পর্যটক টানতে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে কুয়াকাটার ‘ইলিশ পার্ক অ্যান্ড রিসোর্ট’

মীর মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২১, ১১: ০৬
Thumbnail image

করোনার কারণে দীর্ঘ ১৪৪ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও জমজমাট হতে শুরু করেছে ‘ইলিশ পার্ক অ্যান্ড রিসোর্ট’। সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করতে নতুন রূপে সেজেছে ইলিশ পার্কটি। পর্যটকদের আগমন বাড়লে করোনার ক্ষতিও দ্রুত কাটিয়ে উঠা যাবে বলে আশা উদ্যোক্তাদের।

জানা যায়, সাগরকন্যাখ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুই বিঘা জমিতে ‘ইলিশ পার্ক অ্যান্ড রিসোর্ট’ তৈরি করেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী রুমান ইমতিয়াজ তূষার। তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর জেলেরা ইলিশ শিকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই অঞ্চলে ইলিশ আছে, মানুষ ভালো আছে; ইলিশ নেই, মানুষ ভালো নেই। ইলিশের সঙ্গে আমাদের উপকূলের সরাসরি যে সম্পর্ক রয়েছে তা বিশ্বের কাছে পরিচিত করার জন্য আমি এই ইলিশ পার্ক তৈরি করার উদ্যোগ নেই।’

ইলিশ পার্কে রয়েছে মনোরম থাকার ব্যবস্থা। থাকার খরচে দেওয়া হচ্ছে ৫০ শতাংশ ছাড়ইলিশ পার্কে রয়েছে ছবির ঘর। এ অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাম্পান কটেজ, উপকূলের নিদর্শন, আদিবাসী রাখাইনের গ্যালারি। পুরো কটেজ ঘিরে বৃত্তাকারে লেক। লেকে ছাড়া হয়েছে চার প্রজাতির কাছিমসহ অনেক বিশেষ মাছ। রয়েছে কিছু পশুর ভাস্কর্যও। এছাড়াও রয়েছে উডেন কটেজ, শিশুদের বিনোদন পার্ক। পার্কে ছন, বাঁশ ও কাঠের তৈরি ঘর এবং অনেক দৃষ্টিনন্দন আসবাবপত্র।

মাটির পাত্রে খাবার সরবরাহএ পার্কে আগত অতিথিদের খাবার পরিবেশন করা হয় মাটির থালায়, চা-কফি পরিবেশন করা হয় নারকিলের বাটির তৈরি বিশেষ কাপে। প্রকৃতিপ্রেমীরা পান প্রকৃতির নিবিড় ছোঁয়া। পার্কের মূল আকর্ষণ ৭২ ফিট দীর্ঘ ও ১৮ ফিট প্রস্থের ইলিশ রেস্টুরেন্ট। পুরো পার্কে ৫০ জনের বেশি মানুষের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

এখানে আহত শেয়াল, খাটাস, বনবিড়ালের চিকিৎসা শেষে বনে অবমুক্ত করা হয়পার্কটির একটি বিশেষ উদ্যোগ হচ্ছে পশু হাসপাতাল। এখানে শেয়াল, খাটাস, বনবিড়ালসহ আহত পশুর চিকিৎসা শেষে আবার বনে অবমুক্ত করা হয়।

সোমবার (২৩ আগষ্ট) ইলিশ পার্কে আগত পর্যটক মো. রায়হান আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনা মহামারীর কারনে এতদিন বন্দি জীবন কাটিয়ে এসেছি। সরকার পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়ায় আমরা সবাই মিলে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা ভ্রমণে এসেছি। কুয়াকাটায় এসে বেশ কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন স্পর্ট ঘুরেছি। এরমধ্যে ইলিশ পার্কটি দৃষ্টিনন্দন লেগেছে।’

সামনে রয়েছে খোলা মাঠতিনি বলেন, ‘ইলিশ পার্কে আসার পরে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পেরেছি যা পুরোপুরি অজানা ছিল আমার। দৃষ্টিনন্দন এ পার্কটিতে স্কুলপড়ুয়া সহ নানা বয়সী মানুষ আসলে উপকূল সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারবে।’

ইলিশ পার্কের ম্যানেজার মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই পার্কের প্রবেশ ফি ২০ টাকা। আমরা পর্যটকদের যথাযথ সেবা দিয়ে থাকি। ভেতরে আমাদের ইলিশের একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। যেখানে সামুদ্রিক তাজা মাছ সহ ইলিশের বাহারি খাবার আছে। এখানে পানি ছাড়া কোনো খাদ্যদ্রব্যই ফ্রিজিং করা হয় না।’ 

দৃষ্টিনন্দন ছন, বাঁশ ও কাঠের তৈরি ঘরনান্দনিক এ পার্কের উদ্যোক্তা রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘গত ১৯ তারিখ থেকে সরকার পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার পরে আমরা ইলিশ পার্ক আবার চালু করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা ভালোই সাড়া পাচ্ছি। সামনে মৌসুম আছে আরও ভালো সাড়া পাবো। সব থেকে বড় বিষয় হচ্ছে করোনাকালে পর্যটকদের সর্বোচ্চ ছাড় দিচ্ছি (৫০ শতাংশ), এতে পর্যটকেরাও খুশি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত