওয়ার পরিবর্তে মার্কিন চাপের বিপরীতে নতি স্বীকার করার ঘটনা হিসেবেই বিবেচনা করছেন।
লি হাইদংয়ের মতে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ঘিরে যে সফল পরিকল্পনা করেছে বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্র, তাতে গলদ রয়েছে এবং এই অঞ্চলকে ঘিরে সমর্থক দেশগুলো কি চায় তাও সঠিকভাবে ধরতে পারছে বলে মনে হয় না।
তিনি আরও বলেন, ‘এই পথটি মার্কিন জনগণ যা চায় তার বিপরীত। কারণ চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন জোটের সংঘর্ষ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আরও একটি সংকট সৃষ্টি করবে, যা দেশটির অভ্যন্তরীণ সমস্যা মোকাবিলার ক্ষমতা কমিয়ে দেবে।’
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বের যোগাযোগের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক স্থিতিশীল হওয়ার বেশ কিছু লক্ষণ দেখাচ্ছে। এর ফলে, বিশ্বও যেন অনেকটা হাফ ছেড়ে বাঁচার সুযোগ পেয়েছে। কারণ, বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির সংঘাত থেমে যাওয়া যেকোনো অর্থেই বিশ্বের জন্য স্বস্তিদায়ক।
তারপরও ২০২৪ সালে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বন্ধুর থাকবে। এর মূল কারণ হবে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ও প্ররোচনায় চীনকে উসকে দেওয়া অব্যাহত থাকবে। লি হাইদংয়ের মতে, আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এই বিষয়টিতে আরও অনিশ্চয়তা যোগ করবে।
দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা তার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট ও শক্তিশালী ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করে চীনারা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক রিপাবলিকান নেতা চীনকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানকে একীভূত করার চেষ্টা করে তাহলে চীনের ওপর নরক নামিয়ে আনে এমন কঠোর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করবেন।
মার্কিন রাজনীতিবিদের একটি প্রবণতা হলো- নির্বাচন সামনে এলেই দেশে চীনবিরোধী মনোভাব উসকে দেয়। লি হাইদংয়ের মতে, মার্কিন রাজনীতিবিদদের কাছে বর্তমানে চীন হলো এমন এক বলির পাঠা যা দিয়ে তাঁরা দেশের অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যাকেই ঢেকে ফেলতে পারেন।
চীনের সিংকুয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির গবেষণা সহযোগী সান চেংহাউ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে মাথাব্যথা খুবই সামান্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতি দেশটির পররাষ্ট্রনীতিকে জিম্মি করে ফেলেছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় এই প্রবণতা বেড়ে যায়।
সান চেংহাউয়ের মতে, নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা ভোট ব্যাংক নিজেদের দিকে টানতে পররাষ্ট্রনীতিকে ব্যবহার করে এবং এটা করতে গিয়ে তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যৌক্তিকতার ধার ধারে না। তাঁর মতে, বর্তমান বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি মনে করে—বাইডেন প্রশাসন চীনের প্রতি যথেষ্ট কঠোর নয়।
রিপাবলিকানদের আশঙ্কা, ডেমোক্র্যাটরা সম্ভবত চীন সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে বেশি বেশি প্রচার করতে পারে এবং বিষয়গুলোকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য বাস্তবিক কিছু সমস্যা জেনেবুঝেই সৃষ্টি করতে পারে বাইডেন প্রশাসন এবং পরে তা লোক দেখানোর জন্য মেরামতে মনোযোগী হতে পারে। রিপাবলিকানদের মতে, চীন-যুক্তরাষ্ট্র স্থিতিশীল সম্পর্ক বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণাকে উপকৃত করবে, তাদের নয়।
চীনা বিশ্লেষকদের আশা, যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংসাত্মক অবস্থানের পরও চীন দুই দেশের সম্পর্ককে গঠনমূলকভাবে স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করবে। একই সঙ্গে চীন, যুক্তরাষ্ট্রকে স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার ভূরাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে। নইলে যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি দুই দেশের সম্পর্ককে ঝুঁকিপূর্ণ তো করবেই একই সঙ্গে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর এমনকি পুরো বিশ্বকেই ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে।
অনুবাদ: আব্দুর রহমান
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
১ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৪ দিন আগেনবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ডিপার্টমেন্ট অব গর্ভমেন্ট এফিসিয়েন্সি বা সরকারি কার্যকারী বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূরীকরণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পুনর্গ
৭ দিন আগেপরিশেষে বলা যায়, হাসিনার চীনা ধাঁচের স্বৈরশাসক শাসিত রাষ্ট্র গড়ে তোলার প্রয়াস ব্যর্থ হয় একাধিক কারণে। তাঁর বৈষম্যমূলক এবং এলিটপন্থী বাঙালি-আওয়ামী আদর্শ জনসাধারণ গ্রহণ করেনি, যা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গণমুখী আদর্শের বিপরীত। ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক মন্দা তাঁর শাসনকে দুর্বল করে দেয়, পাশাপাশি
১২ দিন আগে