Ajker Patrika

পুলিশ হেফাজতে সাবেক দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু: ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ২০: ৩৩
পুলিশ হেফাজতে সাবেক দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু: ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামে থানা হেফাজতে দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় চান্দগাঁও থানার ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলার আবেদন করেন নিহতের স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার। আদালত মামলা গ্রহণ করে এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভাকেট আব্দুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, আদালত ভুক্তভোগীর পক্ষে করা মামলার আবেদন এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩-এর ১৫(২) ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে।

যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁরা হলেন চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম, একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসফ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সোহেল রানা, চান্দগাঁও এক কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দা এস এম আসাদুজ্জামান, একই এলাকার যুবলীগ কর্মী মো. জসীম উদ্দিন, মো. লিটন, রনি আক্তার তানিয়া ও কলি আক্তার।

এঁদের মধ্যে অভিযুক্ত রনি আক্তার হলেন মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে নিহত দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী।

৩ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানাধীন এক কিলোমিটার এলাকায় গৃহকর্মীকে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগের মামলার আসামি দুদকের সাবেক উপপরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনেন সাদাপোশাকে আসা দুই পুলিশ সদস্য।

ওই দিন রাত ১২টা নাগাদ থানা হেফাজতে অসুস্থ হওয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আদালতে দায়ের করা মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, ভুক্তভোগী শহীদুল্লাহ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক (ডিডি) ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি অবসর নেন। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায় থাকতেন। সেখানে জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে গত ২৯ আগস্ট দুদকের সাবেক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও তাঁর শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া নামে এক নারী। মামলার অভিযোগ শুনে বিচারক ওই দিনই অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।

ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) হারুন অর রশীদ গায়েব করে ফেলেন। ফলে আদালতে হাজির হওয়ার কোনো সমন আসামিরা পাননি। এরপর মামলার পরবর্তী তারিখ দেন আদালত। ওই তারিখে মামলার বাদী হাজির না হওয়ায় তাঁর আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। কিন্তু ওই দিনই আদালত সাবেক দুদক কর্মকর্তাসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন। এরপর ৩ অক্টোবর দিবাগত রাতে শহীদুল্লাহকে আদালতের ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় চান্দগাঁও থানা-পুলিশ।

থানায় নেওয়ার পর অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা অন্য বিবাদীদের যোগসাজশে থানার ভেতরে ভুক্তভোগী শহীদুল্লাহকে গালিগালাজ ও মানসিক নির্যাতন করেন। এমনকি ভুক্তভোগীকে পরিবারের লোকজন ওষুধ দিতে চাইলে থানার পুলিশ কর্মকর্তারা সেগুলো পৌঁছাতে দেননি। তাঁরা থানার গেট বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে রাত ১২টা নাগাদ থানার ভেতরে ওসির রুমে শহীদুল্লাহ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

এ সময় অভিযুক্তরা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে থানার বাইরে থাকা নিহতের আত্মীয়স্বজনদের কাছে শহীদুল্লাকে তুলে দেন। পরে স্বজনেরা দ্রুত তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শহীদুল্লাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, সাবেক দুদক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা থানার দুই সহকারী উপপরিদর্শক মো. ইউসুফ আলী ও এ টি এম সোহেল রানাকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া সাবেক দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রনি আক্তারের করা মামলায় আদালতের সমন আটকে রাখার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম-৬ আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদকে বদলি করা হয়।

দুদক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনার পর তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী রনি আক্তার গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন। এতে উল্লেখ করেন, স্থানীয় জসিম ও আসাদুজ্জামানের পরামর্শে সাবেক দুদক কর্মকর্তা শহীদুল্লার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে কৃষিজমির টপসয়েল কেটে অবাধে বিক্রি, পরিবেশ ও উৎপাদন হুমকিতে

সহিবুর রহমান, হবিগঞ্জ
জমির উপরিভাগ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শেরপুর এলাকার হাওর থেকে গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির উপরিভাগ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শেরপুর এলাকার হাওর থেকে গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কেটে অবাধে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রতিবছর শীত মৌসুম এলেই একটি সংঘবদ্ধ মাটিখেকো চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। গত কয়েক বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ অবৈধ কার্যক্রম চললেও শীত শুরু হলেই ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নে তৎপরতা সবচেয়ে বেশি বেড়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কার্যকর তদারকির অভাবে চলতি মৌসুমে মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্য কয়েক গুণ বেড়েছে। দিন-রাত শ্রমিক ও ভেকু (এক্সকাভেটর) ব্যবহার করে কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষিজমির উৎপাদনক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়ছে। অতিরিক্ত ভারী যান চলাচলে গ্রামীণ সড়কগুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, টপসয়েল কাটা ও পরিবহনের সঙ্গে একটি মধ্যস্বত্বভোগী চক্র জড়িত। অভিযোগ অনুযায়ী, ব্রাহ্মণডোরা এলাকার মুর্শেদ মিয়ার ছেলে কামাল মিয়া, শেরপুর এলাকার সামসু মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া এবং অলিপুর এলাকার মন্নর মিয়া এ চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা কৃষিজমি থেকে টপসয়েল কেটে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের শেরপুর, কেশবপুর ও ঋষিপাড়া এলাকা থেকে নিয়মিত মাটি কেটে ট্রাক্টরের মাধ্যমে পরিবহন করা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি ট্রাক্টর টপসয়েল ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনে পরে তা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

জমির উপরিভাগ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শেরপুর এলাকার হাওর থেকে গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির উপরিভাগ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শেরপুর এলাকার হাওর থেকে গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘এই মাটিখেকো চক্রের সঙ্গে প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকায় প্রকাশ্যে কিছু বলা কঠিন। সরকার পরিবর্তন হলেও প্রভাবশালীরা থেকে যায়।’

অভিযোগের বিষয়ে কামাল মিয়া বলেন, ‘আমরা যে জমি থেকে মাটি কাটি, তা মালিকের কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনে নেওয়া। যদি আইনি কোনো বাধা থাকে, তাহলে আর এসব কাজ করব না।’

আরেক অভিযুক্ত মন্নর মিয়া বলেন, ‘এই মৌসুমে মাত্র দুই দিন মাটি কেটেছি। এখন আর কাটছি না। যে গাড়ি এনেছিলাম, সেটিও ফেরত পাঠিয়েছি। এ বছর আর মাটি কাটব না।’

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদ হোসেন বলেন, ‘কৃষিজমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার বিষয়টি শুনেছি। যারা এ কাজে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আ.লীগের দুই নেতাকে বিএনপির মনোনয়ন

  • বাগেরহাট-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়া কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি
  • বাগেরহাট-৪ আসনের প্রার্থী সোমনাথ দে গত বছরের আগস্টে আ.লীগ থেকে পদত্যাগ করেন
বাগেরহাট প্রতিনিধি
আ.লীগের দুই নেতাকে বিএনপির মনোনয়ন

বাগেরহাটের চারটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তবে চারটির দুটিতেই দলটির মনোনয়ন পেয়েছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের দুই নেতা। বিএনপিতে যোগ দিয়ে এক বছরের মধ্যে দুটি আসনের মনোনয়ন পাওয়ায় বিএনপি বেশির ভাগ নেতা-কর্মীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে থাকা ঘনিষ্ঠ ছবি শেয়ার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট-চিতলমারী) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল। তিনি একই সঙ্গে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের মহাসচিব এবং বাংলাদেশ অশ্বিনী সেবা আশ্রমের সভাপতি। ছিলেন চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

অপর দিকে বাগেরহাট-৪ (শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সভাপতি সোমনাথ দে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। এ ছাড়া তিনি মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। গত বছরের আগস্টের শেষ দিকে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। এর আগে সোমনাথ দে জাতীয় পার্টি করতেন। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সংখ্যালঘুবিষয়ক উপদেষ্টা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে বাগেরহাট-৪ (শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন।

২০১৯ সালের শেষের দিকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০২২ সালে গঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী কমিটিতে তিনি ৩নং সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছিলেন। ‘দেশবিরোধী চক্রান্তের অভিযোগে’ কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল চলতি বছরের মার্চে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন এবং অপর একটি মামলায় কারাভোগ করেছেন সোমনাথ দে। জেল থেকে বেরিয়ে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের নিয়ে ২০ আগস্ট বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন কপিল ও সোমনাথ।

এই নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ায় শরণখোলার বাসিন্দা রাসেল আহম্মেদ ফেসবুকে সোমনাথ দের ছবি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘জয় বাংলা, ধানের শীষে ভোট দিন।’ পোস্টের নিচে একজন লিখেছেন, ‘সাথে জাতীয় পার্টির স্লোগান যুক্ত করে দিন।’

গত শনিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে প্রার্থী ঘোষণার পরে আসন দুটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বাইরে আমাদের আসলে করার কিছু নেই। তবে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। দীর্ঘদিন দল করে, জুলুম-নির্যাতন সহ্য করার পরে অন্য দলের কেউ এসে মনোনয়ন পাওয়ায় তাঁরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে এসব বিষয় কেন্দ্রকে জানিয়েছি।’

জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এটি কীভাবে মেনে নেবে বলেন। তাঁরা দুজনই সুবিধাবাদী এবং শেখ হেলালের নিকটতম অনুসারী ছিলেন।’

তবে বাগেরহাট-১ আসনের মনোনয়নপ্রাপ্ত কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘কখনো অন্য কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। এটিই আমার প্রথম রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া।’ আর বাগেরহাট-৪ আসনের প্রার্থী সোমনাথ দে বলেন, ‘আমি মনোনয়ন পাওয়ায় যাঁরা চাঁদাবাজ, জুলুমকারী, নির্যাতন করে, তাঁদের গাত্রদাহ হচ্ছে। কিন্তু যাঁরা সাধারণ মানুষ তাঁরা আমাকে সাদরে বরণ করেছেন। আমি জাতীয় পার্টি করেছি, আওয়ামী লীগ করেছি, ৫ আগস্টের পর জেল খেটেছি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়, দলের হাইকমান্ড আমাকে মনোনীত করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘স্যাক্রোলাইটিস’ রোগে আক্রান্ত: মেধাবী ছাত্রী আসফির বাঁচার আকুতি

খুলনা প্রতিনিধি
আরিফা জান্নাত আসফি । ছবি: সংগৃহীত
আরিফা জান্নাত আসফি । ছবি: সংগৃহীত

খুলনা সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী আরিফা জান্নাত আসফি পিইসি পরীক্ষায় বৃত্তিসহ এ+ এবং জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়েছেন। অত্যন্ত মেধাবী এই ছাত্রী গত চার বছর ধরে দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছে।

চিকিৎসকের পরামর্শে এর আগে পরপর দুবার পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। তবে এখনো শারীরিক অবস্থার আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় পুনরায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

আসফির পরিবার জানায়, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তার চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে তারা চরম সংকটে পড়েছে। ভারতে গিয়ে পুনরায় চিকিৎসা নিতে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন হলেও দরিদ্র পরিবারের পক্ষে এ অর্থ জোগাড় করা সম্ভব নয়।

এ অবস্থায় ‘স্যাক্রোলাইটিস’ রোগে আক্রান্ত মেধাবী ছাত্রী আরিফা জান্নাত আসফি নিজের জীবন রক্ষার্থে সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন। সামান্য সহযোগিতাই হয়তো তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে এবং একটি সম্ভাবনাময় জীবন রক্ষা করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নকলায় ৭ অবৈধ ইটভাটায় অভিযান, সাড়ে ২২ লাখ টাকা জরিমানা

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
অবৈধভাবে প্রস্তুত করা কাঁচা ইট বিনষ্ট করা হয় । ছবি: আজকের পত্রিকা
অবৈধভাবে প্রস্তুত করা কাঁচা ইট বিনষ্ট করা হয় । ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নকলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় দিনব্যাপী এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা সাতটি অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর বিভিন্ন ধারায় ভাটামালিকদের মোট ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ সময় অবৈধভাবে প্রস্তুত করা কাঁচা ইট বিনষ্ট করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট ইটভাটাগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পাশাপাশি অবৈধ ইটভাটার সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে মালিকপক্ষকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশের ক্ষতি রোধ ও সরকারি আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চলমান থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত