Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: বেড়িবাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে পাথরঘাটার কয়েক লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: বেড়িবাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে পাথরঘাটার কয়েক লাখ মানুষ

পাথরঘাটা (বরগুনা): ধেয়ে আসছে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আগামী বুধবার ভোরের দিকে এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ পরিস্থিতিতে দুর্বল বেড়িবাঁধের কারণে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন পাথরঘাটায় উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার কাঁঠালতলি, কাকচিড়া, কালমেঘা, চরলাঠিমারা, জিনতলা, পদ্মা এলাকায় মানুষজন বেড়িবাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী কাওসার আহমেদ জানান, বরগুনা জেলার পাঁচটি উপজেলার ৯০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অতি ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে কাঁঠালতলি, জিনতলা, চরলাঠিমারা ও পদ্মা গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে।

কাওসার আহমেদ আরও জানান, বিগত কয়েক বছরে সিডর, আইলা, মহাসেন, আম্পানের আঘাতে বারবার ভেঙে গেছে ওই স্থানগুলো। তবে সংস্কার ও পুনঃসংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাজেটের অপ্রতুলতা ও আর্থসামাজিক বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, পাথরঘাটা উপজেলার চরলাঠিমারা বেড়িবাঁধের বিপরীতে প্রায় ৫০০ পরিবার ২৮ বছর ধরে বসবাস করেন। সবাই জেলে। তাঁদের জন্য হরিণঘাটা জঙ্গলের পাশ দিয়ে সরকারিভাবে রিংবাঁধ নির্মাণ করা হয়। গত বর্ষায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং সাগরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘদিনের পুরোনো বাঁধটি ভেঙে ওই এলাকা প্লাবিত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তা আর সংস্কার করা হয়নি। পাথরঘাটার বিষখালী ও বলেশ্বর নদীর তীরে বসবাসরত বাসিন্দারা বেড়িবাঁধের স্থায়ী সমাধান করতে কংক্রিটের ব্লক দেওয়ার দাবি জানান।

উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রিপন সাহা বলেন, বরগুনা জেলার ৯০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের যে ২২টি পোল্ডার বরগুনায় রয়েছে। যার যেকোনো একটি পোল্ডারের এক কিলোমিটারের এক হাজার ভাগের এক ভাগও যদি ভেঙে যায় বা লিকেজ হয় কিংবা অন্য কোনো কারণে খোলা থাকলে ওই পোল্ডারের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে। উপকূলবর্তী নদীগুলো অনেক বড় এবং খরস্রোতা হওয়ায় জোয়ার, নিম্নচাপ এবং পানি প্রবাহের তীব্র স্রোতে এই বেড়িবাঁধগুলো অন্যান্য জেলার চেয়ে তুলনামূলক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের মেরামত ও নতুন নির্মাণের জন্য বাজেট অপ্রতুলতা ও আর্থসামাজিক বিভিন্ন সমস্যার মাঝেই আমাদের কাজ করতে হয়। এর মধ্যেই বাঁধগুলো ঝুঁকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করি।

রিপন সাহা আরও বলেন, জেলা পাউবোর আওতাধীন পাথরঘাটার পদ্মা-জিনতলা নদীভাঙন প্রতিরোধের স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়নে জন্য একটি ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জিও ব্যাগ দিয়ে অস্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।

পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান জানান, এরই পূর্বে সদর ইউনিয়নের চরলাঠিমারা, জিনতলা, পদ্মা এলাকার নদী ভাঙনের ফলে ওই এলাকায় মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে পাউবোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

পাথরঘাটার ইউএনও সাবরিনা সুলতানা জানান, উপকূলীয় পাথরঘাটায় বেশ কিছু বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে যদি কোন বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য জিওব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে সার্বক্ষণিক নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত