ব্যানার-ফেস্টুনে শ্রীহীন বরিশাল নগর, বিরক্ত বাসিন্দারা

খান রফিক, বরিশাল
Thumbnail image

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুনে ঢেকে থাকত বরিশাল নগরের নানা স্থাপনা। এতে শ্রীহীন হয়ে পড়ে চারপাশ। সেই সরকারের পতন হলেও সৌন্দর্য ফিরে আসেনি নগরে। এখানকার ঐতিহ্যবাহী অশ্বিনীকুমার হল কিংবা বিবির পুকুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো নতুন করে ব্যানার-ফেস্টুনে ভরে ফেলেছেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে বিরক্ত নগরবাসী।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে গত বৃহস্পতিবার বরিশালে শহীদি মার্চ পালন করা হয়। এ সময় সদর রোডে মিছিলে আসা শিক্ষার্থী লামিয়া বলেন, ‘অশ্বিনীকুমার টাউন হল জনগণের। কোনো দলের এটি নয়। অথচ সেটি ব্যানার-ফেস্টুনে ঢেকে রাখা হয়েছে। অতীতের কর্মকাণ্ড নতুন করে হোক, ছাত্র-জনতা তা চায় না।’

মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান মামুনের নাম দিয়ে অশ্বিনীকুমার টাউন হলজুড়ে বিশাল এক ব্যানার সাঁটানো হয়েছে। অদূরে বিবির পুকুরে ঝুলছে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনির নামে থাকা বিশাল শুভেচ্ছা ব্যানার। এ ছাড়া ব্যানার-ফেস্টুনে ঢেকে গেছে নগরের জেলখানার মোড়, চৌমাথা, হাতেম আলী কলেজ, বিএম কলেজ, সাগরদি, রূপাতলী, নথুল্লাবাদসহ সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তাতে সৌন্দর্য ঢেকে গেছে নগরের।

এ নিয়ে কথা হলে মাসুদ হাসান মামুন বলেন, ‘বরিশাল প্রাণের শহর। এটি পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটান। এটা সাময়িক সময়ের জন্য। এগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনিকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ব্যানারের পক্ষে না। এমন কর্মকাণ্ড আমাদের খুশি করার জন্য কেউ কেউ করেছে। যারা আদালতের দালাল, ঘাটের দালাল, টোকাই, বহিরাগত—এমন লোকজন ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায়ে ভর করে ব্যানার সাঁটিয়ে দলে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।’

barishal festoneবিষয়টি নিয়ে আলাপকালে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) মহানগর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, ‘নগরী আবারও ব্যানারে ঢেকে গেছে। এ যেন নতুন গ্লাসে পুরোনো মদ। এখন যাঁরা দৃশ্যমান, তাঁরাও দখল করছেন। ছাত্রদল, যুবদল ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটিয়ে শহীদদের রক্তের মধ্যে, বন্যার মধ্যে উৎসব করছে। যাঁরা ব্যানার সাঁটিয়েছেন, তাঁদের নিজ নিজ খরচে এগুলো সরিয়ে নিতে হবে। আমরা বিড়ম্বনামুক্ত নগর চাই। নতুবা নতুন প্রজন্ম তাঁদের ছেড়ে দেবে না।’

যোগাযোগ করা হলে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, বন্যায় মানুষ কষ্টে আছে, তাই দল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। অথচ একশ্রেণির নেতা-কর্মী ব্যানার টাঙিয়েছেন। এগুলো নামিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এভাবে ব্যানার দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঢেকে রাখলে দৃষ্টিকটু লাগে। যেদিন এগুলো লাগিয়েছে, সেদিনই নামিয়ে ফেলার জন্য বলা হয়েছে। গত ৩ আগস্ট ভার্চুয়াল সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সবাইকে পরিবর্তন হতে বলেছেন। অতীতে হাসিনা সরকারের নেতারা যা করেছেন, তা বিএনপি আর করতে দেবে না। যাঁরা নগরের সৌন্দর্য নষ্ট করে নিজেকে জাহির করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত