তালতলীতে প্রাথমিক শিক্ষকের স্ত্রী পান ভিজিডির চাল

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ২০: ১০

বরগুনার তালতলীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের স্ত্রীর নামে দুস্থদের ভিজিডি কার্ড হয়েছে। সচ্ছল এই পরিবার প্রতি মাসে ভিজিডির ৩০ কেজি করে চাল তুলে নিচ্ছেন। আর এতে বঞ্চিত হচ্ছেন অসহায় ও দুস্থরা। হতদরিদ্র-দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ভিজিডি কার্ড বিতরণে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বড়বগী ইউনিয়নে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড় বগী ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহ নেওয়াজ সেলিম। তিনি মেনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার স্ত্রী সালমা বেগমের নামে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ভিজিডি কার্ড হয়েছে। তিনি এই ভিজিডি চালও তুলে নিয়েছেন।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন এক ভুক্তভোগী। সেখানে তিনি দাবি করেন দুস্থ নিজেই। তার তিনটি সন্তান ও আয়-রোজগারের করার কোনো মাধ্যম নেই। তার নামে ভিজিডি নেই। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি চাকরিজীবীরা ভিজিডির কার্ড পেয়েছেন।

মহিলা বিষায়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের চুড়ান্ত তালিকায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার পাড়া গ্রামে ৪২ নম্বর সিরিয়ালে ভিজিডির কার্ডধারী সালমা বেগমের নামে একটি ভিজিডি কার্ড রয়েছে। তার নামে ২০২৩-২৪ সালের মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ইস্যুকৃত কার্ডে ভিজিডির চাল পাচ্ছেন তিনি। সালমা বেগমের পরিবার বেশ সচ্ছল। স্বামী সরকারি শিক্ষক। 

সালমা বেগমের স্বামী শাহ নেওয়াজ সেলিম বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করি এটা সঠিক। আমার স্ত্রীর নামের ভিজিট কার্ড আছে এটাও সঠিক। আমাদের ভিজিডি তালিকায় নাম দিয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান।’ 

বড়বগী ইউনিয়ন সচিব এমরান হোসাইন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ঐ কার্ড বাতিলের জন্য রেজুলেশন করে মহিলা বিষয়াক অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তার ইউনিয়ন পরিষদ ভিজিডি কার্ড নম্বর ১৩৫।’ 

এবিষয়ে বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম মুন্সী বলেন, ‘এই ভিজিডি নামের তালিকা উপজেলা চেয়ারম্যান দিয়েছেন। আপনারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’

তালতলী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রূপ কুমার পাল বলেন, ‘ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চুড়ন্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তা ছাড়া অভিযোগ পাওয়ার পরে ঐ শিক্ষকের স্ত্রীর নামের ভিজিডির কার্ডটি বাতিল করা হবে। নতুন কারও নামে কার্ড তৈরি করা হবে।’ 

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ‘এটাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো স্বজনপ্রীতি হলে অবশ্যই বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, ‘ভিজিডি কার্ডের নামের তালিকা দেওয়ার সময় ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী সুপারিশ করা হয়েছে। ভোটার আইডি কার্ডে স্বামীর নাম থাকে না। এজন্য এই ভুলগুলো হয়। তিনি আরও বলেন পরিচয় গোপন করে যদি এমন কিছু হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত