Ajker Patrika

যেন ঈশ্বরের অক্লান্ত হাত

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৮ জুন ২০২২, ১০: ৫৩
যেন ঈশ্বরের অক্লান্ত হাত

গত শনিবার রাত তখন সাড়ে ১১টা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মোবাইল ফোন হঠাৎ বেজে ওঠে। ফোনটি করেন তাঁরই এক সহকর্মী। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে উদ্বেগ মেশানো কণ্ঠে তিনি বলতে থাকেন, ‘বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছি। পথে দেখছি সীতাকুণ্ড থেকে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে চমেকের দিকে। প্রস্তুত থেকো।’ ততক্ষণে দায়িত্ব শেষ হওয়ায় অনেক চিকিৎসকই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বাসায় ফেরার। কিন্তু খবরটি শুনে সবাই থমকে দাঁড়ালেন। যাঁদের দায়িত্ব ছিল না, তাঁদেরও জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে আসার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তাঁরাও এলেন। এবার সবাই প্রস্তুত।

সেই রাত এবং তার পরের দুটি দিন কীভাবে কেটেছে, তা জানালেন চমেকের সার্জারি ইউনিটের মেডিকেল অফিসার অভ্র ভট্টাচার্য। গতকাল মঙ্গলবার তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক রাতে এত অপারেশন চমেকে আর হয়নি। আমাদের সবার কাজ করতে করতে কখন যে রাত থেকে ভোর, তারপর দুপুর হলো, টেরও পেলাম না। এখনো একই অবস্থা সবার। আমরা গত কয়েক দিন দুনিয়া থেকে যেন বিচ্ছিন্ন ছিলাম।’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরপরই প্রথম দফায় ১০-১২টি অ্যাম্বুলেন্সে চমেকের সার্জারি ইউনিটে আনা হয় আহত ৩৬ জনকে। তৎক্ষণাৎ ১১ জনকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি ২৫ জনকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা ছিল খুবই ভয়াবহ। বিস্ফোরণে কারও পেট থেকে বের হয়ে গেছে নাড়িভুঁড়ি, কারও ডান পাশের বুকের মাংস উড়ে গেছে। বাঁকানো রড ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারও ফুসফুস। পাঁজর ভেঙেছে, এমনকি ধারালো বস্তুর আঘাতে দুই পাশের কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারও কারও। রড ভেঙে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় একজন।

শনিবার রাতের ওই বিস্ফোরণে গতকাল পর্যন্ত ৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের দলেই ঠাঁই পেতে পারতেন গুরুতর আহত ওই ১০ জনও। কিন্তু গল্পটা বদলে দিয়েছে চমেকের সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক দল। একেকজন চিকিৎসকের হাত যেন হয়ে উঠেছিল ঈশ্বরের হাত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেই হাতের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বেঁচে গেছে অনেকের প্রাণ।
চিকিৎসকদের ওই দলে ছিলেন চমেকের সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুর রহিম, নাবিলা নাওয়ার নুর, আমজাদ হোসেন। মেডিকেল অফিসারের মধ্যে অভ্র ভট্টাচার্য, আফতাব, সায়েম বিন কাসেম, আদিবা, ইয়েন রাশেদা, আনিকা এবং আরও ১০-১২ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক। এ ছাড়া প্লাস্টিক অ্যান্ড সার্জারি বিভাগসহ চমেকের প্রতিটা বিভাগের চিকিৎসকেরা কোনো না কোনোভাবে অবদান রাখছেন। তবে এর মধ্যে সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকেরা ঘটনার পর থেকে অপারেশন থিয়েটারে জরুরি অপারেশনের কাজে আছেন।

সাধারণত রাতে চমেকের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা দায়িত্ব পালন করেন না। কিন্তু ঘটনার পরপরই চমেকে ছুটে আসেন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মতিয়ার রহমান খান, সহযোগী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবির ভূঞা ও মোতাহার হোসেন। অপারেশনে যোগ দেন রেজিস্ট্রার ইয়াহিয়া মানিক, রায়হানা আহমেদ, সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুলাহ আর মারুফ, ফয়সাল মোস্তফা।মেডিকেল অফিসার অভ্র ভট্টাচার্য জানান, বিস্ফোরণে আহত দুজন রোগীর তৎক্ষণাৎ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। তাঁদের একজন মাসুম। তাঁর শ্বাসনালি পুড়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। জরুরি ভিত্তিতে সার্জারি এবং রক্তক্ষরণ বন্ধ করার পর চমেকের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। আরেকজন নোয়াখালীর রমিজ উদ্দিনেরও শ্বাসনালি পুড়ে যায়। আমরা সার্জারির বিষয়টা দেখার পর পরের দিন রোববার জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। দুজনই ভালো আছেন।

অভ্র ভট্টাচার্য জানান, এ ছাড়া আরও দুজনের জরুরি অস্ত্রোপচার করা লাগে। একজন ভোলার মো. কবির হোসেন (৪৫)। বিস্ফোরণে তাঁর ডান হাতের আঙুল উড়ে যায়, পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। প্রথমে তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করে বের হওয়া নাড়িভুঁড়ি আবার পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত। 
এই চিকিৎসক আরও জানান, আরেকজন মো. তারেক (২৯)। ধারালো বস্তুতে তাঁর পেটের পেছনে দিকে কেটে যায়। তাঁরও নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। পেছন দিক দিয়ে দুই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপারেশনের মাধ্যমে কিডনি ও নাড়িভুঁড়ি ঠিক করা হয়। পরের দিন সকালে আবারও অপারেশন করা লাগে তাঁর। তিনিও এখন সুস্থ আছেন।

অভ্র ভট্টাচার্য বলেন, ‘ওই দিন মেজর ইনজুরি নিয়ে আসা ১০-১১ জনের যদি তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা না মিলত, তাহলে জীবনহানির আশঙ্কা ছিল। এক রাতে এত অপারেশন চমেকে আর হয়নি। কিন্তু এত কাজও কিছু মনে হচ্ছে না। কারণ তাঁদের আমরা সুস্থ করে তুলেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবশক্তির তিন নেতাকে হত্যার হুমকি, সোনারগাঁ থানায় জিডি

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের এনসিপির যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির তিন নেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারায়ণগঞ্জের এনসিপির যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির তিন নেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল রোববার রাতে সোনারগাঁ থানায় জিডি করেছেন জাতীয় যুবশক্তির নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সংগঠক মো. জাহিদুল হক।

জিডিতে জাহিদুল হক উল্লেখ করেন, গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ‘সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে

তাঁর উদ্দেশে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্টে তাঁর সঙ্গে জাতীয় যুবশক্তি নারায়ণগঞ্জের আহ্বায়ক শাকিল সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক খাঁন সিয়ামের ছবি ব্যবহার করে গালাগালি ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। ফেসবুক পোস্টে আরও লেখা ছিল—‘লিস্টে রাখলাম হঠাৎ করেই সোনারগাঁবাসী দেখবে লাশ’।

মো. জাহিদুল হক জানান, পোস্টটিতে তাঁকে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত দেখিয়ে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাঁর সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং জীবন নিরাপত্তাঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তিনি আরও জানান, তিনি জাতীয় যুবশক্তি (এনসিপি) নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সংগঠক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলার সাবেক মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আমীন বলেন, ‘এ ঘটনায় ইতিমধ্যে জিডি করা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে আমরা কেন্দ্রীয় নেতারা অবগত রয়েছি।’

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিববুল্লাহ বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় জিডি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ফেসবুক আইডিটি শনাক্তের জন্য সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গমের জমিতে ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
গমের জমিতে ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গমের জমিতে ছাগল ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সাহাবুল ইসলাম (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী পারুল আক্তার (৪৮) ও ছেলে। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মুন্দখৈর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাহাবুল ইসলাম মুন্দখৈর এলাকার মৃত মোজাফফর হোসেনের ছেলে।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একই এলাকার সালামের দুটি ছাগল সাহাবুল ইসলামের গমের খেতে ঢুকে চারা নষ্ট করে। এ নিয়ে সাহাবুল ছাগল দুটিকে খোঁয়াড়ে দিলে সালামসহ কয়েকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে চলে যান। পরে বিষয়টি নিয়ে সাহাবুল ইসলাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

গতকাল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেয় এবং বিষয়টি থানায় বসে মীমাংসার কথা বলে। তবে পুলিশ চলে যাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যার দিকে সালামসহ অন্যরা হাঁসুয়া, চাকু, রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে সাহাবুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকেও মারধর করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাহাবুল ইসলামের মৃত্যু হয়।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পারুল আক্তার ও তাঁদের ছেলেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত সালাম ও তাঁর ছেলে রিপনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক এমপি বাদলকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিউমার্কেট থানা এলাকায় শিক্ষার্থী শামীমকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম গ্রেপ্তার দেখানোর এ নির্দেশ দেন।

আজ ফয়জুর রহমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার এসআই মো. ওমর ফারুক। শুনানি শেষে আদালত বাদলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হারুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তদন্তকালে এই মামলায় সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান বাদলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের জন্য তিনি এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের প্ররোচনা এবং অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন বলে প্রাথমিক সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই করতে তাঁকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজ এলাকায় আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে আন্দোলনকারীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শামীম গুরুতর আহত হন। পরে সুস্থ হয়ে তিনি মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, ‎গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে সাবেক এই এমপিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৬
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তা জমা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর

নানুয়ার দীঘিসংলগ্ন নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

মনিরুল হক সাক্কু বলেন, তিনি শুরু থেকেই কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মনোনয়ন কেনার বিষয়টি ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। এ কারণে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন না। তবে ভবিষ্যতে যদি এ আসনে দলীয় মনোনয়নে পরিবর্তন আসে, সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক এমপি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের ব্যাপারে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইয়াছিন তাঁর শ্যালককে প্রার্থী করেছিলেন। এতে ভোট বিভাজনের কারণে তিনি অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন। একই ব্যক্তি পরবর্তী উপনির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেন। এসব ঘটনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কাউকে দোষারোপ করেননি। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা প্রকাশ্যে আনার আহ্বান জানান তিনি।

মনিরুল হক সাক্কু আরও বলেন, চূড়ান্ত মনোনয়নে দলের মনোনয়ন পরিবর্তন হয়ে যদি হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন পান তাহলে তিনি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবেন।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে সাক্কু অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে উভয়কেই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। গতকাল রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত