ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারপ্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন মামলার শুনানিতে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩: ১৬
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩: ২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীরা মামলার শুনানিতে অংশ না নেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা। বাড়ছে মামলাজট। এ অবস্থায় মামলায় বিচারপ্রার্থীরাই অংশ নিচ্ছেন শুনানিতে। আজ বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে বিচারপ্রার্থীদের শুনানিতে।

দাবি আদায় না হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবীদের আদালত বর্জন এখনো চলছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতি বিশেষ সাধারণ সভা করে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব আদালত বর্জনে সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঞা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও জেলা জজ আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামকে অপসারণের দাবিতে এক মাস ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন জেলার আইনজীবীরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় তাঁরা নতুন করে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, গত ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এ শুনানি বর্জন করে আসছেন আইনজীবীরা। এতে অসংখ্য মামলার শুনানি ব্যাহত হয়। গত ২২ কার্যদিবসে প্রায় দুই হাজার মামলার শুনানি ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় আদালতের অনুমতিক্রমে বিচারপ্রার্থীরা নিজেরাই শুনানিতে অংশ নেন।

সূত্র আরও জানায়, আজ বুধবার ৬৩টি মামলার শুনানি ছিল। তবে এদিনও কোনো আইনজীবী আদালতের এজলাসে উপস্থিত না থাকায় বিচারপ্রার্থীরা নিজেরাই শুনানি করেন। এর মধ্যে দুটি মামলা উভয় পক্ষের সম্মতিতে সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি হয়। এর মধ্যে একটি মামলার বাদী মদিনা বেগম তাঁর প্রতিবেশী খায়ের মিয়ার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা উঠিয়ে নেন। ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা করেন সেতু আক্তার নামের এক নারী। আজ বুধবার তিনি যৌতুকের অভিযোগ তুলে নেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুক তাঁর খাসকামরায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনে বলা আছে, কেউ যদি কোনো মামলা নিজে পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে এতে কোনো বাধা নেই। কাজেই বিচারপ্রার্থী নিজেই মামলার শুনানি করতে পারেন।’

গত বছরের ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারীরা। এই অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। পরে দফায় দফায় সাত কর্মদিবস আদালত বর্জন করেন তাঁরা। এ ছাড়া বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দুই দফায় তলব করেছেন উচ্চ আদালত।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত