Ajker Patrika

কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে হোটেলবন্দী প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে হোটেলবন্দী প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক

সাপ্তাহিক ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে এসে প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক হোটেলবন্দী হয়ে পড়েছেন। গত দুদিনে টানা ভারী বর্ষণে শহরের হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলীর অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে পর্যটকেরা ঘুরতে বের হতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই খাবার-দাবার নিয়েও দুর্ভোগে পড়েছেন। 

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর গত সপ্তাহ থেকে পর্যটক আসা শুরু হয়েছিল। আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার দুদিন সাপ্তাহিক ছুটিতে অর্ধ লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজার আসার কথা ছিল। 

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ও আজ শুক্রবার সকালে অন্তত ৩০ হাজার পর্যটক কক্সবাজার পৌঁছেছেন। কিন্তু টানা প্রবল বর্ষণে পর্যটন জোনের রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় কলাতলী এলাকার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজের কক্ষে বন্দী হয়ে পড়েছেন। 

বৈরী আবহাওয়ায় সমুদ্র উত্তাল থাকায় জেলা প্রশাসন সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল নিশানা উড়িয়ে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে সতর্কতা জারি করছে। 

জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী বেলাল হোসেন বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ কারণে ঝুঁকির কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সমুদ্র নামতে সতর্ক করা হচ্ছে। 

হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিকরা বলছেন, দুই বছর ধরে বৃষ্টি নামলেই কলাতলী পর্যটন জোনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বেড়াতে এসে পর্যটকেরা দুর্ভোগে পড়ছেন। 

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে ওঠা পর্যটন জোনে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, নালা-নর্দমা পরিষ্কার না হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া নির্বিচারে পাহাড় কাটার কারণে পাহাড় ধুয়ে মাটি ও বালু এসে নালা ভরে যাওয়ার কারণেও এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। 

কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার গোলাম রব্বানী বলেন, কক্সবাজারে অতিবৃষ্টি হলেও রেলপথে এখনো কোনো সমস্যা হয়নি। সব ধরনের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। 

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মর্তুজা বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে বিমান ওঠা-নামায় একটু দেরি হলেও চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়নি। 

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া টানা ভারী বর্ষণ ও ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত আছে। এতে শহরের প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ উপসড়ক ডুবে রয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচলও বিঘ্ন ঘটছে। 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে আজ শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা ২০১৫ সালের পর একদিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। 

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ভারী বৃষ্টিতে শহরের অনেক এলাকার বাসিন্দা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পর্যটকরাও বিপাকে পড়েছেন। জেলার সদর, টেকনাফ, উখিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া ও রামু উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। 

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, পাহাড় ধসের আশঙ্কায় মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

আরও পড়ুন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত