জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
গত শনিবার রাত তখন সাড়ে ১১টা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মোবাইল ফোন হঠাৎ বেজে ওঠে। ফোনটি করেন তাঁরই এক সহকর্মী। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে উদ্বেগ মেশানো কণ্ঠে তিনি বলতে থাকেন, ‘বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছি। পথে দেখছি সীতাকুণ্ড থেকে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে চমেকের দিকে। প্রস্তুত থেকো।’ ততক্ষণে দায়িত্ব শেষ হওয়ায় অনেক চিকিৎসকই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বাসায় ফেরার। কিন্তু খবরটি শুনে সবাই থমকে দাঁড়ালেন। যাঁদের দায়িত্ব ছিল না, তাঁদেরও জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে আসার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তাঁরাও এলেন। এবার সবাই প্রস্তুত।
সেই রাত এবং তার পরের দুটি দিন কীভাবে কেটেছে, তা জানালেন চমেকের সার্জারি ইউনিটের মেডিকেল অফিসার অভ্র ভট্টাচার্য। গতকাল মঙ্গলবার তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক রাতে এত অপারেশন চমেকে আর হয়নি। আমাদের সবার কাজ করতে করতে কখন যে রাত থেকে ভোর, তারপর দুপুর হলো, টেরও পেলাম না। এখনো একই অবস্থা সবার। আমরা গত কয়েক দিন দুনিয়া থেকে যেন বিচ্ছিন্ন ছিলাম।’
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরপরই প্রথম দফায় ১০-১২টি অ্যাম্বুলেন্সে চমেকের সার্জারি ইউনিটে আনা হয় আহত ৩৬ জনকে। তৎক্ষণাৎ ১১ জনকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি ২৫ জনকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা ছিল খুবই ভয়াবহ। বিস্ফোরণে কারও পেট থেকে বের হয়ে গেছে নাড়িভুঁড়ি, কারও ডান পাশের বুকের মাংস উড়ে গেছে। বাঁকানো রড ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারও ফুসফুস। পাঁজর ভেঙেছে, এমনকি ধারালো বস্তুর আঘাতে দুই পাশের কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারও কারও। রড ভেঙে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় একজন।
শনিবার রাতের ওই বিস্ফোরণে গতকাল পর্যন্ত ৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের দলেই ঠাঁই পেতে পারতেন গুরুতর আহত ওই ১০ জনও। কিন্তু গল্পটা বদলে দিয়েছে চমেকের সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক দল। একেকজন চিকিৎসকের হাত যেন হয়ে উঠেছিল ঈশ্বরের হাত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেই হাতের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বেঁচে গেছে অনেকের প্রাণ।
চিকিৎসকদের ওই দলে ছিলেন চমেকের সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুর রহিম, নাবিলা নাওয়ার নুর, আমজাদ হোসেন। মেডিকেল অফিসারের মধ্যে অভ্র ভট্টাচার্য, আফতাব, সায়েম বিন কাসেম, আদিবা, ইয়েন রাশেদা, আনিকা এবং আরও ১০-১২ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক। এ ছাড়া প্লাস্টিক অ্যান্ড সার্জারি বিভাগসহ চমেকের প্রতিটা বিভাগের চিকিৎসকেরা কোনো না কোনোভাবে অবদান রাখছেন। তবে এর মধ্যে সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকেরা ঘটনার পর থেকে অপারেশন থিয়েটারে জরুরি অপারেশনের কাজে আছেন।
সাধারণত রাতে চমেকের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা দায়িত্ব পালন করেন না। কিন্তু ঘটনার পরপরই চমেকে ছুটে আসেন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মতিয়ার রহমান খান, সহযোগী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবির ভূঞা ও মোতাহার হোসেন। অপারেশনে যোগ দেন রেজিস্ট্রার ইয়াহিয়া মানিক, রায়হানা আহমেদ, সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুলাহ আর মারুফ, ফয়সাল মোস্তফা।মেডিকেল অফিসার অভ্র ভট্টাচার্য জানান, বিস্ফোরণে আহত দুজন রোগীর তৎক্ষণাৎ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। তাঁদের একজন মাসুম। তাঁর শ্বাসনালি পুড়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। জরুরি ভিত্তিতে সার্জারি এবং রক্তক্ষরণ বন্ধ করার পর চমেকের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। আরেকজন নোয়াখালীর রমিজ উদ্দিনেরও শ্বাসনালি পুড়ে যায়। আমরা সার্জারির বিষয়টা দেখার পর পরের দিন রোববার জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। দুজনই ভালো আছেন।
অভ্র ভট্টাচার্য জানান, এ ছাড়া আরও দুজনের জরুরি অস্ত্রোপচার করা লাগে। একজন ভোলার মো. কবির হোসেন (৪৫)। বিস্ফোরণে তাঁর ডান হাতের আঙুল উড়ে যায়, পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। প্রথমে তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করে বের হওয়া নাড়িভুঁড়ি আবার পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।
এই চিকিৎসক আরও জানান, আরেকজন মো. তারেক (২৯)। ধারালো বস্তুতে তাঁর পেটের পেছনে দিকে কেটে যায়। তাঁরও নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। পেছন দিক দিয়ে দুই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপারেশনের মাধ্যমে কিডনি ও নাড়িভুঁড়ি ঠিক করা হয়। পরের দিন সকালে আবারও অপারেশন করা লাগে তাঁর। তিনিও এখন সুস্থ আছেন।
অভ্র ভট্টাচার্য বলেন, ‘ওই দিন মেজর ইনজুরি নিয়ে আসা ১০-১১ জনের যদি তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা না মিলত, তাহলে জীবনহানির আশঙ্কা ছিল। এক রাতে এত অপারেশন চমেকে আর হয়নি। কিন্তু এত কাজও কিছু মনে হচ্ছে না। কারণ তাঁদের আমরা সুস্থ করে তুলেছি।’
গত শনিবার রাত তখন সাড়ে ১১টা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মোবাইল ফোন হঠাৎ বেজে ওঠে। ফোনটি করেন তাঁরই এক সহকর্মী। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে উদ্বেগ মেশানো কণ্ঠে তিনি বলতে থাকেন, ‘বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছি। পথে দেখছি সীতাকুণ্ড থেকে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে চমেকের দিকে। প্রস্তুত থেকো।’ ততক্ষণে দায়িত্ব শেষ হওয়ায় অনেক চিকিৎসকই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বাসায় ফেরার। কিন্তু খবরটি শুনে সবাই থমকে দাঁড়ালেন। যাঁদের দায়িত্ব ছিল না, তাঁদেরও জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে আসার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তাঁরাও এলেন। এবার সবাই প্রস্তুত।
সেই রাত এবং তার পরের দুটি দিন কীভাবে কেটেছে, তা জানালেন চমেকের সার্জারি ইউনিটের মেডিকেল অফিসার অভ্র ভট্টাচার্য। গতকাল মঙ্গলবার তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক রাতে এত অপারেশন চমেকে আর হয়নি। আমাদের সবার কাজ করতে করতে কখন যে রাত থেকে ভোর, তারপর দুপুর হলো, টেরও পেলাম না। এখনো একই অবস্থা সবার। আমরা গত কয়েক দিন দুনিয়া থেকে যেন বিচ্ছিন্ন ছিলাম।’
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পরপরই প্রথম দফায় ১০-১২টি অ্যাম্বুলেন্সে চমেকের সার্জারি ইউনিটে আনা হয় আহত ৩৬ জনকে। তৎক্ষণাৎ ১১ জনকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি ২৫ জনকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা ছিল খুবই ভয়াবহ। বিস্ফোরণে কারও পেট থেকে বের হয়ে গেছে নাড়িভুঁড়ি, কারও ডান পাশের বুকের মাংস উড়ে গেছে। বাঁকানো রড ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারও ফুসফুস। পাঁজর ভেঙেছে, এমনকি ধারালো বস্তুর আঘাতে দুই পাশের কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কারও কারও। রড ভেঙে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় একজন।
শনিবার রাতের ওই বিস্ফোরণে গতকাল পর্যন্ত ৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের দলেই ঠাঁই পেতে পারতেন গুরুতর আহত ওই ১০ জনও। কিন্তু গল্পটা বদলে দিয়েছে চমেকের সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক দল। একেকজন চিকিৎসকের হাত যেন হয়ে উঠেছিল ঈশ্বরের হাত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেই হাতের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বেঁচে গেছে অনেকের প্রাণ।
চিকিৎসকদের ওই দলে ছিলেন চমেকের সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুর রহিম, নাবিলা নাওয়ার নুর, আমজাদ হোসেন। মেডিকেল অফিসারের মধ্যে অভ্র ভট্টাচার্য, আফতাব, সায়েম বিন কাসেম, আদিবা, ইয়েন রাশেদা, আনিকা এবং আরও ১০-১২ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক। এ ছাড়া প্লাস্টিক অ্যান্ড সার্জারি বিভাগসহ চমেকের প্রতিটা বিভাগের চিকিৎসকেরা কোনো না কোনোভাবে অবদান রাখছেন। তবে এর মধ্যে সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকেরা ঘটনার পর থেকে অপারেশন থিয়েটারে জরুরি অপারেশনের কাজে আছেন।
সাধারণত রাতে চমেকের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা দায়িত্ব পালন করেন না। কিন্তু ঘটনার পরপরই চমেকে ছুটে আসেন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মতিয়ার রহমান খান, সহযোগী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবির ভূঞা ও মোতাহার হোসেন। অপারেশনে যোগ দেন রেজিস্ট্রার ইয়াহিয়া মানিক, রায়হানা আহমেদ, সহকারী রেজিস্ট্রার আব্দুলাহ আর মারুফ, ফয়সাল মোস্তফা।মেডিকেল অফিসার অভ্র ভট্টাচার্য জানান, বিস্ফোরণে আহত দুজন রোগীর তৎক্ষণাৎ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। তাঁদের একজন মাসুম। তাঁর শ্বাসনালি পুড়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। জরুরি ভিত্তিতে সার্জারি এবং রক্তক্ষরণ বন্ধ করার পর চমেকের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। আরেকজন নোয়াখালীর রমিজ উদ্দিনেরও শ্বাসনালি পুড়ে যায়। আমরা সার্জারির বিষয়টা দেখার পর পরের দিন রোববার জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। দুজনই ভালো আছেন।
অভ্র ভট্টাচার্য জানান, এ ছাড়া আরও দুজনের জরুরি অস্ত্রোপচার করা লাগে। একজন ভোলার মো. কবির হোসেন (৪৫)। বিস্ফোরণে তাঁর ডান হাতের আঙুল উড়ে যায়, পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। প্রথমে তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করে বের হওয়া নাড়িভুঁড়ি আবার পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।
এই চিকিৎসক আরও জানান, আরেকজন মো. তারেক (২৯)। ধারালো বস্তুতে তাঁর পেটের পেছনে দিকে কেটে যায়। তাঁরও নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। পেছন দিক দিয়ে দুই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপারেশনের মাধ্যমে কিডনি ও নাড়িভুঁড়ি ঠিক করা হয়। পরের দিন সকালে আবারও অপারেশন করা লাগে তাঁর। তিনিও এখন সুস্থ আছেন।
অভ্র ভট্টাচার্য বলেন, ‘ওই দিন মেজর ইনজুরি নিয়ে আসা ১০-১১ জনের যদি তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা না মিলত, তাহলে জীবনহানির আশঙ্কা ছিল। এক রাতে এত অপারেশন চমেকে আর হয়নি। কিন্তু এত কাজও কিছু মনে হচ্ছে না। কারণ তাঁদের আমরা সুস্থ করে তুলেছি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সহকারী প্রক্টর ও ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল হককে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে...
১ ঘণ্টা আগেগাজীপুরের শ্রীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) পিকনিকের দোতলা বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগেবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং তাঁর জীবন নিয়ে গবেষণার লক্ষ্যে ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’। নিয়োগ দেওয়া হয় ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুনকে (মুনতাসীর মামুন)।
২ ঘণ্টা আগেকক্সবাজারে মাকে কুপিয়ে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন ছেলে হোসাইন মোহাম্মদ আবিদ (২৮)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে কক্সবাজার শহরের পশ্চিম বড়ুয়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নেশার টাকা না পেয়ে মাকে আবিদ হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত আনোয়ারা বেগম মেরী (৫৫) ওই এলাকার নিয়াজ আহমেদের স্ত্রী
২ ঘণ্টা আগে