চবিতে শিক্ষক নিয়োগ, ‘অনিয়ম’ নিয়ে কথা বলে বিপাকে বিভাগ সভাপতি 

চবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৩, ২২: ১৪
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১৫: ০৬

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পালি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের গোপনীয়তা ফাঁসের অভিযোগ এনে বিভাগের সভাপতি শাসননান্দ বড়ুয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে বিভাগের সভাপতির দাবি, তাঁকে হয়রানির উদ্দেশ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ফারুককে আহ্বায়ক ও সহকারী প্রক্টর হাসান মুহাম্মদ রোমান শুভকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এ ছাড়া ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীনকে সদস্য করা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ। 

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত। সভাপতি নাকি সিলেকশন বোর্ডের গোপনীয়তা ফাঁস করেছেন। তিনি নাকি সিলেকশন বোর্ডে অসদাচরণ করেছেন। সিন্ডিকেট উপাচার্যকে তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য ক্ষমতা দিয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পালি বিভাগে দুটি প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য গত ১৩ মার্চ নির্বাচনী বোর্ডের সভা বসে। উপাচার্যের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগের সভাপতি শাসননান্দ বড়ুয়া পদাধিকার বলে সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

সিলেকশন বোর্ড বিভাগের পরিকল্পনা কমিটিতে দুটি তথ্য জালিয়াতির অভিযোগে দুই-দুইবার বাদ দেওয়া প্রার্থী অভি বড়ুয়াকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে। এ সময় বিভাগের সভাপতি এতে আপত্তি জানান। পরবর্তী সময়ে তিনি এই বিষয়ে দ্বিমত জানিয়ে বোর্ড সভাপতি ও উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতারকে চিঠি দেন। 

সহকারী প্রক্টর অরুপ বড়ুয়ার স্ত্রী অভি বড়ুয়া আবেদনপত্রে তিনি এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম বলে উল্লেখ করেন। পরবর্তী সময়ে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর দেখেন তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হননি। তাই পরিকল্পনা কমিটি তথ্য গোপন ও ভুল তথ্য প্রদানকে ‘জালিয়াতি’ উল্লেখ করে আবেদনপত্রটি বাতিল করে। 

এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে প্রভাষক পদে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র প্রদান করে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড তাঁকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য এক নম্বরে সুপারিশও করে। যদিও সিন্ডিকেটের ৫৪৪তম সভায় নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশ বাতিল করা হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পালি বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি যে কারণে ওই প্রার্থীর (অভি বড়ুয়া) আবেদন বাতিল করেছে, বিভাগের সভাপতি একই কারণ নিয়ে সিলেকশন বোর্ডে দ্বিমত পোষণ করেছেন। যার ফলে সিন্ডিকেট সিলেকশন বোর্ডের সুপারিশ বাতিল করেছে। এর দ্বারা বোঝা যায়, সভাপতি সঠিক অবস্থানে ছিলেন। এ জন্য সভাপতিকে পুরস্কৃত করা উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসন উল্টো তাঁকে হয়রানি করছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের সভাপতি শাসননান্দ বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন। মূলত আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত