পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, অপারেশনের টেবিলেই স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ মে ২০২৪, ১৯: ৪৮
Thumbnail image

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ওই ছাত্রীকে অপারেশনের জন্য কক্ষে নেওয়া হলেও অপারেশন শুরুর আগেই টেবিলে তার মৃত্যু হয়। তবে স্বজনদের অভিযোগ, ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে ওই স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। 

গত শনিবার রাতে উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সাতলা গ্রামের মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। 

ওই স্কুলছাত্রীর নাম সুমাইয়া আক্তার। সে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের মৃত হেলাল মীরের মেয়ে ও সাতলা খাজুরিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। 

রোগীর স্বজনরা জানান, গত শনিবার বিকেলে সুমাইয়া আক্তারের পেটব্যথা নিয়ে পার্শ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সাতলা গ্রামের মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় স্বজনেরা। সেখানে নেওয়ার পর ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক সাধন বসু অতিদ্রুত সুমাইয়াকে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করার জন্য বলেন এবং কোনো প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রাত সাড়ে আটটার দিকে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। রাত সোয়া ৯টার দিকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে রোগীর অবস্থা ভালো না বলে দ্রুত ওই ক্লিনিক ত্যাগ করেন ওই চিকিৎসক। 

এরপর ওই ক্লিনিকের পরিচালক মো. রেজাউল করিম জানান, রোগীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তখন দ্রুত রোগীকে অন্যত্র নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স আনেন রেজাউল। এ সময় সুমাইয়ার স্বজনদের সন্দেহ হলে তারা সুমাইয়াকে দেখতে চান এবং সুমাইয়ার ভাবি জোর করে ভেতরে গিয়ে দেখতে পান সুমাইয়া মারা গেছে। এ সময় তিনি ডাকচিৎকার দিলে অন্য স্বজনেরা এসে সুমাইয়াকে মৃত দেখতে পান। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এসে ওই ক্লিনিক থেকে সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করে উজিরপুর মডেল থানায় নিয়ে যায়। 

সুমাইয়া আক্তারের বড় ভাই রবিউল মীর আজকের পত্রিকাকে মোবাইল ফোনে বলেন, সুমাইয়ার ভুল অস্ত্রোপচার করার পর তার মৃত্যু হয়েছে। তার পেটে অস্ত্রোপচারের দাগ আছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। গতকাল রোববার বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তার বোনের লাশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। 

সুমাইয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেণুপদ বাবু জানান, এর আগেও ওই ক্লিনিকে একাধিক রোগী মৃত্যু হয়েছে। সুমাইয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ওই ক্লিনিকের অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। 

মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘সুমাইয়াকে অপারেশন করা হয়নি। সে অপারেশনের ভয়ে বা ডিপ্রেশনে হার্টে সমস্যা হয়ে মারা যান।’ 

উজিরপুর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর আহমেদ জানান, স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত