বন্দরে ভারতীয় নিম্নমানের চাল খালাস বন্ধ

মো. আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২১, ১৯: ০৯
Thumbnail image

ভারত থেকে সরকারের নগদ টাকায় কেনা এক জাহাজ সিদ্ধ চালের মধ্যে বেশ কিছু খাওয়ার অনুপযোগী বলে চিহ্নিত হয়েছে। এসব চালের মধ্যে কিছু অংশ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর পর তা নিতে অস্বীকৃতি জানান স্থানীয় খাদ্যগুদামের কর্মকর্তারা। ফলে চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি জেলায় চালবাহী ট্রাকগুলো আটকা পড়ে। এ নিয়ে পরিবহন ঠিকাদার ও খাদ্য কর্মকর্তারা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ালে প্রকাশ হয়ে পড়ে নিম্নমানের চাল আমদানির বিষয়টি। এরপর গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের ওই জাহাজ থেকে চাল খালাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, সরকারি জিটুজি ক্রয় প্রক্রিয়ায় এমডি ড্রাগন নামের জাহাজটিতে করে আমদানি হয়েছে ১৯ হাজার ২০০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল। এর মধ্যে দুই দিনে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন চাল খালাস করে পাঠানো হয়েছে চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলার খাদ্যগুদামে। খালাস বন্ধের সময়ও জাহাজটিতে ১৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি চাল ছিল।

নিয়ম অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজ পৌঁছার পর খাদ্য বিভাগের উদ্যোগে নমুনা সংগ্রহের করে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখার কথা। পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক হওয়ার পর তা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে দাখিল করলে শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় যেতে হয়। শুল্কায়ন শেষে চাল খালাস হওয়ার কথা। তার আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংগ নিরোধ বিভাগের পরিদর্শন এবং ছাড়পত্র নেওয়ারও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এমভি ড্রাগনের নিম্নমানের জাহাজের চাল খালাসের ক্ষেত্রে এসব বিধিবিধান ঠিকভাবে মানা হয়নি বলে অভিযোগ আছে।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) মো. জহিরুল ইসলাম নিম্নমানের চাল আমদানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি জানান, সরবরাহকারীর ভুলে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। এ কারণে জাহাজের চাল খালাস বন্ধ রেখে নতুন করে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

কীভাবে খাওয়ার অনুপযোগী চাল জাহাজ থেকে খালাস হলো–এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রামে খাদ্য বিভাগের ল্যাব কেমিস্ট, সহকারী রসায়নবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নমুনা নিয়েছি জাহাজের উপরিভাগ থেকে। নিচে খারাপ চাল থাকলে আমরা জানব কী করে?’ 

বস্তায় ভরা খাওয়ার অনুপযোগী ভারতীয় চালখাদ্য বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন ঠিকাদার সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল হাই বলেন, ‘সূচি অনুযায়ী আমরা ট্রাকে করে সরকারি চাল বিভিন্ন খাদ্যগুদামে পাঠাই। কিন্তু গুদাম কর্মকর্তারা খারাপ এই চাল গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়।’

জানতে চাইলে খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি শুনেছি, কিছু চাল খারাপ আমদানির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। লোকজনকে বাছাই করতে বলেছি, বাছাই শেষে যেগুলো গ্রহণযোগ্য হবে তা আমরা রাখব, খারাপগুলো ফেরত পাঠাব।’

আমাদের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রাম থেকে এ পর্যন্ত ছয় ট্রাক চাল পাঠানো হয়, যেগুলো খালাসের অপেক্ষায় আছে জেলা খাদ্যগুদামে সামনে। লক্ষ্মীপুর সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাইমুল করিম টিটু জানান, একটি ট্রাকের মোট ৩০০ বস্তা খুলে খাওয়ার অনুপযোগী (একেবারে খারাপ) চাল পাওয়া গেছে ৩০ বস্তা। বাকি সব চাল লালচে ধরনের এবং বেশি পুরোনো। লক্ষ্মীপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঙখ্যই নিম্নমানের চাল পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘ভালো-খারাপ চাল আলাদা করার জন্য আমরা তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছি। তিন দিনের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত