কক্সবাজারের চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক যুবকের পা ও আরেকজনের হাতের কবজি কেটে নেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। একজন গুলিবিদ্ধ হন। আজ শনিবার ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় পা কেটে নেওয়া ওই যুবকের। 

এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের টুটিয়াখালীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত যুবকের নাম ফজলে হাসান রিয়াদ (৩০)। তিনি বদরখালী ইউনিয়নের মগ নামাপাড়ার ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। 

কবজি হারিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ ছোটন (৩২)। তিনি টুটিয়াখালীপাড়া এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে। 

গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম জিদান আল নাহিয়ান (২০)। তিনি মাতারবাড়িপাড়ার বারেক আহমদের ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছে, গতকাল (শুক্রবার) রাতে বদরখালী জেটিঘাট বাজার থেকে জিদানের মোটরসাইকেলে নিজদের বাড়িতে ফিরছিলেন রিয়াদ ও ছোটন। তাঁরা টুটিয়াখালীপাড়ার মসজিদ এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের লক্ষ্য গুলি ছোড়ে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় জিদানের পায়ে গুলি লাগলে সবাই মোটরসাইকেলসহ মাটিতে পড়ে যান। এ সময় দা-কিরিচ নিয়ে রিয়াদ ও ছোটনের ওপর হামলা চালিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করা হয়। একপর্যায়ে রিয়াদের পা ও ছোটনের হাতের কবজি কেটে ফেলে প্রতিপক্ষের লোকজন। 

এ সময় তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে কেটে ফেলা হাত-পা মোটরসাইকেলের পাশে রেখে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে স্বজন ও স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পাঠান চিকিৎসক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ (শনিবার) ভোরে রিয়াদের মৃত্যু হয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন স্থানীয় জানিয়েছেন, বদরখালী বাজারে কয়েকটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তারা জেটিঘাটকেন্দ্রিক চাঁদাবাজি, চুরি, জমি দখলসহ নানা অপরাধে জড়িত। রিয়াদ ও ছোটন একটি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। নজরুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি অন্য একটি বাহিনীর নিয়ন্ত্রক। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। জমির বিরোধ নিয়ে সালিসে প্রকাশ্যে টুটিয়াখালীপাড়ার জয়নাল আবেদীন নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। ছোটন সেই মামলার প্রধান আসামি। সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে এলাকায় ফিরেছেন তিনি। 

এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত দুটি পক্ষ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। রিয়াদের শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত ছোটনের হাতের বিচ্ছিন্ন কবজি জোড়া লাগানোর জন্য চিকিৎসা চলছে।’ 

এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।