বিয়ের আগের দিন তরুণীর ঝুলন্ত লাশ, চিরকুটে হবু স্বামীকে দোষারোপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৪, ১০: ৩৭
Thumbnail image

‘পোস্টমর্টেম করিয়ে আমার সব যন্ত্রণা ধুয়ে-মুছে আমাকে কবরে পাঠিও’— প্রেমিক ও হবু স্বামীকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করে চিরকুটে এই কথা লেখে বিয়ের আগের দিন চট্টগ্রামে আত্মহত্যা করেছেন এক তরুণী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পটিয়ার হাইদগাঁওয়ে হীরা তালুকদারবাড়িতে ঘটেছে এ ঘটনা।

মৃত রীমা আক্তার (২০) রীমা উপজেলার হাইদগাঁও এলাকার হীরা তালুকদারবাড়ির বাচা মিয়ার মেয়ে। রীমা পটিয়া সরকারি কলেজে অনার্সের ছাত্রী ছিল। একই এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমানের (মোরশেদ) সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত মোরশেদের সঙ্গে রীমা আক্তারের তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারিবারিকভাবেই আজ শুক্রবার বিয়ের তারিখ ঠিক ছিল।

রীমা আক্তারগতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে রীমা ও মোরশেদ কয়েক দফায় ভিডিও কলে কথা বলেন। এর পরপরই সিলিং ফ্যানের সঙ্গে রীমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘরে কাগজে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল, ‘আমার পরিবারকে বলছি, মোরশেদকে তোমরা ছাড়বা না। ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি তোমরা দিবা।’

সেখানে আরও লেখা ছিল, ‘প্রিয় শখের মানুষ, তুমি করো তোমার বিয়ে, অনেক ভালোও বেসেছ এবং অতিরিক্ত যন্ত্রণাও দিয়েছ। আমি পারছি না এত যন্ত্রণা নিতে। বাকি জীবনটা সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারলাম না। তুমি আমাকে বাঁচতে দিলে না। আমার পরিবার থেকে যৌতুকের যে টাকা তোমাদের দিয়েছে, সেগুলো শোধ করে দিও।’

এ বিষয়ে রীমার চাচা নাসির উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিন দিন আগে যৌতুক হিসেবে আমরা ছেলের পরিবারকে ২ লাখ টাকা দিয়েছি। এর পরও মেহেদী অনুষ্ঠানের দিন ছেলে রীমাকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে।’

রীমার ভাই আজগর হোসেনের অভিযোগ, ২ লাখ টাকা দেওয়া পরও মোরশেদ তাঁর বোনের কাছে ফুল সেট ফার্নিচার, টিভি, ফ্রিজ ও বিয়ের খরচ হিসেবে আরো টাকার যৌতুক দাবি করেন। প্রেমের সম্পর্ক থাকার পরেও যৌতুক দাবি করায় তাঁর ‘বোন অপমানিত হয়ে রাগে-ক্ষোভে আত্মহত্যা’ করেন।

আজগর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছেলেটা যে এত যৌতুকলোভী হবে আমরা জানতাম না। প্রাণ দিয়ে আমার বোন তার মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে। অথচ আমরা এত দিন তা বুঝতে পারিনি। মৃত্যুর আগে আমার বোন সুইসাইড নোটে এসব লিখে রেখে গেছে।’

অভিযোগের বিষয়ে মোরশেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কয়েক দফা কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত