Ajker Patrika

অস্তিত্বসংকটে রামগড়ের পর্যটনকেন্দ্রগুলো, প্রতিশ্রুতি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের

বেলাল হোসাইন, রামগড় (খাগড়াছড়ি) 
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২২, ১৯: ১৬
অস্তিত্বসংকটে রামগড়ের পর্যটনকেন্দ্রগুলো, প্রতিশ্রুতি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রানি বলা হয় খাগড়াছড়িকে। সৌন্দর্যের জন্য পুরো দেশজুড়ে সুখ্যাতি রয়েছে খাগড়াছড়ির। খাগড়াছড়ির অন্যতম পর্যটনমুখর এলাকা রামগড়। অপরূপ খাগড়াছড়ির পার্বত্য সৌন্দর্য যেন তার পূর্ণ রূপ পেয়েছে এই রামগড়ে এসে। কিন্তু প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং পর্যটকদের জন্য সুব্যবস্থা না থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এই এলাকার পর্যটনকেন্দ্রগুলো। সমস্যা সমাধানে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি। 

জানা যায়, রামগড়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা, দুর্গম পাহাড়, সবুজের সমারোহ, সাজানো চা-বাগান, ঝুলন্ত ব্রিজ, রামগড় লেক, বঙ্গবন্ধু পার্ক, পাহাড়ঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু, বিজিবির জন্মস্থান, শহীদ মিনার, কলসিরমুখসহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থান। 

একসময় এই রামগড়ে পর্যটকদের প্রতিনিয়ত ভিড় জমত। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রামগড়ে ছুটে আসত পর্যটকেরা। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। এক প্রকার পর্যটকহীন হয়ে পড়ছে রামগড়। নিরাপত্তা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং থাকার সুব্যবস্থা নেই বলে পর্যটক আসছে না বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে জনপ্রতিনিধিরা বলছেন খুব দ্রুত ঢেলে সাজানো হবে রামগড়ে পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে। 

নিয়ম বহির্ভূতভাবে মৎস্য চাষ করায় রামগড় চা বাগানের হ্রদ হারিয়েছে সৌন্দর্য।সরেজমিনে রামগড় পার্ক, স্মৃতিসৌধ, ঝুলন্ত ব্রিজ, কালাডেবা স্লুইসগেট, কলসিরমুখ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব পর্যটনকেন্দ্র সম্পূর্ণ অরক্ষিত। পর্যটকদের জন্য কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়। পুরো দেশজুড়ে সুখ্যাতি রয়েছে রামগড় পার্কের। বছর দশেক আগেও বিশাল আকাশের নিচে চারদিকে সবুজ গাছ-গাছালির শ্যামল ছায়ায় ঘেরা ছিল এই পার্ক। পাতাবাহার, ঝাউগাছ ও বিভিন্ন ফুলের সমন্বয়ে সাজানো ছিল এটি। বিশাল হ্রদের ওপর নির্মিত ঝুলন্ত সেতু পার্কের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েক শ গুণ। এসব দৃশ্য অবলোকন করার জন্য ছুটে আসত দর্শনার্থীরা। 

কিন্তু বর্তমান দৃশ্য উল্টো। চারদিকে সবুজের সমারোহ আর নেই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পার্কটি। কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে টিকে আছে ঝুলন্ত সেতু। অন্যদিকে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রামগড় স্মৃতিসৌধটি এক প্রকার ধ্বংসের প্রান্তে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে এটি। রাতে মাদকসেবীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়। কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই। আশপাশের স্থানীয় লোকজন এটিকে গো-চারণভূমি বানিয়েছে। 

বিশাল হ্রদের ওপর নির্মিত ঝুলন্ত সেতুটি কোনোরকম জোড়াতালি দিয়ে টিকে আছে।স্মৃতিসৌধের মতো একই দশা কালাডেবায় অবস্থিত স্লুইসগেটের। একসময়ের কোলাহলপূর্ণ এই পর্যটনকেন্দ্রটি একপ্রকার পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সরঞ্জামগুলো নষ্ট হয়ে পড়েছে। 

অন্যদিকে রামগড় শহরের প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটারর ভেতরে অবস্থিত কলসিরমুখ। প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় কলসিরমুখ পর্যটনকেন্দ্রে যেতে ভয় পায় মানুষ। পাহাড়ে অবস্থানকারী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ এবং জেএসএসের তোপের মুখে পড়তে হয় পর্যটকদের। যথেষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই এই এলাকায়। 

রামগড় পার্কে ঘুরতে আসা পর্যটক নাদিয়া সুলতানা জানান, স্বামী-সন্তানদের নিয়ে রামগড় ঘুরতে এসেছেন। রামগড়ের আগের সৌন্দর্য আর নেই। তা ছাড়া এখানে থাকার জন্য ভালো হোটেল নেই। যার ফলে থাকার জন্য দুপুরের একটু পরেই খাগড়াছড়ি সদরের দিকে রওনা হবেন। 

সংস্কার এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই স্মৃতিসৌধেরামগড় উপজেলার বাসিন্দা খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অরুণ চন্দ্র সিংহ জানান, রামগড় পর্যটনমুখর শহর ছিল। নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মানুষ রামগড়মুখী হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ চাইলে রামগড়ের সুখ্যাতি আবার ফিরিয়ে আনতে পারে। দলমত-নির্বিশেষে রামগড়ের জনপ্রতিনিধিদের উচিত রামগড়ের পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে এক হওয়া। সুপরিকল্পিতভাবে রামগড় নিয়ে কাজ করলে রামগড় খুব দ্রুত আগের সুখ্যাতি ফিরে পাবে। 

কালাডেবা এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দীন আহমেদ জানান, কালাডেবা স্লুইসগেট পরিত্যক্ত হয়ে পড়ছে। কয়েকজন পর্যটক মাঝে মাঝে আসে। তবে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই বলে স্থানীয়রা পরিবার নিয়ে এখানে আসতে চান না। 

এ নিয়ে রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ ত্রিপুরা জানান, রামগড় উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে রামগড়ের পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে কাজ করা হচ্ছে। রামগড়ের প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্র আধুনিক সাজসজ্জায় সাজানো হবে। বিশেষ করে রামগড় পার্ক সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু হবে। এরই মধ্যে পরিকল্পনা এবং নকশা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রামগড়ের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে রামগড়ের পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে ঢেলে সাজানো হবে। 

চেয়ারম্যান আরও জানান, রামগড়ে সরকারিভাবে রেস্ট হাউস নির্মাণ হচ্ছে। নকশা পরিবর্তনের জন্য কিছুটা থমকে আছে। উন্নত মানের হোটেল নির্মাণের জন্য সাধারণ ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। 

এ বিষয়ে রামগড় পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম কামাল জানান, রামগড় পরিত্যক্ত বাস টার্মিনালটি মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এটি শিশু ও কিশোরদের বিনোদনের উপযোগী করার জন্য আধুনিক বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামগড় উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত বলেন, ‘রামগড় পার্ক এবং কলসির মুখ এ দুটি নিয়ে কাজ করছি আমরা। খুব দ্রুত সংস্কার করা হবে এ পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে। রামগড় পার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে উপজেলা পরিষদের সমন্বয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কলসিরমুখ পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে শোভাবর্ধনের পাশাপাশি নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবশক্তির তিন নেতাকে হত্যার হুমকি, সোনারগাঁ থানায় জিডি

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের এনসিপির যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির তিন নেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারায়ণগঞ্জের এনসিপির যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির তিন নেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল রোববার রাতে সোনারগাঁ থানায় জিডি করেছেন জাতীয় যুবশক্তির নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সংগঠক মো. জাহিদুল হক।

জিডিতে জাহিদুল হক উল্লেখ করেন, গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ‘সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে

তাঁর উদ্দেশে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্টে তাঁর সঙ্গে জাতীয় যুবশক্তি নারায়ণগঞ্জের আহ্বায়ক শাকিল সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব অনিক খাঁন সিয়ামের ছবি ব্যবহার করে গালাগালি ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। ফেসবুক পোস্টে আরও লেখা ছিল—‘লিস্টে রাখলাম হঠাৎ করেই সোনারগাঁবাসী দেখবে লাশ’।

মো. জাহিদুল হক জানান, পোস্টটিতে তাঁকে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত দেখিয়ে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাঁর সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং জীবন নিরাপত্তাঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তিনি আরও জানান, তিনি জাতীয় যুবশক্তি (এনসিপি) নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সংগঠক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলার সাবেক মুখ্য সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আমীন বলেন, ‘এ ঘটনায় ইতিমধ্যে জিডি করা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে আমরা কেন্দ্রীয় নেতারা অবগত রয়েছি।’

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিববুল্লাহ বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় জিডি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ফেসবুক আইডিটি শনাক্তের জন্য সাইবার ক্রাইম ইউনিটের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গমের জমিতে ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
গমের জমিতে ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গমের জমিতে ছাগল ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সাহাবুল ইসলাম (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী পারুল আক্তার (৪৮) ও ছেলে। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের মুন্দখৈর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাহাবুল ইসলাম মুন্দখৈর এলাকার মৃত মোজাফফর হোসেনের ছেলে।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একই এলাকার সালামের দুটি ছাগল সাহাবুল ইসলামের গমের খেতে ঢুকে চারা নষ্ট করে। এ নিয়ে সাহাবুল ছাগল দুটিকে খোঁয়াড়ে দিলে সালামসহ কয়েকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে চলে যান। পরে বিষয়টি নিয়ে সাহাবুল ইসলাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

গতকাল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেয় এবং বিষয়টি থানায় বসে মীমাংসার কথা বলে। তবে পুলিশ চলে যাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যার দিকে সালামসহ অন্যরা হাঁসুয়া, চাকু, রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে সাহাবুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকেও মারধর করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাহাবুল ইসলামের মৃত্যু হয়।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পারুল আক্তার ও তাঁদের ছেলেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত সালাম ও তাঁর ছেলে রিপনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক এমপি বাদলকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিউমার্কেট থানা এলাকায় শিক্ষার্থী শামীমকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম গ্রেপ্তার দেখানোর এ নির্দেশ দেন।

আজ ফয়জুর রহমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার এসআই মো. ওমর ফারুক। শুনানি শেষে আদালত বাদলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হারুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তদন্তকালে এই মামলায় সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান বাদলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের জন্য তিনি এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের প্ররোচনা এবং অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছেন বলে প্রাথমিক সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই করতে তাঁকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজ এলাকায় আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে আন্দোলনকারীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শামীম গুরুতর আহত হন। পরে সুস্থ হয়ে তিনি মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, ‎গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার খিলক্ষেত থানা এলাকা থেকে সাবেক এই এমপিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

কুমিল্লা প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৬
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তা জমা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর

নানুয়ার দীঘিসংলগ্ন নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

মনিরুল হক সাক্কু বলেন, তিনি শুরু থেকেই কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মনোনয়ন কেনার বিষয়টি ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। এ কারণে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন না। তবে ভবিষ্যতে যদি এ আসনে দলীয় মনোনয়নে পরিবর্তন আসে, সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক এমপি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের ব্যাপারে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, অতীতের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইয়াছিন তাঁর শ্যালককে প্রার্থী করেছিলেন। এতে ভোট বিভাজনের কারণে তিনি অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন। একই ব্যক্তি পরবর্তী উপনির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেন। এসব ঘটনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কাউকে দোষারোপ করেননি। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা প্রকাশ্যে আনার আহ্বান জানান তিনি।

মনিরুল হক সাক্কু আরও বলেন, চূড়ান্ত মনোনয়নে দলের মনোনয়ন পরিবর্তন হয়ে যদি হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন পান তাহলে তিনি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবেন।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে সাক্কু অল্প ব্যবধানে পরাজিত হন। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে উভয়কেই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। গতকাল রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত