শচীনের কদর শুধু দুই দিন

কুমিল্লা প্রতিনিধি  
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ৪৩
মেলা উপলক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী শচীন দেববর্মনের বাড়ি। গতকাল কুমিল্লা শহরের চর্থায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ও সুরকার শচীন দেববর্মনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ৩০ অক্টোবর কুমিল্লায় শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী শচীন মেলা। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকা শিল্পীর কুমিল্লার বাড়িটি সংস্কার করে সেখানে প্রতিবছর এ মেলার আয়োজন করা হয়। শচীনপ্রেমীদের ক্ষোভ, জন্ম-মৃত্যুদিন ছাড়া বছরজুড়ে শচীন ও তাঁর বাড়িটি অবহেলিত থাকে। তাঁরা শিল্পীর বাড়িতে সংগীতসংশ্লিষ্ট জাদুঘর স্থাপনের দাবি জানান।

শচীন দেববর্মনের জন্ম ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর, কুমিল্লা শহরের চর্থায় ত্রিপুরার রাজপরিবারে। এই বাড়িতে শচীনের সঙ্গে সংগীতের আসর বসাতেন জাতীয় কবি কাজী

নজরুল ইসলামসহ দেশের খ্যাতিমান সংগীতজ্ঞরা। ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর মারা যান তিনি।

জানা গেছে, প্রতিবছর ৩০ ও ৩১ অক্টোবর শিল্পীর স্মরণে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় দুই দিনব্যাপী ‘শচীন মেলা’। শিল্পীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন এ বছর এ দুই দিন মেলার আয়োজন করে। বুধবার বিকেলে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে জেলা প্রশাসকের।

চমৎকার নির্মাণশৈলী এ বাড়িটি পুরোপুরি হাঁস-মুরগির খামারমুক্ত করে যথাযথ সংরক্ষণসহ শহরজুড়ে শচীনের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের ওপর জোর দেন বিশিষ্টজনেরা। জানা গেছে, ১৯৪৪ সালে ভারতের বোম্বে চলে গেলে আর আসেননি কুমিল্লার পৈতৃক বাড়িতে। এরপর বাড়িটিতে সরকারি হাঁস-মুরগির খামার বানায় পাকিস্তান সরকার।

সিটি করপোরেশন অঙ্কনশালা ও শিল্পচর্চা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘শচীন মেলা উপলক্ষে আমরা নিজেদের মনের মতো করে সাজাচ্ছি। আমাদের সকল আয়োজন শেষ পর্যায়ে। আশা করি, ভালোভাবে মেলা শুরু হবে।’

চলচ্চিত্র মঞ্চ, কুমিল্লার পরিচালক খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, ‘কুমিল্লার চর্থায় দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত শচীনের পৈতৃক বাড়িটি ২০১৪ সালে আংশিকভাবে দখলমুক্ত করে জেলা প্রশাসন। বাড়িটি সংস্কার করে এখানে প্রতিবছর শচীন মেলার আয়োজন করা হয়। জন্ম-মৃত্যুদিন ছাড়া এখানে হয় না কোনো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে বাড়িতে সংগীতসংশ্লিষ্ট জাদুঘর স্থাপনের দাবি জানাই।’

ঐতিহ্য কুমিল্লার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল বলেন, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর শচীনের বাড়িটি পরিত্যক্ত ছিল। এটিতে পাকিস্তান সরকার মুরগির খামার করে। ২০১৪ সালে বাড়িটি উদ্ধার করা হয়। দখলমুক্ত হওয়ার ১০ বছর পরও বাড়িটি বেহাল এবং বছরজুড়ে থাকে অরক্ষিত। এ বাড়িটি সংরক্ষণ করতে হবে।

জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, ‘প্রতিবছর এ মেলাটি আয়োজন করা হয়ে থাকে জেনেছি। এবার বন্যা ও বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে মেলার সরকারি বরাদ্দ হয়নি। তবে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে কুমিল্লার সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এ মেলার আয়োজন করেছি। এতে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা হবে। এ বাড়িটি সংরক্ষণসহ সাংস্কৃতিক কর্মীদের অভয়ারণ্য করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত