বিভুরঞ্জন সরকার
জাতীয় স্বার্থ, মতাদর্শগত দ্বন্দ্ব এবং শাসনকাঠামোর পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতি আগামী দিনে ঠিক কোন অবয়ব লাভ করবে, তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রাজনীতিতে যে রূপ বদলের আঁচ লেগেছে, তা বলা যেতেই পারে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে একদিকে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের তৎপরতা চলছে, অন্যদিকে পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলো নিজের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করছে এবং নতুন প্রেক্ষাপটে নিজেদের অভিযোজনের চেষ্টাও লক্ষণীয়। এই পরিবর্তনের ধারায় মুক্তিযুদ্ধ ও বাহাত্তরের সংবিধান প্রশ্নে বিএনপির প্রকাশ্য অবস্থান এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মতভিন্নতা রাজনীতিতে নতুন মাত্রা সংযোজনের ইঙ্গিতবাহী। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়াও মোটেই তাৎপর্যহীন নয়।
গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে সমাবেশ ডেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে’ বলে হুংকার দিয়েও শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থানে দৃঢ় থাকতে পারেনি। ৩১ ডিসেম্বর তাদের পূর্বঘোষিত এবং বহুল আলোচিত ‘জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ জারি করা হয়নি। বরং তারা কর্মসূচি পরিবর্তন করে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ পালন করেছে। ফলে সংবিধান বাতিল কিংবা বিপ্লবী সরকার গঠনের ঘোষণা আসতে পারে বলে যে গুঞ্জন ছিল, তা সত্য হয়নি। যে কারণে বাহাত্তরের ‘সংবিধানের কবর’ও রচিত হয়নি! তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাময়িকভাবে পিছু হটলেও তারা আসলে কোথায় গিয়ে তাদের ‘আন্দোলন’ শেষ করবে, তা নিশ্চিত করে কে বলতে পারবে? রাজনীতিতে শেষ কথা নেই বলে যে প্রচারণা আছে, আপাতত তাতে আস্থা রাখা ছাড়া আর কী বিকল্প আছে?
১৯৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য সুবিধাজনক বলে মনে করা হলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ঐক্যে ফাটল ধরেছে। সরকারের রিসেট বাটন টেপার পটভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক প্রশ্নে বিএনপি নতুন প্রজন্মকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাই এখন একাত্তরের পক্ষে কথা বলছেন।
বহু বছর ধরে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায়কে নিজেদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে মুক্তিযুদ্ধকে তার দলীয় পরিচয়ের কেন্দ্রে রেখেছিল এবং বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। তবে সাম্প্রতিককালে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন এবং বাহাত্তরের সংবিধানের পক্ষে কথা বলছে।
বাহাত্তরের সংবিধানের অন্যতম স্তম্ভ ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা, যা একসময় বিএনপির মতাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করা হতো। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলার একক অধিকার আওয়ামী লীগ নিয়েছিল। এখন আওয়ামী লীগ মাঠছাড়া। কিন্তু একাত্তর তো বাঙালির সবচেয়ে বড় গৌরবের ঠিকানা। বিএনপির নেতৃত্ব এখন সম্ভবত একাত্তরের সঙ্গে অধিক মাত্রায় সংলগ্ন হওয়ার চেষ্টা করে মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সুবিধা ঝুলিতে ভরার চেষ্টা করছেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে একটি ছাত্র-গণজাগরণ তথা অভ্যুত্থানের কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়। সরকার পরিবর্তনের ওই মুহূর্তে একদিকে বিএনপির কাছে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে দেশে রাজনৈতিক শূন্যতাও প্রবল হয়ে ওঠে।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে যে দুর্নীতি, দমননীতি ও স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগ উঠেছিল, তা থেকে শিক্ষার্থীরা এবং সাধারণ জনগণ বিকল্প রাজনৈতিক ভবিষ্যতের সন্ধানে রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক শক্তির অভাব দেখা দিচ্ছে, যা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ডেকে আনতে পারে। বিএনপিকে এই শূন্যতা পূরণের জন্য তাদের মতাদর্শ এবং সাংগঠনিক শক্তিকে পুনর্গঠিত করতে হবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছাত্ররাজনীতি সব সময় একটি প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেছে। তবে গত কয়েক দশকে ছাত্ররাজনীতি অনেকটাই সহিংসতা ও ব্যক্তিস্বার্থের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পটভূমিতে শিক্ষার্থীরা একটি নতুন রাজনৈতিক কাঠামোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এই প্রজন্মের ছাত্রনেতারা পুরোনো রাজনৈতিক দলের অনুশাসন এবং বিতর্কিত ইতিহাস থেকে বেরিয়ে এসে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে তাদের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে কতটা আগ্রহী, সেটা অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়।
এটি বিশেষত বিএনপির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। কারণ, ঐতিহাসিকভাবে ছাত্ররাজনীতি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল। ছাত্রদের নতুন উদ্যোগ বিএনপির জন্য বাড়তি চাপ হিসেবে এসেছে। সে জন্যই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নতুন দিকনির্দেশনা দরকার। ক্ষমতার পালাবদল, ছাত্ররাজনীতির পুনর্গঠন এবং জামায়াতের মতো বিতর্কিত দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপির সামনে সুযোগ এসেছে নিজেদের মতাদর্শ পুনর্গঠন করার।
তবে এই সম্ভাবনার সঠিক বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে সর্বজনীনভাবে প্রতিষ্ঠা করা, গণতন্ত্রের জন্য সত্যিকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন ও চাহিদার সঙ্গে নিজেদের একীভূত করা।
এটি পরিষ্কার যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পুরোনো মতপার্থক্যের পরিবর্তে এখন দরকার একটি নতুন ঐক্য ও মানসিকতার পরিবর্তন। আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতি, ছাত্রদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং জামায়াতের সঙ্গে বিভেদ এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। একটি নির্মোহ এবং ইতিবাচক রাজনীতি গড়ে উঠলে তা কেবল বিএনপির জন্য নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।
দুই.
দেশের রাজনীতি যখন কিছুটা ভারসাম্যহীন, ঠিক তখন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনযাত্রা শুধু একটি মানবিক কিংবা চিকিৎসাবিষয়ক ঘটনা নয়; এটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকেও নতুন এক মোড় এনে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যসংকট বরাবরই রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় ছিল। তবে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তন, ছাত্র-জনতার গণজাগরণ এবং ক্ষমতা বদলের পর তাঁর বিদেশযাত্রা একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন। তাঁর সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের আকস্মিক সৌজন্য সাক্ষাৎ পুরো বিষয়টিকে তাৎপর্যময় করে তুলেছে।
২০১৮ সালে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা কখনোই থেমে থাকেনি। তাঁর মুক্তি কিংবা বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে পরিবারের পাশাপাশি দলও বারবার সোচ্চার হয়েছে। তবে তৎকালীন সরকার এ দাবিতে সাড়া না দিয়ে প্রমাণ করেছে যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মানবিকতাকে ছাপিয়ে যেতে পারে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার ইঙ্গিত দেয়, যেখানে মানবিক ইস্যুকে রাজনৈতিক অন্তরায় হিসেবে ব্যবহার না করে সমাধানের চেষ্টা দেখা যায়।
খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার প্রাক্কালে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাক্ষাৎকে অনেকেই সৌজন্য সাক্ষাৎ হিসেবে দেখলেও, এটি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি কৌশলগত বার্তা দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সেনাবাহিনী কর্তৃক জনগণের দাবির প্রতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠা এবং রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। বিএনপি বা তার সমর্থকেরা এটিকে তাদের প্রতি সেনাবাহিনীর আন্তরিকতা হিসেবে দেখতেই পারেন। এই সাক্ষাৎ বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে আস্থা তৈরির একটি পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।
খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর পুনর্মিলন। তারেক রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার এই সাক্ষাৎ শুধু একটি মা-ছেলের আবেগঘন মুহূর্ত হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়; এটি বিএনপির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণে কৌশলগত আলোচনার ক্ষেত্রও হতে পারে। যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী তারেক রহমান প্রায় এক যুগ ধরে দল পরিচালনা করলেও দলটির বেশির ভাগ নেতা ও সমর্থকের কাছেই তাঁকে দূরবর্তী বলে মনে হয়। খালেদা জিয়ার সক্রিয় নির্দেশনা এবং নতুন দিকনির্দেশনার মাধ্যমে তারেক রহমানের গ্রহণযোগ্যতা এবং দলীয় কাঠামো পুনর্গঠনের বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হতে পারে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো একটি আন্তর্জাতিক সমীকরণেরও ইঙ্গিত। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ হিসেবে কাতারের এই পদক্ষেপ শুধু মানবিকতার চেয়ে বেশি কিছু। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাদের দীর্ঘমেয়াদি আগ্রহ এবং সম্পর্ক উন্নয়নের এক কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার পাশাপাশি জনস হপকিন্স হসপিটালে সম্ভাব্য চিকিৎসার পরিকল্পনা বিশ্ব মঞ্চে খালেদা জিয়া এবং বিএনপির গুরুত্বকে তুলে ধরছে।
বিদেশে উন্নত চিকিৎসা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসনের পবিত্র ওমরাহ পালন এবং সুস্থ হয়ে দেশে ফেরার পরিকল্পনা একদিকে তাঁর পুনরুত্থানের বার্তা দেয়, অন্যদিকে গণতন্ত্রের প্রতি দলের দায়বদ্ধতাও দৃশ্যমান করে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপির রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা আসতে পারে। আর বিএনপির নেতা-কর্মীরা আশাবাদী যে খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন দলের ঐক্য আরও দৃঢ় করবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁকে পুনরায় শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবে।
তবে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিপরীতমুখী আলোচনাও আছে। চিকিৎসার জন্য বিদেশযাত্রায় বিলম্ব এবং তারেক রহমানের দেশে না ফেরা নিয়েও নানা ধরনের গুঞ্জন আছে। বিশ্লেষকদের কেউ মনে করছেন, চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার নিশ্চয়তা তিনি সেনাপ্রধানের কাছ থেকে পেয়েছেন। আবার চিকিৎসা শেষে তাঁর দেশে ফেরার অনিশ্চয়তাও কেউ কেউ দেখছেন। কারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা দূর হয়নি। এ নিয়ে স্পষ্ট ঘোষণা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো দেওয়া হয়নি।
জাতীয় স্বার্থ, মতাদর্শগত দ্বন্দ্ব এবং শাসনকাঠামোর পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতি আগামী দিনে ঠিক কোন অবয়ব লাভ করবে, তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রাজনীতিতে যে রূপ বদলের আঁচ লেগেছে, তা বলা যেতেই পারে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে একদিকে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের তৎপরতা চলছে, অন্যদিকে পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলো নিজের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করছে এবং নতুন প্রেক্ষাপটে নিজেদের অভিযোজনের চেষ্টাও লক্ষণীয়। এই পরিবর্তনের ধারায় মুক্তিযুদ্ধ ও বাহাত্তরের সংবিধান প্রশ্নে বিএনপির প্রকাশ্য অবস্থান এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মতভিন্নতা রাজনীতিতে নতুন মাত্রা সংযোজনের ইঙ্গিতবাহী। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়াও মোটেই তাৎপর্যহীন নয়।
গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে সমাবেশ ডেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে’ বলে হুংকার দিয়েও শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থানে দৃঢ় থাকতে পারেনি। ৩১ ডিসেম্বর তাদের পূর্বঘোষিত এবং বহুল আলোচিত ‘জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ জারি করা হয়নি। বরং তারা কর্মসূচি পরিবর্তন করে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ পালন করেছে। ফলে সংবিধান বাতিল কিংবা বিপ্লবী সরকার গঠনের ঘোষণা আসতে পারে বলে যে গুঞ্জন ছিল, তা সত্য হয়নি। যে কারণে বাহাত্তরের ‘সংবিধানের কবর’ও রচিত হয়নি! তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাময়িকভাবে পিছু হটলেও তারা আসলে কোথায় গিয়ে তাদের ‘আন্দোলন’ শেষ করবে, তা নিশ্চিত করে কে বলতে পারবে? রাজনীতিতে শেষ কথা নেই বলে যে প্রচারণা আছে, আপাতত তাতে আস্থা রাখা ছাড়া আর কী বিকল্প আছে?
১৯৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য সুবিধাজনক বলে মনে করা হলেও বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ঐক্যে ফাটল ধরেছে। সরকারের রিসেট বাটন টেপার পটভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক প্রশ্নে বিএনপি নতুন প্রজন্মকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাই এখন একাত্তরের পক্ষে কথা বলছেন।
বহু বছর ধরে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায়কে নিজেদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে মুক্তিযুদ্ধকে তার দলীয় পরিচয়ের কেন্দ্রে রেখেছিল এবং বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। তবে সাম্প্রতিককালে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন এবং বাহাত্তরের সংবিধানের পক্ষে কথা বলছে।
বাহাত্তরের সংবিধানের অন্যতম স্তম্ভ ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা, যা একসময় বিএনপির মতাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মনে করা হতো। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলার একক অধিকার আওয়ামী লীগ নিয়েছিল। এখন আওয়ামী লীগ মাঠছাড়া। কিন্তু একাত্তর তো বাঙালির সবচেয়ে বড় গৌরবের ঠিকানা। বিএনপির নেতৃত্ব এখন সম্ভবত একাত্তরের সঙ্গে অধিক মাত্রায় সংলগ্ন হওয়ার চেষ্টা করে মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক রাজনৈতিক সুবিধা ঝুলিতে ভরার চেষ্টা করছেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে একটি ছাত্র-গণজাগরণ তথা অভ্যুত্থানের কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়। সরকার পরিবর্তনের ওই মুহূর্তে একদিকে বিএনপির কাছে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে দেশে রাজনৈতিক শূন্যতাও প্রবল হয়ে ওঠে।
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে যে দুর্নীতি, দমননীতি ও স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগ উঠেছিল, তা থেকে শিক্ষার্থীরা এবং সাধারণ জনগণ বিকল্প রাজনৈতিক ভবিষ্যতের সন্ধানে রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক শক্তির অভাব দেখা দিচ্ছে, যা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ডেকে আনতে পারে। বিএনপিকে এই শূন্যতা পূরণের জন্য তাদের মতাদর্শ এবং সাংগঠনিক শক্তিকে পুনর্গঠিত করতে হবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছাত্ররাজনীতি সব সময় একটি প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেছে। তবে গত কয়েক দশকে ছাত্ররাজনীতি অনেকটাই সহিংসতা ও ব্যক্তিস্বার্থের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পটভূমিতে শিক্ষার্থীরা একটি নতুন রাজনৈতিক কাঠামোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এই প্রজন্মের ছাত্রনেতারা পুরোনো রাজনৈতিক দলের অনুশাসন এবং বিতর্কিত ইতিহাস থেকে বেরিয়ে এসে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে তাদের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে কতটা আগ্রহী, সেটা অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়।
এটি বিশেষত বিএনপির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। কারণ, ঐতিহাসিকভাবে ছাত্ররাজনীতি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল। ছাত্রদের নতুন উদ্যোগ বিএনপির জন্য বাড়তি চাপ হিসেবে এসেছে। সে জন্যই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নতুন দিকনির্দেশনা দরকার। ক্ষমতার পালাবদল, ছাত্ররাজনীতির পুনর্গঠন এবং জামায়াতের মতো বিতর্কিত দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপির সামনে সুযোগ এসেছে নিজেদের মতাদর্শ পুনর্গঠন করার।
তবে এই সম্ভাবনার সঠিক বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে সর্বজনীনভাবে প্রতিষ্ঠা করা, গণতন্ত্রের জন্য সত্যিকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া এবং তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন ও চাহিদার সঙ্গে নিজেদের একীভূত করা।
এটি পরিষ্কার যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পুরোনো মতপার্থক্যের পরিবর্তে এখন দরকার একটি নতুন ঐক্য ও মানসিকতার পরিবর্তন। আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতি, ছাত্রদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং জামায়াতের সঙ্গে বিভেদ এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। একটি নির্মোহ এবং ইতিবাচক রাজনীতি গড়ে উঠলে তা কেবল বিএনপির জন্য নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।
দুই.
দেশের রাজনীতি যখন কিছুটা ভারসাম্যহীন, ঠিক তখন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনযাত্রা শুধু একটি মানবিক কিংবা চিকিৎসাবিষয়ক ঘটনা নয়; এটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকেও নতুন এক মোড় এনে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যসংকট বরাবরই রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় ছিল। তবে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তন, ছাত্র-জনতার গণজাগরণ এবং ক্ষমতা বদলের পর তাঁর বিদেশযাত্রা একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন। তাঁর সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের আকস্মিক সৌজন্য সাক্ষাৎ পুরো বিষয়টিকে তাৎপর্যময় করে তুলেছে।
২০১৮ সালে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা কখনোই থেমে থাকেনি। তাঁর মুক্তি কিংবা বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে পরিবারের পাশাপাশি দলও বারবার সোচ্চার হয়েছে। তবে তৎকালীন সরকার এ দাবিতে সাড়া না দিয়ে প্রমাণ করেছে যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মানবিকতাকে ছাপিয়ে যেতে পারে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার ইঙ্গিত দেয়, যেখানে মানবিক ইস্যুকে রাজনৈতিক অন্তরায় হিসেবে ব্যবহার না করে সমাধানের চেষ্টা দেখা যায়।
খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার প্রাক্কালে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাক্ষাৎকে অনেকেই সৌজন্য সাক্ষাৎ হিসেবে দেখলেও, এটি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি কৌশলগত বার্তা দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সেনাবাহিনী কর্তৃক জনগণের দাবির প্রতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠা এবং রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। বিএনপি বা তার সমর্থকেরা এটিকে তাদের প্রতি সেনাবাহিনীর আন্তরিকতা হিসেবে দেখতেই পারেন। এই সাক্ষাৎ বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে আস্থা তৈরির একটি পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে।
খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর পুনর্মিলন। তারেক রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার এই সাক্ষাৎ শুধু একটি মা-ছেলের আবেগঘন মুহূর্ত হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়; এটি বিএনপির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণে কৌশলগত আলোচনার ক্ষেত্রও হতে পারে। যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী তারেক রহমান প্রায় এক যুগ ধরে দল পরিচালনা করলেও দলটির বেশির ভাগ নেতা ও সমর্থকের কাছেই তাঁকে দূরবর্তী বলে মনে হয়। খালেদা জিয়ার সক্রিয় নির্দেশনা এবং নতুন দিকনির্দেশনার মাধ্যমে তারেক রহমানের গ্রহণযোগ্যতা এবং দলীয় কাঠামো পুনর্গঠনের বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা করা হতে পারে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো একটি আন্তর্জাতিক সমীকরণেরও ইঙ্গিত। মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ হিসেবে কাতারের এই পদক্ষেপ শুধু মানবিকতার চেয়ে বেশি কিছু। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাদের দীর্ঘমেয়াদি আগ্রহ এবং সম্পর্ক উন্নয়নের এক কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার পাশাপাশি জনস হপকিন্স হসপিটালে সম্ভাব্য চিকিৎসার পরিকল্পনা বিশ্ব মঞ্চে খালেদা জিয়া এবং বিএনপির গুরুত্বকে তুলে ধরছে।
বিদেশে উন্নত চিকিৎসা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসনের পবিত্র ওমরাহ পালন এবং সুস্থ হয়ে দেশে ফেরার পরিকল্পনা একদিকে তাঁর পুনরুত্থানের বার্তা দেয়, অন্যদিকে গণতন্ত্রের প্রতি দলের দায়বদ্ধতাও দৃশ্যমান করে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিএনপির রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা আসতে পারে। আর বিএনপির নেতা-কর্মীরা আশাবাদী যে খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন দলের ঐক্য আরও দৃঢ় করবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁকে পুনরায় শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবে।
তবে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিপরীতমুখী আলোচনাও আছে। চিকিৎসার জন্য বিদেশযাত্রায় বিলম্ব এবং তারেক রহমানের দেশে না ফেরা নিয়েও নানা ধরনের গুঞ্জন আছে। বিশ্লেষকদের কেউ মনে করছেন, চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার নিশ্চয়তা তিনি সেনাপ্রধানের কাছ থেকে পেয়েছেন। আবার চিকিৎসা শেষে তাঁর দেশে ফেরার অনিশ্চয়তাও কেউ কেউ দেখছেন। কারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা দূর হয়নি। এ নিয়ে স্পষ্ট ঘোষণা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো দেওয়া হয়নি।
গত সপ্তাহে প্যালেস্টেনিয়ান অথরিটি (পিএ) বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে নিষিদ্ধ করেছে, যা কিনা সংবাদভিত্তিক কয়েকটি আন্তর্জাতিক আউটলেটের মধ্যে একটি এবং যারা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী দখলদারত্ব, গাজায় চলমান গণহত্যা এবং জাতিগত নির্মূল অভিযানের খবর ধারাবাহিকভাবে প্রচার ক
১৯ ঘণ্টা আগেএ খবর নতুন নয় যে গত বছর ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান ও আওয়ামী শাসনের অবসানের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মামলা হচ্ছে ব্যক্তিগত বিরোধ বা আক্রোশ থেকেও—এমন নয় যে তাঁরা সবাই রাজনৈতিক পদধারী কেউ কিংবা কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ আছে। এ নিয়ে স
১৯ ঘণ্টা আগেগত ডিসেম্বরের কথা। সকালের সূর্য সবে পূর্ব আকাশে উঁকি দিয়েছে। ছুটলাম কৃষকের মাঠের দিকে। আমি একা নই। সঙ্গে ২০ খুদে শিক্ষার্থী। তারা নতুন কিছু করবে ভেবে উত্তেজনায় উৎফুল্ল। যেতে যেতে আমরা কথা বলছিলাম বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক নিয়ে। নানা রকমের প্রশ্ন আর জিজ্ঞাসা তাদের।
২ দিন আগেআগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তিন বছর পেরিয়ে চার বছরে পদার্পণ করবে। বাংলাদেশে বসে এই সময়ে এই যুদ্ধের প্রতি এখন ততটা আগ্রহ দেখাবে না কেউ। দীর্ঘদিন এই যুদ্ধ চলার পর স্বাভাবিকভাবে মানুষ এটাকে নিত্যনৈমিত্তিক একটা ব্যাপার হিসেবে মেনে নিয়েছে।
২ দিন আগে