ছাত্রদল নেত্রীর বিরুদ্ধে ববিতে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৯: ৫৩
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২০: ১৩
জান্নাতুল নওরীন ঊর্মী। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল নওরীন ঊর্মির বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ক্যাম্পাসে অরাজকতার সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তবে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রদল নেত্রী।

এর আগে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত এমন একটি লিখিত অভিযোগ উপাচার্য বরাবর দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ছাত্রদল নেত্রী নওরীন ঊর্মি ক্যাম্পাসে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন। ওই সব ছাত্রলীগ কর্মী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাইকারী এবং সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতনকারী হিসেবে পরিচিত। রাজনীতি নিষিদ্ধ শান্ত ক্যাম্পাসে নওরীন ও তাঁর সহযোগীরা দলে ভারী হতে ছাত্রলীগকে সহায়তা করছেন।

আরও বলা হয়েছে, নওরীন ছাত্রদল কর্মী ইমরান মাহমুদের মাধ্যমে এদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান। এ ছাড়া তিনি সম্প্রতি ববি ক্যাম্পাসের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রী মিমের লাশ নিয়ে নাটক করতে গিয়ে হাসপাতালে সাধারণ ছাত্রদের তোপের মুখে পড়েন।

ছাত্রদল নেত্রী নওরীন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব না থাকা সত্ত্বেও তিনি ক্যাম্পাসে এসে অসংগতিপূর্ণ এবং আক্রমণাত্মক গ্রাফিতি একে ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। এ অবস্থায় নওরীন ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চাওয়া হয়েছে অভিযোগে।

জানতে চাইলে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্র ও ছাত্রদল কর্মী আব্দুর রহিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেত্রী নওরীন ক্যাম্পাসে এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ে শোডাউন দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানালে নওরীন ডেকে বলেছেন, টেনে কলিজা ছিঁড়ে ফেলবে।’ তিনি এই হুমকি থেকে পরিত্রাণ পেতে চান।

অন্যদিকে আজ ছাত্রদল নেত্রী জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রতারণামূলক বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে আমার ওপর হামলা চালায়। ওই সময় তিনি বিচার চেয়ে পাননি। তখন ববির ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কোনো ভূমিকা নেওয়া হয়নি।’

নওরীন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রপূর্বক উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে অনেকে জানিয়েছেন, যে তাঁদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতারণাপূর্বক স্বাক্ষর নিয়েছেন। আবার কারও স্বাক্ষর বিশ্বাসের সুযোগে নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগে ববির ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার হওয়ায় মিনহাজ সাগর তাঁর ফেসবুক আইডিতে আমাকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় লেখালেখি করেছে। এই মিনহাজই ভিসির কাছে অভিযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মিনহাজুল ইসলাম জানান, ভিসির কাছে ঊর্মির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তিনি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। ফেসবুকে ঊর্মিকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় কোনো মন্তব্যও করেননি।

তিনি অভিযোগ করেন, জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি গত ২৮ অক্টোবর ক্যাম্পাসে শোডাউন ও বৈঠক করছেন ছাত্রলীগ কর্মী ও বহিরাগতদের নিয়ে। ক্যাম্পাসে নিজের আধিপত্য বিস্তারে ছাত্রলীগের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের পুনর্বাসন করছেন নওরীন।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি রেজা শরীফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেত্রী নওরীন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে যে ১০ জনকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন, তাঁদের সাতজনই ছাত্রলীগের কর্মী। এটা নিয়ে ক্যাম্পাসে তোলপাড় চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। এসব ঘটনা ন্যক্কারজনক। আওয়ামী লীগের এই দোসরদের যারা সুযোগ করে দেয়, তাদের ছাড় দেবে না ছাত্রদল কর্মীরা।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত