Ajker Patrika

কিশোরীর সঙ্গে প্রেমে পরিবারের বাধা, কিশোরের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭: ২৩
কিশোরীর সঙ্গে প্রেমে পরিবারের বাধা, কিশোরের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু

কিশোর অদ্রিপ অহন সায়ান (১৩), পড়ত নগরীর হাজী মুহাম্মদ মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে। তাকে নিয়ে স্কুলশিক্ষক দম্পতি বিশ্বজিত দাশ ও স্নেহলতা দাশের আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন। সে পথেই হাঁটছিল সায়ান। পড়াশোনার পাশাপাশি অল্প বয়সেই সে রপ্ত করে গিটার বাজানো। ক্রিকেটও খেলত বেশ ভালো।

এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরেনি সায়ান। এ ঘটনায় তার বাবা চকবাজার থানায় একটি জিডি করেন। সেই সূত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্কুলের আশপাশের সব সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে। এতে দেখা যায়, সায়ান ওই দিন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের পাশের গলিতে এক নারী ও স্কুলছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিদায় নিচ্ছে। সেই ফুটেজে বের হয়ে আসে প্রেমের বিষয়। 

গতকাল বৃহস্পতিবার তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সায়ানের সঙ্গে নগরীর জামালখানের একটি সরকারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জেনে যায় ওই ছাত্রীর পরিবার। ওই ছাত্রীকে শাসানোর পাশাপাশি তার মা সায়ানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চায়। সায়ানের কাছে তার বাবা-মায়ের নম্বর চান তিনি। সায়ান তার নানু আর মামির নম্বর দেয়, কিন্তু মা-বাবার নম্বর দেয়নি। 

তিনি বলেন, ‘ছাত্রীর মা সায়ানের নানু আর মামিকে বিষয়টি জানান। নানু-মামি বিষয়টি সায়ানের বাবাকে জানায়। নগরীর আমবাগান ইউসেফ স্কুলের শিক্ষক সায়ানের বাবা বিশ্বজিত সন্তানকে এ নিয়ে কড়া শাসন করেন।’

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘গত মঙ্গলবার নিরুদ্দেশ সায়ানের খোঁজ না মিললেও বৃহস্পতিবার কর্ণফুলী নদীর কোতোয়ালি থানার অভয় মিত্র ঘাট এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে সদরঘাট নৌ পুলিশ।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরাম উল্লাহ বলেন, ‘বুধবার রাতে আমাদের কাছে ৯৯৯ থেকে ফোন আসে শাহ্ আমানত সেতুর পাশে নদীতে একটি লাশ ভাসছে। আমরা রাতে তল্লাশি করে জোয়ার-ভাটার কারণে কিছু পাইনি। বৃহস্পতিবার আবার তল্লাশি করি। দুপুরে অভয় মিত্র ঘাট এলাকায় হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ড্রেস পরা এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করি। পরে তার অভিভাবকেরা এসে লাশ শনাক্ত করেন।’ 

তিনি বলেন, ‘লাশের সুরতহাল করে আমরা ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছি। লাশের শরীরের আঘাতের কোনো চিহ্ন পাইনি। তারপরও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা ময়নাতদন্ত করতে পাঠিয়েছি।’ 

চকবাজার থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. ইমরান বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত যা পেয়েছি, তাতে মৃত্যুর কারণ শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শরীরে যেহেতু আঘাতের বাহ্যিক চিহ্ন নেই, তাই হত্যা বলারও সুযোগ নেই। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে সেই আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, যে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে সায়ানের সম্পর্ক তাকে এবং তার মাকেও ইতিমধ্যে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে। সার্বিক অবস্থায় পুলিশের দাবি, পরিবারের শাসনের ভয়ে সায়ান হয়তো আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। মৃত্যুর রহস্য নিশ্চিত হওয়া যাবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত