মুক্ত জলাশয়-খালেও পাওয়া যাচ্ছে সাকার মাছ, উদ্বিগ্ন জেলেরা

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১৪: ৩২
Thumbnail image

দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে দেখা মেলে সাকার মাছ বা সাকার মাউথ ক্যাট ফিশের। এই মাছ এখন পাওয়া যাচ্ছে খাল ও বিভিন্ন জলাশয়েও। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলে ও স্থানীয়রা। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের সোবান গ্রামে আজ বুধবার এক জলাশয়ে পাওয়া গেছে এই মাছ। এর আগে রোববার উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের বালিথুবা বাজারের পাশে একটি খালে মাছ ধরার সময় জালে আটকা পড়ে সাকার মাছ। 

গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানির স্রোতে মাছটি ভেসে জলাশয়ে এসেছে বলে ধারণা জেলে ও স্থানীয়দের। এই মাছ অধিক পরিমাণে বিস্তার লাভ করলে দেশীয় প্রজাতির মাছসহ মৎস্য খাতের উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে বলে ধারণা তাঁদের। 

সোবান গ্রামের মফিজুল হক বলেন, ‘নদীতে জাল ফেললে দেশীয় প্রজাতির কয়েকটি মাছের সঙ্গে একটি সাকার মাছও ওঠে। জালের ওপর দিয়ে মাছটি প্রথমে দেখে সাপ মনে করে ভয় পেয়েছি। জাল খোলার পর দেখি সাকার মাছ। পরে নদীতে ফেলে দিয়েছি।’ 

এদিকে বালিথুবা এলাকার আরিফ হোসেন বলেন, ‘মাছটি প্রথম দেখে ভয় লেগেছিল। কারণ এর আগে এ ধরনের মাছ কখনো দেখিনি এবং মাছের নামটিও জানা ছিল না।’ 

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাকার মাছের জন্ম অবস্থান দক্ষিণ আফ্রিকায়। ভয়ংকর এই মাছ অ্যাকোরিয়ামে রাখার জন্য আশির দশকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। পরে অ্যাকোরিয়াম ছাড়িয়ে দেশের প্রায় সব মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে মাছটি। শখের সাকার মাছ এখন সব জলাশয়ে বিষ ছড়াচ্ছে। মাছটি একবার কোনো জলাশয়ে ঢুকে পড়লে এর বিস্তার রোধ করা খুব কঠিন। 

চাষের পুকুরে এই মাছ ঢুকে পড়লে অন্য মাছের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করে। এতে বাইরে থেকে পর্যাপ্ত খাবার দিলেও মাছের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পাওয়া যায় না। নিষিদ্ধ এই মাছ সব ধরনের মাছের খাদ্য, রেণু ও ডিম খায়। এ ছাড়া জলাশয়ের নিচে থাকা পচনশীল খাদ্য খাওয়াসহ এর শরীরে থাকা ভয়ানক কাঁটা দিয়ে অন্য সব মাছকে আঘাত করে মেরে ফেলতে পারে। এতে দেশের মৎস্য খাত হুমকিতে পড়েছে। সাকার মাছটি লবণাক্ত কিংবা মারাত্মক দূষিত কালচে পানিতে বাঁচতে পারে বলে জানায় উপজেলা মৎস্য কার্যালয়। 

রামপুর এলাকার কবির হোসেন নামে এক যুবক বলেন, ‘ডাকাতিয়া নদীতে জাল ফেলতে গিয়ে সাকার মাছটি আমিও পেয়েছি। পরে আবার পানিতে ছেড়ে দিয়েছি।’ 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘এটি নিষিদ্ধ এবং রাক্ষস প্রজাতির মাছ। পুকুরে ও জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়লে দেশীয় প্রজাতির মাছের চাষ হুমকির মুখে পড়বে। মাছটি যেখানে পাওয়া যাবে বা যাঁরা পাবেন, তাঁরা যেন মাটিতে পুঁতে ফেলেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত