খাগড়াছড়িতে ফলছে থাইল্যান্ডের বিখ্যাত চিয়াংমাই আম

প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২১, ১৬: ০৭
আপডেট : ১৫ জুন ২০২১, ১৭: ১০

খাগড়াছড়ি : পাহাড়ি জমিতে চাষ হচ্ছে থাইল্যান্ডের চিয়াংমাই আম। রেড ম্যাঙ্গো জাতের এ আম চাষ করে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন কৃষক হ্ল্যাশিমং চৌধুরী। তাঁর বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে থাইল্যান্ডের এই রসাল সুমিষ্ট আম।

খাগড়াছড়ি কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়িতে বিদেশি আমের চাষাবাদে কৃষক পর্যায়ে আগ্রহ বাড়ছে। পাহাড়ের আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণের কারণে বিদেশি আম চাষে সফলতা পাচ্ছেন কৃষকেরা। দেশীয় আমের তুলনায় এসব আম বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি দামে।

জেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ি জনপদ মহালছড়ি। হ্রদ আর পাহাড়বেষ্টিত এই উপজেলা আমের জন্য এরই মধ্যে বেশ খ্যাতি পেয়েছে। উপজেলার ধুমনিঘাট এলাকায় ৩৫ একরের ‘ক্রায়ো এগ্রো ফার্ম’ নামে একটি কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন কৃষক হ্ল্যাশিমং চৌধুরী।

সম্প্রতি তাঁর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের ঢালু অংশে থোকায় থোকায় ঝুলছে চিয়াংমাই আম। প্রতিটি গাছে ১৫ থেকে ২০টি করে আম ঝুলছে। লাল সিঁদুরে এই আমের গড় ওজন ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম। ব্যাগিং করা এসব আম কদিন পর গাছ থেকে পাড়ার সময় হবে।

খাগড়াছড়ি কৃষি বিভাগ জানায়, পার্বত্য এলাকায় বিদেশি আমের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। চিয়াংমাই আম থাইল্যান্ডের বেশ প্রসিদ্ধ জাত। ফলের জন্য বিখ্যাত প্রদেশ চিয়াংমাইয়ের নামানুসারে এ জাতের নামকরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটি এই আম চাষের উপযোগী। প্রতিটি আমের ওজন এক কেজির কাছাকাছি। এটি বেশ সুস্বাদু এবং সুমিষ্ট। আমের রঙ ও আকারের কারণে এটি বেশ আকর্ষণীয়।

কৃষক হ্ল্যাশিমং চৌধুরী বলেন, তিন বছর আগে চিয়াংমাই আমের চারা রোপণ করেছি। এ বছর প্রথম ফলন হয়েছে। প্রতিটি আমের ওজন প্রায় এক কেজি। গাছের বয়স বাড়লে ফলনও বাড়বে। প্রতিটি আম ব্যাগিং করা হয়েছে। লাল রঙের হওয়ায় এটির বেশ চাহিদা রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিয়াংমাই জাতের আমের সুখ্যাতি রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের কৃষকেরা এ জাতের আম চাষে আগ্রহী হচ্ছে। বর্তমানে মূলত শৌখিন চাষিরাই এ আম চাষ করেন।

খাগড়াছড়ি হর্টিকালচার সেন্টারের পরিচালক কৃষিবিদ কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, বর্তমানে প্রচলিত জাতের পাশাপাশি বিদেশি জাতের আম চাষাবাদে কৃষকেরা আগ্রহী হচ্ছেন। বিশেষ করে থাইল্যান্ডের চিয়াংমাই, কিউজাই, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, আমেরিকান পালমারসহ বিভিন্ন প্রজাতির চাহিদা বেশি। পাহাড়ের আবহাওয়া বেশ কয়েকটি বিদেশি আমের চাষাবাদ উপযোগী। চিয়াংমাই আম চাষ করে আমাদের কৃষক হ্ল্যাশিমং সাফল্য পেয়েছেন।

খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমেদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আমের চাষ বেড়েছে। কৃষকেরা চাষাবাদ শিখে গেছেন। অনেক শৌখিন চাষি বিদেশি আমের চাষাবাদ করছেন। তারা দেশ-বিদেশ থেকে বিদেশি আমের জাত সংগ্রহ করে চাষাবাদ করছেন। অধিকাংশ কৃষক বিদেশি জাতের আম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। চিয়াংমাই আম পাহাড়ে নতুন চাষাবাদ হচ্ছে। কৃষকেরা এ জাতের আম চাষ করে লাভবান হবেন। এটির আকার বেশ বড়। খুবই সুমিষ্ট ও রসাল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত