কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ওই ব্যবসায়ীর নববধূকেও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। পরে গৃহবধূ বাদী হয়ে থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের নানকরা আনন্দপুর গ্রামে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা। তিনি জানান, ব্যবসায়ী জাহিদ হাসানের নববধূ খাদিজা আক্তার কুলসুম লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

লিখিত অভিযোগে খাদিজা আক্তার কুলসুম উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী জাহিদ হাসান ব্যবসায়িক কাজে ভারতে অবস্থান করছেন। একই এলাকার মনির হোসেন, মহসিন রেজা, ইয়াছিন আরাফাত, রায়হান, জাহাঙ্গীর ড্রাইভার ও মো. হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর স্বামীর গত তিন থেকে চার মাস আগে থেকে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিবাদীরা প্রায় সময় তাঁর স্বামীকে হত্যাসহ নানান ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এরই জের ধরে বুধবার রাত ৯টার দিকে উল্লেখিত বিবাদীসহ অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জন ধারালো অস্ত্রসহ লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হামলা করে বিল্ডিং এবং সেমিপাকা ঘরে ভাঙচুর চালায়। এ সময় ঘরের ভেতরে থাকা আলমারি ভেঙে চার ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করে। এ সময় তাঁরা বাধা প্রদান করলে দুর্বৃত্তরা জাহিদের মা মনোয়ারা বেগমকে মারধর করে। এ সময় খাদিজা তাঁর শাশুড়িকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাঁকেও মারধর করে কাপড় ছিঁড়ে শ্লীলতাহানি করে। পরে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯-এ ফোন করলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে বিবাদীরা পালিয়ে যায়। 

জাহিদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বিবাদীদের সঙ্গে আমার ছেলের বিরোধ চলে আসছিল। তারা প্রায় সময় হুমকি দিয়ে বলত, জাহিদকে প্রাণে হত্যা করবে। রাতের আঁধারে আমাদের বাড়িঘরে ঢিল মারত। বুধবার রাতে তারা অতর্কিতভাবে হামলা করে আমার নতুন বিল্ডিং ঘরের দরজা-জানালা, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং টিনশেডের ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এ ছাড়া তাঁরা জাহিদের নববধূকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করে।’

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভরঞ্জন চাকমা বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। রাতেই গৃহবধূ বাদী হয়ে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’