গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রায় ১২ বছর আগে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া নিশি মণির সঙ্গে বিয়ে হয় রুবেল মিয়ার। তবে রুবেল মিয়ার মাদক চোরাচালান, জাল টাকা ও নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান নিশি মণি। তিনি ফেরাতে পারেননি রুবেল মিয়াকে। অভিযোগ, একপর্যায়ে তাঁকে বাধ্য করা হয় অনৈতিক কাজে। এমন অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে বাড়ি ছাড়েন বেশ কয়েকবার। হয়নি নিস্তার। শেষমেশ স্বামীর বাড়িতেই মিলেছে গৃহবধূ নিশি মণির ঝলসানো লাশ।
গৃহবধূর পরিবার ও প্রতিবেশিদের অভিযোগ, নিশির গায়ে অ্যাসিড ছোড়েন রুবেল। পরে হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে আনার পর মারা যান নিশি। তখন ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে বাড়িতে মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছেন রুবেল মিয়া।
এমন ঘটনা ঘটেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের চেংমারী চওরাপাড়া গ্রামে।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের নবনী দাস জগারঝার এলাকার মোহাম্মাদ আলীর পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে নিশি মণির সঙ্গে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের চেংমারী চওরাপাড়ার সেকেন্দার আলীর ছেলে রুবেল মিয়ার। বিয়ের ১ বছরের মাথায় রুবেল মিয়া (৩৬) ও নিশি মণির (বর্তমান বয়স ২২) ঘর আলো করে জন্ম হয় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের। খুব ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার।
এরই মাঝে রুবেল মিয়া হঠাৎ জড়িয়ে পড়েন মাদক চোরাচালান, জাল টাকা এবং বহিরাগত নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার সঙ্গে। এসব অনৈতিক কাজে স্ত্রী নিশি মণি বাধা দিলে তাঁর ওপরে চলত অমানবিক নির্যাতন। এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাঝেমধ্যে রাগ করে পাশের গ্রামে বাবার বাসায় চলে যেতেন নিশি মণি। বাবা গরিব হওয়ায় কিছুদিন পর আবার চলে আসতে হতো স্বামী রুবেলের ঘরে।
এরই মধ্যে তাঁদের সংসারে জন্ম নেয় আরও এক ছেলে সন্তান। কিছুদিন যেতে না যেতেই রুবেল মিয়া বাড়িতে বাইরে থেকে পুরুষ নিয়ে এসে নিশি মণিকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করাতে থাকেন। নিশি মণি রাজি না হলে তাঁর ওপরে চলতো অমানবিক নির্যাতন। রুবেল মিয়ার ভয়ে আশপাশে লোকজন কেউ তাঁর বাসায় আসতে সাহস পেতেন না। রুবেলের বাবা-মা প্রতিবাদ করলে তাঁদেরও মারধর করা হতো।
নিশি মণি রুবেলের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পরিবারকে জানিয়ে কয়েকবার আত্মগোপনে চলে যান। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজির পর স্ত্রীকে না পেয়ে রুবেল নিশি মণির ভাইকে বাড়ি থেকে তুলে এনে মারধর করেন ও নিশির খোঁজ দিতে বাধ্য করান। নিশি ফিরে আসলে এই টানাপোড়েনের সংসার টিকে আরও আট বছর।
সর্বশেষ ১৭ মাস আগে রুবেল ও নিশি মণির সংসারে জন্ম নেয় আরেক মেয়ে সন্তান। সন্তান জন্মের কিছুদিনপর আবারও নিশি মণিকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন স্বামী রুবেল মিয়া। তাঁর এমন অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাবার বাড়িতে চলে যান নিশি মণি। এরপর নিশি মণিকে নিতে স্বামী রুবেল শ্বশুরবাড়ি যান। শ্বশুর মোহাম্মাদ আলী মেয়েকে জামাতা রুবেলের হাতে তুলে দিতে না চাইলে রুবেল শ্বশুরবাড়িতে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে ভাঙচুর চালায়। পরে ভয়ে মোহাম্মাদ আলী মেয়েকে রুবেলের হাতে তুলে দেন। ওই দিন ২৬ ডিসেম্বর রাতে রুবেল শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পর স্ত্রী নিশি মণির গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন।
অবস্থা গুরুতর হলে রুবেলের পরিবারের লোকজন আহত নিশি মণিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাঁকে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হলে গত ৪ জানুয়ারি নিশি মণিকে সেখান থেকে চুপিসারে বাড়িতে নিয়ে আসে রুবেল ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
গতকাল সোমবার রাত দেড়টার দিকে স্বামী রুবেলের বাড়িতে নিশি মণির মৃত্যু হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রুবেলের ঘরে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয় রুবেল। এরপর তাঁর স্ত্রী আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার মিথ্যা তথ্য ছড়ায় রুবেল ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
আজ মঙ্গলবার সকালে তড়িঘড়ি করে নিশি মণির মরদেহটি শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাফন করতে গেলে নিশি মণির মৃত্যুর সঠিক তথ্যটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থানে উপস্থিত হলে লাশ রেখে রুবেল ও পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। সাংবাদিকেরা মৃত্যুর খবর পেয়ে সকালে রুবেলের বাড়িতে যায়। সেখানে রুবেলের বড় ছেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে রুবেলের বড়ভাই আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকের ওপর মারমুখী হয়। ফলে সাংবাদিকেরা সেখান থেকে চলে আসেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন আজকের পত্রিকাকে জানান, রুবেল অনেক আগ থেকে মাদক, জাল টাকা এবং নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। রুবেলের নামে জাল টাকা চোরাচালানের অভিযোগে দুটি মামলাও আছে।
রুবেল নিজের বাড়িতে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের নিয়ে এসে স্ত্রীকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করাত। তাঁর বাড়ির পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। রুবেলের মারমুখি আচরণের কারণে তাঁর বাসার আশপাশ দিয়ে কেউ যেতেন না। তাঁর বাড়ির পুরো এলাকা বিদ্যুতের তার দিয়ে জড়ানো। সেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এর আগে কয়েকজন আহত হয়েছিল।
তবে নিশি মনির বড় ছেলের দাবি, তাঁর মা ২৬ ডিসেম্বার রাতেই নিজ ঘরে তার বাবার সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। তবে এ সময় এসিড নিক্ষেপের বিষয় তার কাছ থেকে জানতে চাইলে রুবেলের বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের ওপরে মারমুখি হন। পরে সেখান থেকে সাংবাদিকেরা চলে আসেন।
এ বিষয়ে নিশি মণির বাবা মোহাম্মাদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রুবেলের চাচাতো ভাই ফুল মিয়া আমার স্ত্রী ও আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ৩টি স্ট্যাম্পে সই নেয়। আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে বলেছিল, ‘আমার মেয়ের নাকি একটা বড় ধরনের অপারেশন করাতে হবে। আজকে সকালে শুনতেছি আমার মেয়ে মারা গেছে। এর মধ্যে যে আমার মেয়ের সঙ্গে এত কিছু হয়ে গেছে, আমরা এর কিছুই জানতাম না। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
নিশির মা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হামাকগুলাক (আমাদেরকে) আজ সকালে রুবেলের চাচাতো ভাই বাড়িত থাকি তুলি নিয়া যাওয়ার পর জানিবার পাই রুবেল আমার মেয়ের গায়ে এসিড ঢালি দিছিল। আমাদের নিয়ে গিয়ে তারা তিনটি স্ট্যাম্পে সই নেয়। আর বলে আমার মেয়ের নাকি অপারেশন করা লাগবে। সই নেয়ার পর শুনি আমার মেয়ে মারা গেইছে।’
রুবেলের বোন রেজওয়ানা বেগম (৩৫) বলেন, ‘আমার ভাবি ২৬ (ডিসেম্বর) তারিখ রাত ১০ টায় নিজের গায়ে নিজেই আগুন লাগিয়েছে। পরের দিন ২৭ তারিখ সাড়ে ১০টায় রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করাইছে। চিকিৎসকের পরামর্শে আমরা ঢাকায় নিয়ে যাই। ভাইয়ের বউ মারা যাওয়ায় নিজে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করায় ভাইকে বাইরে রাখা হইছে।’
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাশটির সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রায় ১২ বছর আগে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া নিশি মণির সঙ্গে বিয়ে হয় রুবেল মিয়ার। তবে রুবেল মিয়ার মাদক চোরাচালান, জাল টাকা ও নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান নিশি মণি। তিনি ফেরাতে পারেননি রুবেল মিয়াকে। অভিযোগ, একপর্যায়ে তাঁকে বাধ্য করা হয় অনৈতিক কাজে। এমন অত্যাচার নির্যাতন সইতে না পেরে বাড়ি ছাড়েন বেশ কয়েকবার। হয়নি নিস্তার। শেষমেশ স্বামীর বাড়িতেই মিলেছে গৃহবধূ নিশি মণির ঝলসানো লাশ।
গৃহবধূর পরিবার ও প্রতিবেশিদের অভিযোগ, নিশির গায়ে অ্যাসিড ছোড়েন রুবেল। পরে হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে আনার পর মারা যান নিশি। তখন ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে বাড়িতে মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছেন রুবেল মিয়া।
এমন ঘটনা ঘটেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের চেংমারী চওরাপাড়া গ্রামে।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের নবনী দাস জগারঝার এলাকার মোহাম্মাদ আলীর পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে নিশি মণির সঙ্গে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের চেংমারী চওরাপাড়ার সেকেন্দার আলীর ছেলে রুবেল মিয়ার। বিয়ের ১ বছরের মাথায় রুবেল মিয়া (৩৬) ও নিশি মণির (বর্তমান বয়স ২২) ঘর আলো করে জন্ম হয় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের। খুব ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার।
এরই মাঝে রুবেল মিয়া হঠাৎ জড়িয়ে পড়েন মাদক চোরাচালান, জাল টাকা এবং বহিরাগত নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার সঙ্গে। এসব অনৈতিক কাজে স্ত্রী নিশি মণি বাধা দিলে তাঁর ওপরে চলত অমানবিক নির্যাতন। এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাঝেমধ্যে রাগ করে পাশের গ্রামে বাবার বাসায় চলে যেতেন নিশি মণি। বাবা গরিব হওয়ায় কিছুদিন পর আবার চলে আসতে হতো স্বামী রুবেলের ঘরে।
এরই মধ্যে তাঁদের সংসারে জন্ম নেয় আরও এক ছেলে সন্তান। কিছুদিন যেতে না যেতেই রুবেল মিয়া বাড়িতে বাইরে থেকে পুরুষ নিয়ে এসে নিশি মণিকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করাতে থাকেন। নিশি মণি রাজি না হলে তাঁর ওপরে চলতো অমানবিক নির্যাতন। রুবেল মিয়ার ভয়ে আশপাশে লোকজন কেউ তাঁর বাসায় আসতে সাহস পেতেন না। রুবেলের বাবা-মা প্রতিবাদ করলে তাঁদেরও মারধর করা হতো।
নিশি মণি রুবেলের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পরিবারকে জানিয়ে কয়েকবার আত্মগোপনে চলে যান। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজির পর স্ত্রীকে না পেয়ে রুবেল নিশি মণির ভাইকে বাড়ি থেকে তুলে এনে মারধর করেন ও নিশির খোঁজ দিতে বাধ্য করান। নিশি ফিরে আসলে এই টানাপোড়েনের সংসার টিকে আরও আট বছর।
সর্বশেষ ১৭ মাস আগে রুবেল ও নিশি মণির সংসারে জন্ম নেয় আরেক মেয়ে সন্তান। সন্তান জন্মের কিছুদিনপর আবারও নিশি মণিকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন স্বামী রুবেল মিয়া। তাঁর এমন অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাবার বাড়িতে চলে যান নিশি মণি। এরপর নিশি মণিকে নিতে স্বামী রুবেল শ্বশুরবাড়ি যান। শ্বশুর মোহাম্মাদ আলী মেয়েকে জামাতা রুবেলের হাতে তুলে দিতে না চাইলে রুবেল শ্বশুরবাড়িতে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে ভাঙচুর চালায়। পরে ভয়ে মোহাম্মাদ আলী মেয়েকে রুবেলের হাতে তুলে দেন। ওই দিন ২৬ ডিসেম্বর রাতে রুবেল শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পর স্ত্রী নিশি মণির গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন।
অবস্থা গুরুতর হলে রুবেলের পরিবারের লোকজন আহত নিশি মণিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাঁকে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হলে গত ৪ জানুয়ারি নিশি মণিকে সেখান থেকে চুপিসারে বাড়িতে নিয়ে আসে রুবেল ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
গতকাল সোমবার রাত দেড়টার দিকে স্বামী রুবেলের বাড়িতে নিশি মণির মৃত্যু হয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রুবেলের ঘরে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয় রুবেল। এরপর তাঁর স্ত্রী আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার মিথ্যা তথ্য ছড়ায় রুবেল ও তাঁর পরিবারের লোকজন।
আজ মঙ্গলবার সকালে তড়িঘড়ি করে নিশি মণির মরদেহটি শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাফন করতে গেলে নিশি মণির মৃত্যুর সঠিক তথ্যটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থানে উপস্থিত হলে লাশ রেখে রুবেল ও পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। সাংবাদিকেরা মৃত্যুর খবর পেয়ে সকালে রুবেলের বাড়িতে যায়। সেখানে রুবেলের বড় ছেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে রুবেলের বড়ভাই আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকের ওপর মারমুখী হয়। ফলে সাংবাদিকেরা সেখান থেকে চলে আসেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন আজকের পত্রিকাকে জানান, রুবেল অনেক আগ থেকে মাদক, জাল টাকা এবং নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। রুবেলের নামে জাল টাকা চোরাচালানের অভিযোগে দুটি মামলাও আছে।
রুবেল নিজের বাড়িতে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের নিয়ে এসে স্ত্রীকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করাত। তাঁর বাড়ির পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। রুবেলের মারমুখি আচরণের কারণে তাঁর বাসার আশপাশ দিয়ে কেউ যেতেন না। তাঁর বাড়ির পুরো এলাকা বিদ্যুতের তার দিয়ে জড়ানো। সেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এর আগে কয়েকজন আহত হয়েছিল।
তবে নিশি মনির বড় ছেলের দাবি, তাঁর মা ২৬ ডিসেম্বার রাতেই নিজ ঘরে তার বাবার সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। তবে এ সময় এসিড নিক্ষেপের বিষয় তার কাছ থেকে জানতে চাইলে রুবেলের বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের ওপরে মারমুখি হন। পরে সেখান থেকে সাংবাদিকেরা চলে আসেন।
এ বিষয়ে নিশি মণির বাবা মোহাম্মাদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল রুবেলের চাচাতো ভাই ফুল মিয়া আমার স্ত্রী ও আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ৩টি স্ট্যাম্পে সই নেয়। আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে বলেছিল, ‘আমার মেয়ের নাকি একটা বড় ধরনের অপারেশন করাতে হবে। আজকে সকালে শুনতেছি আমার মেয়ে মারা গেছে। এর মধ্যে যে আমার মেয়ের সঙ্গে এত কিছু হয়ে গেছে, আমরা এর কিছুই জানতাম না। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
নিশির মা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হামাকগুলাক (আমাদেরকে) আজ সকালে রুবেলের চাচাতো ভাই বাড়িত থাকি তুলি নিয়া যাওয়ার পর জানিবার পাই রুবেল আমার মেয়ের গায়ে এসিড ঢালি দিছিল। আমাদের নিয়ে গিয়ে তারা তিনটি স্ট্যাম্পে সই নেয়। আর বলে আমার মেয়ের নাকি অপারেশন করা লাগবে। সই নেয়ার পর শুনি আমার মেয়ে মারা গেইছে।’
রুবেলের বোন রেজওয়ানা বেগম (৩৫) বলেন, ‘আমার ভাবি ২৬ (ডিসেম্বর) তারিখ রাত ১০ টায় নিজের গায়ে নিজেই আগুন লাগিয়েছে। পরের দিন ২৭ তারিখ সাড়ে ১০টায় রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করাইছে। চিকিৎসকের পরামর্শে আমরা ঢাকায় নিয়ে যাই। ভাইয়ের বউ মারা যাওয়ায় নিজে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করায় ভাইকে বাইরে রাখা হইছে।’
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাশটির সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এসআইইউ) ইংরেজি বিভাগের আয়োজনে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রখ্যাত ভ্রমণবিষয়ক লেখক মঈনুস সুলতানকে ঘিরে কেটেছে এক মোহিত দুপুর। আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব...
২ মিনিট আগেনোয়াখালী শহরের মাইজদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডিসপ্লেতে হঠাৎ ভেসে ওঠে, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু—আওয়ামী লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’—এমন লেখা। এ ঘটনায় ওই হাসপাতালে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে যুবদলের নেতা...
১০ মিনিট আগেসিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অধিকৃত ভূমির টাকা প্রাপ্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকার ভুক্তভোগীরা। আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
১৬ মিনিট আগেসার কেনার টোকেন দেওয়া বন্ধ করায় কৃষকদের তোপের মুখে পড়েছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
২৩ মিনিট আগে