চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে একটি বিদ্যালয়ে দুই শিক্ষককের মধ্যে কথা–কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে মাঠে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।

এর আগে, গত মঙ্গল ও গতকাল বুধবার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনা তদন্তে কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক স্কুল শিক্ষার্থীর প্রগ্রেসিভ রিপোর্ট দেখাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনছুর আহমেদ অপর সহকারী শিক্ষক ছানাউল্ল্যা মিয়াকে পাগল বলেন। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে ছানাউল্ল্যা মিয়া মুনছুর আহমেদকে ঘুষি মারেন।

এই ঘটনার বিচার চেয়ে মুনছুর আহমেদ প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিক অভিযোগ দেন। তবে তিনি বিচারের অপেক্ষা না করে গতকাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) মুনছুর আহমেদ ছানাউল্ল্যাকে স্কুল আঙিনাতেই লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন। বিষয়টি নিয়ে স্কুলে এবং স্থানীয় বাজারে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক কবির হোসেনসহ অন্যরা এসে শিক্ষার্থীদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে ক্লাসে ফিরিয়ে নেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আমান উল্ল্যা বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে। কেউ কারও কথা শুনছে না। যার বহিঃপ্রকাশ স্কুলের আঙিনাতেই দুই শিক্ষকের মধ্যকার মারামারি।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক কবির হোসেন জানান, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। আমি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিন আবারও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলে, তাদেরকে বুঝিয়ে ক্লাসে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।’

স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী আজকের পত্রিকাকে জানান, দুই শিক্ষকের মধ্যকার অপ্রীতিকর ঘটনার ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক ও টিআর সোলায়মান পাটওয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী শনিবার (১৩ জানুয়ারি) তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনসহ গণমান্যদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

ঘটনার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এসব শিক্ষকদের কাছ থেকে কী শিক্ষা গ্রহণ করবে? যারা নিজেদের রাগ ক্ষোভকেই দমন করতে পারছে না। অনিয়ম এবং দুর্নীতির কারণেই স্কুলের এই বেহাল দশা।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ বিষয়ে অবহিত নন জানিয়ে বলেন, ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।