পটুয়াখালীতে চাহিদা বেশি বারোমাসি হলুদ তরমুজের

প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২১, ২২: ৪৮

পটুয়াখালী: বাইরে সবুজ ভেতরে লাল। এমন বিবরণ থেকে সহজেই অনুমান করা যায় এটি তরমুজ। কিন্তু তরমুজ কাটার পরে দেখে ভিতরে গাঢ় হলুদ রঙ। আবুল কালাম আজাদ হলুদ তরমুজ দেখে অবাক হয়ে একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছিলেন। খাবেন কি খাবেন না এ নিয়ে দ্বিধায় ভুগছিলেন তিনি। এটা কী? তরমুজের ভিতরে হলুদ কেনো? এটা কি আসলেই তরমুজ নাকি অন্য কিছু? অবশ্য খাওয়ার পরে অবশ্য বিশাল আকৃতির দুটি তরমুজ কিনে নিয়ে গেলেন তিনি।

পটুয়াখালী লেবুখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েক বছর গবেষণা করে তরমুজের জাতটি উদ্ভাবন করেছেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউট (বারি) গত বছর তরমুজের অনুমোদন দিয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে বারি তরমুজ-২।

পটুয়াখালীর বিভিন্ন বাজারে এই তরমুজের চাহিদা যেমন বেশি তেমনি দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। ক্রেতাদের ও আগ্রহের কেন্দ্রে হলুদ রংয়ের তরমুজে। ফলে কৃষকরা এই তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।

হেতালিয়া বাঁধঘাটের তরমুজ বিক্রেতা মো. বশির (৪০) বলেন, এই তরমুজ পটুয়াখালীতে প্রথম চাষ শুরু হয়েছে। আমরা এই তরমুজকে বেল তরমুজ নামে চিনি। এই তরমুজের অনেক চাহিদা। ক্রেতারা সবাই এই তরমুজ চায়। এই হলুদ তরমুজ কেটে দেখানোর পরে অবাক হয়েছিলাম। এতো বছর তরমুজ বেচি জীবনে এমন দেখি নাই। পরে ২৫টা আনছি। ৭০ টাকা কেজি করে বেচি। বশিরের দাবি, এই বাঁধঘাটে শুধু তার কাছেই আছে এ তরমুজ।

পটুয়াখালী সরকারি কলেজ রোডের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ জানান, ছোট ভাই বাসায় তরমুজ কিনে নিয়ে এসেছে। এখন তরমুজের সিজন। সব সময়ই তরমুজ খাই কিন্তু এই হলুদ তরমুজ দেখে অবাক হয়েছি। অবিশ্বাস্য ঘটনা! কখনো শুনিনি, দেখিওনি, যে তরমুজ হলুদ হয়। হলুদ রংয়ের হলেও লাল তরমুজের মতোই স্বাদ। শুনেছি, কৃষি বিজ্ঞানীর গবেষণা করে এই জাতটি উদ্ভাবন করেছে। এখন আমার পরিবারের সবাই হলুদ তরমুজ খেতে চায়।

দুমকী উপজেলার কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, কৃষিবিজ্ঞানী স্যারেরা আমারে বীজ দেছে। পরীক্ষামূলকভাবে বারি তরমুজ-২ লাগাইছি। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভালো হইছে। বাজারেও ভালো দাম পাইছি। কৃষিস্যারেরা সব সময় মাঠে আইসা দিকনির্দেশনা দেছে। এখন হইতে আমি বারোমাস এই হলুদ তরমুজ লাগামু।

পটুয়াখালীর লেবুখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, বেশ কয়েক বছর গবেষণার পর বারি তরমুজ-২ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়েছে । চলতি বছরে ১০ জন কৃষকের মাঝে এ তরমুজের বীজ সরবরাহ করা হয়। ভিন্ন জাতের এই তরমুজ চাষে এবার ফলন ভালো হওয়ায়। কৃষকরা আমাদের জানান, লাল তরমুজ যেখানে বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় সেখানে হলুদ রঙের তরমুজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা যাচ্ছে।

দিকে অন্যসব হাইব্রিড জাতের তরমুজ বছরে এক মৌসুমে চাষ করা গেলেও বারি তরমুজ-২ সারা বছর চাষ করা সম্ভব। ফলে অসময়ে তরমুজ চাষ করেও কৃষকরা বাড়তি আয় করতে পারবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত