মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
ভবিষ্যৎ আয়ের এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার হলো বিমা—যাকে সংকটকালে নির্ভেজাল এক বিশ্বস্ত সঙ্গী বলা যায়। বিশ্বজুড়ে তাই বিমার প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেন অদম্য স্রোতের মতো ক্রমাগত বাড়ছে। অথচ এই ঢেউ বাংলাদেশে এসে যেন থমকে যায়। এর পেছনে লুকিয়ে আছে আস্থাহীনতার গভীর এক অন্ধকার।
দেশের বিমা কোম্পানিগুলোর দাবি নিষ্পত্তির অদক্ষতা আর সেবার সীমাবদ্ধতা মানুষের মনে গেঁথে দিয়েছে এক কঠিন অনীহা। বিমার নামে প্রতিশ্রুতির সেই আকাশ, যা বিপদের সময় ভরসার ছায়া হওয়ার কথা, সেখানে আজ প্রমাণের অভাবে জমেছে সংশয়ের মেঘ। এমনই বাস্তবতায় দেশের মানুষের বিমার প্রতি অনাগ্রহ যেন এক নিঃশব্দ প্রতিবাদ, যা সবার জন্যই বড় চিন্তার বিষয়।
সামগ্রিক অর্থনীতির বুননে বিমা খাত যেন এক অনুচ্চারিত সুর, যা এখনো নিজেকে উচ্চকণ্ঠে প্রকাশ করতে পারেনি। দেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি যতটা প্রশংসনীয়, ততটাই বিমা খাতের থমকে থাকা অগ্রযাত্রা যেন এক মৃদু হাহাকার। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যেখানে বিমা খাত অর্থনীতির ছন্দকে শক্তি জোগায়, বিশ্ব জিডিপিতে যেখানে এর অবদান ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশের চিত্র যেন আকাশ আর পাতালের দূরত্ব। দেশের জিডিপিতে বিমার অংশ মাত্র শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ—এ যেন অপার সম্ভাবনার এক চুপচাপ দরজা, যা খুলে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এ বাস্তবতা শুধু পরিসংখ্যানের ভাষা নয়, বরং একটি খাতের নিজের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে আলোয় আসার সংগ্রামের গল্প।
জাতীয় বীমা নীতি, ২০১৪ ছিল এক স্বপ্নময় অভিযাত্রার সূচনা, যার লক্ষ্য ছিল দেশের প্রতিটি জীবন ও সম্পদকে নিরাপত্তার মায়াবৃত্তে আবদ্ধ করা। সেই নীতিতে জ্বলজ্বল করছিল এক সাহসী প্রতিশ্রুতি—২০২১ সালের মধ্যে জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ৪ শতাংশে উন্নীত করা। কিন্তু বাস্তবতা যেন অন্য এক গল্প বলে। সেই স্বপ্ন আজও দূরের মেঘের মতো অধরা, যার কেবল ছায়াটুকু আমরা স্পর্শ করতে পেরেছি। বিমা খাতের এই অপূর্ণ অগ্রযাত্রা আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার ও বাস্তবতার মধ্যবর্তী শূন্যতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
দেশে বিমা খাতের সংকট ও সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী। একই সঙ্গে আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে মতামত জানিয়ে বলেছেন, জনবহুল এই দেশে বিমা খাতে অবদান কয়েক গুণ বাড়ত, যদি কোম্পানিগুলো বিমা দাবি পরিশোধ করত।
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও এস এম নুরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিমা খাতের পুনর্জাগরণে সবার আগে দ্রুত দাবি নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে হবে, যা গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনবে। এ জন্য বড় ধরনের সংস্কার অপরিহার্য। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এটি বাস্তবায়িত হলে বেশি ফলপ্রসূ হবে; কারণ, রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে এটি বাস্তবায়ন জটিল।
বিমার যাত্রার ইতিবৃত্ত
বিমার শিকড় খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৫০ সালের ব্যাবিলনীয় সভ্যতায় নিহিত। সে সময় নাবিকেরা সমুদ্রযাত্রার ঝুঁকি মোকাবিলায় জাহাজের বিপরীতে ঋণ নিতেন। যাত্রা সফল হলে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতেন, আর জাহাজ ডুবে গেলে ঋণ মওকুফ হতো। এভাবেই জন্ম নেয় বিমার প্রাচীন ধারণা। উপমহাদেশে শুরু ব্রিটিশ শাসনকাল থেকে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে সব বিমা কোম্পানি জাতীয়করণ করা হয়, এবং জীবনবিমা ও সাধারণ বিমার জন্য পৃথক চারটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ১৯৭৩ সালে বিমা করপোরেশন আইন পাসের মধ্য দিয়ে জীবন বীমা করপোরেশন ও সাধারণ বীমা করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করে তাদের ওপর ব্যবসার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।
১৯৮৪ সালে আইন সংশোধনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে বিমা ব্যবসার সুযোগ দেওয়া হয়। ১৯৮৫ সালে ন্যাশনাল লাইফ ও গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স প্রথম অনুমোদন পায়। এরপর পাঁচ দফায় আরও ৭৮টি কোম্পানি অনুমোদন লাভ করে। বর্তমানে দেশের ৮২টি বিমা কোম্পানির মধ্যে ২টি সরকারি এবং ৮০টি বেসরকারি। বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে ৩৫টি জীবনবিমা এবং ৪৫টি সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে।

যদি বিমা কোম্পানিগুলো সঠিক সময়ে বিমা দাবি পরিশোধ করে, তবে এ খাতের সমস্যার প্রায় ৭০% সমাধান হয়ে যাবে। মো. মাইন উদ্দিন অধ্যাপক, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগ, ঢাবি
যেসব সমস্যায় বিমা খাতের সর্বনাশ
জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি কমাতে দেশেও চালু রয়েছে জীবনবিমা ও সাধারণ বিমার দুই পরিপূরক ধারা। তবে এই দুই শাখার মাঝেই লুকিয়ে আছে আস্থার সংকটের গভীর এক ক্ষত। খাতসংশ্লিষ্টদের পর্যবেক্ষণে মোটাদাগে ৫ সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। এগুলো হলো অনিষ্পন্ন বিমা দাবি, গ্রাহকের ভোগান্তি ও হয়রানি, তামাদি প্রবণতা বৃদ্ধি, নন-লাইফে অতিরিক্ত কমিশন এবং গ্রাহকের টাকা লোপাটের মানসিকতা। বিশেষ করে জীবনবিমা যেন প্রতিশ্রুতির একটি ভঙ্গুর সেতু, যেখানে দাবি পরিশোধের বদলে গ্রাহকেরা বছরের পর বছর ভোগান্তির ঘূর্ণিপাকে আটকে থাকেন। অন্যদিকে, সাধারণ বিমা খাত বাকিতে ব্যবসা, অতিরিক্ত কমিশন এবং অনৈতিক প্রতিযোগিতার মতো সমস্যায় নিমজ্জিত। ফল—বেশির ভাগ গ্রাহক শুরু করা কিস্তিগুলো মাঝপথেই থামিয়ে দেন, এই অবস্থায় যে কিস্তিগুলো তিনি পরিশোধ করেছেন, তার লাভ তো দূরের কথা, আসল তুলেও পকেটে আনার সুযোগ থাকে না। উল্টো তামাদি কোটায় তা হারিয়ে যায়। আবার যাঁরা নিয়মিত প্রিমিয়াম দিয়ে মেয়াদ পূর্ণ করেন, তাঁরাও দাবি পরিশোধের জটিল প্রক্রিয়ায় নাকাল হন। অর্থাৎ বিমা খাতে মোটাদাগে কাঠখড় পোড়ানোর এই বাস্তবতা বিমা খাতকে মানুষের আস্থার কক্ষপথ থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে, যা শুধরে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
এ বিষয়ে বিমা কোম্পানির নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট বি এম ইউসুফ আলী বলেন, মূলত এসব কারণে এখন পর্যন্ত জিডিপিতে খাতটির অবদান ১ শতাংশের নিচে। বিমার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে হলে যথাসময়ে দাবির নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে হবে।
ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাজিম উদ্দিন বলেন, বিমা সেবামূলক পেশা হলেও কোম্পানিগুলোর সেই মানসিকতা লালন করে কম। ফলে হয়রানি, ভোগান্তি নিয়েই চলতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘তামাদি পলিসির গ্রাহক টাকা পান না। বিষয়টি অন্যদের কাছে নেতিবাচক বার্তা দেয়।
গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সিইও ফারজানা চৌধুরী বলেন, নন-লাইফ বিমা খাতে অতিরিক্ত কমিশন প্রদান এবং বাকিতে ব্যবসা করার প্রবণতা বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করছে। আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এসব কারণে বিমা ব্যবসায় নানা উপায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম জেঁকে বসেছে; যার মূল উদ্দেশ্যই থাকে গ্রাহকের টাকা মেরে দেওয়া।

বিমা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, গ্রাহককে সঠিক পণ্য প্রদান, দাবি নিষ্পত্তি, কর্মীদের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটলে আছে সম্ভাবনাও। আলা আহমদ সিইও, মেটলাইফ বাংলাদেশ
এ বিষয়ে আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম আসলাম আলম জানান, বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করা যাচ্ছে না বলেই খাতটি এখন ক্রান্তিকালের মুখোমুখি। তবে এখন সরকার সমস্যাগুলো চিহিত করেছে। পর্যায়ক্রমে সেগুলোর উন্নয়নে পরিকল্পিতভাবে কাজও শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই বিমা খাতে আগামীর সম্ভাবনা প্রতিফলিত হবে বলে দাবি করেন তিনি।
দেশে বিমার বাজার যত বড়
বিমার বাজার কত বড়, সেটি নির্ধারিত হয় খাতটির উন্নয়ন মানদণ্ড কেমন, তার ওপর। সেটি পরিমাপ করতে বিমায় কেমন পেনিট্রেশন বা অনুপ্রবেশ ঘটল এবং তার ঘনত্বের ধারণা প্রয়োজন হয়। পেনিট্রেশন হার নির্ধারিত হয় মোট প্রিমিয়াম আয়কে মোট জিডিপির সঙ্গে তুলনা করে, আর বিমার ঘনত্ব পরিমাপ হয় জনসংখ্যার ভিত্তিতে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বিমায় অনুপ্রবেশ ছিল ০.৬০ শতাংশ, যা ২০২৪ সালেও অপরিবর্তিত ছিল। সেই অনুযায়ী আইডিআরএ প্রতিবেদন থেকে দেশে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকার বিমা বাজার গড়ে ওঠার খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৩ হাজার কোটি টাকা জীবনবিমার বাজার; বাকি ৭ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর। যেখানে দেশীয় কোম্পানির তুলনায় বিদেশি কোম্পানির দাপট দেখা যায়। অর্থাৎ অংশীদারত্বের বিবেচনায় বড় অবদান রাখছে বহুজাতিক কোম্পানি মেটলাইফ, এরপরই রয়েছে দেশীয় কোম্পানি ন্যাশনাল লাইফ, ডেলটা লাইফ এবং পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি।
এ বিষয়ে মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলা আহমদ বলেন, বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ বিমার আওতায় আসেনি এবং এর মূল কারণ হলো বিমার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। অনেকে শুধু নেতিবাচক মন্তব্যের ভিত্তিতে বিমা করেন না। তাই বিমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, সঠিক সময়ে বিমা দাবি পরিশোধ করা, বিমাকর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং গ্রাহকদের উপযুক্ত বিমাপণ্য দেওয়াটা জরুরি।
সাধারণ বিমার বাজার বাড়াতে করণীয় জানিয়ে বিআইএ প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে থার্ড পার্টি বিমা পুনরায় চালু করার এবং বিমা পরিকল্পনা সঠিকভাবে অ্যাকচুয়ারির মাধ্যমে মূল্যায়নের সময় এসেছে। এ ছাড়া কমিশন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার এবং ব্যাংকাস্যুরেন্স গাইডলাইনের সীমা খোলার ওপর জোর দিলে বিমার বাজার আরও বড় হবে।
পর্বত সমতুল্য বিমা দাবি
২০২৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮২টি বিমা কোম্পানির গ্রাহকদের বিমা দাবির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৫৮৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে জীবনবিমার দাবি ছিল ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং সাধারণ বিমার ৩ হাজার ১৪০ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
আইডিআরএর তথ্য অনুযায়ী, ৩৬টি কোম্পানির বিমা দাবির পরিমাণ ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যার মধ্যে ২ হাজার ৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৩২ লাখ টাকা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। দাবি পরিশোধ না করার শীর্ষে রয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, যাদের ৯৯.১৯ শতাংশই পরিশোধ হয়নি। সানফ্লাওয়ার লাইফ ইনস্যুরেন্স পরিশোধ করেছে ১.১৯ শতাংশ এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ১.৪৯ শতাংশ দাবি পরিশোধ করেছে। বায়রা লাইফ ১.৫৪%, গোল্ডেন লাইফ ২.১৮%, প্রগ্রেসিভ লাইফ ৪.৭০%, সানলাইফ ১০.৪২%, আস্থা লাইফ ১৪% এবং হোমল্যান্ড লাইফ ১৫% দাবি পরিশোধ করেছে। অর্থাৎ এসব কোম্পানি গ্রাহকদের দাবির টাকা বড় অংশই পরিশোধ না করে অনিয়মের মাধ্যমে তা আত্মসাৎ করছে।

বর্তমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পরিকল্পিত উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে অচিরে খাতটির সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে। এম আসলাম আলম চেয়ারম্যান, আইডিআরএ
২০২৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৪৬টি নন-লাইফ বিমা কোম্পানি ১৬ হাজার ৮৮৬টি বিমা দাবি পরিশোধ করেনি। এই প্রান্তিকে কোম্পানিগুলোর মধ্যে মোট ৩ হাজার ১৪০ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ টাকার বিমা দাবি উত্থাপন হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ৩১৪ কোটি ৫৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৭ টাকার দাবি পরিশোধ করা হয়েছে, অর্থাৎ ২ হাজার ৮২৫ কোটি ৮৪ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৬ টাকা পরিশোধ হয়নি। সুতরাং মাত্র ১০% বিমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে।
সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধ না করার শীর্ষে রয়েছে ঢাকা ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, যাদের ৯৯.৮৬% দাবিই পরিশোধ হয়নি। সিকদার ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ৯৯.৮১% দাবি পরিশোধ করেনি এবং পিপলস ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ৯৭.৩৩% দাবি পরিশোধ করেনি। নর্দার্ন ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ৯৭.১৮%, গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স ৯৭.৬৬%, বাংলাদেশ সাধারণ বিমা করপোরেশন ৯৫.২৫%, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ৯৭% এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি প্রায় ৯০% বিমা দাবি পরিশোধ করেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. মাইন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, যদি বিমা কোম্পানিগুলো সঠিক সময়ে বিমা দাবি পরিশোধ করে, তবে এ খাতের সমস্যার প্রায় ৭০% সমাধান হয়ে যাবে। বাকি ২০-৩০% সমস্যা শুধু সময়ের সঙ্গেই ধীরে ধীরে সমাধান হবে, যখন সঠিক ব্যবস্থা ও সংস্কার আসবে।
সম্ভাবনার ন্যূনতম পর্যায়ে
বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের (বিআইএফ) তথ্যমতে, বিমা খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি জীবনবিমা কোম্পানির মাধ্যমে ৭-৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আর ৪৫টি বিমা কোম্পানির মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে ২-৩ লাখ মানুষের।
তবে বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ (পাভেল) বিশ্বাস করেন, যদি বিমা কোম্পানিগুলো সঠিক সেবা প্রদান এবং যথাযথ দাবি নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করত, তবে বিমা খাতে এক নতুন ইতিবাচক গতি সৃষ্টি হতো।
বিকাশে চার উপায়
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা করণীয় হিসেবে তিন উপায় বলেছেন। প্রথমত, প্রয়োজনে অভিযুক্ত কোম্পানির সব সম্পদ বিক্রি করে দাবি নিষ্পত্তি; দ্বিতীয়ত, যেসব কোম্পানি বিমা দাবি পরিশোধ করছে না, তাদের শাস্তি আওতায় আনা; তৃতীয়ত, যারা দাবি পরিশোধ না করবে, তাদের নতুন পলিসি বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া। চতুর্থত, প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো টাকা ছাপিয়ে গ্রাহকের দাবি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া।
ভবিষ্যৎ আয়ের এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার হলো বিমা—যাকে সংকটকালে নির্ভেজাল এক বিশ্বস্ত সঙ্গী বলা যায়। বিশ্বজুড়ে তাই বিমার প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেন অদম্য স্রোতের মতো ক্রমাগত বাড়ছে। অথচ এই ঢেউ বাংলাদেশে এসে যেন থমকে যায়। এর পেছনে লুকিয়ে আছে আস্থাহীনতার গভীর এক অন্ধকার।
দেশের বিমা কোম্পানিগুলোর দাবি নিষ্পত্তির অদক্ষতা আর সেবার সীমাবদ্ধতা মানুষের মনে গেঁথে দিয়েছে এক কঠিন অনীহা। বিমার নামে প্রতিশ্রুতির সেই আকাশ, যা বিপদের সময় ভরসার ছায়া হওয়ার কথা, সেখানে আজ প্রমাণের অভাবে জমেছে সংশয়ের মেঘ। এমনই বাস্তবতায় দেশের মানুষের বিমার প্রতি অনাগ্রহ যেন এক নিঃশব্দ প্রতিবাদ, যা সবার জন্যই বড় চিন্তার বিষয়।
সামগ্রিক অর্থনীতির বুননে বিমা খাত যেন এক অনুচ্চারিত সুর, যা এখনো নিজেকে উচ্চকণ্ঠে প্রকাশ করতে পারেনি। দেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি যতটা প্রশংসনীয়, ততটাই বিমা খাতের থমকে থাকা অগ্রযাত্রা যেন এক মৃদু হাহাকার। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যেখানে বিমা খাত অর্থনীতির ছন্দকে শক্তি জোগায়, বিশ্ব জিডিপিতে যেখানে এর অবদান ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশের চিত্র যেন আকাশ আর পাতালের দূরত্ব। দেশের জিডিপিতে বিমার অংশ মাত্র শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ—এ যেন অপার সম্ভাবনার এক চুপচাপ দরজা, যা খুলে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এ বাস্তবতা শুধু পরিসংখ্যানের ভাষা নয়, বরং একটি খাতের নিজের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে আলোয় আসার সংগ্রামের গল্প।
জাতীয় বীমা নীতি, ২০১৪ ছিল এক স্বপ্নময় অভিযাত্রার সূচনা, যার লক্ষ্য ছিল দেশের প্রতিটি জীবন ও সম্পদকে নিরাপত্তার মায়াবৃত্তে আবদ্ধ করা। সেই নীতিতে জ্বলজ্বল করছিল এক সাহসী প্রতিশ্রুতি—২০২১ সালের মধ্যে জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ৪ শতাংশে উন্নীত করা। কিন্তু বাস্তবতা যেন অন্য এক গল্প বলে। সেই স্বপ্ন আজও দূরের মেঘের মতো অধরা, যার কেবল ছায়াটুকু আমরা স্পর্শ করতে পেরেছি। বিমা খাতের এই অপূর্ণ অগ্রযাত্রা আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার ও বাস্তবতার মধ্যবর্তী শূন্যতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
দেশে বিমা খাতের সংকট ও সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী। একই সঙ্গে আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে মতামত জানিয়ে বলেছেন, জনবহুল এই দেশে বিমা খাতে অবদান কয়েক গুণ বাড়ত, যদি কোম্পানিগুলো বিমা দাবি পরিশোধ করত।
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সিইও এস এম নুরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিমা খাতের পুনর্জাগরণে সবার আগে দ্রুত দাবি নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে হবে, যা গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনবে। এ জন্য বড় ধরনের সংস্কার অপরিহার্য। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এটি বাস্তবায়িত হলে বেশি ফলপ্রসূ হবে; কারণ, রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে এটি বাস্তবায়ন জটিল।
বিমার যাত্রার ইতিবৃত্ত
বিমার শিকড় খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৫০ সালের ব্যাবিলনীয় সভ্যতায় নিহিত। সে সময় নাবিকেরা সমুদ্রযাত্রার ঝুঁকি মোকাবিলায় জাহাজের বিপরীতে ঋণ নিতেন। যাত্রা সফল হলে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতেন, আর জাহাজ ডুবে গেলে ঋণ মওকুফ হতো। এভাবেই জন্ম নেয় বিমার প্রাচীন ধারণা। উপমহাদেশে শুরু ব্রিটিশ শাসনকাল থেকে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে সব বিমা কোম্পানি জাতীয়করণ করা হয়, এবং জীবনবিমা ও সাধারণ বিমার জন্য পৃথক চারটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ১৯৭৩ সালে বিমা করপোরেশন আইন পাসের মধ্য দিয়ে জীবন বীমা করপোরেশন ও সাধারণ বীমা করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করে তাদের ওপর ব্যবসার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।
১৯৮৪ সালে আইন সংশোধনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে বিমা ব্যবসার সুযোগ দেওয়া হয়। ১৯৮৫ সালে ন্যাশনাল লাইফ ও গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স প্রথম অনুমোদন পায়। এরপর পাঁচ দফায় আরও ৭৮টি কোম্পানি অনুমোদন লাভ করে। বর্তমানে দেশের ৮২টি বিমা কোম্পানির মধ্যে ২টি সরকারি এবং ৮০টি বেসরকারি। বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে ৩৫টি জীবনবিমা এবং ৪৫টি সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে।

যদি বিমা কোম্পানিগুলো সঠিক সময়ে বিমা দাবি পরিশোধ করে, তবে এ খাতের সমস্যার প্রায় ৭০% সমাধান হয়ে যাবে। মো. মাইন উদ্দিন অধ্যাপক, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগ, ঢাবি
যেসব সমস্যায় বিমা খাতের সর্বনাশ
জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি কমাতে দেশেও চালু রয়েছে জীবনবিমা ও সাধারণ বিমার দুই পরিপূরক ধারা। তবে এই দুই শাখার মাঝেই লুকিয়ে আছে আস্থার সংকটের গভীর এক ক্ষত। খাতসংশ্লিষ্টদের পর্যবেক্ষণে মোটাদাগে ৫ সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে। এগুলো হলো অনিষ্পন্ন বিমা দাবি, গ্রাহকের ভোগান্তি ও হয়রানি, তামাদি প্রবণতা বৃদ্ধি, নন-লাইফে অতিরিক্ত কমিশন এবং গ্রাহকের টাকা লোপাটের মানসিকতা। বিশেষ করে জীবনবিমা যেন প্রতিশ্রুতির একটি ভঙ্গুর সেতু, যেখানে দাবি পরিশোধের বদলে গ্রাহকেরা বছরের পর বছর ভোগান্তির ঘূর্ণিপাকে আটকে থাকেন। অন্যদিকে, সাধারণ বিমা খাত বাকিতে ব্যবসা, অতিরিক্ত কমিশন এবং অনৈতিক প্রতিযোগিতার মতো সমস্যায় নিমজ্জিত। ফল—বেশির ভাগ গ্রাহক শুরু করা কিস্তিগুলো মাঝপথেই থামিয়ে দেন, এই অবস্থায় যে কিস্তিগুলো তিনি পরিশোধ করেছেন, তার লাভ তো দূরের কথা, আসল তুলেও পকেটে আনার সুযোগ থাকে না। উল্টো তামাদি কোটায় তা হারিয়ে যায়। আবার যাঁরা নিয়মিত প্রিমিয়াম দিয়ে মেয়াদ পূর্ণ করেন, তাঁরাও দাবি পরিশোধের জটিল প্রক্রিয়ায় নাকাল হন। অর্থাৎ বিমা খাতে মোটাদাগে কাঠখড় পোড়ানোর এই বাস্তবতা বিমা খাতকে মানুষের আস্থার কক্ষপথ থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে, যা শুধরে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
এ বিষয়ে বিমা কোম্পানির নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট বি এম ইউসুফ আলী বলেন, মূলত এসব কারণে এখন পর্যন্ত জিডিপিতে খাতটির অবদান ১ শতাংশের নিচে। বিমার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে হলে যথাসময়ে দাবির নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে হবে।
ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাজিম উদ্দিন বলেন, বিমা সেবামূলক পেশা হলেও কোম্পানিগুলোর সেই মানসিকতা লালন করে কম। ফলে হয়রানি, ভোগান্তি নিয়েই চলতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘তামাদি পলিসির গ্রাহক টাকা পান না। বিষয়টি অন্যদের কাছে নেতিবাচক বার্তা দেয়।
গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সিইও ফারজানা চৌধুরী বলেন, নন-লাইফ বিমা খাতে অতিরিক্ত কমিশন প্রদান এবং বাকিতে ব্যবসা করার প্রবণতা বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করছে। আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এসব কারণে বিমা ব্যবসায় নানা উপায়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম জেঁকে বসেছে; যার মূল উদ্দেশ্যই থাকে গ্রাহকের টাকা মেরে দেওয়া।

বিমা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, গ্রাহককে সঠিক পণ্য প্রদান, দাবি নিষ্পত্তি, কর্মীদের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটলে আছে সম্ভাবনাও। আলা আহমদ সিইও, মেটলাইফ বাংলাদেশ
এ বিষয়ে আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম আসলাম আলম জানান, বিদ্যমান সমস্যাগুলো দূর করা যাচ্ছে না বলেই খাতটি এখন ক্রান্তিকালের মুখোমুখি। তবে এখন সরকার সমস্যাগুলো চিহিত করেছে। পর্যায়ক্রমে সেগুলোর উন্নয়নে পরিকল্পিতভাবে কাজও শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই বিমা খাতে আগামীর সম্ভাবনা প্রতিফলিত হবে বলে দাবি করেন তিনি।
দেশে বিমার বাজার যত বড়
বিমার বাজার কত বড়, সেটি নির্ধারিত হয় খাতটির উন্নয়ন মানদণ্ড কেমন, তার ওপর। সেটি পরিমাপ করতে বিমায় কেমন পেনিট্রেশন বা অনুপ্রবেশ ঘটল এবং তার ঘনত্বের ধারণা প্রয়োজন হয়। পেনিট্রেশন হার নির্ধারিত হয় মোট প্রিমিয়াম আয়কে মোট জিডিপির সঙ্গে তুলনা করে, আর বিমার ঘনত্ব পরিমাপ হয় জনসংখ্যার ভিত্তিতে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বিমায় অনুপ্রবেশ ছিল ০.৬০ শতাংশ, যা ২০২৪ সালেও অপরিবর্তিত ছিল। সেই অনুযায়ী আইডিআরএ প্রতিবেদন থেকে দেশে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০ হাজার কোটি টাকার বিমা বাজার গড়ে ওঠার খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৩ হাজার কোটি টাকা জীবনবিমার বাজার; বাকি ৭ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর। যেখানে দেশীয় কোম্পানির তুলনায় বিদেশি কোম্পানির দাপট দেখা যায়। অর্থাৎ অংশীদারত্বের বিবেচনায় বড় অবদান রাখছে বহুজাতিক কোম্পানি মেটলাইফ, এরপরই রয়েছে দেশীয় কোম্পানি ন্যাশনাল লাইফ, ডেলটা লাইফ এবং পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি।
এ বিষয়ে মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলা আহমদ বলেন, বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ বিমার আওতায় আসেনি এবং এর মূল কারণ হলো বিমার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। অনেকে শুধু নেতিবাচক মন্তব্যের ভিত্তিতে বিমা করেন না। তাই বিমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, সঠিক সময়ে বিমা দাবি পরিশোধ করা, বিমাকর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং গ্রাহকদের উপযুক্ত বিমাপণ্য দেওয়াটা জরুরি।
সাধারণ বিমার বাজার বাড়াতে করণীয় জানিয়ে বিআইএ প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে থার্ড পার্টি বিমা পুনরায় চালু করার এবং বিমা পরিকল্পনা সঠিকভাবে অ্যাকচুয়ারির মাধ্যমে মূল্যায়নের সময় এসেছে। এ ছাড়া কমিশন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার এবং ব্যাংকাস্যুরেন্স গাইডলাইনের সীমা খোলার ওপর জোর দিলে বিমার বাজার আরও বড় হবে।
পর্বত সমতুল্য বিমা দাবি
২০২৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮২টি বিমা কোম্পানির গ্রাহকদের বিমা দাবির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৫৮৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে জীবনবিমার দাবি ছিল ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং সাধারণ বিমার ৩ হাজার ১৪০ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
আইডিআরএর তথ্য অনুযায়ী, ৩৬টি কোম্পানির বিমা দাবির পরিমাণ ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যার মধ্যে ২ হাজার ৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৩২ লাখ টাকা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। দাবি পরিশোধ না করার শীর্ষে রয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, যাদের ৯৯.১৯ শতাংশই পরিশোধ হয়নি। সানফ্লাওয়ার লাইফ ইনস্যুরেন্স পরিশোধ করেছে ১.১৯ শতাংশ এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ১.৪৯ শতাংশ দাবি পরিশোধ করেছে। বায়রা লাইফ ১.৫৪%, গোল্ডেন লাইফ ২.১৮%, প্রগ্রেসিভ লাইফ ৪.৭০%, সানলাইফ ১০.৪২%, আস্থা লাইফ ১৪% এবং হোমল্যান্ড লাইফ ১৫% দাবি পরিশোধ করেছে। অর্থাৎ এসব কোম্পানি গ্রাহকদের দাবির টাকা বড় অংশই পরিশোধ না করে অনিয়মের মাধ্যমে তা আত্মসাৎ করছে।

বর্তমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পরিকল্পিত উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে অচিরে খাতটির সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে। এম আসলাম আলম চেয়ারম্যান, আইডিআরএ
২০২৪ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৪৬টি নন-লাইফ বিমা কোম্পানি ১৬ হাজার ৮৮৬টি বিমা দাবি পরিশোধ করেনি। এই প্রান্তিকে কোম্পানিগুলোর মধ্যে মোট ৩ হাজার ১৪০ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ টাকার বিমা দাবি উত্থাপন হয়েছিল। এর মধ্যে মাত্র ৩১৪ কোটি ৫৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৭ টাকার দাবি পরিশোধ করা হয়েছে, অর্থাৎ ২ হাজার ৮২৫ কোটি ৮৪ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৬ টাকা পরিশোধ হয়নি। সুতরাং মাত্র ১০% বিমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে।
সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধ না করার শীর্ষে রয়েছে ঢাকা ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, যাদের ৯৯.৮৬% দাবিই পরিশোধ হয়নি। সিকদার ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ৯৯.৮১% দাবি পরিশোধ করেনি এবং পিপলস ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ৯৭.৩৩% দাবি পরিশোধ করেনি। নর্দার্ন ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ৯৭.১৮%, গ্রিন ডেলটা ইনস্যুরেন্স ৯৭.৬৬%, বাংলাদেশ সাধারণ বিমা করপোরেশন ৯৫.২৫%, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ৯৭% এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি প্রায় ৯০% বিমা দাবি পরিশোধ করেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. মাইন উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, যদি বিমা কোম্পানিগুলো সঠিক সময়ে বিমা দাবি পরিশোধ করে, তবে এ খাতের সমস্যার প্রায় ৭০% সমাধান হয়ে যাবে। বাকি ২০-৩০% সমস্যা শুধু সময়ের সঙ্গেই ধীরে ধীরে সমাধান হবে, যখন সঠিক ব্যবস্থা ও সংস্কার আসবে।
সম্ভাবনার ন্যূনতম পর্যায়ে
বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের (বিআইএফ) তথ্যমতে, বিমা খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি জীবনবিমা কোম্পানির মাধ্যমে ৭-৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আর ৪৫টি বিমা কোম্পানির মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে ২-৩ লাখ মানুষের।
তবে বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ (পাভেল) বিশ্বাস করেন, যদি বিমা কোম্পানিগুলো সঠিক সেবা প্রদান এবং যথাযথ দাবি নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করত, তবে বিমা খাতে এক নতুন ইতিবাচক গতি সৃষ্টি হতো।
বিকাশে চার উপায়
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা করণীয় হিসেবে তিন উপায় বলেছেন। প্রথমত, প্রয়োজনে অভিযুক্ত কোম্পানির সব সম্পদ বিক্রি করে দাবি নিষ্পত্তি; দ্বিতীয়ত, যেসব কোম্পানি বিমা দাবি পরিশোধ করছে না, তাদের শাস্তি আওতায় আনা; তৃতীয়ত, যারা দাবি পরিশোধ না করবে, তাদের নতুন পলিসি বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া। চতুর্থত, প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো টাকা ছাপিয়ে গ্রাহকের দাবি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
১ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
৬ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৩ ঘণ্টা আগেরোকন উদ্দীন, ঢাকা

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।

ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজারে বাংলাদেশের অংশ এখনো মাত্র ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ সাড়ে ৫ শতাংশ।
এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। ইউরোপের তৈরি পোশাক আমদানির প্রায় অর্ধেকই আসে বাংলাদেশ থেকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও শীর্ষ সরবরাহকারীর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। তবু জাপানের মতো স্থিতিশীল ও উচ্চমূল্যের বাজারে বাংলাদেশ এখনো ব্যবহৃত সুযোগের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে। পরিসংখ্যান তা-ই বলে—এখানে এখনো বড় জায়গা খালি রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যও সেই সম্ভাবনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। ২০২৪ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার; যার মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ জাপান এখন বাংলাদেশের ১২তম রপ্তানি গন্তব্য।
তবে চলতি অর্থবছরের গত কয়েক মাসের প্রবণতা বাজারের পরিবর্তন আরও স্পষ্ট করে। ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্টে জাপানে রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া এ সময়ে দ্বিতীয় বৃহৎ অপ্রচলিত বাজার হলেও সেখানে রপ্তানি কমেছে ৬ শতাংশ। ফলে জাপান এখন অপ্রচলিত রপ্তানি বাজারে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা গন্তব্য হিসেবে সামনে আসছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ও স্থিতিশীল একটি বাজার হলো জাপান। সরকারের পর্যালোচনায়ও বিষয়টি রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি, যা সম্পন্ন হলে রপ্তানি আশানুরূপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
জাপানের এই উত্থান কাকতাল নয়। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ-ঝুঁকি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ায় আমদানিকারকেরা নতুন বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। আর জাপান এমন একটি বাজার, যেখানে মূল্য-সুবিধার পাশাপাশি গুণগত মান, কঠোর কমপ্লায়েন্স এবং দ্রুত বদলে যাওয়া ফ্যাশন-চাহিদার প্রতি গুরুত্ব বেশি। এসব মানদণ্ড পূরণ করতে পারলে বাজারটি দীর্ঘমেয়াদি ও নিশ্চিত প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।
কিন্তু এখানেই চ্যালেঞ্জ স্পষ্ট। জাপানি ক্রেতারা ছোট পরিমাণের অর্ডার দেন, মূল্য নিয়ে আগাম ছাড় পাওয়া সহজ নয়, আর প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ কমপ্লায়েন্স অপরিহার্য। এ বিষয়ে দেশের অন্যতম প্রস্তুতকারক টিম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহিল নকিব জানান, ‘অর্ডারের কঠোর ইন্সপেকশন বাংলাদেশে জাপানের অর্ডার ধরার সবচেয়ে বড় বাধা। মান নিশ্চিত না হলে তারা একটিও পণ্য নেয় না।’
এই কঠোরতা একদিকে বাধা, আবার অন্যদিকে সুবিধা। কারণ যে প্রতিষ্ঠান একবার জাপানের মান ধরে রাখতে পারে, তাদের জন্য বাজারটি স্থিতিশীল থাকে। জাপানি ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারী খুব সহজে বদলায় না, ফলে দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মনে করেন, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে পারলে অপ্রচলিত বাজারগুলোই ভবিষ্যতের বড় নিরাপত্তা হয়ে উঠবে।
ভবিষ্যৎ আয়ের এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার হলো বিমা—যাকে সংকটকালে নির্ভেজাল এক বিশ্বস্ত সঙ্গী বলা যায়। বিশ্বজুড়ে তাই বিমার প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেন অদম্য স্রোতের মতো ক্রমাগত বাড়ছে। অথচ এই ঢেউ বাংলাদেশে...
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
৬ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

আট দিনব্যাপী ১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় ১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি ১৬ কোটি টাকার পণ্যের অর্ডার পেয়েছেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রোববার আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুমী এ আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ৩ হাজার উদ্যোক্তা তাঁদের পণ্য বিক্রি করেছেন। ১১টি পণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের ৫৭ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৯৩ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছেন।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
শতভাগ দেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ৭ ডিসেম্বর মেলার উদ্বোধন করেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে প্রায় সাড়ে তিন শ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৪টি প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া হস্ত ও কারুশিল্পের ৫৪টি, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৪০টি; পাটজাত পণ্যের ৩৫টি; কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৮টি; শতরঞ্জি, বাঁশ, বেত, হোগলা, সুপারিখোল ও কাঠের ১৫টি; খাদ্যপণ্যের ১৪টি; লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৩টি; জুয়েলারি শিল্পের ৯টি; প্রসাধন খাতের সাতটি; তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের পাঁচটি; হারবাল–ভেষজশিল্পের পাঁচটি; প্লাস্টিক পণ্যের পাঁচটি; ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস খাতের তিনটি, ফার্নিচার খাতের তিনটি এবং অন্যান্য খাতের ১১টি স্টল।
মেলায় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী শিল্প মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর-সংস্থাসহ সরকারের প্রায় ১৫টি সংস্থা, প্রায় ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
মেলায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, পণ্য রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও পণ্যের হালাল সনদ প্রাপ্তি, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ট্রেড মার্ক ও জি আই স্বীকৃতি, স্কিলস ইকোসিস্টেম বিষয়ে ছয়টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ভবিষ্যৎ আয়ের এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার হলো বিমা—যাকে সংকটকালে নির্ভেজাল এক বিশ্বস্ত সঙ্গী বলা যায়। বিশ্বজুড়ে তাই বিমার প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেন অদম্য স্রোতের মতো ক্রমাগত বাড়ছে। অথচ এই ঢেউ বাংলাদেশে...
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
১ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
৬ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।

আসন্ন রমজান মাস সামনে রেখে তাজা ফলের ওপর শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুরের মতোই এবার আপেল, কমলা, আঙুর, মেস্তারিন, নাশপাতি ইত্যাদি তাজা ফলকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্য বিবেচনায় এমন সুপারিশ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আনার আমদানিতে মোট শুল্ক-কর রয়েছে ১২৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আপেল, মাল্টা, আনার ইত্যাদি ফলের স্থানীয় উৎপাদন নেই; তাই এই উচ্চহারে শুল্ক-কর রাখার প্রয়োজনীয়তা সীমিত।
অন্যদিকে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপের ফলে বৈধ পথে আমদানি কমে তা অবৈধ পথে আমদানিকে উৎসাহিত করতে পারে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিমাত্রায় বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহারের প্রবণতাও বাড়তে পারে। উচ্চ শুল্ক-করের ফলে তাজা ফলের আমদানি কমার ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ভোক্তাসাধারণের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; ভবিষ্যতে রাজস্ব আহরণও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাজা ফলকে ‘বিলাস পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে নিত্যপণ্য আইন, ১৯৫৬ অনুযায়ী খাদ্যপণ্য হিসেবে তাজা ফল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য’ বিধায় এর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা যেতে পারে।
ভবিষ্যৎ আয়ের এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার হলো বিমা—যাকে সংকটকালে নির্ভেজাল এক বিশ্বস্ত সঙ্গী বলা যায়। বিশ্বজুড়ে তাই বিমার প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেন অদম্য স্রোতের মতো ক্রমাগত বাড়ছে। অথচ এই ঢেউ বাংলাদেশে...
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
১ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
১৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘দেশে শুধু ভোটাররাই নন, রাজনীতিবিদেরাও এখন বিপন্নতার মধ্যে রয়েছেন।’

আজ রোববার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির ফেলো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘বিপন্ন জনগোষ্ঠীর প্রসঙ্গে সাধারণত ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সম্প্রদায় বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের কথা উঠে আসে। তবে এর সঙ্গে বড় একটি বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিবিদেরা আরও সহিংসতা বা হামলার শিকার হবেন কি না এবং নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার তাঁদের জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার প্রসঙ্গে সিপিডির এই ফেলো বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে সহিংসতার পর এখন নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, গত দেড় মাসে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার’ প্ল্যাটফর্ম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাক্-নির্বাচনী সংলাপ আয়োজন করেছে। এসব সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব আলোচনার ভিত্তিতে একটি নাগরিক ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব জায়গায় গিয়েছি, প্রায় সর্বত্রই নিরাপত্তার বিষয়টি খুব জোরালোভাবে উঠে এসেছে। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে কি না, এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত নন।’
সংস্কার এজেন্ডা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের অভিজ্ঞতা থেকেই বর্তমানে সংস্কার-সংক্রান্ত বিতর্কের ভিত তৈরি হয়েছে। তাঁর মতে, রাজনীতিবিদ, আমলা ও বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি এলিট গোষ্ঠী প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতিকে দুর্বল করেছে, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিযোগিতাহীন অর্থনীতি।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ক্রনি ক্যাপিটালিজম ও একটি অলিগার্কিক ব্যবস্থা, যেখানে নীতিনির্ধারণে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশে সংস্কার নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বর্তমান উদ্যোগটি আলাদা, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কমিশন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেও তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রথম দিকে যে গতি তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ফেলো বলেন, ‘আমরা দেখেছি স্বচ্ছতা, সমন্বয় ও যোগাযোগ সব সময় পর্যাপ্ত ছিল না। আর শুধু পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার সফল করা সম্ভব নয়; এর জন্য প্রয়োজন নাগরিকদের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ।’
তাঁর মতে, সংস্কার শুধু পরিকল্পনা বা উদ্দীপনার বিষয় নয়। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে নাগরিকদের সচেতনভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।
ভবিষ্যৎ আয়ের এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার হলো বিমা—যাকে সংকটকালে নির্ভেজাল এক বিশ্বস্ত সঙ্গী বলা যায়। বিশ্বজুড়ে তাই বিমার প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেন অদম্য স্রোতের মতো ক্রমাগত বাড়ছে। অথচ এই ঢেউ বাংলাদেশে...
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
ইউরোপ-আমেরিকার ওপর দীর্ঘদিনের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত নতুন বাজার খুঁজছে, আর সেই অপ্রচলিত গন্তব্যগুলোর মধ্যে জাপান সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে। অথচ দেশটির ২২ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারের বিশাল পোশাক আমদানি বাজ
১ ঘণ্টা আগে
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী ১০টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ স্টলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয় উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার–২০২৫’ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীদের প্রত্যেকের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগে
চিঠিতে বলা হয়, দেশের চাহিদার বড় অংশ আমদানি করা তাজা ফলের মাধ্যমে পূরণ হয়। গত কয়েক বছরে ডলারের মূল্য, শুল্ক বৃদ্ধিসহ নানা কারণে আমদানি করা ফলের দাম বেড়ে যায়। বর্তমানে আপেল, কমলা, মেস্তারিন, আঙুর ও নাশপাতি আমদানিতে মোট শুল্ক রয়েছে ১২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
৬ ঘণ্টা আগে