Ajker Patrika

চাঁদরাতের অপেক্ষায় তাঁরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গ্রাহকদের হাত মেহেদিতে রাঙাচ্ছেন কয়েকজন। গতকাল রাজধানীর বনশ্রীর এম ব্লকে আড়ংয়ের সামনের সড়কে। আজকের পত্রিকা
গ্রাহকদের হাত মেহেদিতে রাঙাচ্ছেন কয়েকজন। গতকাল রাজধানীর বনশ্রীর এম ব্লকে আড়ংয়ের সামনের সড়কে। আজকের পত্রিকা

‘চাঁদরাতেই হাতে মেহেদি দেওয়ার চাহিদা বেশি থাকে। তাই আমরা চাঁদরাতের অপেক্ষাতেই আছি।’ বলছিলেন মেহেদি আর্টিস্ট সুমনা আক্তার ইতি। রাজধানীর বনশ্রীর এম ব্লকে আড়ংয়ের সামনের সড়কের পাশে গতকাল শনিবার থেকে মেহেদির উপকরণ নিয়ে বসেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বোন সুমাইয়া আক্তার। দুই বোন মিলে গ্রাহকদের হাত রাঙাচ্ছেন তাঁরা। হাতের এক পাশে নকশা করতে নেওয়া হচ্ছে দেড় শ টাকা। আর মেহেদির একেকটি টিউব রাখা হচ্ছে ৪০ টাকা করে।

এই দুই বোনের মতোই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মেহেদি আর্টিস্টরা রয়েছেন চাঁদরাতের অপেক্ষায়। অনেকে বাসায় গিয়ে মেহেদিতে সাজিয়ে দিয়ে আসছেন গ্রাহকের হাত। অনেকে আবার সড়কের পাশে মেহেদি নিয়ে বসেছেন।

সহজেই মেহেদি আর্টিস্ট পেয়ে খুশি গ্রাহকেরাও। মেহেদি দিতে আসা আসনুভা আহমেদ বলেন, ‘আড়ংয়ে শপিং করতে এসেছিলাম। সামনেই দেখলাম, মেহেদি পরাচ্ছে। একবারে মেহেদিও পরে ফেললাম।’

পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ইতিমধ্যে ঢাকা ছেড়েছেন অনেকে। অনেকে আবার জীবিকার তাগিদে রয়ে গেছেন এই শহরেই। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের অনেকেই রয়েছেন চাঁদরাতের অপেক্ষায়।

গাউছিয়া মার্কেটের সামনের ফুটপাতে জুতা বিক্রি করেন রাজ্জাক মিয়া। তিনি বলেন, ‘এহনো বেচাকেনা হইতেছে। চাঁনরাইত পর্যন্ত চলব। ব্যবসা থুইয়া তো আর বাড়ি যাইতে পারি না। এহন যত বেশি ইনকাম করতে পারমু, ঘরের মানুষগুলারে তত জিনিসপত্র দিতে পারমু। ঈদের সকালের আগে বাড়িত যাওয়া হইব না।’

মুদি ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন চাঁদরাতের অপেক্ষায়। এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে ঘরে ঘরে চলছে ঈদের রান্নাবান্নার প্রস্তুতি। এ জন্য মুদিদোকানগুলোতে জমছে ভিড়।

কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানি মোহাম্মদ রাজু বলেন, ‘আমার বাড়ি শরীয়তপুর। চাঁনরাইতের আগে ঢাকা ছাড়নের উপায় নাই। বেচাবিক্রি তো বন্ধ করা যাইব না।’

বিক্রেতারা জানান, ঈদের লম্বা ছুটির কারণে তাঁদের বেচাকেনা এবার ভালো জমেনি। ক্রেতা কম থাকায় আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেননি তাঁরা। আর ক্রেতারা বলছেন, ঈদের বিভিন্ন পণ্যের চাহিদার সুযোগ নিয়ে অনেক বিক্রেতা অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

রামপুরা বাজারে শনিবার বিকেলে ঈদের বাজার করতে আসা আবদুস সামাদ বলেন, ‘সবজি-মুরগি সবকিছুর দাম বেশি রাখতেছে ওরা। বেচাবিক্রি কম থাকলে তো দাম কমানোর কথা। কিন্তু না কমাইয়া বাড়াইতেছে ক্যান?’

বাজারের সবজি বিক্রেতা সজীব মিয়া বলেন, ‘কাস্টমারের যেমন ঈদ আছে। আমাদেরও তো ঈদ আছে। আমাদেরও লাভ রাখতে হয়।’ এই বিক্রেতা জানান, চাঁদরাত পর্যন্ত বাজারে বসবেন তিনি। বেচাবিক্রি শেষে জমানো টাকা নিয়ে ফিরবেন গ্রামের বাড়িতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত