বেতাগী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ, ভিডিও ভাইরাল

বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ৪৬
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ৩৫

বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্করের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও (৬ মিনিটি ৪৪ সেকেন্ডের) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত (ফার্মাসিস্ট) কৃষ্ণ কুমার পালকে টাকা গণনা করতে দেখা গেছে। তাঁর (কৃষ্ণ) দাবি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশে ঘুষের টাকা গণনা করেন তিনি। কৃষ্ণ কুমার পাল ঘুষের বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করলেও অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। 

এদিকে বিষয়টি তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতনরা। 

ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পথ্য ও স্টেশনারি সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার (প্রতিনিধি) মো. রেজাউল ইসলাম মামুন খান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার (ডা. ফাহমিদা লস্কর) কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে বিল উত্তোলন করে পার্সেন্টিজ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা শোনা যায়। ভিডিওর ব্যাপারে জানতে চাইলে রেজাউল ইসলাম মামুন বলেন, ‘লেনদেনের বিষয়টি সত্য। আমি বাধ্য হয়ে ওই টাকা দিয়েছি।’ 

বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত (ফার্মাসিস্ট) কৃষ্ণ কুমার পাল বলেন, ‘যেদিন ঘটনাটি ঘটে ওই দিন আমি অফিসে কাজ করছিলাম, তখন স্যার (ফাহমিদা লস্কর) আমাকে তাঁর অফিস কক্ষে ডাকেন এবং মামুন সাহেবের কাছ থেকে টাকাগুলো গুনে রাখতে বলেন এবং আমি গুনে রাখি। মামুন সাহেব যাওয়ার পর, স্যার পরে ওই টাকা আমার কাছ থেকে নিয়ে গেছেন। যেখানে ৫০০ টাকার নোটের একটি বান্ডিলে মোট ৫০ হাজার টাকা ছিল। ওই টাকা কোনো জরিমানা কিংবা হাসপাতালের কোনো ফান্ডের কি না জানতে চাইলে তিনি (কৃষ্ণ) বলেন, ওই টাকা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে মামুন সাহেব দিয়েছেন, যা আমি তাঁরই (ফাহমিদা লস্কর) নির্দেশে গ্রহণ করেছি। ওই টাকা অন্য কোনো ফান্ডের না।’ 

ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্কর বলেন, ‘ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তাঁরা মানসম্মত খাবার পরিবেশন করেন না। আমি এ নিয়ে তাঁদের ডেকে মিটিং করে হুঁশিয়ারি দিয়েছি। আর টাকা নিয়ে থাকলেও সেটি জরিমানা হতে পারে। জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে কি না এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা বাবদ কোনো রিসিপ্ট দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আদৌ মামুন সাহেব টাকা দিয়েছে কি না আমি তো সেটাই জানি না। তা ছাড়া আমাকে তো ভিডিওতে টাকা গুনতে দেখা যাচ্ছে না। কৃষ্ণ টাকা গুনছে নাকি! সেটা তো আমাদের অফিসের টাকাও হতে পারে।”’ 

বরগুনা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, ‘হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে ঘুষ গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে, তদন্তমূলক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ‘এ ধরনের অর্থ-বাণিজ্যের কোনো সুযোগ নেই। যদি কোনো কর্মকর্তা করে থাকে বা এর সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে সঠিকভাবে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত