ছোলার বাজারে রোজার টেনশন

সবুর শুভ, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১: ১১
ছবি: সংগৃহীত

রোজা শুরু হবে আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে। হাতে সময় আছে প্রায় চার মাস। অথচ এখনই বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। ইফতারির অতি প্রয়োজনীয় এ পণ্যের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে ভোক্তাদের মধ্যে জেঁকে বসেছে ‘রোজার টেনশন’।

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বর্তমানে পাইকারিতে ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১৩ টাকা। আর সেই ছোলা খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১২৮ থেকে ১৩০ টাকায়। যদিও গত রমজানের সময় পাইকারিতে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা এবং খুচরায় ১০৫ থেকে ১০৮ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। রমজানের প্রায় চার মাস আগেই এভাবে ছোলার দাম বাড়া ব্যবসায়ী ও ভোক্তা—উভয়কে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার ছোলা ছাড়া আর কোনো দেশের ছোলা নেই। রজমানের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে আমদানির তোড়জোড় চলছে এখন। ছোলাসহ আরও কয়েকটি

নিত্যপণ্য আমদানিতে সরকারও বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপর বাজার কী অবস্থায় যায়, সেটা পযর্বেক্ষণের বিষয়।

এ বিষয়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান বাদশা বলেন, সাধারণত রমজান শুরু হওয়ার চার-পাঁচ মাস আগে থেকে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেন আমদানিকারকেরা। ব্যাংকগুলোর নানান সমস্যার কারণে এখনো প্রত্যাশিত এলসি খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। রমজানের আগে অন্যবার যে পরিমাণ ছোলা আমদানি হয়েছিল, এবার তেমনটি আসেনি। এ কারণে পাইকারি পর্যায়ে ছোলার দামও গত বছরের চেয়ে বেশি। পাইকারি বাজারের এ প্রভাব স্বাভাবিকভাবে খুচরা বাজারেও পড়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি বছরের জুলাই-অক্টোবরে ছোলা আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৬৮২ টন। অথচ গত বছরের একই সময়ে ১১ হাজার ৩৬৬ টন ছোলা আমদানি হয়েছিল।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় আমদানি কমে যাওয়ার বড় কারণ ডলার-সংকট এবং এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোর অনীহা।

দেশে বছরে ছোলার চাহিদা ২ লাখ টন। এর মধ্যে রোজার এক মাসেই প্রয়োজন হয় এক লাখ টনের মতো। রমজানের চাহিদা বিবেচনায় এবার আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত দরপত্র অনুসরণ করে ছোলা আমদানির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ১০ হাজার টন ছোলা ক্রয়ের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ১০১ কোটি ৯৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। যে ঘোষণা এসেছে, তাতেই প্রতি কেজি ছোলার দাম পড়বে ১০৭ টাকা ৩৯ পয়সা।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রামের প্রধান এস এম নাজের হোসাইন জানান, রমজানে ছোলার ব্যবহার বেশি। সামনের রমজানে ছোলার বাড়তি দাম থাকলে এমনিতে দ্রব্যমূল্যের কশাঘাতে জর্জরিত ভোক্তাদের যে ত্রাহি অবস্থা হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত