সরকারি চাকরি করে বাবার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন আন্দোলনে নিহত রিয়াজ

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
Thumbnail image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মুলাদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজ মাহমুদ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থেকে ১৭ আগস্ট বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অবস্থায় মারা যান তিনি। রিয়াজ মাহমুদ বরিশালের হিজলা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাহমুদুল হক রাড়ীর ছেলে। তিনি মুলাদী সরকারি কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পরিবারের ওপর খরচের চাপ কমাতে পড়ালেখার পাশাপাশি ঢাকার একটি দোকানে বিক্রয়কর্মীর কাজও করতেন। 

স্থানীয়রা জানান, রিয়াজের বাবা মাহমুদুল হক রাড়ী ঢাকায় ফলের ব্যবসা করেন। রিয়াজের ইচ্ছে ছিল সরকারি চাকরি পেলে তিনি বাবাকে বিশ্রামে পাঠাবেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তাঁর। 

হিজলা উপজেলার বাসিন্দা ও আন্দোলনে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল গণি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই রিয়াজ সেখানে সক্রিয় অবস্থান ছিল। গত ৪ আগস্ট মিছিল নিয়ে ঢাকার পিলখানা এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তাঁকে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢামেকে নেওয়া হয়। 

রিয়াজের মা সাফিয়া বেগম বলেন, উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর মুলাদী সরকারি কলেজে ডিগ্রি পাস কোর্সে ভর্তি হয়। সংসারে আর্থিক অসচ্ছলতা থাকায় পড়ালেখার পাশাপাশি রিয়াজ ঢাকার নিউমার্কেটে একটি পোশাকের দোকানে চাকরি নেয়। পরীক্ষার সময় ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসত। সরকারি চাকরি করার অনেক ইচ্ছে ছিল রিয়াজের। সেনাবাহিনীতে নিয়োগের জন্য ২-৩ বার লাইনেও দাঁড়িয়েছিল। সরকারি চাকরি পেয়ে তার বাবাকে অবসর দেওয়ার কথা বলত। 

নিহতের বড়ভাই রেজাউল করিম জানান, ঢাকার হাজারীবাগ সেকশন এলাকায় খালার বাসায় থাকত রিয়াজ। আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। কয়েক দিন ধরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউতে) রাখা হয়। গত ১৭ আগস্ট বিকেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গত রোববার জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত