হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ), ফরিদপুর
রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও ফরিদপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান খাজার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আওয়ামী লীগের ক্ষমতামলে কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমানের আস্থাভাজন ছিলেন; এখন হয়ে উঠেছেন যুবদল নেতা। বিরুদ্ধ মতের কাউকে থাকতে হলে তাঁকে দিতে হয় চাঁদা। আর মতের মিল না হলে চোখ খুঁচিয়ে, রগ কেটে হত্যার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগের আমলেও চালিয়েছেন নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দস্যুতা, ভূমি দখল। গড়ে তুলেছিলেন ‘খাজা বাহিনী’। এখনো এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি একজনকে তুলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করেছেন তিনি ও তাঁর সহযোগীরা। একাধিকবার অস্ত্র, ইয়াবাসহ পুলিশ, র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরও ছাড়া পেয়েছেন। এত দিন নির্যাতনের ভয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও এখন অনেকে তাঁর নির্যাতনের বিষয়ে বলছেন। ১০ জানুয়ারি খুনের পর এখনো তাঁকে ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
৩৮ বছর বয়সী খায়রুজ্জামান খাজার বাড়ি ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ভাটী লক্ষ্মীপুর গ্রামে। তাঁর বড় ভাই বর্তমান ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাফ হুসাইন। এই বড় ভাইয়েরও আশ্রয়-প্রশ্রয় পান খায়রুজ্জামান। তাঁর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দস্যুতাসহ ডজনখানেক মামলা রয়েছে। পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা পুলিশের হাতে একাধিকবার আগ্নেয়াস্ত্র, ইয়াবা, দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হলেও রাজনৈতিক আশ্রয়ে জামিনে বের হয়ে আসেন। এরপর পুনরায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন।
সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমানের হস্তক্ষেপে একটি সাজাপ্রাপ্ত মামলায় খালাস পেয়ে বের হয়ে এসেছেন খায়রুজ্জামান।
খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি গুলিসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। তৎকালীন র্যাব-৮-এর ফরিদপুর ক্যাম্পের উপ-অধিনায়ক মেজর আবদুল্লাহ আল হাসান জানিয়েছিলেন, রাতে হাইওয়ে সড়কে বাসে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় খাজাকে আটকের পর বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এরপর ২০২১ সালে দুই সহযোগীসহ খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। ওই সময় প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কানাইপুর ইউপিসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, দস্যুতা, ভূমি দখলসহ নানা বিষয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দস্যুতাসহ ১৮টি মামলা রয়েছে।
সাবেক মন্ত্রীর সহযোগিতায় ত্রাস
২০২২ সালে ইয়াবাসহ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। পরে ছাড়া পান তিনি। সে বছরই ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামানকে বদলির পর সহযোগীদের নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেন। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সেই বছরের ২৮ আগস্ট দেশীয় অস্ত্রসহ খাজা ও তাঁর চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে বারবার গ্রেপ্তার হওয়ার পরও ক্ষমতার দাপটে জামিনে বের হয়ে আসেন। আওয়ামী লীগের ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী নেতা আবদুর রহমানের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ হিসেবে প্রকাশ্যে আসেন। তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কানাইপুরে যুবলীগ নেতা পরিচয়ে আধিপত্য বিস্তার করেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ব্যানার ও ফেস্টুন টানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে জানান দেন।
তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৮ ডিসেম্বর যুবদল নেতার ব্যানারে মিছিল দিয়ে নিজেকে যুবদল নেতা হিসেবে জাহির করেন। শুরু করেন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার। চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন আবার। তাঁর দলে না ভিড়লে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা না দিলে ছাড়তে হয় এলাকা। এভাবেই গত কয়েক দিনে অন্তত কোটি টাকার চাঁদাবাজি করেছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক রাজনীতিক।
চোখে খোঁচানো হয় পেরেক দিয়ে
সর্বশেষ খাজার হাতে বলি হয়েছেন ওই ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে ওবায়দুর খান। ১০ জানুয়ারি কানাইপুর মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে গিয়েছিলেন ওবায়দুর। সেখান থেকে খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১৫ জন ওবায়দুরকে মারধর করে তুলে নিয়ে যান। এরপর ফরিদপুর জুট ফাইবার্সের পেছনে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়। তখন ওবায়দুরের দুই চোখে পেরেক দিয়ে খোঁচানো হয় এবং বাঁ পায়ের রগ কেটে তা ভেঙে ফেলা হয়। এরপর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ১১ জানুয়ারি রাতে খাজাকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের মা রেখা বেগম।
ওবায়দুরের বাবা বিল্লাল খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নায়াব আপার (খাজার বিরোধী পক্ষ কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ) লোক। ৯ জানুয়ারি ইছা ভাইয়ের (জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা) মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। আমরা ওই মিটিংয়ে না যাওয়ার কারণে আমার ছেলেকে তুইল্যা নিয়ে মাইর্যা ফেলায়ছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। ওর (খাজা) ফাঁসি না হলে আরও মানুষ মরবে।’
এ বিষয়ে সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এলাকায় থাকতে দিতে হয় চাঁদা
এদিকে ওবায়দুর হত্যার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে খাজাকে টাকা দিয়ে এলাকায় থাকতে হয়েছে। কেউ টাকা না দিলে তাকে ভয়ভীতি ও মারধর করা হতো। কোশাগোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা লাবলু মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে তার দলে যোগ দিতে বলে। যোগ না দেওয়ায় আমাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে খাজা। টাকা না দিলে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, টাকা না দিলে তোমার জমিজমা বিক্রি করে টাকা নেব। এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। আজকে যেমন ওবায়দুরকে মেরে ফেলেছে, কাল আমাকেও মেরে ফেলতে পারে।’
খাজার বিষয়ে গত সোমবার বিকেলে কথা হয় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খাজাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগির তাঁকে গ্রেপ্তার করে জানানো হবে।’ ওবায়দুর হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত রেজাউল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও ফরিদপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান খাজার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আওয়ামী লীগের ক্ষমতামলে কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমানের আস্থাভাজন ছিলেন; এখন হয়ে উঠেছেন যুবদল নেতা। বিরুদ্ধ মতের কাউকে থাকতে হলে তাঁকে দিতে হয় চাঁদা। আর মতের মিল না হলে চোখ খুঁচিয়ে, রগ কেটে হত্যার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগের আমলেও চালিয়েছেন নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দস্যুতা, ভূমি দখল। গড়ে তুলেছিলেন ‘খাজা বাহিনী’। এখনো এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি একজনকে তুলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করেছেন তিনি ও তাঁর সহযোগীরা। একাধিকবার অস্ত্র, ইয়াবাসহ পুলিশ, র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরও ছাড়া পেয়েছেন। এত দিন নির্যাতনের ভয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও এখন অনেকে তাঁর নির্যাতনের বিষয়ে বলছেন। ১০ জানুয়ারি খুনের পর এখনো তাঁকে ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
৩৮ বছর বয়সী খায়রুজ্জামান খাজার বাড়ি ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ভাটী লক্ষ্মীপুর গ্রামে। তাঁর বড় ভাই বর্তমান ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মুহাম্মদ আলতাফ হুসাইন। এই বড় ভাইয়েরও আশ্রয়-প্রশ্রয় পান খায়রুজ্জামান। তাঁর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দস্যুতাসহ ডজনখানেক মামলা রয়েছে। পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা পুলিশের হাতে একাধিকবার আগ্নেয়াস্ত্র, ইয়াবা, দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হলেও রাজনৈতিক আশ্রয়ে জামিনে বের হয়ে আসেন। এরপর পুনরায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন।
সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমানের হস্তক্ষেপে একটি সাজাপ্রাপ্ত মামলায় খালাস পেয়ে বের হয়ে এসেছেন খায়রুজ্জামান।
খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি গুলিসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি। তৎকালীন র্যাব-৮-এর ফরিদপুর ক্যাম্পের উপ-অধিনায়ক মেজর আবদুল্লাহ আল হাসান জানিয়েছিলেন, রাতে হাইওয়ে সড়কে বাসে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় খাজাকে আটকের পর বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এরপর ২০২১ সালে দুই সহযোগীসহ খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। ওই সময় প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কানাইপুর ইউপিসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, দস্যুতা, ভূমি দখলসহ নানা বিষয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দস্যুতাসহ ১৮টি মামলা রয়েছে।
সাবেক মন্ত্রীর সহযোগিতায় ত্রাস
২০২২ সালে ইয়াবাসহ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। পরে ছাড়া পান তিনি। সে বছরই ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামানকে বদলির পর সহযোগীদের নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেন। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সেই বছরের ২৮ আগস্ট দেশীয় অস্ত্রসহ খাজা ও তাঁর চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে বারবার গ্রেপ্তার হওয়ার পরও ক্ষমতার দাপটে জামিনে বের হয়ে আসেন। আওয়ামী লীগের ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী নেতা আবদুর রহমানের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ হিসেবে প্রকাশ্যে আসেন। তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কানাইপুরে যুবলীগ নেতা পরিচয়ে আধিপত্য বিস্তার করেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ব্যানার ও ফেস্টুন টানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে জানান দেন।
তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৮ ডিসেম্বর যুবদল নেতার ব্যানারে মিছিল দিয়ে নিজেকে যুবদল নেতা হিসেবে জাহির করেন। শুরু করেন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার। চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন আবার। তাঁর দলে না ভিড়লে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা না দিলে ছাড়তে হয় এলাকা। এভাবেই গত কয়েক দিনে অন্তত কোটি টাকার চাঁদাবাজি করেছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক রাজনীতিক।
চোখে খোঁচানো হয় পেরেক দিয়ে
সর্বশেষ খাজার হাতে বলি হয়েছেন ওই ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছোট ছেলে ওবায়দুর খান। ১০ জানুয়ারি কানাইপুর মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে গিয়েছিলেন ওবায়দুর। সেখান থেকে খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১৫ জন ওবায়দুরকে মারধর করে তুলে নিয়ে যান। এরপর ফরিদপুর জুট ফাইবার্সের পেছনে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়। তখন ওবায়দুরের দুই চোখে পেরেক দিয়ে খোঁচানো হয় এবং বাঁ পায়ের রগ কেটে তা ভেঙে ফেলা হয়। এরপর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ১১ জানুয়ারি রাতে খাজাকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের মা রেখা বেগম।
ওবায়দুরের বাবা বিল্লাল খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নায়াব আপার (খাজার বিরোধী পক্ষ কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ) লোক। ৯ জানুয়ারি ইছা ভাইয়ের (জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা) মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। আমরা ওই মিটিংয়ে না যাওয়ার কারণে আমার ছেলেকে তুইল্যা নিয়ে মাইর্যা ফেলায়ছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। ওর (খাজা) ফাঁসি না হলে আরও মানুষ মরবে।’
এ বিষয়ে সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এলাকায় থাকতে দিতে হয় চাঁদা
এদিকে ওবায়দুর হত্যার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে খাজাকে টাকা দিয়ে এলাকায় থাকতে হয়েছে। কেউ টাকা না দিলে তাকে ভয়ভীতি ও মারধর করা হতো। কোশাগোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা লাবলু মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে তার দলে যোগ দিতে বলে। যোগ না দেওয়ায় আমাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে খাজা। টাকা না দিলে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, টাকা না দিলে তোমার জমিজমা বিক্রি করে টাকা নেব। এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। আজকে যেমন ওবায়দুরকে মেরে ফেলেছে, কাল আমাকেও মেরে ফেলতে পারে।’
খাজার বিষয়ে গত সোমবার বিকেলে কথা হয় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খাজাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগির তাঁকে গ্রেপ্তার করে জানানো হবে।’ ওবায়দুর হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত রেজাউল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে চট্টগ্রামে পৃথক ৮ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের...
৭ মিনিট আগেঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে অনুপ্রবেশের পর শেখ আলিমুর রহমান (৪৫) নামের এক সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে আটক করেছে বিএসএফ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের বেউরঝাড়ী সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
১৩ মিনিট আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামীপন্থী ডাক্তার-নার্সদের বিরুদ্ধে ডিএমপির শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএসএমএমইউ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মামলা, থানা, পুলিশ
২৪ মিনিট আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. শামীমকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ...
২৭ মিনিট আগে