ববিতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ১০ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৪, ১৬: ৫০
Thumbnail image

কমপ্লিট শাটডাউনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বরিশালে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নগরের বিভিন্ন স্পটে অবস্থান করায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা বিচ্ছিন্নভাবে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন। পুলিশ নগরের বিভিন্ন স্পটে ধরপাকড় করছে। এদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপের জবাবে পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট উপেক্ষা করে মহাসড়ক দখল করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সংঘাতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হওয়াসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বেলা ১১টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বাস্তবায়নে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা মহাসড়ক দখল করার জন্য পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। তবে মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ আর মুকুল শিক্ষার্থীদের সাফ জানিয়ে দেন যে মহাসড়ক আটকানো যাবে না। এ সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। 

ফটকে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত পুলিশকে আলটিমেটাম দেন। এর পরপরই শুরু হয় বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ। পুলিশ এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে মারমুখী হয়ে গেট থেকে শত শত ছাত্র ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বেরিয়ে আসেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ঘিরে ফেলেন ছাত্ররা। শিক্ষার্থীরা একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের পাহারা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন। 

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় রাবার বুলেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত পাঁচ থেকে ছয় শিক্ষার্থী। সূত্র জানায়, সংঘর্ষ চলাকালে ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলেন উপাচার্য। তিনি সকালে ক্যাম্পাসের বাইরে যান। আজ বিকেল নাগাদ ফেরেননি উপাচার্য প্রফেসর বদরুজ্জামান ভূঁইয়া।

আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুজয় শুভ বলেন, পুলিশ বেপরোয়াভাবে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। তাতে কমপক্ষে ১০ ছাত্র আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ পাঁচজন। তাঁদের শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

বন্দর থানার ওসি মুকুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঝামেলা বাধাতে চান না। তাই তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে সরে এসেছেন।’ 

এ বিষয়ে ববির উপাচার্য প্রফেসর বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আটকে রাখতে। তাদের বারবার মহাসড়ক অবরোধ করে দুর্ভোগ না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু এরপরও বৃহস্পতিবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়েছে। ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটনা ঘটায় এখন তো বিষয়টা আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। আমার জীবনেরও তো নিরাপত্তা নেই।’ 

উপাচার্য আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাইনি, তবে কয়েকজন আহত হওয়ার কথা শুনেছি।’ একটি বৈঠকের কারণে ঘটনার সময় ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলেন বলে জানান উপাচার্য। 

এদিকে আজ সকাল থেকে বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ, চৌমাথা, আমতলা, সদর রোডসহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতা–কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দেন। পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে, হাতেম আলী কলেজসহ বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালিয়ে ছাত্রদের গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে বেলা ২টার দিকে বরিশাল জিলা স্কুলের সামনে ছাত্ররা দখল করে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিকেলেও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দূরপাল্লা এবং অভ্যন্তরীণ বাস চলাচল করছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত