Ajker Patrika

১৮ জুলাই বহদ্দারহাটে ২৮টি গুলি ছোড়েন যুবলীগের ফরিদ: পুলিশ

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮: ০৯
অস্ত্র হাতে যুবলীগ কর্মী তৌহিদুল। গত ১৮ জুলাই নগরে বহদ্দারহাট এলাকায়। ফাইল ছবি
অস্ত্র হাতে যুবলীগ কর্মী তৌহিদুল। গত ১৮ জুলাই নগরে বহদ্দারহাট এলাকায়। ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে একটি শাটারগান দিয়ে একাই ২৮টি গুলি করেছিলেন যুবলীগ কর্মী তৌহিদুল ইসলাম ওরফে ফরিদ (৩২)। গতকাল শুক্রবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামালনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা-পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরের দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় নগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) মো. রইছ উদ্দিন।

গ্রেপ্তার ফরিদ চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানাধীন শমসেরপাড়া এলাকার সেকান্দারের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, তৌহিদুল ইসলাম ফরিদ একজন পেশাদার সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি হত্যা মামলা রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহতের ঘটনায় এসব হত্যা মামলায় তাঁকেও আসামি করা হয়।

তিনি বলেন, নগরের চান্দগাঁও এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের অভিযোগ ছিল। এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গুলিবর্ষণের একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়ে। গত ৫ আগস্টের পর ফরিদ আত্মগোপনে চলে যায়।

ঘটনার পর পুলিশ ফরিদকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে একটি টিম গঠন করে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম তাঁকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারের আগে ফরিদ একাধিকবার দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল।

গ্রেপ্তার তৌহিদুল ইসলাম ফরিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার তৌহিদুল ইসলাম ফরিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রইছ উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফরিদ জানিয়েছে, তাঁর ব্যবহৃত অস্ত্রটি পাকিস্তানের তৈরি শাটারগান ছিল। তিনি একাই ঘটনার দিন চান্দগাঁও এলাকায় সেই অস্ত্র দিয়ে ২৮টি গুলি করেছিল। তবে এখনো অস্ত্রটি উদ্ধার করা যায়নি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপকমিশনার বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় যেসব মামলা হয়েছে, সেসবের মধ্যে এজাহারনামীয় যেসব অস্ত্রধারী রয়েছে তাঁদের মধ্যে আমরা এই পর্যন্ত ৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশে হেফাজতে থাকা ফরিদ জানায়, তিনি চান্দগাঁও থানা যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন ফরহাদের নির্দেশে ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছিল। গুলিবর্ষণের জন্য তাঁকে টাকা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিল।

তৌহিদুল ইসলাম ফরিদকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
তৌহিদুল ইসলাম ফরিদকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মহিউদ্দিন ফরহাদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চান্দগাঁও ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক এসরাইলের অনুসারী। আন্দোলন চলাকালে মহিউদ্দিন ফরহাদকেও অস্ত্র হাতে গুলিবর্ষণের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য, গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারীদের দমাতে নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পিস্তল, শাটারগান, দেশীয় এলজির পাশাপাশি অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় একে-২২ রাইফেলও ব্যবহার করেছিল ক্যাডাররা। এতে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ হতাহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত