রুদ্র রুহান, বরগুনা
ভূমি অফিসের কথা শুনতেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের আজাদুল ইসলাম বলে ওঠেন, ‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না।’ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়েছিলেন জমির দাখিলার জন্য। কিন্তু সেখানের এক কর্মচারীর ঘুষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে।
আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘মুই একটা দাহিলা (দাখিলা) আনতে ভূমি অফিসে গেছালাম। তহশিলদারের সহকারী পঙ্কজ চন্দ্র মোরে কয় জমি নদী সিকস্তিতে গ্যাছে। জরিপ কইরা হেইয়ার পর দাহিলা দেওন যাইবে। হেরপর মোরো আড়ালে ডাইক্কা কয় ৫ হাজার টাহা দেলে দাহিলা দেতে পারমু। পরে টাহা গুছাইয়া লইয়া গেছি পর মোরে দাহিলা কাইট্টা দেছে। দাহিলায় ল্যাকছে ৫০০ টাহা।’
জেলা রাজস্ব বিভাগের তথ্য মতে, বরগুনা জেলায় মোট ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, পাঁচটি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিস, ও জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে।
সরেজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় পর্যন্ত কোনো কাজে গেলে ঘুষ ছাড়া সে কাজ হয় না। বরং পর্যায়ক্রমে টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে। তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে প্রথমেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন তহশিলদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই সাধারণত জমির খাজনা দিয়ে দাখিলা নিতে আসেন। এ ছাড়া জমি জমা সংক্রান্ত সাধারণ তথ্য খোঁজ করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করেন। আর এখানে এসেই প্রথম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, ঘুষ না দিয়ে কেউই কোনো সেবা পান না এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বরগুনা সদর ইউনিয়নে হেউলীবুনিয়া এলাকার আবদুস সত্তার গত সোমবার সকালে দাখিলার জন্য গিয়েছিলেন। নিয়মানুযায়ী জমির খাজনা দিতে চাইলেও তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অগত্যা বাধ্য হয়ে আট হাজার টাকায় তিনি দাখিলা কাটেন আর দাখিলায় খাজনা জমা দেখানো হয় মাত্র ২২০ টাকা। এ বিষয়ে সাত্তার বলেন, ‘এখানে অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ না দিয়ে কাজ আদায় করতে পেরেছে এমন ভাগ্যবান ব্যক্তির কথা আমার জানা নেই। প্রত্যেক এলাকায় ভূমি অফিসের নির্দিষ্ট দালাল আছে। এই দালালদের মাধ্যমে সব কাজ করতে হয়। নয়তো আপনাকে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।’
একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন বরগুনার ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতারা। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দাখিলা, দাগ-খতিয়ান ও মিউটেশনের তথ্য সরবরাহে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। অবশেষে ধার্যকৃত টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। রোববার সরেজমিনে বরগুনা সদরের ফুলঝুড়ি ভূমি অফিসে গেলে দেখা যায়, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে শাহজাহান বিশ্বাসের দাখিলায় ৮৮ টাকা লেখা। কিন্তু রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। এর আগে সোমবার তারাবানু, রুনু, মাজেদা ও ফারুক প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা রাখা হয়েছে। অথচ, দাখিলা রশিদে ২০ টাকা।
দাখিলা কাটতে আসা ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. রফিক হাওলাদার বলেন, অনেক আগে থেকেই এখানে ঘুষ বাণিজ্য চলে। আমরা যদি প্রতিবাদ করি তাহলে কোনো কাজ হয় না। তাই ঘুষ দিয়েই কাজ করি।
এ তো গেল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের গল্প। উপজেলা থেকে জেলা যেখানে যাবেন ঘুষ দিতেই হবে। আর ধাপে ধাপে বাড়বে ঘুষের টাকার পরিমাণ। গত রোববার দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার ভূমি অফিসের সামনে অপেক্ষমাণ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কোনো কাজের জন্য আসলে অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়। আর ঘুষ দিলেই কেবল বালামে হাত দেন সংশ্লিষ্টরা। আর না দিলে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।
এমন বিড়ম্বনার শিকার হওয়া কয়েকজনের সঙ্গে রোববার দুপুরে সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয়। সদরের এম বালিয়াতলীর তালতলী এলাকার কৃষক সেন্টু মিয়া বরগুনা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এসেছেন নষ্ট হয়ে যাওয়া জমির দলিল ওঠানোর জন্য। তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন অফিসের একজন সহকারী রেকর্ড কিপার। সদর উপজেলার রায়ভোগ এলাকার ইউনুস মিয়াও এসেছেন দলিল খুঁজতে। তাঁর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন এই অফিসের একজন কর্মচারী। ইউনুস বলেন, ‘এখানে পিয়ন–ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে সবাই সুযোগ পেলে ঘুষ নেন। আমরা এখানে এসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই করতে পারি না। টাকা দিলেই কেবল বালামে হাত দেয়, না দিলে কোনো কাজ হয় না।’
পাথরঘাটা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয় রেজাউল কবির নামের কালমেঘা ইউনিয়নের এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু দলিল লেখকদের সঙ্গে যোগসাজশে অফিসের কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে থাকেন। দলিলের সরকারি সব খরচার বাইরেও অফিস খরচার নামে ৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে আমতলীতে কৃষিজমির পরিমাণ বেশি।’
ভূমিখাতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বরগুনার আমতলী উপজেলায়। আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ঘুষ দিয়ে জাল দলিল থেকে শুরু করে সব কাজ করানো সম্ভব। আর ঘুষ না দিয়ে কেউ কোনো কাজ করতেই পারবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, এখানে এসে কেউ ঘুষ না দিয়ে কাজ করাতে পেরেছে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে এমন কেউ নেই। একইরকম চিত্র জেলার বাকি তিনটি সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়েরও।’
এ ছাড়া জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের চিত্র ঠিক এমনই। শুধুমাত্র পার্থক্য ঘুষের অঙ্কের। সরকারি ফির ধার ধারার সময় নেই কারওই। দলিল রেকর্ড করতে আসলে মোক্তাররা আগেই চুক্তি করে অফিস খরচা বাবদ টাকা রেখে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত সিভিল মামলা পরিচালনা করে আসছেন এমন কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলিল করার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে সরকারি খরচার বাইরে মোক্তারদের মাধ্যমে অফিস খরচা বাবদ দুই থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। সম্প্রতি দলিল করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আইনজীবীর দাবির মিল রয়েছে।
জাকির হোসেন নামের বেতাগী উপজেলার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি একজন মোক্তারের মাধ্যমে দলিলের কাজ করিয়েছি। আমার তিনটি দলিলে অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক (ভূমি) পীযূষ কান্তির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূল থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলায় সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা যাতে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার না হয় সে জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ভূমি অফিসের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী বিরুদ্ধে ঘুষ বাবদ অর্থ নেওয়ার কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’
ভূমি অফিসের কথা শুনতেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের আজাদুল ইসলাম বলে ওঠেন, ‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না।’ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়েছিলেন জমির দাখিলার জন্য। কিন্তু সেখানের এক কর্মচারীর ঘুষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে।
আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘মুই একটা দাহিলা (দাখিলা) আনতে ভূমি অফিসে গেছালাম। তহশিলদারের সহকারী পঙ্কজ চন্দ্র মোরে কয় জমি নদী সিকস্তিতে গ্যাছে। জরিপ কইরা হেইয়ার পর দাহিলা দেওন যাইবে। হেরপর মোরো আড়ালে ডাইক্কা কয় ৫ হাজার টাহা দেলে দাহিলা দেতে পারমু। পরে টাহা গুছাইয়া লইয়া গেছি পর মোরে দাহিলা কাইট্টা দেছে। দাহিলায় ল্যাকছে ৫০০ টাহা।’
জেলা রাজস্ব বিভাগের তথ্য মতে, বরগুনা জেলায় মোট ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, পাঁচটি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিস, ও জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে।
সরেজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় পর্যন্ত কোনো কাজে গেলে ঘুষ ছাড়া সে কাজ হয় না। বরং পর্যায়ক্রমে টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে। তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে প্রথমেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন তহশিলদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই সাধারণত জমির খাজনা দিয়ে দাখিলা নিতে আসেন। এ ছাড়া জমি জমা সংক্রান্ত সাধারণ তথ্য খোঁজ করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করেন। আর এখানে এসেই প্রথম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, ঘুষ না দিয়ে কেউই কোনো সেবা পান না এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বরগুনা সদর ইউনিয়নে হেউলীবুনিয়া এলাকার আবদুস সত্তার গত সোমবার সকালে দাখিলার জন্য গিয়েছিলেন। নিয়মানুযায়ী জমির খাজনা দিতে চাইলেও তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অগত্যা বাধ্য হয়ে আট হাজার টাকায় তিনি দাখিলা কাটেন আর দাখিলায় খাজনা জমা দেখানো হয় মাত্র ২২০ টাকা। এ বিষয়ে সাত্তার বলেন, ‘এখানে অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ না দিয়ে কাজ আদায় করতে পেরেছে এমন ভাগ্যবান ব্যক্তির কথা আমার জানা নেই। প্রত্যেক এলাকায় ভূমি অফিসের নির্দিষ্ট দালাল আছে। এই দালালদের মাধ্যমে সব কাজ করতে হয়। নয়তো আপনাকে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।’
একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন বরগুনার ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতারা। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দাখিলা, দাগ-খতিয়ান ও মিউটেশনের তথ্য সরবরাহে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। অবশেষে ধার্যকৃত টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। রোববার সরেজমিনে বরগুনা সদরের ফুলঝুড়ি ভূমি অফিসে গেলে দেখা যায়, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে শাহজাহান বিশ্বাসের দাখিলায় ৮৮ টাকা লেখা। কিন্তু রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। এর আগে সোমবার তারাবানু, রুনু, মাজেদা ও ফারুক প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা রাখা হয়েছে। অথচ, দাখিলা রশিদে ২০ টাকা।
দাখিলা কাটতে আসা ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. রফিক হাওলাদার বলেন, অনেক আগে থেকেই এখানে ঘুষ বাণিজ্য চলে। আমরা যদি প্রতিবাদ করি তাহলে কোনো কাজ হয় না। তাই ঘুষ দিয়েই কাজ করি।
এ তো গেল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের গল্প। উপজেলা থেকে জেলা যেখানে যাবেন ঘুষ দিতেই হবে। আর ধাপে ধাপে বাড়বে ঘুষের টাকার পরিমাণ। গত রোববার দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার ভূমি অফিসের সামনে অপেক্ষমাণ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কোনো কাজের জন্য আসলে অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়। আর ঘুষ দিলেই কেবল বালামে হাত দেন সংশ্লিষ্টরা। আর না দিলে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।
এমন বিড়ম্বনার শিকার হওয়া কয়েকজনের সঙ্গে রোববার দুপুরে সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয়। সদরের এম বালিয়াতলীর তালতলী এলাকার কৃষক সেন্টু মিয়া বরগুনা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এসেছেন নষ্ট হয়ে যাওয়া জমির দলিল ওঠানোর জন্য। তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন অফিসের একজন সহকারী রেকর্ড কিপার। সদর উপজেলার রায়ভোগ এলাকার ইউনুস মিয়াও এসেছেন দলিল খুঁজতে। তাঁর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন এই অফিসের একজন কর্মচারী। ইউনুস বলেন, ‘এখানে পিয়ন–ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে সবাই সুযোগ পেলে ঘুষ নেন। আমরা এখানে এসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই করতে পারি না। টাকা দিলেই কেবল বালামে হাত দেয়, না দিলে কোনো কাজ হয় না।’
পাথরঘাটা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয় রেজাউল কবির নামের কালমেঘা ইউনিয়নের এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু দলিল লেখকদের সঙ্গে যোগসাজশে অফিসের কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে থাকেন। দলিলের সরকারি সব খরচার বাইরেও অফিস খরচার নামে ৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে আমতলীতে কৃষিজমির পরিমাণ বেশি।’
ভূমিখাতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বরগুনার আমতলী উপজেলায়। আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ঘুষ দিয়ে জাল দলিল থেকে শুরু করে সব কাজ করানো সম্ভব। আর ঘুষ না দিয়ে কেউ কোনো কাজ করতেই পারবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, এখানে এসে কেউ ঘুষ না দিয়ে কাজ করাতে পেরেছে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে এমন কেউ নেই। একইরকম চিত্র জেলার বাকি তিনটি সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়েরও।’
এ ছাড়া জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের চিত্র ঠিক এমনই। শুধুমাত্র পার্থক্য ঘুষের অঙ্কের। সরকারি ফির ধার ধারার সময় নেই কারওই। দলিল রেকর্ড করতে আসলে মোক্তাররা আগেই চুক্তি করে অফিস খরচা বাবদ টাকা রেখে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত সিভিল মামলা পরিচালনা করে আসছেন এমন কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলিল করার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে সরকারি খরচার বাইরে মোক্তারদের মাধ্যমে অফিস খরচা বাবদ দুই থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। সম্প্রতি দলিল করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আইনজীবীর দাবির মিল রয়েছে।
জাকির হোসেন নামের বেতাগী উপজেলার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি একজন মোক্তারের মাধ্যমে দলিলের কাজ করিয়েছি। আমার তিনটি দলিলে অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক (ভূমি) পীযূষ কান্তির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূল থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলায় সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা যাতে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার না হয় সে জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ভূমি অফিসের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী বিরুদ্ধে ঘুষ বাবদ অর্থ নেওয়ার কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’
৯ লাখ টাকার জাল নোট নিয়ে আলু কিনতে রংপুরে যাওয়ার সময় নাটোরে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের নারায়ণপাড়া এলাকায় যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছে ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।
১০ মিনিট আগেরাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে একটি বহুতলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ভবনটির বেসমেন্টে লাগা আগুন আট ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণ আনে দমকল বাহিনীর সদস্যরা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবনটিতে একটি সমবায় ব্যাংক ও কয়েকটি লাইব্রেরি রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর লাইব্রেরির জিনস পত্র সরিয়ে নেয় ব্যবসায়ীরা।
১ ঘণ্টা আগেবাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইইউটি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম খান। দুর্ঘটনার পর আজ (শনিবার) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে এসে তিনি এ কথা বলেন।
১ ঘণ্টা আগেমাহিনের চাচা হাসান রহমান বলেন, ‘এখানে শতভাগ অবহেলা ছিল। একটা তার ঝুলে পড়বে গায়ের মধ্যে এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’ রংপুর বিভাগ, রংপুর জেলা, গাজীপুর, বাস, আগুন, জেলার খবর
১ ঘণ্টা আগে