বরগুনায় নাদিরার মনোনয়নে আ.লীগে স্বস্তি

বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ২৪
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ২১: ১২

বরগুনার-২ আসনে শওকত হাচানুর রহমান রিমনকে বাদ দিয়ে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরাকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তারা বলছেন, কুখ্যাত রাজাকারের ছেলে রিমনকে মনোনয়ন না দেওয়ায় দল কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। তাকে নিয়ে বিব্রত ছিল আওয়ামী লীগ, এখন স্বস্তি ফিরেছে। 

সুলতানা নাদিরা প্রয়াত সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলুর সহধর্মিণী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমুর আপন খালাতো বোন। তিনি মধুমতি টাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান। 

স্থানীয়রা জানান, গত পাঁচ বছর ধরে এলাকার মানুষের বিপদে-আপদে পাশে ছিলেন সুলতানা নাদিরা। ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গোলাম সবুর টুলু ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এলাকায় হাজার হাজার মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, আত্মকর্মসংস্থানসহ অনেক সহায়তা করেছেন। বিশেষ করে করোনাকালীন দুর্যোগের সময়ে এলাকার মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সুলতানা নাদিরা। এ ছাড়া মসজিদ–মক্তব্যসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছেন। 

কাকচিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন পল্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিমনের বাবা রাজাকার খলিলুর রহমান আমাদের এলাকার কনক সরোয়ারকে হত্যা করেছিল। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, কনক সরোয়ারের নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে যেটি উদ্বোধন করেছেন সেই হত্যাকারীর ছেলে সংসদ সদস্য হাচানুর রহমান রিমন। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছুই হতে পারে না। কিন্তু আমাদের সেটিও নীরবে মেনে নিতে হয়েছে। সুলতানা নাদিরাকে মনোনয়ন দেওয়ার পর আমরা এখন কলঙ্কমুক্ত হয়েছি।’ 

রায়হানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মো. মইনুল ইসলাম বলেন, ‘এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর রিমন কার্যত বরগুনা–২ আসনের প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগেও বিভক্তি সৃষ্টি করেছিল। সুলতানা নাদিরার নেতৃত্বে আমরা আওয়ামী লীগ এখন সুসংগঠিত। মনোনয়ন পাওয়ার পর আমরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছি।’ 

বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রিমন নির্বাচিত হওয়ার পর দলের মধ্যে একটা বিভক্তি সৃষ্টি করেছিলেন। জামায়াত–বিএনপি পন্থীদের নিয়ে তিনি একটি নিজস্ব বলয় তৈরি করেছিলেন। একজন রাজাকারের ছেলের হাতে আওয়ামী লীগের নৌকা, আমরা এখন সেই কলঙ্ক থেকে মুক্ত হয়েছি। 

পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। সেই দলেরই মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন এই অঞ্চলের কুখ্যাত রাজাকার কমান্ডার খলিলুর রহমানের ছেলে শওকত হাচানুর রহমান রিমন। এ নিয়ে আমরা রীতিমতো বিব্রত ছিলাম। আমরা এখন কলঙ্ক মুক্ত। এই অঞ্চলে আওয়ামী লীগ মানেই টুলু পরিবার। রাজাকার পুত্র রিমনের রাহুগ্রাস থেকে আমরা মুক্ত হয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছি। এখন সুসংগঠিত হয়ে বিজয়ের লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।’ 

সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার প্রয়াত স্বামী গোলাম সবুর টুলুর হাত ধরেই এ আসনে প্রথম আওয়ামী লীগ জয় লাভ করেছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়ে যে সম্মানিত করেছেন, আমি এলাকার মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা দিয়ে তাদের সহযোগিতায় এই আসনটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চাই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত