Ajker Patrika

আলেকজান্ডার-দৌলতখাঁ নৌ-রুটে নাব্যসংকট, ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পারাপার

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ মে ২০২৩, ১৪: ১৫
আলেকজান্ডার-দৌলতখাঁ নৌ-রুটে নাব্যসংকট, ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পারাপার

লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার-দৌলতখাঁ নৌ-রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বড় জাহাজের নাব্যসংকট, কারিগরি ত্রুটি ও কৌশলগত কারণে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে এই রুটে চলাচলকারী শতাধিক যাত্রী। এদিকে ওই ঘাটের মালিক ও জাহাজ ইজারাদারের যোগসাজশে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে ডিঙি নৌকা, জেলেদের নৌকা, মাছ ধরার ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পরিবহনের অভিযোগ উঠেছে। 

নৌসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিআইডব্লিউটিএ বৈরী আবহাওয়া ও সাগর উত্তাল থাকায় মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে শুধু নির্দিষ্ট ধরনের নৌযান চলাচলের অনুমোদন দেয়। রামগতি-দৌলতখাঁ নৌ-রুটের ঘাট মালিক শোয়েব খন্দকার ও বে-ক্রুজ জাহাজের ইজারাদার ফয়সল মিলে সেটি বন্ধ করে দেন। এদিকে ছোট ডিঙি, জেলে নৌকা, মাছ ধরার ট্রলারে ৪০০-৫০০ টাকা হারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে যাত্রী পরিবহন করছে একটি অসাধু চক্র। এ নিয়ে যাত্রীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে ও উচ্চ নৌ দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে। 

সাগর মোহনা ও সাগরসংলগ্ন মেঘনা নদীকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ নৌঘাট হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এই জোনের আওতা লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরী ঘাট থেকে আলেকজান্ডার ঘাট পর্যন্ত। উপকূলের এই নৌ-রুটে সসাত মাসের জন্য এমএল টাইপের লঞ্চ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নৌ মন্ত্রণালয়। বৈধ কোনো নৌযান না থাকায় বাধ্য হয়ে শিশু, বৃদ্ধ, নারীরা বৈরী আবহাওয়া ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অবৈধ নৌযানে চলাচল করছে। 

সাধারণ যাত্রীরা বলছে, জরুরি প্রয়োজনে এবং সময়মতো নৌযান না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন তাঁরা। দুর্যোগের মৌসুমে যেকোনো মুহূর্তে বইতে পারে কালবৈশাখী। তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা চলতে বাধ্য হচ্ছে। বৈধ লঞ্চ না দিলে যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। 

লঞ্চযাত্রী মো. সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈধ নৌযানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ঝুঁকি নিয়ে আর নৌকায় করে যাইনি। পরে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাট ঘাট দিয়ে ভোলায় যাই। এতে করে আমার সময় ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে।’

আরেক যাত্রী এনজিও কর্মী কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সময়ের প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ নৌযান দিয়ে মাঝেমধ্যে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করি। এই রুটে বৈধ নৌযান খুবই জরুরি।’ 

এ বিষয়ে ঘাট ইজারাদার এম শোয়াইব হোসেন খন্দকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নাব্যসংকট, কারিগরি ত্রুটি ও কৌশলগত কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ নৌযানে যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে আমার জানা নেই।’ 

যাত্রীবাহী জাহাজ বে-ক্রুজের মাস্টার পাইলট নুরুল আলম বলেন, ‘আমাদের নৌযানটি কয়েক দিন ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণে বন্ধ আছে, ঠিক করতে বেশ কিছুদিন লাগতে পারে।’ 

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ পোর্ট অফিসার শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতাম না, এখন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ 

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তনু চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নদী উত্তাল থাকায় সেখানে ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে, বড় লঞ্চ বা সমুদ্র উপযোগী নৌযান দেওয়া হয়েছে। সেখানে ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেব।’ 

উল্লেখ্য, ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ছয় মাস সাগর উত্তাল থাকায় এ সময় মেঘনা নদীর মোহনার নৌঘাটসমূহে চলাচলকারী নৌযান সমূহকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষ থেকে এই সময়কালকে উচ্চ নৌঝুঁকিপূর্ণ সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বৈরী আবহাওয়া ও দুর্যোগের সময় থাকায় সাগর উত্তাল থাকে। এ সময় যাত্রী পারাপারে সিট্রাক ও সি সার্ভে সনদধারী নৌযান চলাচলের অনুমোদন করা হয়। এসব সীট্রাক ও নৌযান ছাড়া অন্য কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। একই সঙ্গে ছোট ডিঙি, জেলে নৌকা, মাছ ধরার ট্রলারে যাত্রী পরিবহন সব সময়ই নিষিদ্ধ থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত