দূরপাল্লার বাস চালু না হলে ঈদের দিন টার্মিনালে অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২১, ১৬: ৪৩

ঢাকা: স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলের অনুমতিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।

দাবি বাস্তবায়ন না হলে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ শেষে সারা দেশের মালিক ও শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকার বাস টার্মিনালে সকাল ১০ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। সেদিন পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

আজ শনিবার ৮ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরপাল্লাসহ সকল গণ ও পণ্য পরিবহন চালুর দাবিতে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন।

তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো:
১.স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনের সুযোগ দিতে হবে।

২. লকডাউনের কারণে কর্মহীন পরিবহন-শ্রমিকদের ঈদের আগে আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা প্রদান এবং বেতন, ভাতা ও ঈদ বোনাস দেওয়ার জন্য পরিবহন-মালিকদের নামমাত্র সুদে ও সহজ শর্তে পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিতে হবে।

৩. সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোয় পরিবহন-শ্রমিকদের জন্য ঈদের আগে ও পরে ১০ টাকায় খোলাবাজারে চাল বিক্রির ব্যবস্থা।

৪.পরিবহন খাতে বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফসহ কিস্তি ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত স্থগিত করতে হবে।

৫. লকডাউনে কারণে গাড়ির ট্যাক্স-টোকেন, রুট পারমিট ফি, আয়কর, ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিসহ সব ধরনের ফি, কর ও জরিমানা মওকুফ করে কাগজপত্র হালনাগাদ করার সুযোগ ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত বাড়াতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্যে বলা হয়েছে, এক মাসেরও বেশি সময় লকডাউন চলমান রয়েছে। দূরপাল্লার বাস ছাড়া সবকিছুই স্বাভাবিক হয়েছে। গার্মেন্টস, মার্কেট, দোকানপাট, অফিস-আদালত সবকিছুই খোলা রয়েছে। শুধু বন্ধ করে রাখা হয়েছে দূরপাল্লার বাস। সাধারণ মানুষ গাদাগাদি করে বিভিন্ন পরিবহনে বাড়ি যাচ্ছে। সুতরাং সব খোলা রেখে দূরপাল্লার বাস বন্ধ রেখে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। তাই পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে ঈদের আগেই দূরপাল্লার পরিবহন চালু করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহজাহান খান (এমপি) বলেন, 'লকডাউনে সব বন্ধ থাকবে বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেন। কিন্তু এসব বিশেষজ্ঞরা মাঠের সেন্টিমেন্ট, মালিক- শ্রমিকদের সেন্টিমেন্ট ও জনগণের সেন্টিমেন্ট বোঝেন না। ফেরিতে এখন ঘরমুখো মানুষের ভিড়। বিশেষজ্ঞরা কি এটা বিবেচনা করেছেন। লকডাউন এর আগে শ্রমজীবী মানুষের কি হবে। কি তাদের দিতে হবে না হবে সেটা কি তারা বিবেচনা করে সুপারিশ দিয়েছিলেন?

শাহজাহান খান আরও বলেন, 'কোন কিছু বিবেচনা না করে বিশেষজ্ঞরা সব কিছু বন্ধ রাখার সুপারিশ করেন। শ্রমজীবীদের কষ্ট তারা বুঝেন না। বাংলাদেশের মানুষের সেন্টিমেন্ট সবাই বোঝে না। এই সেক্টরের বিশেষজ্ঞ আমরা। সুতরাং সরকার যেসব বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়েছে, তাদের পরামর্শ না নিয়ে আমাদের পরামর্শ নেওয়া উচিত'।

এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, 'বিআরটিএকে বাস মালিক-শ্রমিকদের সাথে বসা উচিত। সরকারের যে বিধিমালা ও নিয়ম আমরা তা ভঙ্গ করতে পারি না। আজকে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সরকার যে গণপরিবহন চালু করেছেন। সেই ব্যবস্থার ব্যতিক্রম কিছু আমাদের হাতে নেই। আমরা এই এজেন্ডা হাতে নিতে পারি না। আমি মালিক-শ্রমিকদের শুধু বলবো, শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় আস্থা রাখুন। তিনি শ্রমিকদের ব্যাপারে যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। এই ধরণের লকডাউনে গরীব মানুষই কষ্ট পায়। বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় আপনাদের পাশেও দাঁড়ানোর এজেন্ডা সরকারের আছে। সময় এলেই সবকিছু খুলে যাবে'।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত